নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানবিক দিব্য কাল

আনন্দ লীলা মজুমদার

আমি মানুষ। মানুষ ভজি, মানুষ নিয়ে লিখি ।

আনন্দ লীলা মজুমদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

কারণ বারির খোঁজে জোড়কারণে যাই

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ৯:০৬

১।



আইয়ুবী আমলে ছিলো দোররার শাসন, অস্ত্র দিয়া চিনা যায় সম্পর্কের ধরন

আবিয়াতি নারী যদি গৃহবন্দি হয়, জীবন তো রস-কষে, খুজে ফিরে পাললিক চরণ

আলোহীনা বিরিক্ষির জ্যোৎস্না আহার, চম্পা রঙ আলো আর রূপালি অঙ্গার

ফুটি ফূটি করে সে অস্ফুট গোঙায়, এতো রঙ তারে দেই, তবু রঙ চায়

শেষমেষ নিজ রং ছড়াই মিছিলে, মিছিলটা বেড়ে ওঠে ফূলে ও ফসলে ।।



২।



কারণ বারির খোঁজে জোড়কারণে যাই, ফূল-ফোটা দেখিব তা-ই কাননে লুকাই

বন্ধন বধিয়া আজ শুধু ফুলমতি, ছিঁড়িলে ছিন্ন কূলে মুকুলিত হবো

লীলানেত্র নিরজনে ক্ষেত্র খুঁজে শূন্যস্থানে, বায়ু দোলায় কুপিখানা, জায়গা চিনি না



৩।

গোপন সুরে গান ধরেছি, হংসধ্বনি হাঁসার ফেরা, আমার হাঁসি আমার লীলায় সাঁতারপ্রিয় পদ্মজলায়

বংশি আমার বাক নিয়েছে, রুমি রাগে গান ধরেছি, আমার আলোয় তোমার ঘরে ফেরা,

কার অছিলায় কে যে বাঁচে, স্মরণ খেলায় ইতিহাসে কিছুটা কাল ইতস্তত, আমি তারে জড়ো করি

এই যে এখন হংসী আমার বংশী রূপে আজ ফিরেছে, নজর করে দেখো সেথায় আমরা সবাই সুর হয়েছি





৪. অধরা

মেঘে মেঘে ব্জ্র ঘুমায়, বাতাস যখন হায়াৎ, আমি পাঠ করে যাই দ্বীনিয়াতের আয়াত

লতায় লতায় ফুল ধরেছে, আমি পাঠ করে যাই পুষ্পধাত্রীবিদ্যা, আমি হাতেখড়ির ছলে-

হাত ধরেছি তোমার আমি, শূন্য দৃষ্টি, সজল নয়ন, আমি কমাডো কমান্ডো

আমি ড্রাগনের মুখ থেকে আগুন এনেছি, বেনায় বেনায়, মশালে মশালে আগুনের অহংকারে পুড়ে ছাই করে দেবো নিজেকে; অগ্নির উল্লাসে পাকা রাঁধুনি হয়ে উঠব, কিংবা যাবো আপনার সাথে

সারা জনম মাটির ঘরে, বৃষ্টি এলে উষ্ণ হয়ে উঠি, আমি নিজের ভূতের ভৌত স্বরূপ

আমি উদের কাছে সাঁতার শিখেছি, বিদ্যাসাগরীয় সন্তরণ আমাকে নিয়ে যাবে মাতৃস্বরূপে



৫.কমাডো কমান্ডো

হাওয়ার হাত ধরেছি, বুকের ভেতর মাঠ, বিরান নক্ষত্রের ভেতর প্লাজমার ছোটাছুটি

এত তাড়া কিসের আপনার, আমি লাল, হলুদ ও কালো মাটির কসম খেয়ে বলছি

জন্মের পরদিন থেকে আমার বোল ফুটেছে।

তাই আমি বাক্যের স্বাধীনতায় বিশ্বাসি



আমার নিরাপত্তা, আমার জংসনে সরিসৃপ ট্রেন নাগিনার ছাড়ানো খোলসের মত পড়ে আছে

আমার নিরাপত্তা, উদবাহিনী নিশ্চিত করে

আমার নিরাপত্তা গুল, গুইসাপ কিংবা কমাডো ড্রাগন নিশ্চিত করে

নকূল আমার প্রধান সেনাপতি, নাগ ও নাগিনার নৃত্য নটবর মুহুর্ত আমরা নষ্ট করি না

আজ এই লাল সময়ে শিমূল এত কালো কেন! গোলাপ খুঁজে ফেরে মাকড়শার বাসা

আজ বাণীরুদ্ধ রক্তাক্ত স্বরযন্ত্র, আজ গোস্বাময় গোঙানি, আজ অর্ধপ্রস্ফুটিত বোলে ঝড়



৬.



