নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার আগে একজন মা। একজন স্ত্রী এবং নিঃসন্দেহে প্রেমিকা। একজন দন্ত চিকিৎসক। আর হ্যা, একজন বইপোকা! শেষ হয়েও হইলোনা শেষ - একজন লেখক।

অন্তরা রহমান

মানুষ নেশা করতে পানীয় খুঁজে, আমি খুঁজি বই। এই একটাই নেশা আমার। পড়তে পড়তেই লেখার ইচ্ছে জন্মাল। আর তার জন্য হাত মকশো করি এখানে এসে।

অন্তরা রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বর্গসন্ধানী ০৩ (Tower of Babylon - Ted Chiang)

০৭ ই এপ্রিল, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৩২

প্রথম পর্ব আগে পড়ে নিন!

তারপর দ্বিতীয় পর্ব পড়ুন!

বিকেলে সকলে মিলে যব, পেঁয়াজ আর মসুরের ডাল দিয়ে বানানো একটি খাবার খেল আর রাতে ঘুমাল সোপান থেকে মিনারের ভেতরে চলে যাওয়া সঙ্কীর্ণ পথগুলোতে। পরের দিন সকালবেলা ঘুম থেকে জেগে ওঠার পর দেখা গেল, খনকদের পক্ষে দু কদম চলাও সম্ভব হচ্ছে না তীব্র পায়ের ব্যথার জন্যে। টানাগাড়ি চালকরা প্রথমে খুব একচোট হেসে নিলো আর তারপর মলম দিল পায়ে লাগানোর জন্য। সেই সাথে খনকদের গাড়ি থেকে কিছু মালপত্র সরিয়ে নিজেদের গাড়িতে নিয়ে তাদের বোঝাটাও যথাসাধ্য কমিয়ে দিল।

এই উচ্চতাতে, সোপানের পাশ দিয়ে তাকাতে গেলে হিলালুমের হাঁটুতে কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে যেত। মিনারের মধ্যে সারাক্ষণই বাতাস একই গতিতে বয়ে চলছে আর অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে যত উপরে যাওয়া হবে বাতাসের গতিও তার সাথে ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাবে। মাঝে মাঝে সে অবাক হয়ে ভাবছিল, কখনো কি কোন অসতর্ক মুহূর্তে কেউ বাতাসের ধাক্কায় এই মিনার থেকে পড়ে গিয়েছে? আর সেই সুদীর্ঘ পতনে যতটুকু সময় লাগবে, তাতে জীবনের শেষ প্রার্থনাটুকু বেশ ভালোমতো কেঁদেকেটে করা সম্ভব যে কোন মানুষের পক্ষে। ভাবতে গিয়ে শিউরে উঠলো হিলালুম।

খননকারীদের পায়ে ব্যথা ব্যতীত অন্য কোন সমস্যা ছাড়াই দ্বিতীয় দিনটা হুবহু প্রথম দিনের মতনই কেটে গেল। এখান থেকে বহুদূর অব্ধি দেখা যায়। দিগন্ত জুড়ে প্রসারিত মাঠ, সেই মাঠের শেষে শুরু হয়েছে বালিয়াড়ি আর পিঁপড়ার সাড়ির মতন ছোট ছোট কারাভানের ছুটে চলা - দৃশ্যটা মনোমুগ্ধকর। আর কোন খনকের উচ্চতা ভীতি জনিত এমন উপসর্গ দেখা দেয় নি যাতে তার পক্ষে মিনারে আরোহণ করাটা অসম্ভব হয়ে পড়বে। সবকিছু ঘটনাবিহীনভাবেই এগোচ্ছিল।

তৃতীয় দিনেও খনকদের পায়ের অবস্থার কোন উন্নতি হতে দেখা গেল না। নিজেকে একজন খোঁড়া বৃদ্ধ লোকের মতন মনে হল হিলালুমের। চতুর্থ দিনে এসে অবশ্য দেখা গেল সকল খনকদের পায়ের ব্যথাটা অনেক কমে গিয়েছে। তাদের টানাগাড়ির মালপত্র আবারও সমবন্টন করাতে ওজন আগের অবস্থায় ফিরে এসেছে। বিকেল পর্যন্ত মিনারে আরোহণ চলতে থাকলো যতক্ষণ না টানাগাড়ি চালকদের দ্বিতীয় দলটা দৃষ্টিগোচর হল। তারা চটজলদি নেমে আসছিল নিম্নগামী সোপান দিয়ে কারণ তাদের সাথে ছিল খালি গাড়ি। ঊর্ধ্বগামী আর নিম্নগামী সোপান দুটি পাশাপাশি কিন্তু পরস্পরকে স্পর্শ না করে মিনারের দৈর্ঘ্য জুড়ে সুবিন্যস্ত ছিল। মিনারের ভেতরে চলে যাওয়া রাস্তা ব্যবহার করে সহজেই এক সোপান হতে আরেক সোপানে যাওয়া যেত। যখন দুইটি টানাগাড়ির সারি সম্পূর্ণভাবে পরস্পর সমান্তরাল হল, তখন দুই দলের চালকেরা শুধু নিজেদের মধ্যে জায়গা বদল করে নিলো।

