![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আরজ আলী মাতুব্বর, নাগরিক পরিসর থেকে অনেক দূরে যার জন্ম । সারাটি জীবন বসবাস করেছেন সংগ্রাম-সংঘাত, একাকীত্ব ও নিরিবিলিতে । পাশাপাশি তার অকুণ্ঠ নিষ্ঠা-ধৈর্য, চিন্তার প্রখরতা, ব্যাপ্তি ও গভীরতা এমনই ছিল যে তাকে পড়া, অধ্যায়ন করা ও বাস্তবতার নিরিখে তা উপলব্ধি করাটা এখন বড় মাপের কাজ । যেভাবে তিনি আপন অস্তিত্তে বিচরণ করেছেন সত্ত্যের পথ, করেছেন জগতের সত্যানুসন্ধান, গুড়িয়ে দিয়েছেন পর্বতসম ধর্মীয় ও সামাজিক কুসংস্কার, প্রশ্নের জালে বন্দি করেছেন ধর্মের সব অযুক্তিক বানী ।
আজ থেকে অনেক পূর্বে ১৩০৭ সালের ৩ পৌষ আরজ আলী মাতুব্বরের জন্ম, বরিশালের একটি প্রত্যন্ত অঞ্চল লামচরি গ্রামে । সে গ্রামে ছিল না কোন স্কুল বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান । আরজের বয়স যখন তের, তখন অত্র গ্রামের আব্দুল করিম মুনশি নামের একজন বিদ্যাৎসাহী নিজ বাড়িতে একটি মক্তব খুলেন । কিন্তু টাকার অভাবে সেখানে আর তার যাওয়া হয়ে উঠছিল না । কিন্তু আরজের বিদ্যোৎসাহ দেখে আব্দুল করিম মুনশি বিনা বেতনে তাকে মক্তবে ভর্তি করান এবং সেখান থেকেই, দূর সম্পর্কের আত্মীয়ের কাছ থেকে পাওয়া সীতারাম বসাকের আদর্শ লিপি দিয়ে শুরু হয় তার শিক্ষাজীবন । তবে তা আর বেশিদিন থাকে নি, স্বল্প সময়ের মধ্যে অর্থাভাবে মক্তবটি বন্ধ হয়ে যায় এবং মক্তবের পাঠ চুকে যায় আরজ আলী মাতুব্বরের । ততদিনে মক্তবে পড়াশোনা করে আরজের সম্বল হয় শুধুমাত্র স্বরবর্ণ, ব্যঞ্জনবর্ণ; এ সম্বলকে পুঁজি করেই তিনি পা বাড়ান পৃথিবীর পাঠশালায় । জীবনের বাস্তবতা থেকে ঘৃণা-লজ্জা-ভয়, দ্বিধা-দ্বন্দ্ব পরিত্যাগ করে বুদ্ধি ও বিবেকের সামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যবহারে আপন চেতনাকে শানিত করে হয়ে ওঠেন পৃথিবীর পাঠশালার একনিষ্ঠ পাঠক ও সাধক ।
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় অক্ষরজ্ঞানকে পুঁজি করে নিজেকে মনোনিবেশ করেন বিভিন্ন পুস্তক পাঠে । বুদ্ধি-জ্ঞান-বিবেক সম্ভ্রান্ত করে এমন বই । আর এই অভিলাষে বই সংগ্রহ শুরু করেন বরিশালের পরিচিত ছাত্রদের কাছ থেকে । তার সাথে এগিয়ে যেতে থাকে তার একনিষ্ঠ অধ্যায়ন, সমৃদ্ধ হতে থাকে তার জ্ঞানের পরিধি । বই পড়া শুরু করেন বরিশালের পাবলিক লাইব্রেরী, ব্রজমোহন কলেজ লাইব্রেরী থেকে (উল্লেখ্য একাজে তাকে সহায়তা করে ব্রজমোহন কলেজের দর্শনের অধ্যাপক গোলাম কাদির) । আর এই উৎসুক ও বিদ্যোৎসাহ মন নিয়ে শত প্রতিকূলতা বেয়ে জীবন সায়াহ্নে নির্মাণ করেন আরজ মঞ্জিল লাইব্রেরী । যা জীবনের অন্য এক অধ্যায়, প্রগতিশীল মনের এক মননশীলতার পরিচয় ।
