![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কে আমাকে ফুলের মালায় বরণ করল, আর কে আমাকে জুতার মালায় বরণ করল ! তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসে না। আমি যেন সব সময় সত্য দ্বারা পক্ষপাত দুষ্ট হই। এটাই নিজের কাছে নিজের প্রত্যাশা।
হ্যা, আমি আসিফের সাথে একমত. শুধু দুইটি লাইন বাদে. "১. দেব ভাড়. ২. শহীদ মিনার হাসাহাসির জায়গা না... "
১) দেবকে আমি পছন্দ করি. তার ভাড়ামী আমি কখনো দেখিনি. দেখেছি ভারতীয় বাংলা ছবির একজন পরিবর্তন কারী হিসেবেই.. সে সিনেমায় যা করে সেটা চরিত্রের খাতিরে. সেখানে তার কোন হাত নেই। সে পরিচালকের হাতের পুতুল। পরিচালক যেভাবে নাচাবে, সে তো সেভাবেই নাচবে।
২) শহীদ মিনার আমাদের মুক্তির ও বিজয়ের প্রতিক। সেখানে গিয়ে হাসব, কাদব, নাচব, খেলব, বলব........ মন যা বলবে তাই করব। শহীদ মিনার কেবল কান্নার জায়গা না। শহীদ মিনারকে ঘিরে ইতিহাস কেন্দ্রিক যে একতরফা ব্যবসা চলে ও সেই ব্যবসাকে হালাল করতে ব্যাখ্যা প্রদান করা হয় আমি তার বিরোধী।
কিন্তু এর পরেও আসিফের কথা মূল্যবান। কেননা, দেব কথাটা কোথায় বলেছে? কেন বলেছে? কখন বলেছে? কি বলেছে? এগুলো ভেবে দেখতে হবে। দেব মিডিয়ায় কাজ করছে আজ প্রায় ৬/৭ বছর হল। ৭ বছরে কিন্তু কখনই সে কথাটা বলেনি। আবার কথাটা সে কোলকাতায় বলেনি। বলেছে বাংলাদেশে। এমন এক সময় বলেছে যখন বাংলাদেশে ভারত বাজার বিস্তার করতে চাচ্ছে।
তার এই কথাটাকে যতটা নায়ক দেবের বক্তব্য ভাবা হচ্ছে তার থেকেও বেশি এটা তৃনমূল সংসদ দেবের বক্তব্য। এখানে রাজনীতি মিশে আছে। এবং একজন রাজনৈতিক দলের প্রধানের রাজনৈতিক সফর সঙ্গী হিসেবে এসে সে এই কথাটা বলেছে "দুই বাংলাকে এক করে দেও" . সুতরাং এটা যতটানা মাটির টান, স্বজাতির টান। তার থেকে অধিক রাজনৈতিক ফায়দা লোটার মনোবাসনা।
একবার তসলিমা ভারত থেকে নেপাল যাওয়ার জন্য যখন দিল্লি বিমানবন্দরে গেল তখন তার পাসপোর্ট নিতে ভুলে গিয়েছিল। সে অনেক অনুনয় বিনয় করলেও বিমানবন্দর থেকে তাকে ফিরে আসতে হয়। সে বাসায় এসে টুইটার/ফেসবুকে একটা কথা বলেছিল- "আমি তো কখনো নেপালকে অন্য একটা দেশ ভাবিনি". অমনি কাঠমুন্ডু বইমেলা কমিটি জানিয়ে দিল- "প্লিজ আপনার আসার প্রয়োজন নেই। আপনি না আসলেই আমরা খুশি হব".