খনকদের সাথে দ্বিতীয় দলের চালকদের পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়েছিল আর সেদিন রাত্রে সবাই একত্রে খাওয়া-দাওয়া, আড্ডাবাজি করল। পরের দিন সকালে প্রথম দলটি খালি টানাগাড়িগুলো নিয়ে ব্যবিলনের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করল। লুগাটুম, হিলালুম আর নান্নিকে বিদায় জানাতে আসল।
“তোমাদের এই টানাগাড়িটার যত্ন নিও। যতবার সে এই মিনারের চূড়ায় উঠেছে কোন মানুষও ততবার এই দূরত্ব অতিক্রম করেনি।”
“এখন কি গাড়িটাকেও ঈর্ষা করা শুরু করলে নাকি?” নান্নি জিজ্ঞাসা করল।
“নাহ, কারণ প্রতিবার চূড়া স্পর্শ করার পরই গাড়িটাকে আবার ব্যবিলনে ফিরে আসার প্রস্তুতি নিতে হয় পরবর্তী যাত্রার জন্য। আমার পক্ষে সেই কষ্ট সহ্য করা কখনোই সম্ভব হত না।”

........................

দ্বিতীয় দলটির সাথে সারাদিন আরোহণ শেষে যখন সকলে থামল, হিলালুম আর নান্নির ঠিক পেছনের টানাগাড়ি চালক তাদের একটা বিশেষ ঘটনা দেখাতে আসলো। তার নাম ছিল কুদ্দা।
“এই এতটা উঁচুতে কখনও সূর্যাস্ত হতে দেখেছ? আসো, দেখবে।“ কুদ্দা সোপানের কিনারে গিয়ে তার পা দুটো বাইরে শূন্যে ঝুলিয়ে বসে পড়লো। হিলালুম আর নান্নির দ্বিধাগ্রস্ততা তার চোখে ধরা পড়েছিল তাই সে আবার ডাক দিল। “আরে চলে আসো, যদি বসতে অস্বস্তি লাগে তবে এক কাজ কর। শুয়ে পড়ে এই কিনার দিয়ে গলা বাড়িয়ে উঁকি মেরে দেখ।” নিজেকে ভীতু বলে পরিচয় দেয়ার কোন ইচ্ছে হিলালুমের ছিল না। কিন্তু মাটি থেকে এই হাজারো কিউবিট উপরে সোপানের ঐ কিনারায় বসার মত সাহসও তার ছিল না। কাজেই সে উপুড় হয়ে শুয়ে পড়লো, আর কুদ্দার কথামতো সোপানের কিনার দিয়ে মাথা বের করে উঁকি দিল। নান্নিও একই কাজ করল।
“যখন সূর্যাস্ত হবে, মিনারের এই পাশটায় নজর রেখ কি হয়।“ হিলালুম নীচে তাকাল, তারপর এক ঝলক দূর দিগন্তে ডুবন্ত সূর্যটাকে দেখল।
“সূর্যাস্তের আবার ভিন্নতা হয় কি করে?”
“আচ্ছা ধরো, ঐ দূর পশ্চিমের পাহাড়গূলোর পেছনে সূর্যটা অস্ত গেল আর সিনাই উপত্যকা জুড়ে রাত নেমে এলো। কিন্তু, আমরা তো এখন ঐ পাহাড় থেকে অনেকটা উঁচুতে আছি। কাজেই এখনো সূর্য দেখতে পাচ্ছি। এখানে রাত নামাতে হলে তাই সূর্যকে আরও অনেকটা নীচে নামতে হবে।”
ব্যাপারটা মাথায় ঢুকা মাত্র হিলালুমের চোয়াল ঝুলে পড়লো বিস্ময়ে। “তার মানে ঐ পাহাড়ের ছায়াটাকেই নীচে সকলে রাত্রির শুরু বলে ভাবে। আর এখানে সূর্যাস্ত হওয়ার আগেই নীচের পৃথিবীতে রাত নেমে আসে।”
কুদ্দা মাথা ঝাঁকিয়ে সম্মতি জানাল। “তুমি মিনারের এই পাশটা জুড়ে রাত হতে দেখতে পাবে, নীচ থেকে উপরে আকাশ পর্যন্ত। যদিও খুব ঝট করেই হয় তবে তারপরও দেখতে সমস্যা হওয়ার কথা না।”
এক মুহূর্তের জন্য সূর্যের লাল গোলাকার অবয়বটার দিকে তাকাল সে আর তারপর নীচের দিকে তাকিয়ে অঙ্গুলিনির্দেশ করল।
“এখন!”

হিলালুম আর নান্নি নীচে তাকাল। মিনারের ভিত্তিমূলে যেখানে ব্যবিলন শহরটা থাকার কথা, হঠাৎ ছায়াচ্ছন্ন হয়ে পড়ল। আর তারপরই একরাশ অন্ধকার উপরের দিকে উঠতে শুরু করল যেন কেউ চট করে রাত্রির শামিয়ানা টেনে দিচ্ছে মিনারের গা জুড়ে। এত ধীর গতিতে ছায়াটা উঠে আসছিল যে হিলালুমের কাছে সময়টাকে অনেক দীর্ঘ মনে হচ্ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে ছায়াটার গতি বাড়তে লাগলো আর পলক ফেলার পূর্বেই তাদের অতিক্রম করে ঢেকে দিয়ে গেল গোধূলির আলোয়। হিলালুম এবার চিত হয়ে উপরে তাকাল। বাকি মিনারের গায়ে আর যতটুকু পর্যন্ত দৃষ্টি যায়, বিদ্যুৎ বেগে রাত নেমে আসলো। ধীরে ধীরে আকাশটা ফিকে হয়ে আসল। বহুদূরে, পৃথিবীর আরেক প্রান্তের কিনারায় সূর্য তখন ডুবে গিয়েছে।
“কি, দেখার মতন জিনিস না?” কুদ্দা জিজ্ঞেস করল।
হিলালুম তখন উত্তর দেয়ার মতন অবস্থায় নেই। এই প্রথমবার তার কাছে মনে হচ্ছিল, সূর্য আড়ালে চলে যাওয়ায় আকাশের গায়ে পৃথিবীর যে ছায়া পরে তাকেই রাত বলে।

........................