আরজ আলী মাতুব্বরের জীবন সংগ্রাম শুরু হয় শৈশব কাল থেকেই । খুব অল্প বয়সে বাবাকে হারানো, খাজনা দিতে ব্যর্থ হওয়াতে নিলামে জমি চলে যাওয়া; সব কিছু মিলে জীবন তাকে এক কঠিন বাস্তবতার সামনে এনে দাড় করিয়ে দেয় । আর তখন তার পাশে বন্ধু হয়ে ছিল একমাত্র স্নেহময়ী মা । তার মা মারা যায় বাংলা ১৩৩৯ সালে । মায়ের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য তিনি বরিশাল থেকে পেশাদার আলোকচিত্রী বাড়িতে নিয়ে এসে মায়ের ছবি তুলেন । মানুষ যারা মৃত দেহের সৎকার করতে এসেছিল, তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী তারা এ কাজটির প্রতিবাদ করে এবং লাশ সৎকারের কাজ না করেই ভর্ৎসনা করে চলে যায় । অবশেষে তিনি বন্ধু ও আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে লাশ দাফন করেন । এ থেকে স্পষ্ট অনুমেয় যে, সমাজটি ছিল অশিক্ষিত, চিন্তা-চেতনায় পিছিয়ে থাকা সংস্কারহীন ও প্রতিক্রিয়াশীল ভাবমূর্তি সম্পন্ন । তারা ধার্মিক না হয়ে হয়ে হয়ে ওঠেছে ধর্মতান্ত্রিক । আর এ ঘটনাই অনুভূতি প্রবণ ও চিন্তাশীল ভাবুক আরজের মনে গভীর দাগ কাটে আর এজন্য তিনি দায়ী করেন সমাজের অজ্ঞতা-সংস্কার ও চলমান অন্ধ বিশ্বাসকে । যুগ যুগ ধরে চলে আসা লালিত অন্ধ বিশ্বাসের জন্য কতই না অন্ধ, যুক্তিহীন সংস্কার সমাজে প্রচলিত হয়ে আসছে, যা বার বার পরাজিত বুদ্ধি-বিবেক ও যুক্তির উপর । উপেক্ষিত মানবিক আকাঙ্ক্ষা-আন্তরিক ইচ্ছা ও বুদ্ধিবৃত্তিক চাহিদার উপর । এসব অন্ধ বিশ্বাসের উপর প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে উত্তর খোঁজার জন্য শুরু করেন ব্যক্তিগত মানসপটে সত্যের সন্ধান । একটি সনাতন-অনগ্রসর সমাজে চর্চা করেন সংশয়বাদ, ভেঙ্গে চুরমার করেন সব সনাতন দৃষ্টিভঙ্গি । ফ্রেটার রেইভাস বলেছেন “ বিশ্বাস তোমাকে উত্তর দেয় না । বরং শুধু প্রশ্ন করা বন্ধ করে” । আর তিনিও ধর্ম বিশ্বাসকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করার উদ্দেশে আমাদের সনাতন মনোজগতের দিকে ছুড়ে দেন অসংখ্য প্রশ্ন । প্রতিটি শাস্র অসংখ্য অসঙ্গতিতে পরিপূর্ণ বলে মনে করেন তিনি । তিনি যে পরিবার ও পরিবেশ থেকে বেরে ওঠেছেন এবং যুক্তি ও সঙ্গতিবিহীন মত ও পথের প্রতি আঙুলিনির্দেশ করেছেন, তা অবিশ্বাস্য কেবল নয়, বিরলও বটে । কেবল ইসলাম ধর্ম কেবল নয়; হিন্দু ও খ্রিষ্টান ধর্মের অবৈজ্ঞানিক নানা উপাদানের প্রতি অকুণ্ঠায় আলোকপাত করেছেন । আপাত দৃষ্টিতে তাকে কেও ধর্ম দ্রোহী মনে করলেও তিনি কোন ধর্মের প্রতি বিদ্বেষবসত তা করেননি । তিনি শাস্রীয় মতগুলোকে সত্যের নিরিখে অবলোকনের প্রয়াস পেয়েছেন মাত্র । এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন “এ প্রসঙ্গে কেও যেন মনে না করেন যে, আমরা ধর্মের বিরদ্ধাচরন করিতেছি । আমাদের অভিযান শুধু অসত্য কুসংস্কারের বিরুদ্ধে, কোন ধর্মের বিরুদ্ধে নয় । প্রতিটি ধর্ম ধাকিবে আবর্জনা বর্জিত ও পবিত্র সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত” । আমাদের সমাজের গরিষ্ঠভাগ মানুষ চিন্তায়-ভাবে, ভাবনায়-কল্পনায়, শিক্ষা-দীক্ষায় ও আচরণে মধ্যযুগীয় । বলা চলে আমরা নির্বিচারে দাসত্ব বহন করে চলেছি; বিনা প্রশ্নে, বিনা অনুসন্ধানে, অন্ধ ভক্তি ও শ্রদ্ধায় । আর যুগ যুগ ধরে চলে আসা মিথ্যা লৌকিক-অলৌকিক বিশ্বাস-প্রথা, ধ্যান-ধারণা ও কুসংস্কারকে সত্যসত্তের মুখোমুখি দাড় করিয়েছেন আরজ আলী মাতুব্বর । এক্ষেত্রে তার বৈজ্ঞানিক মন ও মনীষার সাক্ষর মেলে । বুদ্ধি ও চিন্তার ক্ষেত্রে যে যে স্থবিরতা ও জড়তা তা থেকে মুক্ত হতে হলে প্রথমত সন্দেহবাদী মনোভাব গড়ে তোলা প্রয়োজন । এক্ষেত্রে ফ্রেটার রেইভাসের সাথে তার দর্শনের মিল পাওয়া যায় । আর তাই তিনি জীবন ও জগত সম্পর্কে আপন সংশয়বাদী মনোভাব থেকে বিজ্ঞানের অভিযোজনায় সত্যানুসন্ধানে রত হয়েছেন । নিছক খ্যাতি লাভের প্রত্যাশায় নয়, একটি মুক্ত ও নির্মল বিবেকের অধিকারী ছিলেন আরজ আলি মাতুব্বর । আর তাই তাকে বলা চলে বাংলার লৌকিক দর্শনে সংশয়বাদের প্রতিষ্ঠাতা । এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন “ধর্ম জগতে এরূপ কতগুলি নীতি-প্রথা-সংস্কার ইত্যাদি এবং ঘটনার বিবরন প্রচলিত আছে যা সাধারন মানুষের বোধগম্য নহে এবং এগুলি দর্শন ও বিজ্ঞানের সহিত সামঞ্জস্যপূর্ণ নহে, এমনকি অনেকক্ষেত্রে বিপরীতও বটে” ।
বর্তমান যুগ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগ । সত্যের সন্ধান করা মানব জাতির সর্বোচ্চ নৈতিক কর্তব্য । দর্শন ও বিজ্ঞান হতে নৈতিকতার উদ্ভভ । ধর্ম থেকে যে নৈতিকতা আসে তা আসলে খুবই সীমাবদ্ধ নৈতিকতা । তাই দর্শন ও বিজ্ঞান চর্চায় মনোনিবেশ করা মানব জাতির জন্য একান্ত প্রয়োজন । আর তাই তিনি সর্বজনীন কল্যাণের জন্য সর্বজনীন মানবধর্মের পক্ষে মত প্রকাশ করেন । এক্ষেত্রে ডক্টর স্যার জুলিয়ান হাক্সলি মানব জাতির ভবিষ্যতের ধর্ম সম্পর্কে বলেন, হিউম্যানিজম (মানবতাবাদ) হবে ভবিষ্যৎ ধর্ম । মাতুব্বর হাক্সলির অনুরূপ মত প্রকাশ করেন তার বই সৃষ্টির রহস্যে (১৯৭৮) । আর এ প্রসঙ্গে উনিশ শতকের গণিতবিদ উইলিয়াম কিকর্ড বলেন “যে ব্যাক্তি তার গলাধকৃত বিশ্বাস সম্পর্কে সব সংশয় দূরে ঠেলে দেয়, ভিন্নামতালম্বী বই কিংবা মানুষের সঙ্গ এড়িয়ে চলে, তার বিশ্বাসের সাথে অসস্থিকর প্রশ্নগুলোকে ধর্মদ্রোহী আখ্যা দেয়- তার গোটা জীবন মানবতার বিরুদ্ধে এক প্রলম্বিত অপরাধ ছাড়া আর কিছুই না । মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ আসলে কত প্রলম্বিত করব আমরা” । স্থানীয় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এফ.