নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সবার আগে একজন মা। একজন স্ত্রী এবং নিঃসন্দেহে প্রেমিকা। একজন দন্ত চিকিৎসক। আর হ্যা, একজন বইপোকা! শেষ হয়েও হইলোনা শেষ - একজন লেখক।

অন্তরা রহমান

মানুষ নেশা করতে পানীয় খুঁজে, আমি খুঁজি বই। এই একটাই নেশা আমার। পড়তে পড়তেই লেখার ইচ্ছে জন্মাল। আর তার জন্য হাত মকশো করি এখানে এসে।

অন্তরা রহমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

থ্রিলার গল্পঃ এভরিওয়ান টকস - লী চাইল্ড (জ্যাক রীচার সিরিজ) - সমাপ্তি

০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ৯:৩৫

এখানে পাবেন প্রথম অংশটুকু আর এখানে দ্বিতীয় পর্ব

রীচার শীতল গলায় প্রশ্ন করলো, “আজ রাতে আর ক’জায়গায় যাওয়ার ইচ্ছে আছে তোমার?”

“এখানে ঝামেলা বাঁধাতে চাচ্ছ নাকি? নিজের রাস্তা মাপো।“

“আমি নাহয় আমার রাস্তা ধরে চলে গেলাম, তুমি কার কাছে খামটা পৌঁছে দেবে সেটা বল।“

“এখান থেকে যাও। একেবারে শহর ছেঁড়ে পালাও। তা না হলে কিন্তু ভালো হবে না।“ আবারো বলল লোকটা।

রীচার হাসল। “কিন্তু শহরটা যে আমার বেশ পছন্দ হয়েছে। তাই আমি ঠিক করেছি এখানে আরও কয়দিন কাটাবো। তা তুমিও এই ফাঁকে ঠিক করে ফেল কি করবে।“

“মানে?”

“মানে আমাকে এখনই বলে দেবে যে কার কথায় এই চাঁদাবাজি করছ নাকি তোমার পা ভেঙে দেয়ার পর রাস্তায় শুয়ে কাঁদতে কাঁদতে আমাকে বলবে নামটা?”

“কার নাম শুনতে চাইছ? তোমার বাবার?”

“সেটা আমার জানা আছে। তুমি বরং কার কাছে টাকাটা পোঁছে দেবে সেই নামটা বল। শেষ বারের মতন বলছি।“

সরাসরি লোকটার চোখে তাকিয়ে কথাগুলো বলছিল রীচার। লোকটা এখন কি করবে সেটা বুঝতে চাইছিল। তিনটা পথ খোলা আছে লোকটার সামনে। এক, দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করতে পারে। বেশী দূর যাওয়া লাগবে না। লোকজনের চলাচল আছে এমন ব্যস্ত রাস্তায়, কিংবা পুলিশের গাড়ির সামনে যেখানে প্রমাণ ছাড়া শহরে সদ্য আগত রীচারের যুক্তি ধোপে টিকবে না - ব্যস। ঠিক এই মুহূর্তে ছোঁয়াছুঁয়ি খেলতে ইচ্ছে করছিল না রীচারের। এইসব কষ্টকর কাজ পছন্দ নয় তার। আর তাই লোকটা ছুটতে শুরু না করলেই খুশী হবে রীচার। দুই, লোকটা মুখ খুলতে পারে কিন্তু সে যে ঝটপট তার বিগ বসের নাম বলে দেবে না এটা তো নিশ্চিত। নিজেকে একটা কেউকেটা ভাবে সে, সেই নিয়ে গর্বও করে নিশ্চয়ই। আর তাই মুখ খুলবে না সহজে। অতএব, থাকলো তিন নম্বর পথ। এখানেই তাকে শায়েস্তা করতে চাইবে লোকটা। মানে সেটার চেষ্টা করবে আর কি!