আরও দুইদিন পার হয়ে গিয়েছিল মিনারে আরোহণ করতে করতে আর হিলালুমও এই ক্রমবর্ধমান উচ্চতার সাথে দারুণভাবে খাপ খাইয়ে নিয়েছিল। যদিও মাটি থেকে তারা প্রায় এক লীগের মতন উপরে উঠে এসেছিল, তবে এখন হিলালুম অনায়াসে মিনারের কিনারে দাঁড়িয়ে থাকতে ও নীচে উঁকি দিতে পারতো। সোপানের কিনারে থাকা একটি স্তম্ভের প্রান্তদেশ ধরে হিলালুম বাহিরের দিকে ঝুঁকল ও সতর্কতার সাথে উপরের দিকে তাকাল। সে লক্ষ্য করলো উপরের দিকে মিনারটিকে আর কোন মসৃণ স্তম্ভের মতন মনে হচ্ছে না।
সে কুদ্দাকে জিজ্ঞেস করল, “উপরের দিকে মিনারটা আরও চওড়া হয়ে গিয়েছে বলে মনে হচ্ছে। সেটা কি করে সম্ভব?”
“ভালো করে তাকিয়ে দেখ। পাশ থেকে বাহিরের দিকে কাঠের ঝুল বারান্দা বের হয়েছে। বারান্দাগুলো সাইপ্রাসের কাঠ দিয়ে তৈরি আর ঝুলে আছে শণের দড়িতে ভর করে।”
“বারান্দা? তার আবার কি দরকার?” হিলালুম কটাক্ষ করে বলল।
“বারান্দাগুলোর মেঝেতে মাটি ছড়ান আছে, যাতে মানুষজন সেখানে শাকসবজি ফলাতে পারে। এই উচ্চতায় পানি পাওয়াটা বেশ মুশকিল, কাজেই সাধারণত পেঁয়াজটাই বেশি ফলানো হয়। আরও উপরের দিকে, যেখানে নিয়মিত বৃষ্টি হয়ে থাকে, তুমি শিম, মটরশুঁটি আর বরবটিও দেখতে পাবে।”
নান্নি প্রশ্ন করল,” উপরে বৃষ্টি হচ্ছে অথচ সেটা এখানে এসে পড়ছে না কেন?”
কুদ্দা অবাক হয়ে নান্নির দিকে তাকাল, “বাইরের বাতাসে এত উপর থেকে পড়তে পড়তে আপনা হতে শুকিয়ে যাওয়াটাই তো স্বাভাবিক!“
নান্নি কিছুটা বিব্রত হয়ে বলল, “হ্যাঁ, তাই তো।”

পরের দিন বিকেল নাগাদ হিলালুমরা বারান্দার স্তরে এসে পৌঁছল। মিনারের সাথে আনুভূমিকভাবে, সমতল ভাবে বাঁধা ছিল মাচাগুলো; পেঁয়াজের ভারে আনত। উপরের তলার বারান্দাগুলোর একটু নীচ হতে, মিনারের দেয়ালে গাঁথা মোটা শণের দড়ি মাচাগুলোর ভারবহন করছে অনায়াসে। প্রতি তলাতেই মিনারের ভেতরের দিকে কিছু চিকন, ঘিঞ্জি কক্ষ আছে যেখানে টানাগাড়ি চলকদের পরিবার-পরিজন থাকে। বাসার চৌকাঠে বসে মহিলারা আলখাল্লা সিলাই করছে কিংবা বাগান থেকে পেয়াজের কন্দ তুলে আনছে। বাচ্চা-কাঁচ্চাগুলো সোপানের ওপরেই ছোঁয়াছুঁয়ি খেলছে, টানাগড়িগুলোর মাঝ দিয়ে বাতাসের বেগে ছুটতে ছুটতে এই তলা থেকে সেই তলায়। কিছু ডাকাবুকো বাচ্চা সোপানের একেবারে কিনার ঘেঁষেই ছুটছে, বাধাহীনভাবে। মিনারের অধিবাসীরা একনজরেই টানাগাড়ি চালকদের থেকে খনকদের আলাদা করতে পারছিল। তাদের মুখে ফুটে উঠছিল সৌজন্যতামূলক হাসি, কিংবা এক মুহূর্তের জন্য হাত নেড়ে তাদের বিদায় জানাচ্ছিল।

বৈকালিক নাস্তার সময় হলে পড়ে, টানাগাড়িগুলো এখানেই দাঁড় করানো হল। চালক আর খনকদের পাশাপাশি এখানকার অধিবাসীদের খাওয়া-দাওয়ার জন্যেও গাড়িগুলো থেকে খাবার নামানো হল। টানাগাড়ি চালকরা নিজেদের পরিবারের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করতে গেল আর তাদের সাথে খনকদের নাস্তা খাওয়ার দাওয়াত দিতেও ভুল করলো না। হিলালুম আর নান্নি, কুদ্দার পরিবারের সাথে খাওয়া দাওয়া করলো। শুকনো মাছ, রুটি, খেজুরের মদ আর ফল দিয়ে দারুণ নাস্তা হল।