তসলিমা হয়ত কথাটা বলেছিল বৈশ্বিক নাগরীক চিন্তা থেকে। সেটা খুবই স্বাভিক দেশহীন একজন মানুষের জন্য। কিন্তু নেপালীরা তাতে আহত হয়েছিলেন। কারণ তারা তাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী। পাহাড়ে গিয়ে যখন বঙ্গবন্ধু বলল যে আসুন সবাই বাঙালি হয়ে যাই (মূল লাইনটা মনে নেই), তখনও কিন্তু পাহাড়িরা আহত হয়েছিল। তারা তাদের জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী। প্রত্যেক সম্প্রদায়, দেশ, গোষ্ঠীরই কিছু জাতীয়তা বোধ থাকে। এগুলোর কারণেই পৃথিবী রঙিন। এই জাতীয়তা বোধ হল রক্ষা কবচ। এই বোধ না থাকলে সব ভেঙ্গে পড়বে। আমাকে কেউ রক্ষা করবে না। ভারতে আসতে যখন আমাকে পাসপোর্ট দেখাতে হয় তখন অবশ্যই আমার আলাদা আইডেন্টটিটির প্রয়োজন আছে ও রক্ষা করারও প্রয়োজন আছে।
বাঙালী ও বাংলাদেশীর মাঝে স্পষ্ট সীমারেখা আছে। আমি বাঙালী বলে নাচতে গিয়ে আমার সার্বভৌমত্ব জলাঞ্জলি দিতে পারিনা। এই আইডেন্টটিটি কিনতে আমাকে ত্রিশ লক্ষ্ তাজা প্রাণ বলী দিতে হয়েছে। আমি যে পরিচয় এত দাম দিয়ে কিনেছি সেটা চাইলেই বিলীন করতে পারিনা।
ভারত বিদ্দেশী মনোভাবে বিএনপির লাভ আছে। ভারত প্রীতি দেখিয়ে আওয়ামীলীগের লাভ আছে। কিন্তু ক্ষতিটা আমার। কারণ আমাকে ঐ পাসপোর্ট রক্ষা করতে হবে আমার নিজের সম্মানার্থে।
দেব হয়ত অনেক বেশি ভেবে কথাটা বলেনি। কিন্তু যা বলেছে সেটা আমার মৃত্যুর আভাস। সুতরাং প্রতিবাদ হওয়া উচিত। এই প্রতিবাদ না হলে বড় মাসুল দিতে হবে। ভারতে থাকার সুবাদে ভারতীয় সমস্যাগুলো খুব ভালো করে বুঝতে পারি। মণিপুরে ফতোয়া দিয়ে হিন্দি সিনেমা বন্ধ করা হয়েছে। তারা বিশ্বাস করে হিন্দি আমাদের কালচার না। তাই নিজেদের রক্ষা করতেই তারা তা বন্ধ করেছে। এদিকে তামিলনাড়ু ও আন্ধা প্রদেশে হিন্দি ছবি আমদানি বা প্রদর্শনে রয়েছে কঠিন নিয়ম। সুতরাং বুঝতেই পারছেন ভারতের অঙ্গরাজ্য গুলোর মাঝেই যখন সিনেমা/ কালচারের অবাধ লেনদেন নাই, তখন শুধু মাত্র বাঙালিত্বের দোহায় দিয়ে দুটো দেশকে এক করে দিতে পরিনা।
প্রকৃত কথা হল ব্যবসা। ব্যবসায়িক নিরাপত্তার জন্যই তারা অন্য কালচারকে ঢুকতে দিতে রাজি না। সুতরাং আমাদেরও ব্যবসাটা বুঝতে হবে। আজ ভারতীয় বাংলা সিনেমা আসলে কাল আসবে হিন্দি। আসবে হিন্দি সিনেমার ঠাটবাট। তখন ঐ ঠাটবাট ওয়ালা সালমান খান, শারুখ খানরা আসবে তাদের পণ্য লঞ্জ করতে। আমাদের নিজেদের পন্যের চাহিদা লোপ পাবে। ভারতীয় পন্যের চাহিদা বাড়বে। সুতরাং নিজেদের বাজার নিয়ন্ত্রনের জন্যই নিজেদের রক্ষা করতে হবে।
আমি ১০০% নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে পারি। বাংলাদেশ ভারত থেকে আজ গাড়ি আমদানী বন্ধ করে দিলেই অন্তত ৩ বছরের মধ্যে কমপক্ষে ৩ টি বাংলাদেশী গাড়ি নির্মাণ কোম্পানী জন্ম নেবে। ওয়াল্টনের ব্যবসা ৫ গুন বেড়ে যাবে। দেশীয় পন্যের বাজার বড় হবে।
কোলকাতায় আমার অনেক দিন কেটেছে। আসতে যেতে এখনো থাকা পড়ে কোলকাতায়। কোলকাতার ৭০% মানুষ তার পূর্ব পরিচয়ের জন্য নস্টালজিক। তারা সেই দেশ ভাগের কষ্ট ভুলতে পারেনি। এই না পারা থেকেই তারা এখনো বাংলাদেশকে পাড়ার নিষিদ্ধ গলী মনে করে। যেখানে তাদের যাওয়ার অনুমতি নেই বা তারা যায় না। একারণে তারা আমাদের আপন ভাবার নামে অনেকটা তাচ্ছিল্যই করে। সেই তাচ্ছিল্য থেকে আমাদের প্রতি পজন্ম থেকে প্রজন্ম কিছু ভুল ধারণা বহন করছে কোলকাতার বাঙালিরা।