দেখা গেল রীচারের ধারনাই ঠিক। রীচারকে আচ্ছা মতন শিক্ষা দেবে এমনটাই ভাবল লোকটা। হঠাৎ করে সামনের দিকে ঝুঁকে আসলো, নিচু হয়ে তার বাম হাতটা ডান দিক থেকে বাঁ দিকে এমনভাবে চালাল যে মনে হবে হাতে ছুড়ি ধরে রেখেছে। আসলে এটা করে রীচারকে ধোঁকা দিতে চাইছে সে। আর এই ধোঁকায় পা দিলেই নিশ্চিত ডান হাত দিয়ে সপাটে রীচারের নাক বরাবর ঘুষি ছুড়বে। খারাপ নয় প্ল্যানটা। তবে ঘুষি আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করার মত অতো সময় রীচারের নেই! এসব মারপিটে হাতেখড়ি বহু আগেই হয়েছে তার। প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝে কোন এক দ্বীপে, দুঃসহ গরমে ধোঁয়া উঠতে থাকা পিচ ঢালা রাস্তায়। হাড় জমে যায় এমন শীতের মধ্যে উত্তর ইউরোপের এক শহরে। আফ্রিকার এমন সব রদ্দিমার্কা শহরে যেখানে দিনদুপুরে খুনখারাবি সবচাইতে স্বাভাবিক ঘটনা। তাকে লড়তে হয়েছে এলাকার পাতি মাস্তানদের সাথে, আমেরিকান সৈন্যদের ছেলেপুলেকে যারা দুই চোখে দেখতে পারে না। এমন সব উপজাতির সাথে, হাতাহাতি লড়াইয়ে যাদের প্রতিভা সহজাত। সেইসব যোদ্ধাদের সাথে যারা চোখের পলক ফেলার আগে ধরাশায়ী করতে পারে এক গণ্ডা প্রতিপক্ষকে। এসব জায়গা থেকে পাওয়া জ্ঞান নিয়ে সেনাবাহিনীতে প্রবেশ করেছিল সে, আর সেখান থেকে পাওয়া শিক্ষাটাকে একসাথে মিশিয়ে যখন বের হয়েছে তখন তার নিজের দেহটা একটা নিখুঁত অস্ত্রে পরিণত হয়েছে। আর যেই কথাটা তার মাথায় সর্বাগ্রে ঢুকানো হয়েছিল তা হল প্রতিপক্ষ কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাকে পেড়ে ফেল।

কাজেই কাছে এগিয়ে গেল সে। যেন সামনের দিকে পড়ে যাচ্ছে। লোকটার প্রায় গায়ের সাথে মিশে গেল তার শরীর। আর সপাটে আগানো ডান কনুইটা আক্ষরিক অর্থেই থেঁতলে দিল লোকটার মুখটাকে। এরকম ক্ষেত্রে সবসময় গলায় আগে আঘাত করে রীচার। কিন্তু লোকটা শ্বাসনালী ভেঙে রাস্তায় মরে পড়ে থাকলে কোন লাভ হবে না রীচারের। কথা বলতে না পারলে পিছনে যে কলকাঠি নাড়ছে তার নামটা জানা যাবে না। তাই, উপরের ঠোঁটটাকে নিজের লক্ষ্য বানাল রীচারের, নাকের একদম নীচে। নিজের শরীরের গতি আর ওজনটাকে কনুইয়ে নিয়ে আসলো রীচার। নাকটা ভেঙ্গে যাবে, দাঁতগুলোরও অস্তিত্ব থাকবে না। কিন্তু, লোকটা অন্তত কথা বলার মতন অবস্থায় থাকবে। জড়ানো কথাগুলো বুঝতে একটু সমস্যা হতে পারে, সেটা নিয়ে এখন আর ভাবল না রীচার। আঘাতের প্রচণ্ডতায় লোকটার মাথাটা জোরে ঝাঁকি খেল পিছনের দিকে। হাঁটুগুলো শরীরের ভার ধরে রাখার ক্ষমতা হারাল। নিজের অতবড় শরীরটা নিয়ে রাস্তায় কাঁটা কলাগাছের মতন পড়ে গেল লোকটা। চোখে তারাদের ফুলঝুরি দেখছে। ভাঙ্গা নাক আর মুখ দিয়ে গলগল করে রক্ত বেরিয়ে আসছে।

খালি হাতে রীচার নৃশংস। প্রতিপক্ষকে মাটিতে পড়ে থাকতে না দেখা পর্যন্ত থামে না সে। এবং এধরনের প্রতিপক্ষের মাথা বরাবর একটা লাথি মেরে লড়াইয়ের ইতি টানে। তবে এখানে তার প্রয়োজন ছিল না। কারণ, নামটা জানা প্রয়োজন। উবু হয়ে বসে ধীর গলায় বলল সে, “আশা করি এখন নামটা বলতে দ্বিতীয়বার ভাববে না তুমি।“

“কুবোতা।“

ভাঙা দাঁতের ফাঁক দিয়ে বলা কথাটা রক্ত আর ফুলে থাকা ঠোঁটের কারণে বুঝতে কষ্ট হলেও যথেষ্ট ছিল রীচারের জন্য।

“এটুকুই নাম? নাকি আরও কিছু আছে আগে পিছে?”