সজল প্রার্থনায় আমি এক কাঙাল, বস্তুর ধরম আমার আদরের অধরার দেহধামে

আমি আছি লীলাব্রতে, ঘরের ছাউনি দেবো আকাশের অন্য কোন উদ্যানে এই শণ

জন্মায় না। কোদাল কোদাল মাটি, আমি যতো খাটি, মেহনতে মরুবুকে কুমড়ার জনম

অতএব, সোয়াদে-স্বাদে, প্রস্বেদন আর আস্বাদনে, আমার জিহ্বার মত লকলকে লাউয়ের ডগায় মাথা তুলে বসে আছে মাধবী সরীসৃপ। আমি তার রুপে মুগ্ধ। সে আমার রুপে পাগল, একটিও দেয় নাই ছোবল; তবে আমি তারে বলেছি, চোখের মুগ্ধতার বিষে ভীষণ সবুজ আমি। এই তো অধরা জ্ঞান, স্মৃতির সবল মেধায় এখনও তো চাষবাস করি। কিছুটা শরম পেলে ছোবল দিও।



৭.



আমরা পরষ্পর পরষ্পরের বিদায়ে উল্লাসী। এই বাক্য মরণকে ধর্মের হাত থেকে রক্ষা করছে। এটি একটি বৈপ্লবিক প্রণোদনামূলক বাক্য। হেনরির চিন্তার শক্তি তরুণদের ভ্যানগার্ড ফোর্স হবার শক্তি যোগাবে।

বাসনা রাখি, অন্তর্গত আজুদা রাখি, একদিন নাচতে নাচতে আপনার সাধের দোযখের নায়িকাদের সাথে মিলনমূহুর্ত

জানি মরণে যা পাইনি, মরণে তা পাবো

বাসনাবিরল যদি কিছু পেয়ে যাই, তবে আমি আপনাকে জানাব

কিছু যদি আজুদা-অলিক, তবে আমি সম্পূর্ণ মৌলিক

তবে আমি বস্তুময় জগতের শেষ অবস্থা

বাসনা রাখি, কড়া লাল সার্ট গায়ে বেহেস্তের বাগানে যাবো, নন্দন জ্বলন্ত নাগিনি আগুন অই যে দোজখে

সেখানেও নাচি, আনন্দময় এই সব আত্মনিবেদন, স্বকীয় এবাদত, আমারই অশেষ আনন্দে দোজখ-বেহেস্ত নিরপেক্ষ যুক্ত বর্ণের মানুষ, আমারই কনসার্টে সঙ্গীতসম্পর্কে মাতোয়ারা, যুক্তির ফরমায়েশ তারা খাটে না।

নাচনে-কুদনে আমি কৌলিন কালধারা, আমারই শরীরে আছে মৃত নদীদের হাহাকার

সিক্ত ও রিক্ত মুহুর্ত সম্পূর্ণ আলাদা, ভরা নদীর বাঁক দেখেছি বালুকাময়



৮.

মেদিনীমন্ডল মাঝে আদম উদয়, তার কাছে সব কিছু ভাবে মূর্ত হয়

আকণ্ঠ আমরা যারা সুধাসিন্ধু পানে, মরমি মহিমায় ভাবি উত্তরণ অপেক্ষায়

আছে বুঝি কোন নভনৌকা, কোন এক ত্বরণ মাঝি, কোথাও আছেন

অতএব, আপনারা থাকুন, আমি নিজের জন্য নিজেই লড়ি, যতোই জমকালো হোক এই মরণ, আমি তার পরোয়া করি না

লহুজলে মাখামাখি, নোনাজলে ভিজিয়ে রাখি নিজেরই শরীর, ইলিশের সাথে সিরাতুল মোস্তাকিন, সরাসরি সাঁতরে আসি ইলিশের সাথে পদ্মাপ্রখর স্রোত, কোন এক জোয়ার-জৌলুষে, আপনার জালে এসে বিরাম;