হিলালুম দেখছিল মিনারের এই স্তরে, ঊর্ধ্বগামী আর নিম্নগামী দুই সারি সোপানের ঠিক মধ্যখানে, সরু এক রেখার মতন ছোটখাটো শহর গড়ে উঠেছিল। উৎসব কিংবা পালা-পর্বন, ধর্মচর্চার জন্যে একটা মন্দির ছিল; নিজেদের মধ্যেকার ঝামেলা মিটমাট করার জন্য হাকিম আর বেশ কিছু দোকান যারা কিনা টানাগাড়ি থেকেই নিজেদের মজুদ যোগার করতো। টানাগাড়ি আর এই শহরের মধ্যেকার সম্পর্কটা ছিল অবিচ্ছেদ্য, একটিকে ছাড়া আরেকটির কথা যেন কল্পনাও করা যেত না। যদিও টানাগাড়িগুলো আসলে ক্রমাগত ছুটে চলছিল, মিনারের ভেতর সোপান ধরে উপরে আর নীচে; অবিশ্রান্তভাবে। অন্যদিকে, এই শহরটিও আসলে কোন স্থায়ী নিবাস ছিল না। এক শতাব্দী-প্রাচীন যাত্রার অংশ হিসেবে এর উৎপত্তি আর বিকাশ।

সান্ধ্য ভোজন শেষে হিলালুম কুদ্দা আর তার পরিবারকে প্রশ্ন করলো, “তোমাদের মধ্যে কেউ কখনো ব্যবিলনে যাও নি?”
কুদ্দার স্ত্রী, আলিতু্‌ম, উত্তর দিল, “না, আসলে তার কোন প্রয়োজন বোধ করি না। অনেকটা পথ নামতে হবে, আবার কষ্ট করে উঠে আসতে হবে। আমাদের যা যা প্রয়োজন সবই তো এখানেই পাচ্ছি।”
“মানে পৃথিবীতে যাওয়ার কোন ইচ্ছেই আর তোমাদের নেই?”
কুদ্দা কাঁধ ঝাঁকিয়ে বলল, “স্বর্গে আরোহণের পথে আমরা বাস করছি। আমাদের এত ঘাম, এত পরিশ্রম সব এইজন্যে যাতে এই মিনার আরেকটু উঁচু হয়ে স্বর্গ ছুঁতে পারে। যেইদিন এই মিনার ছেঁড়ে যাওয়ার সময় হবে, আমরা নীচের দিকে নামবো না বরং স্বর্গ অভিমুখে যাত্রা করবো।”

........................

উপরে উঠতে উঠতে এমন একটা সময় এসেছিল, যখন সোপানের কিনারায় দাঁড়িয়ে উপরে কিংবা নীচে তাকালে মিনারটাকে ঠিক একই রকম দেখতে মনে হচ্ছিল। নীচে, ব্যবিলনে পৌঁছানোর অনেক আগেই মিনারটা সরু হতে হতে শূণ্যতায় মিলিয়ে গিয়েছিল। একইভাবে, মিনারের চূড়া এখনো দৃষ্টির সীমানার বহু দূরে ছিল খনকদের অবস্থান থেকে। মিনারের মাঝখানের অংশবিশেষ শুধু দেখা যাচ্ছিল। উপরে কিংবা নীচে তাকালে শিরদাঁড়া বেয়ে শীতল স্রোত নেমে যাচ্ছিল, যেন তারা আর এই পৃথিবীর অস্তিত্বের অংশ ছিল না। স্বর্গ কিংবা মর্ত্যের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, শূন্য আকাশে ভাসমান একটুকরো সুতো যেন এই মিনার।

এই সময় মাঝে মাঝে হিলালুম ভীষণ হতাশায় নিমজ্জিত হয়ে পড়ছিল। নিজেকে তার বাস্ত্যচ্যুত বলে মনে হচ্ছিল; মাটির পৃথিবী থেকে বহুদূরে, বিচ্ছিন্ন অবস্থায়। যেন অবিশ্বস্ত হওয়ায় তাকে মর্ত্য থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে আর স্বর্গ তাকে গ্রহণে অসম্মতি জানিয়েছে। সে মনে প্রাণে চাচ্ছিল যাতে ইয়াহওয়ে তাকে কোন একটা সংকেত প্রদান করেন, যাতে মানুষ বুঝতে পারে তার এই স্বর্গ ছুঁতে চাওয়ার মহাযজ্ঞে ইয়াহওয়ের সদয় অনুমতি রয়েছে। তা না হলে কি করে এই মিনারে আরোহণ করা সম্ভব যেখানে নিজ অন্তরাত্মা নিজেকে অনাহূত মনে করে সংকুচিত হয়ে থাকছিল?