বাধ্যগত ছাত্রের মতন গড়গড় করে উত্তর দিল লোকটা। যা শিক্ষা পাওয়ার তা পেয়ে গেছে। বুঝে গেছে, নিজেকে জঙ্গলের রাজা মনে করাটা ভুল ছিল। আসলে কুয়োর ব্যাঙ সে। রীচার অবশ্য তাতে বেশ খুশী হয়েছিল। আসলেই পা ভাংতে হলে সমস্যায় পরে যেত সে। পায়ের হাড়গুলো ভালোই শক্তপোক্ত আর সহজে ভাংতেও চায় না। কষ্টকর কাজ।

“তা এই কুবোতা সাহেবকে কোথায় পাওয়া যাবে?”

ঠিকানাটাও উগরে দিল লোকটা।

আর তারপর রীচার চুপ করে গেল। চোখ বন্ধ করে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে থাকলো সে।

“তারপর কি হল?” আমি প্রশ্ন করলাম।

রীচার চোখ বন্ধ অবস্থাতেই উত্তর দিল, “আজকের মতন অনেক হয়েছে। ক্লান্ত লাগছে ভীষণ।“

“আমাকে পুরো কাহিনীটা বলে যত ইচ্ছে ঘুমাও।“

“কালকে সকালে আসো। সব জানতে পারবে।“

“তুমি কুবোতার আস্তানা খুঁজে পেয়েছিলে?”

কোন উত্তর নেই।

“ওখানে কি কুবোতার সাথেও একদফা হাতাহাতি হয়েছিল?”

চুপ করেই থাকলো রীচার।

“কুবোতাই কি তোমাকে গুলি করেছে?”

একটা টুঁ শব্দও আর বের করা গেল না রীচারের পেট থেকে। চেষ্টা চালিয়ে যেতাম আমি কিন্তু তার আগেই ডাক্তার এসে পড়লেন। ঐ একই ডাক্তার, কাঁচাপাকা চুল। আমাকে বললেন আজকের মত এটুকুই। রোগীকে এখন বিশ্রাম দিতে হবে কাজেই আর কোন প্রশ্ন না। চাইলে আগামীকাল আবার আসতে পারবো আমি। নিঃসন্দেহে ততক্ষণে রোগীর অবস্থার আরও উন্নতি হবে। হতাশ হলেও চেপে গেলাম সেটা। কাজ করার মতন যথেষ্ট তথ্য চলে এসেছে আমার কাছে। চাকরির প্রথম দিনেই লটারি জিতে গিয়েছি আমি। চাঁদাবাজির এমন একটা ঘটনা আমাদের নাকের ডগায় ঘটে চলেছে এতদিন। নিশ্চয়ই শুধু বার নয়, আরও বহু জায়গা থেকে চাঁদা তুলে ধান্দাবাজগুলো। নিজের প্রথম কাজ হিসেবে এই চক্র ভেঙে দেয়া বিশাল একটা অর্জন হয়ে থাকবে আমার জন্য। আর তার জন্য আরও খাটতে হবে সেটাও বুঝতে পারছিলাম।

সোজা থানায় ফিরে গেলাম আমি। কুবোতার উপর ইয়া মোটা এক ফাইল পাওয়া গেল। অনেক দুই নম্বরি কাজের সাথে জড়িয়ে আছে লোকটার নাম। অনেকবার ধরা খাওয়ার খুব কাছে চলে গিয়েছিল লোকটা। কিন্তু শেষমেশ কিছুই প্রমাণ করা যায় নি। এতদিন পর্যন্ত কুবোতাকে গ্রেফতার করার মতন কিছুই ছিল না আমাদের হাতে। এখন আছে। একজনকে গুলি করেছে বদমাইশটা। সেই লোক নিজে হাসপাতালে শুয়ে আছে। প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ আমার হাতে, সাক্ষীও আছে। এমনকি বুলেটটাও নিশ্চয়ই হাসপাতালে প্লাস্টিকের প্যাকেটে আলাদা করে রাখা আছে। সেটাই নিয়ম।

বিশ্বজয় করে ফেলার মতন আনন্দ হল আমার।

রাতের যেই বিচারক ছিলেন তিনি আমার কথায় সায় দিলেন। একটা জবরদস্ত গ্রেফতারি পরোয়ানা স্বাক্ষর করে আমার হাতে দিলেন তিনি। কাজেই আমি দল বানালাম। বেশ কয়েকটা গাড়ি, অনেক পুলিশ, সবার কাছে একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র রাখতে বললাম, সবশেষে আরও তিনজন গোয়েন্দা। সবাই আমার চাইতে সিনিয়র কিন্তু আমিই নেতৃত্ব দিচ্ছিলাম। যার মামলা, সেই সামনে থাকবে নেতা হিসেবে। অলিখিত নিয়ম।