সুতরাং, আপনারা যান, আইন ও বিধির ফাঁকে যতো আসে ফরমান, অস্বীকার করি তারে, আমি যে রচনা করি আমার বিধান, বহুকাল দেখি না দরবেশ, আউলিয়া, দেওয়ানা মাস্তানা, কল্লোল মুখরিত আখড়ার খোঁজ পেলে জানান আমায়; চলে যাবো মাস্তানার সাথে শহর কুতুব হয়ে, রজোবীজে নক্ষত্রের বৈশিষ্ট্যও জানি;

আমাদের জন্য আছে ছায়ার শরীর, উৎক্রমণ উন্নাসিক আমি,

আলম মন্ডলে যতো জগৎ, আমি তো আশ্রিত নই, তার নিয়ামৎ

তা-ই জপনাম, ডাক নাম, কত নামে ডাকি তারে, তবুও ভুলি না আসল

নামের বরকতে আমি শুধু পথ চলি, আর পরম ও প্রকৃতি মিলে

আমারে শিখান তিনি, মনীষার সাথে প্রেম হবে কী প্রকারে

তখনই ভাবের চিহ্ন, ভাবভোলা হয়ে, আসেন বসেন আমার আদৃত অধরা

অতএব, আমার পৈথানের জম, সিথানে প্রহরারত স্রষ্টার সৈনিক, অপেক্ষায় থাকে, আমি শুধু গান শেষ হলে চলে যাবো, আপনাদের গায়েবী জমানায়, ঘর ও বাহির আমি দু’ই রেখে যাই, জহির! আপনারই জিম্মায়, আমি কিছু ফেলে যাই না, সব অনাদি আত্মস্থকৃত অবিনাশী ধারাবাহিকতায়, এবার অধরা এলে, বলে দিন তারে, সহস্র বারাম আছে দুনিয়ার দুখি মানুষের কাছে।





মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ৯:৪৬

রুদ্রপ্রতাপ বলেছেন: দারুন দারুন! খুব ভালো লাগলো...

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৫:২০

আনন্দ লীলা মজুমদার বলেছেন: রুদ্রপ্রতাপ, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আপনার প্রশংসা আমার কবিতার প্রতি ভালোবাসা আরও প্রগাঢ়, পরিণত করবে ও কবিতা আর আমার মাঝখানে থাকে শুধু মানুষ। অনেক ধন্যবাদ

২| ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১১:১৯

সেলিম তাহের বলেছেন:
কারণ বারির খোঁজে জোড়কারণে যাই, ফূল-ফোটা দেখিব তা-ই কাননে লুকাই...

প্রাণরষায়নের ললিত কাব্য। অসাধারণ লাগলো।

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৫:১৬

আনন্দ লীলা মজুমদার বলেছেন: সেলিম, কেমন আছেন? আপনাকে কতদিন দেখি না। আপনি আমার কবিতা পড়েন, এটা আমার জন্য এক বড়ো পাওনা। একটা উপন্যাসে হাত দিয়েছি,তা আপনার পাঠের অধীন করবো।

৩| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৫:১৫

আনন্দ লীলা মজুমদার বলেছেন: সেলিম, কেমন আছেন? আপনাকে কতদিন দেখি না। আপনি আমার কবিতা পড়েন, এটা আমার জন্য এক বড়ো পাওনা। একটা উপন্যাসে হাত দিয়েছি,তা আপনার পাঠের অধীন করবো।

৪| ১০ ই জানুয়ারি, ২০১১ রাত ৮:৫৫

সেলিম তাহের বলেছেন: কালিঞ্জির মৃদু আলোয় আপনার উপন্যাসখানা পড়বার জন্য উদগ্রীব হয়ে রইলাম। এবারের বইমেলা টার্গেট করেছেন নাকি? আর হ্যাঁ, আপনার কবিতার অনুরক্ত আমি দুইদশক ধরে। মনে আছে, দানিউবের ওই পাড় থেকে বসে দুরালাপনে আপনার কবিতা শুনা? ব্লগে আপনাকে পেয়ে আমি যারপরনাই আহ্লাদিত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.