মিনারের এই উচ্চতায় বসবাসকারী অধিবাসীদের মধ্যে কোনপ্রকার অস্বস্তি পরিলক্ষিত হচ্ছিল না। তারা খনকদের উষ্ণ-অভ্যর্থনা জানাচ্ছিল ও স্বর্গের খিলান খননের কাজের জন্য সৌভাগ্য কামনা করছিল। মেঘ থেকে ভেসে আসা স্যাঁতস্যাঁতে কুয়াশার মাঝেই ছিল তাদের বসবাস, উপরে কিংবা নীচে তাকালেই দেখা যেত ঝড়-তুফানের তাণ্ডব, বায়ুর মাঝেই নিজেদের প্রয়োজনীয় শস্য উৎপাদন কৌশল রপ্ত করেছিল তারা এবং কখনো তাদের মাঝে এই চিন্তা এসে ভর করে নি যে এই উচ্চতা মানুষের বসবাসের অনুপযুক্ত। কোন দৈববাণী তারা পায় নি কিংবা ঐশ্বরিক প্রণোদনার লোভও তাদের ছিল না, অথচ নিঃসংশয় চিত্তে তারা এখানে বসবাস করছিল।

দিন পার হতে থাকলো, পার হয়ে গেল সপ্তাহ, সেই সাথে সূর্য আর চন্দ্র আরও নীচ হতে নীচে অস্ত যেতে থাকল। মিনারের দক্ষিণ প্রান্ত চাঁদের রূপালী আলোর ঝরনাধারায় প্লাবিত হয়ে যাচ্ছিল, মনে হচ্ছিল ইয়াহওয়ে তার সদা জাগ্রত চোখে নির্নিমেষ তাকিয়ে আছেন। কিছুদিনের মধ্যেই, তারা চাঁদের সমান্তরাল স্তরে এসে পৌঁছল। এই স্বর্গ যাত্রায়, মহাকাশে ভাসমান উপগ্রহের স্তরে তারা প্রবেশ করল। চাঁদের ছোট ছোট গর্তে ভরা স্থলভাগের দিকে অবাক বিস্ময়ে তারা তাকিয়ে ছিল। দেখছিল কি জমকালো ধীর গতিতে এই আপাত অবলম্বনহীন বস্তুটি নিজ কক্ষ ধরে ছুটে চলছিল।

অতঃপর তারা সূর্য অভিমুখে আরোহণ করছিল। সময়টা ছিল গ্রীষ্মকাল, যখন কিনা সূর্য ব্যবিলনের মধ্যগগনেই অধিকাংশ সময় অবস্থান করে। কাজেই এই উচ্চতায়, সূর্য খুবই নিকটবর্তী ছিল। মিনারের অভ্যন্তরে এই স্তরে কেউ বসবাস করতো না, কোন বারান্দাও ছিল না কারণ সূর্যতাপে এখানে চাল ফুটে খই হয়ে যেত। এই স্তরে ইটগুলোর মধ্যবর্তী স্থানে আলকাতরা দেওয়া হচ্ছিল না কারণ এই প্রচণ্ড তাপে আলকাতরা গলে যাওয়াটাই ছিল স্বাভাবিক। তার বদলে ব্যবহার করা হচ্ছিল কাদামাটি যা এই তাপে পুড়ে শক্তভাবে ইটগুলোকে আবদ্ধ করে রাখছিল। দিনের তাপমাত্রা থেকে সুরক্ষা প্রদান করার জন্যে স্তম্ভগুলো এখানে আরও চওড়া হয়ে পরস্পর প্রায় সংযুক্ত হয়ে গিয়েছিল। সোপানটাকে দেখতে এখন অনেকটাই সুরঙ্গের মতন মনে হচ্ছিল যার মাঝে ছোট ছোট ছিদ্রপথ দিয়ে শিস বাজিয়ে বাতাস ছুটে যাচ্ছিল আর সোনালী আলোর রেখা অন্ধকারকে দূর করছিল।

এতদিন মিনারে আরোহণ একটা নির্দিষ্ট নিয়মমাফিক চলে আসছিল কিন্তু কিছু পরিবর্তন প্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছিল। কাজেই প্রতিদিন তারা রাতে ঘুমানো আর সকালে উঠার সময় এগিয়ে আনতে থাকলো যাতে গাড়ি টানার কষ্টকর কাজটা অন্ধকারেই সেরে ফেলা যায়। যখন তারা সূর্যের স্তরে ছিল, সম্পূর্ণভাবে রাতেই আরোহণ করা হচ্ছিল। দিনের বেলায় তারা নগ্ন গাত্রে, তীব্র গরম বাতাস আর ঘামের মাঝে শুয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করতো। খনকরা মনে মনে ভয় পাচ্ছিল, হয়তো ঘুমিয়ে পড়লে জেগে ওঠার আগেই এই দাবদাহে তারা উনুনে পোড়া রুটির মতন সিদ্ধ হয়ে মারা যাবে। কিন্তু, চলকেরা এই পথ ধরে এর আগেও হাজারো বার পাড়ি দিয়েছে আর কখনোই এমনটা ঘটে নি। কাজেই একসময় তারা সূর্যের স্তর পার হয়ে উপরে উঠে আসল, যেখানে নীচের মতনই আরামদায়ক শীতল আবহাওয়া তাদের ঘিরে রাখছিল।

প্রকৃতির সকল নিয়মকানুনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে এখানে দিনের আলো নীচ হতে ঊর্ধ্বে উৎসারিত হচ্ছিল। বারান্দাগুলো হতে কাঠের পাটাতন সরিয়ে ফেলা হয়েছিল যাতে সূর্যের আলো প্রবেশ করতে পারে। মধ্যখানের অল্প একটু অংশে শুধু মাটি ছিল। রোপণ করা গাছগুলো পার্শ্বাভিমুখে প্রসারিত হচ্ছিল ও ন্যুজ্ব ভাবে নীচের সূর্যের আলোকে ধরার জন্য শাখা প্রশাখা বাড়িয়ে দিচ্ছিল।

