![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী সকল
শহিদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জানাচ্ছি সশ্রদ্ধ
সালাম।
পূর্বে আমি বলেছিলাম যে ভালবাসা দেখান যায়
সেটা কোন ভালবাসা নয়
বরং যে ভালবাসা যে ভালবাসা দেখানো যায়না কিন্তু
মনের মধ্যে লালন করা যায় সেটাই প্রকৃত
ভালবাসা।
আজ জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে ২ লাখ ৫৪ হাজার
৬ শত ৮৪ জন মানুষ একত্রে সমবেত হয়েছিল
একসঙ্গে জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে গিনেজ বুকের
পাতায় নতুন করে রেকর্ড লিখবে বলে। আমি এর
সমালোচনা করছি না তবে এটাকে যদি দেশপ্রেমের
বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করেন তবে ভুল করবেন।
জ্ঞাতার্থে বলে রাখছি ভালবাসা কিংবা প্রেম
লুকায়িত থাকে মানুষের অন্তরে গিনেজ বুকের
পাতায় নয়।
আমরা এখনো চেতনা নিয়ে মঞ্চে দাঁড়িয়ে উচু
গলায় বক্তৃতা দেই আবার রাতের বেলায় তার গায়েই
গরম জল ঢালি। মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধ বলে গলায়
রক্ত ওঠানো যত সহজ একে ধারণ করা ততটাই
কঠিন। একটু বুঝিয়ে বলি। মুক্তিযুদ্ধ
শব্দটা কোথা থেকে এলো এই কথা কোনদিন
ভেবেছেন কি?? খেয়াল করে দেখুনতো যদি আমাদের
বীর যোদ্ধারা যুদ্ধ না করত
তবে কি আদৌ মুক্তিযুদ্ধ নামক কোন শব্দের
উৎপত্তি হত বাংলাদেশে?? তাহলে কোথায়
আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা?? কে রেখেছে তাঁদের
খবর?? শুধুমাত্র ৬২৪ জন (আরো কিছু
বেশি হতে পারে) ছাড়া বাকি মুক্তিযোদ্ধারা কেন
পেল না তাদের যোগ্য সম্মান?? শুধুমাত্র
আত্মদানকারী বুদ্ধিজীবীদের তালিকা করা হয়েছে।
কেন আত্মদানকারী কৃষকের তালিকা হয়নি?? কেন
আত্মদানকারী শ্রমিকের তালিকা হয়নি?? কেন
আত্মদানকারী মায়েদের তালিকা হয়নি?? কেন
সম্ভ্রমদানকারী বোনদের তালিকা হয়নি?? উত্তর
আছে এর?? কবি এখানেই নীরব। কারণ
আমরা পারি চেতনা নিয়ে বড় বড়
বুলি ছুড়তে,টকশো করতে আর ব্যবসা করতে।
চেতনাকে ধারণ করতে আমরা ব্যর্থ। সরকারের
আমলা মন্ত্রীরা ব্যস্ত তাদের আখের
গোছাতে এদের দিকে তাকানোর মত সময় এদের হয়
না। আমাদের প্রধানমন্ত্রী যখন গাড়িতে দেশের
পতাকা লাগিয়ে এদিক ওদিকে ঘুরে বেড়ান ঠিক সেই
রাস্তা দিয়েই দেশের জন্য জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ
করা কোন যোদ্ধাকে দেখা যাবে পেটের দায়ে এদিক
ওদিক উদভ্রান্তের মতো ছুটে বেড়াতে।
প্রধানমন্ত্রী কি কখনো ভেবে দেখেছেন যদি এই
লোকগুলো না থাকত তবে তিনি এই দেশের
প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন না।
প্রধানমন্ত্রী বরাবর এই প্রশ্ন করার সাহসও
কারোর হবে না যদিও এটা গণতান্ত্রিক দেশ।
ব্যপারটা হাস্যকর হলেও সত্যি।
এই দেশের রাজাকারেরা গাড়িতে দেশের
পতাকা লাগিয়ে স্মৃতিসৌধে গিয়ে শহিদদের
স্মরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর ভয়ানক নাটক
করতে পারে এবং দর্শকদের তুমুল হাততালিও পায়
তবে মুক্তিযোদ্ধারা কেন এত উপেক্ষিত থাকবে??
রাজাকারদের সম্পর্কে যেটা এতক্ষণ বললাম
সেটা এখন তাদের কাছে অতীত কিন্তু দুঃখজনক
হলেও সত্যি উপরোক্ত কথাটি একসময়
এদেশে সত্যি ছিল।
এইসব যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের
বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে আবার এদেশেরই কিছু
মানুষ এবং কতিপয় রাজনৈতিক দল।
শুধুমাত্র আখের গোছানো আর হীনস্বার্থ চরিতার্থ
করার জন্য মানুষ কত নিচে নামতে পারে তার
উদাহরণ দিতে গেলে যদি প্রথমেই বাংলাদেশের নাম
চলে আসে তাতে বোধকরি আপনি অবাক হবেননা।
গত ৪৩ বছর ধরে তো এই প্রতিযোগিতাই
চলে এসেছে বাংলাদেশে।
যদি সত্যিই আমাদের মধ্যে দেশপ্রেম থাকত
তবে দুর্নীতিতে বাংলাদেশ বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হত না।
বিশ্বের সমস্ত
নামকরা গণমাধ্যমে বাংলাদেশে চলমান সংঘর্ষের
খবর ঢালাও করে প্রচারিত হত
না কিংবা কোটি কোটি টাকা খরচ
করে লাখো কন্ঠে সোনার বাংলা গেয়ে গিনেজ
বুকে নাম লেখাতে হত না। আমাদের মধ্যে দেশপ্রেম
থাকলে দেশপ্রেমিক হিসেবে বিশ্বের
দরবারে আমাদের নাম এমনিই চলে আসত।
মানুষ মাত্রই আশাবাদী আর আজকের
আশা আগামীকালের ব্যাথা বেদনাকে সহ্য করার
ক্ষমতা দেয়। তাই আমি আশাবাদী একদিন এই
দেশটায় সব সমস্যার সমাধান হবে। প্রতিটি মানুষ
দেশপ্রেমিক হবে, দেশের কথা ভাববে, দেশের জন্য
কাঁদবে, দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করতেও
পিছপা হবে না।
কে বলতে পারে, আগামীকাল যে নতুন সূর্য
উঠবে সে যে আজকের রূপ পাল্টে নতুন
রূপে উঠবে না??
অনিক মাহফুজ
২৭/৩/১৪
©somewhere in net ltd.