তারা এখনো ভাবে আমরা সভ্য না। আমরা ব্যবসা বুঝি না। আমরা কালচার বুঝি না। আমরা রাজনীতি বুঝি না। ৬০ বছর আগে পূর্ব বঙ্গকে এদের বাপ ঠাকুরদা যেভাবে দেখে গিয়েছিল এখনো সেভাবেই তারা ভাবে। এর জন্য অবশ্য আমাদেরও দায় কম না। বাংলাদেশী মধ্যবিত্ত বাঙালিদের কাছে বিদেশ ভ্রমন মানেই কোলকাতা ভ্রমন, ভারত ভ্রমন মানেই কোলকাতা ভ্রমন। তারা কারণে অকারণে কোলকাতা ভ্রমন করে। এই ভ্রমণের উপরে নির্ভর করে কোলকাতা কত প্রকারের ব্যবসা ফেঁদে বসে আছে সেটা যারা ঘুরতে আসেন তাদের কম জানা নয়। কারণে অকারণে লাফিয়ে লাফিয়ে হোটেল ভাড়া বাড়ছে, কারণে অকারণে দুই রুপির আটার রুটি বাইশ রুপী হয়ে যাচ্ছে। আমরা তবুও বুঝতে পারছি না। কোলকাতায় আমি এমন বাংলাদেশীদেরও দেখেছি যারা হোটেল ভাড়া মেটাতে পারবে না বলে/ হোটেলের সিট্ খালি নেই বলে সারা রাত শীতের মধ্যে রাস্তায় ফুটপাতে বসে থেকেছে। এগুলো সবই ব্যবসার ফল। তারা প্রতিনিয়ত আমাদের নিয়ে ব্যবসা করছে। আমরা ব্যবসার স্বীকার। আমাদের অন্তত সেই ব্যবসাটা বোঝা উচিত। অন্যথায় আমাদের আরো বেশি আমদানী নির্ভর দেশে রুপান্তরিত হতে হবে।
দুই বাংলাকে নিয়ে সিনেমা করা, গৌতম ঘোষের লালন নির্মাণ, রুহিকে গ্লামার সিনেমার নাইকা নির্বাচন, জয়াকে ফিল্ম ফেয়ারের মঞ্চে তুলে নেওয়া, ফারুকির সিনেমাকে নেটপ্যাক দেওয়া এগুলো সব কিছুর পেছনেই আছে ব্যবসা। যেমন আছে স্লামডগ মিলেনিরারকে অস্কার দিয়ে ভারতে, হলিউডের ব্যবসা প্রতিষ্ঠার।
আমি অবস্যই চাই বিশ্বায়নের এই যুগে ব্যবসা বিস্তৃত হোক, সংস্কৃতি বিস্তৃত হোক। কিন্তু অবস্যই সেটা আদান প্রদানের মধ্য দিয়ে। এক তরফা ব্যবসার মধ্য দিয়ে না।
সুতরাং বুঝতে বাকি থাকার কথা না যে তৃনমূল কংগ্রেসে এত মেধাবী নেতা থাকার পরেও কেন দেবের মত একজন নায়ক মমতার সফর সঙ্গী হয়..... বুঝতে হবে বাংলাদেশী দর্শকের কাছে দেবের গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু! আর সেটা মমতা ঠিকই আবিষ্কার করে নিয়েছে.............
২| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:১৫
আজকের বাকের ভাই বলেছেন: "বুঝতে বাকি থাকার কথা না যে তৃনমূল কংগ্রেসে এত মেধাবী নেতা থাকার পরেও কেন দেবের মত একজন নায়ক মমতার সফর সঙ্গী হয়..... বুঝতে হবে বাংলাদেশী দর্শকের কাছে দেবের গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু! আর সেটা মমতা ঠিকই আবিষ্কার করে নিয়েছ।" সরল ভাষায় তিক্ত কথা, অসাধারণ
৩| ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:৪৫
Parsa_Saifan বলেছেন: বাংলাদেশ ইতিমধ্যে গাড়ি নির্মাণ কারখানা স্থাপনের প্রস্তুতি নিয়েছে। এ ব্যাপারে বিশ্বখ্যাত
গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান প্রোটন সাগার (পেরুসাহান অটোমোবাইল ন্যাশনাল এসডিএন বিএইচডি) সাথে চুক্তি হয়েছে। আশা করা যায় এক বছরের মধ্যে তা বাজারজাত হবে।
©somewhere in net ltd.
১|
২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৬
প্রামানিক বলেছেন: ভাল লাগল। ধন্যবাদ