তারপর ধীরে ধীরে নক্ষত্রদের স্তরে এসে তারা পৌঁছেছিল যেখানে চারিপাশে ছোট ছোট জ্বলন্ত গোলক ছড়িয়ে ছিল। হিলালুম অবশ্য ভেবেছিল তারাদের সংখ্যা আরও অনেক বেশি হবে। কিন্তু, পৃথিবী থেকে দৃষ্টিগোচর নয় এমন হাজারো জ্যোতিষ্কের উপস্থিতি সত্ত্বেও মনে হচ্ছিল তারাগুলো অনেকটা দূরে দূরে ছড়িয়ে আছে। একই উচ্চতায় নয় বরং উপরের কয়েক লীগ ধরে তারাদের উপস্থিতি দেখা গিয়েছিল। তাদের মধ্যে আকার ও আকৃতিগত পার্থক্য থাকায় মিনার হতে তাদের দূরত্ব অনুমান করাটা সহজসাধ্য ছিল না। মাঝেমধ্যে কয়েকটা নক্ষত্রকে দেখা যেত মিনারের গাঁ ঘেঁষে ছুটে যাচ্ছে, তাদের অত্যাশ্চর্য গতির প্রমাণ রেখে। হিলালুম বুঝতে পারছিল যে মহাকাশের সকল বস্তুই এক ধ্রুব গতিতে ছুটে চলছে যাতে একটি দিন সম্পন্ন হওয়ার পূর্বেই সমস্ত পৃথিবীকে চক্কর মেরে আসতে পারে।

দিনের বেলায় আকাশটা ফ্যাকাসে নীল রং ধারণ করে থাকতো, পৃথিবীর মতন অতো উজ্জ্বল নয়। স্বর্গের খিলানে পৌঁছাতে যে আর খুব বেশী দেরি নেই, এটা ছিল তারই প্রমাণ। আকাশ দেখতে গিয়ে হিলালুম লক্ষ্য করল, এখানে দিনের বেলাতেও বেশ কিছু তারা দেখা যায়। সূর্যালোকের কারণে এই তারাগুলো পৃথিবী হতে দিনের বেলায় দেখা সম্ভব হয়ে ওঠে না, কিন্তু এই উচ্চতায় তারা সকলেই স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান।
এক দিন নান্নি হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এসে হাঁপাতে হাঁপাতে বলল, “একটা তারা এসে মিনারে আঘাত করেছে।”
“কি বলছ?” হিলালুম চারপাশে তাকিয়ে ত্রস্ত গলায় বলল, যেন কেউ তার পেটে সজোরে ঘুষি মেরেছে।
“আরে, এখন নয়। সে অনেক দিন আগের কথা, প্রায় একশ বছর হবে। মিনারের এক বাসিন্দা এই গল্প শোনাচ্ছিল, তার দাদা ঘটনাটার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন।”
তারা মিনারের সরু রাস্তা ধরে ভেতরে প্রবেশ করল, যেখানে একদল খনক এক জ্ঞানী বুড়োর চারিধারে বসেছিল “--- এই এখান থেকে আরও আধা লীগ উপর পর্যন্ত জায়গা জুড়ে ইট ভেঙে ঢুকে পড়েছিল। এখনো ভালো করে লক্ষ্য করলে বুঝা যায় গর্তটা। মনে হয় বিশাল একটা শাবল দিয়ে যেন কেউ একটা ঘা বসিয়ে দিয়েছিল মিনারের গায়।”
“আর নক্ষত্রটার কি হয়েছিল?”
“কি যে জ্বলজ্বল করত, তাকিয়ে থাকা যেত না। চড়চড় শব্দ করে পুড়েই চলছিল। তখন সবাই মিলে ঠিক করল, চাড় মেড়ে বের করে দেবে যাতে নিজের পথে আবার চলে যায় কিন্তু এত গরম ছিল নক্ষত্রটা যে কেউ কাছে ধারেও ঘেঁষতে পারলো না। পানি ঢেলে আগুন নিভিয়ে দেয়ার কথাতো স্বপ্নেও ভাবতে পারছিল না কেউ। দুয়েক সপ্তাহ পর নিজ থেকেই নিভে গিয়েছিল, আর দেখা গেল কালো স্বর্গ-ধাতুর একটা বিশাল চাঁই হয়ে গিয়েছে। এত বড় যে একজন মানুষ দুই হাতের বেড় দিয়ে ঘিরতে পারে না।”
“এত বড়?” নান্নি বিস্ময় মিশ্রিত গলায় বলল। মাঝে মাঝে যখন কিনা আকাশের তারাগুলো নিজে থেকেই পৃথিবীতে খসে পড়ে, তখন এরকম এক দুই টুকরো স্বর্গ-ধাতু পাওয়া যায়। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম তামার চাইতেও শক্ত, মজবুত। গলানো সম্ভব নয় বলে, চুল্লিতে গরম করে যখন লাল টকটকে হয়ে ওঠে তখন হাতুড়ির বাড়ি দিয়ে এই ধাতুকে পছন্দসই আকার দেয়া হয়; বাহুতে পড়ার কবজ বানানো হয়।
“তবে আর কি বলছি! পৃথিবীর কেউ কখনো স্বর্গ-ধাতুর এত বড় টুকরোর কথা শুনে নি, দেখেও নি। ভাবতে পারো, এই এক টুকরো ধাতু দিয়ে কতকিছু বানানো সম্ভব হত?”
“তোমরা আবার এটাকে গরম করে যন্ত্রপাতি বানানোর চেষ্টা করনি তো?” হিলালুম আতঙ্কিত স্বরে প্রশ্ন করল।
“কি যে বল না। সবাই তো ধাতুর টুকরোটা ধরতেই ভয় পাচ্ছিল। মিনার খালি করে নীচে নেমে গিয়েছিল সকলে। অপেক্ষা করছিল কখন ইয়াহওয়ে সবাইকে শাস্তি দেবেন এই জগতের স্বাভাবিক নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে এই মিনার বানানোর চেষ্টা করায়। মাসের পর মাস কেটে গেল, কিন্তু প্রভু কোন সংকেত দিলেন না। ধীরে ধীরে সকলেই ফেরত এলো আর তারাটাকে খুড়ে বের করলো মিনারের দেওয়াল থেকে। ধাতুর টুকরোটা ব্যবিলনের একটা মন্দিরে রাখা আছে এখন।”
এক মুহূর্ত নীরবতা বজায় থাকল। তারপর এক খনিক শুধল, “কিন্তু মিনারের ব্যাপারে এই ঘটনাটা আগে কখনো শোনা হয় নি।”
“শুনবে কি করে? এ এমন এক কাহিনী যেটার কথা মুখে আনাটাও পাপ।"