রাত দুইটা বাজে কুবোতার আস্তানায় হানা দিলাম আমরা। হানা বলতে দরজা ভেঙ্গে ভেতরে ঢুকে পরা। তারপর কুবোতার হাতে হাতকড়ি পড়ানো। বাধা দেওয়াতে তাকে দুইজন মিলে মাটিতে জাপটে ধরে রাখল। কুবোতাকে তার নিজের বাসার বারে যখন আমরা পেলাম মদ খেয়ে বেহদ মাতাল হয়ে পড়েছিল। রীতিমত আবোলতাবোল বকছিল। কাজেই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হল পুলিশি পাহাড়ায়।

প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সেখান থেকে সোজা থানায় চলে যাবে কুবোতা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। আমি আর আমার তিন সিনিয়র গোয়েন্দা সহকারী মিলে ততক্ষণে কুবোতার বাসার সবকিছু তন্ন তন্ন করে খুঁজে দেখব। প্রতিটা কোনায় কোনায় তল্লাশি চালালাম আমরা। প্রতিটা ড্রয়ার, কেবিনেট, শোকেস, খাতা, বই, ল্যাপটপ, পেপার বাস্কেট উল্টেপাল্টে দেখলাম সূত্রের খোঁজে। যেভাবে আমরা খুঁজছিলাম তাতে খরের গাদায় থাকা এক ইঞ্চি লম্বা সূচও আমাদের চোখ এড়াত না।

পুরো জায়গাটা একটা স্বর্ণের খনি ছিল আমাদের জন্য।

পলিথিনের প্যাকেটে মোড়ানো অবস্থায় অগুনতি টাকা খুঁজে পেলাম আমরা যার হিসেব দিতে গেলে কুবোতার ঘাম ছুটে যাবে। তিরিশটা ব্যাংক একাউন্টের চেকবই, ডেবিট কার্ড – নামে, বেনামে। নোটবই, হিসেবের খাতা, ডায়েরি, শহরের ম্যাপ যেখানে বিভিন্ন জায়গা চিহ্নিত করে রাখা। দেখে একটা জিনিস বুঝতে পারলাম গত একবছর ধরে শহরের কমপক্ষে একশো দোকানদারকে চুষে খাচ্ছিল শুয়োরটা। ডায়রিতে এটাও খুঁজে পাওয়া গেল যে গত ছয় মাসে সাতটা দোকানের মালিক তাকে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল। দুইটা খুন, দুইটা হাসপাতালের রেকর্ড- একজনের পা ভাঙ্গা আর একজনের মুখে ছুড়ির পোঁচ দেয়া হয়েছিল, সাথে তিনটা অসমাধিত আগুন লাগানোর ঘটনা। এভাবেই সাতটা অসমাপ্ত কেস ক্লোজ করতে সক্ষম হলাম আমরা। আমার সাথের গোয়েন্দারা আমার পিঠ চাপরে দিতে ব্যস্ত ছিলেন কিন্তু আমি অন্য একটা জিনিস খুঁজছিলাম।

পিস্তলটা কোথায় গেল যেটা দিয়ে রীচারকে গুলি করা হয়েছিল?

অবশ্য সেটা না পাওয়াটাই স্বাভাবিক। যেহেতু ঐ পিস্তলে তার হাতের ছাপ থাকবে, গুলিটাও আমরা মিলিয়ে দেখতে পারবো অন্যগুলোর সাথে কাজেই সেটা কোথাও ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। খুব সম্ভবত ব্রিজের উপর থেকে নদীতে ছুঁড়ে ফেলেছে যেভাবে তার পুরানো মোবাইল ফোনগুলোকে বিদায় করেছে। দুই নম্বরি কাজের জন্য দুই নম্বরি বার্নার ফোন। কয়েকবার ব্যবহার করেই ফেলে দিত মনে হয়। কেনার রশিদ, বক্স কিছু নেই। কিন্তু বেকুবটা ফোনগুলোর সাথে পাওয়া চার্জারগুলো ফেলতে ভুলে গিয়েছে। প্রায় পঞ্চাশটার মতন চার্জার পাওয়া গেল একটা ড্রয়ারে।