এ.করিম কতৃক তাকে কম্যুনিস্ট, ধর্মদ্রোহী আখ্যা দিয়ে মামলা দায়ের, বই প্রকাশের নিষেধাক্কা, মাদ্রাসার ছাত্র কতৃক টানা-হেঁচড়া ও লাঞ্ছিত হওয়া মানবতার মানবতার প্রতি এক প্রলম্বিত অপরাধ ছাড়া আর কিছুই না ।
অনমনীয়, প্রবল বুদ্ধিমত্তা ও ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন আরজ আলী মতুব্বর সম্পর্কে অধ্যক্ষ সাইদুর রহমান বলেছেন “আরজ আলী মতুব্বর জীবন জিজ্ঞাসার যে চিত্র তুলে ধরেছেন তা পাঠককে চিন্তার খোরাক জোগাতে সক্ষম” । তিনি একদা কথায় বলেছিলেন “তিনি বিপুল পড়াশুনা করে পাণ্ডিত্য অর্জন করেও সত্যের উপলব্ধির ক্ষেত্রে আরজ আলী মতুব্বরকে অতিক্রম করে যেতে পারেননি” । আহমদ শরীফ বলেছেন “আরজ আলী মতুব্বরের গ্রন্থ পড়ে আমি মুগ্ধ ও বিস্মিত হয়েছি । নতুন কথা বলে নয়, তার মুক্ত বুদ্ধি, সৎ সাহস ও উদার চিন্তা প্রত্যক্ষ করে” । সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন “আরজ আলী মতুব্বর প্রথম ও নির্মম যে অন্ধকার সূচিকাল ধরে স্থায়ী হয়ে আছে এই বাংলাদেশে, তার কথাই বলেছেন তাঁর বইতে । বর্ণনা করে নয়, প্রশ্ন করে” । আখতারুজ্জামান ইলিয়াস বলেন “আরজ আলী মতুব্বর হল রেনেসাঁসের মানুষ । তাঁর দৃষ্টিতে সংশয় । চোখের মণির ভেতর আঁকা ছিল প্রশ্নবোধক চিহ্ন । প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁর অবলম্বন হল যুক্তি” । হাসনাত আব্দুল হাই বলেছেন “আরজ আলী মতুব্বর শিক্ষিত বুদ্ধিজীবীদের অহংকার ও আত্মতৃপ্তিকে শক্ত হাতে নাড়িয়ে দিয়েছেন” । বদরুদ্দিন উমর বলেছেন “তিনি ছিলেন প্রবল আত্মসন্মানবোধের অধিকারী । এজন্য মানসিক বিকাশের অনেক উঁচু স্তরে অবস্থান করেও তিনি তাঁর জীবিকা হিসেবে কৃষি কাজই করতেন । শিক্ষিত হয়ে শ্রমবিমুখ “ভদ্রলোক” সাজার চিন্তা তাঁর মনে কখনো ঠাই পায়নি” ।
সহজ সরল ভাষা, অতি প্রচলিত শব্দ তার লেখনির প্রথম ও প্রধান বৈশিষ্ঠ্য । তার লেখা সাদামাটা হলেও উজ্জ্বলে উদ্ভাসিত । শব্দের কারিগরি, ভাষার অলঙ্করণের চেয়ে তার মধ্যে মুখ্য বিষয় ছিল মনের গভীরে তাড়নার উদ্রেক সৃষ্টিকারী বক্তব্য-বিষয়কে যুক্তিযুক্ততায় প্রকাশ করা । তার প্রথম গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে সত্যের সন্ধান, এ বইটিকে নিঃসন্দেহে বাংলা লৌকিক দর্শনের সংশয়বাদের শ্রেষ্ঠ বইয়ের একটি বলে অভিহিত করা যায় । এক্ষেত্রে কারো মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, লৌকিক