........................

(অনুবাদকের কথাঃ এই কথাগুলো আগে লেখাটা প্রয়োজনীয় ছিল কিন্তু আলসেমি করে আর লেখা হয় নি। এটা কোন মৌলিক লেখা নয়। বিখ্যাত সায়েন্স ফিকশন, ফ্যান্টাসি জনরার লেখক টেড চিয়াং এর টাওয়ার অফ ব্যবিলন খ্যাত বড় গল্পের একটা অনুবাদ মাত্র। এর আগে অসংখ্যবার অনুবাদ করতে গিয়ে দেখেছি নিজের লেখক সত্ত্বার কাছে অনুবাদকের হার হয়। অনাবশ্যক লাইন চলে আসে, বাড়তি কথা লিখে ফেলি। সেগুলো ঝেড়ে শুধু মূল লেখকের লেখার আক্ষরিক ও বেশী কাঠখোট্টা হলে ভাবানুবাদেই এবার মন দিয়েছি। এখন পর্যন্ত খারাপ হচ্ছে না খুব একটা আশা করি। ভালো কথা, টেড চিয়াং এর নাম না শুনে থাকলে বলে যাই ২০১৮ সালের বিখ্যাত সাই-ফাই মুভি 'এরাইভাল' টেড চিয়াং-এর একটি গল্প থেকেই বানানো হয়েছিল। তার অধিকাংশ বড় গল্প ও উপন্যাসিকাই সম্মানজনক হুগো পুরষ্কার প্রাপ্ত।)

মন্তব্য ২১ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (২১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৯ রাত ৯:৩৯

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: প্রতি পর্ব শেষ হয় আর মুগ্ধতা বাড়ে!!!

অসাধারণ!

লেখক পরিচিতি আর ফুট নোটে ধন্যবাদ।
আহা যেন আমিই উঠছি স্বর্গের সিড়ি বেয়ে! কখনো হিলালুম হয়ে! কখনো ওখানকার বাসিন্দা হয়েই যেন অনুভব করছি
:)

+++

০৮ ই এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১২:৫৮

অন্তরা রহমান বলেছেন: বার কিছুটা লজ্জাই লাগছে। এতটা প্রশংসার হকদার হয়তো আমি নই। ফুটনোটটা লিখে আমিও স্বস্তি পেয়েছি। তা না হলে কেউ চৌর্য্যবৃত্তির অভিযোগ তুললেও কিছু বলার থাকতো না।

ভালো কথা, আপনি কথায় কম, কাজে অনেকটা সাহস জুগিয়েছেন। আপনার একটানে তিনটা পর্ব শেষ করায় মনে হয়েছে, নাহ, হয়তো ঠিকঠাক লিখছি। অসংখ্য ধন্যবাদ তার জন্য। আপনার মতন পাঠক যে কোন লেখকের ঈপ্সিত বস্তু। চতুর্থ পর্ব পড়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে রাখলাম।

২| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১:৩৩

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন:



বাহ দারুন ।

আমি নিজেও অনুবাদ করছি । তবে সেগুলো হচ্ছে ছোট গল্প । বড় উপন্যাস করতে গেলে সময় হবে না ।

চালিয়ে যান ।

০৮ ই এপ্রিল, ২০১৯ ভোর ৪:০০

অন্তরা রহমান বলেছেন: ছোট গল্পই করা উচিত ছিল। কিন্তু ভাবলাম, মারি তো গন্ডার আর লুটি তো ভান্ডার! আসলে ধৈর্য্য থাকে না, মনোযোগ ছুটে যায়। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য। পরের পর্ব পড়ার আমন্ত্রন জানিয়ে রাখলাম।

৩| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৯ ভোর ৬:০৯

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
শুভ সকাল ।
ভালো থাকুন প্রতি দিন।

১০ ই এপ্রিল, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০৫

অন্তরা রহমান বলেছেন: আপনাকে শুভ বিকাল। ভালো থাকুন আপনিও।

৪| ০৯ ই এপ্রিল, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৩৫

বলেছেন: বাহ !!!
বেশ ঝরঝরে অনুবাদ +++ ---

১০ ই এপ্রিল, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০৬

অন্তরা রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ। আমি চেষ্টা করছি যথাসাধ্য পাঠক-বান্ধব রাখার। আপনাদের কমেন্ট ভরসা দিচ্ছে যে কিছুটা হলেও পারছি।

৫| ১০ ই এপ্রিল, ২০১৯ রাত ৯:০৩

অজ্ঞ বালক বলেছেন: একবারেই পড়লাম। লেখাডা তো বেশ ভালোই পারেন তাইলে খামখা অনুবাদ ক্যান? মৌলিক ছাড়েন। আর পর্ব কই? মঙ্গলবার তো গ্যালোগা!

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৩:২৫

অন্তরা রহমান বলেছেন: দুঃখিত। অসুস্থতার জন্য আপাতত সব লেখালেখি বন্ধ। দোয়া করবেন যাতে দ্রুত সুস্থ হতে পারি ও আবারো সামুতে ফিরতে পারি।

৬| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:২৩

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: স্বর্গের সিড়ি তিনে এসে থেমে আছে!!!!!!!

আহা কবে বাকী সিড়ি পেরিয়ে সগ্গে যাবো? :((
অপেক্ষা যে ক্রুশবিদ্ধ যাতনার চেয়ে বুঝি কঠিন! :-/

অপেক্ষার দ্রুত অবসানের স্বপ্নে জেগে রইলাম - - -

১৬ ই মে, ২০১৯ সকাল ১১:২৩

অন্তরা রহমান বলেছেন: ভীষণ অসুস্থ ছিলাম। প্রথমে আমি, তারপর ছেলে। ফিরছি শিঘ্রী।

৭| ১৬ ই জুন, ২০১৯ রাত ৮:৩৯

মাহের ইসলাম বলেছেন: ভালো লেগেছে।
পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ১:০৩

অন্তরা রহমান বলেছেন: পরের পর্ব তো এসেছে কিন্তু আর লেখাটা টানছে না। তাই আর কন্টিনিউ করছি না। সরি।

৮| ১৬ ই আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৪০

মাহের ইসলাম বলেছেন:
না টানুক, আপনি শেষ করেন। আমিও একই সমস্যায় পড়ে এগুতে পারি না। তবে, উপদেশ দিতে তো সমস্যা নেই তাই বললাম আর কি। ( কিছু মনে করবেন না কিন্তু)।

লেখা ছোট ছোট করে পোস্ট করতে পারেন। তাহলে পাঠক পড়ুক আর না পড়ুক, আপনার কাজ এগুবে।

শুভ কামনা রইল।

১৩ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:৩২

অন্তরা রহমান বলেছেন: আসলে এই গল্পটা শ্রদ্ধেয় অনুবাদক সালমান ভাইয়ের হাতে অনুবাদ হয়ে আফসার ব্রাদার্স থেকে বের হয়েছে। উৎসাহ হারিয়ে ফেলার এও এক কারণ। তাই, একদমই বাতিল। সকল পাঠকের কাছেই এ জন্য ক্ষমাপ্রার্থী।

৯| ১৮ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:১১

নীল আকাশ বলেছেন: দূর এটা কোন কথা হলো।
তিন পর্ব পড়ার পর এই অসাধারণ লেখা পড়া বন্ধ করে দিতে হবে?
এটা কিছু হলো?
কি অসাধারণ লেখা! চমৎকার তার অনুবাদ। আপনি মাকে মুগ্ধ করে ফেলেছিলেন।
মন খারাপ করে এখন চলে যাচ্ছি।
আপনার কাছে অনুরোধ আপনি আপনার কাজ শেষ করুন। কে কি করেছে তাতে আপনার কি যায় আসে?
আপনি তো আর বই বের করছেন না!
আরেকবার অনুরোধ করে যাচ্ছি বাকি পর্ব লেখার জন্য।
আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো।
অফ টপিকঃ আপনি কি সামুর ফেবু গ্রুপে আছেন?
সামহোয়্যারইন ব্লগ গ্রুপ (অফিশিয়াল গ্রুপ)

১০| ১৮ ই আগস্ট, ২০২০ দুপুর ১২:১২

নীল আকাশ বলেছেন: এত ভালো লেগেছে যে লেখাটা প্রিয় তে রেখে দিলাম।
জানি না পরের পর্ব পড়তে দেবেন কিনা!

১৮ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:০৫

অন্তরা রহমান বলেছেন: না, গ্রুপে নেই। যোগ দিচ্ছি। আর এতবার যখন বলছেন, দেখবো ভেবে আবার ধরা যায় কি না। তবে এখন বই লেখায় ব্যস্ত খুব। চেষ্টা থাকবে পরে সমাপ্ত করার।

১১| ১৮ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৪:৪৮

নীল আকাশ বলেছেন: তবে এখন বই লেখায় ব্যস্ত খুব। চেষ্টা থাকবে পরে সমাপ্ত করার।
এর আগে বই প্রকাশ করেছেন? না এটাই প্রথম? আগে বের করে থাকলে বইয়ের নাম দিয়েন।
ধন্যবাদ।

১৮ ই আগস্ট, ২০২০ বিকাল ৫:০১

অন্তরা রহমান বলেছেন: এটাই প্রথম। সায়েন্স ফিকশন গল্প সংকলন। ই-বুক হিসেবে আসবে, বইটই থেকে। সব গুছিয়ে এনে পোস্ট দিবো নিশ্চয়ই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.