দর্শন কি ? লৌকিক দর্শন হল জগত ও জীবনের যেকোনো বিষয়ে অযৌক্তিক ও সামঞ্জস্যহীন চিন্তা । যে অযৌক্তিক ও সামঞ্জস্যহীন চিন্তা-দর্শন আমাদের জীবনকে বিপর্যস্তই করেনি, আমাদের মন ও মনীষাকে প্রবেশ করিয়েছে দাসত্বের অন্ধকারে । প্রচলিত শাস্রের মৌলিক জিজ্ঞাসাসম্বলিত বইটি ৬টি মূল বিষয়ের উপর বইটি লেখা । যথাক্রমে – আত্মা, ঈশ্বর, পরকাল, ধর্ম, প্রকৃতি ও বিবিধ বিষয়ক । তার অন্যান্য বইয়ের মধ্যে আছে অনুমান, মুক্তমন,সৃষ্টির রহস্য, সৃষ্টির রহস্য বইটিকে ক্ষুদ্র বিশ্বকোষ বলা হয় । আর তার মুক্তমন বইটি বিবিধ বিষয়ের নানামুখী চিন্তার একটি প্রতিফলন গ্রন্থ । তার জীবনের বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে লেখা এবং প্রকাশিত শেষ বইটি হল স্মরণিকা । এছাড়া তার অপ্রকাশিত পাণ্ডুলিপিগুলোর মধ্যে আছে সীজের ফুল (কবিতা), সরল ক্ষেত্রফল (গণিত), জীবন বানী (আত্মজীবনী), ভিখারীর আত্মকাহিনী (আত্মজীবনী), কৃষকের ভাগ্য (প্রবন্ধ), বেদের অবদান (প্রবন্ধ) ।
আরজ আলী মাতুব্বর ছিলেন মানবতাবাদী । জীবনের সর্বাবস্থায় তিনি মানবতার বানী উচ্চারণ করেছেন । লড়ায় করেছেন সমাজের অজ্ঞতা, কুসংস্কারের বিরুদ্ধে । আরজ মঞ্জিল পাবলিক লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা এবং ছাত্র বৃত্তি প্রদান আরজ আলী মাতুব্বরের মানবসেবার অন্যতম নিদর্শন । আর উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল- জনাব আরজ আলী মাতুব্বর মৃত্যুর পূর্বেই তার চোখ ও শরীর বরিশাল মেডিক্যাল কলেজের জন্য দান করে যান । এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন “ছাত্ররা যদি আমার দেহ কেটে কিছু শেখে এর চেয়ে বেশী পাওয়ার কি আছে” । আজীবনতিনি মানব সেবা করেছেন এবং সত্যের সন্ধানে পড়াশোনা করেছেন, লেখনী চালনা করেছেন । তাঁর লেখা মূলত যুক্তি, দর্শন ও বিজ্ঞাননির্ভর । প্রথাসর্বস্ব ধর্মীয় আচ্ছন্ন দৃষ্টি, কেচ্ছাকথা, গোঁড়ামির বিরুদ্ধে তিনি আজীবন বলিষ্ঠ মতামত প্রকাশ করে গেছেন । জনাব মাতুব্বর বাংলা ১৩৯২ সালে বরিশাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ।
২| ১৪ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৫:২৭
মফিজ বলেছেন: মাতুব্বর সাহেবের বই পড়ে আমার মনে হয়নি যে তিনি সত্য অনুসন্ধান করছেন বরং মনে হয়েছে তিনি ইসলামের ছিদ্র অনুসন্ধানে ব্যস্ত ছিলেন।
©somewhere in net ltd.
১|
১৪ ই জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৫:১০
আহসানের ব্লগ বলেছেন: এই লেখা লেখির একটি অনবদ্য জগতে আপনাকে স্বাগতম,

ভালো থাকবেন,
লিখবেন,
পড়বেন
এবং মন্তব্য করে অন্য লেখক দের উৎসাহিত করবেন।