একদম সকাল সকাল থানায় ফিরে কুবোতাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করলাম আমি। সাথে নিজের আইনজীবীকে রাখল লোকটা। চিকন, লম্বা, স্যুট-টাই পড়া একটা লোক। ওর চেহারার দিকে তাকিয়েই বুঝতে পারলাম খুব ভালো করেই জানে আজকে আর তার মক্কেলের নিস্তার নেই। আমি একাই জেরা করতে শুরু করলাম। অবশ্য কাঁচের আড়ালে যে থানার সবাই ভিড় করে দেখছে আমার কেরামতি সেটা ঠিকই টের পাচ্ছিলাম। আগেই তো বলেছি, আমি জেরা করার ওস্তাদ। আমি জানি কিভাবে সব প্রশ্নের উত্তর নিজের মনোমত করে পেতে হয়। তাই একেবারে সহজ সহজ প্রশ্নগুলো প্রথমে জিজ্ঞেস করলাম আমি। এভাবে স্বীকারোক্তি পেতে সুবিধে হয়। সুন্দর মত সব দোষ স্বীকার করে নিচ্ছিল কুবোতা। দোকানগুলো নিয়ে প্রশ্নের পর প্রশ্ন করলাম। বার, রেস্টুরেন্ট, ডাইনার, মুদি দোকান, সুপারস্টোর। তাকে ভালোমতো বুঝিয়ে বললাম যে তার সব নোটবই, ডায়েরি, হিসেবের খাতা এখন আমাদের হাতে। সেই সাথে তার বাসায় রাখা টাকার ব্যাগগুলো, ব্যাংক একাউন্টের স্টেটমেন্ট সব। কাজেই স্বীকার করতে বাধ্য হল কুবোতা। জেরা শুরুর আধা ঘণ্টার মধ্যেই কুবোতাকে লম্বা সময়ের জন্য গরাদের পেছনে পাঠানোর মত স্বীকারোক্তি পেয়ে গেলাম আমরা। কিন্তু আমি জেরা থামালাম না। কুবোতার বিরুদ্ধে আর কোন প্রমাণের দরকার ছিল না। কিন্তু, আসল প্রশ্নটাই তখনো করি নি আমি? তার জন্য কুবোতাকে আগে নিজের হাতের মুঠোয় ভরাটা প্রয়োজন ছিল। তারপর প্রশ্নটা করলাম।

কিন্তু, প্রথমবারের মতন কুবোতা আমার মনোমত উত্তর দিতে ব্যর্থ হল।

গুলি করার অভিযোগটা অস্বীকার করে বসলো সে। বলল রীচার নামের কারো সাথে গতরাতে দেখাই হয় নি তার। শহরের বাইরে ছিল সে আর সেটার প্রমাণও আছে। সেই সাথে জানাল তার নাকি কোন বন্দুক নেই। কখনো ব্যবহার করার প্রয়োজন পরে নি। দুপুর পর্যন্ত আটকে রেখে জেরা চালিয়ে গেলাম আমি কিন্তু লাভ হল না। এক সময় লেফটেন্যান্ট দরজা খুলে ঢুকলেন। একটু আগেই বাড়ি থেকে এসেছেন তিনি। সারারাত ঘুম ও সকালের গোসল শেষে একেবারে তরতাজা। আমাকে বললেন যে যথেষ্ট করেছি আমি।

প্রশংসার পর প্রশংসা করে চললেন তিনি। “প্রথম দিনেই যা তুমি করেছ তার তুলনা হয় না। অসাধারণ। জেল থেকে বেরিয়ে বৃদ্ধাশ্রমে যেতে হবে কুবোতাকে। সেটাই যথেষ্ট। তোমার নামটা এ বছরের পুলিশ পদকের জন্য করা তালিকায় তোলার সুপারিশ করবো আমি।“

এর বেশি আর কি চাইতে পারি। সবার চোখেমুখে খুশীর আমেজ। বিশাল এক চক্র ভেঙে দিয়েছি আমরা। পুরো থানার জন্য এক বিশাল বিজয়। নতুন মেয়েটা এসেই বাজিমাত করে দিল – সবার ফিসফিসানি শুনছিলাম আমি। যা চেয়েছিলাম, তার চাইতেও বেশী পেয়েছিলাম।

কিন্তু, আমার খটকাটা কিছুতেই যাচ্ছিল না। কাজেই আমি লেগে থাকলাম। আবার নতুন করে খোঁজ নিতে শুরু করলাম। এমন সব বিষয়ের দিকে নজর দিলাম যা আগে ভাবি নি। জানতাম কোথাও না কোথাও একটা আলগা সুতো খুঁজে পাবো আমি। আর যা পেলাম তা আমাকে চমকে দিল।

যেই বারে রীচার সন্ধ্যেটা কাটিয়েছিল তার মালিক হাসপাতালে রীচারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডাক্তারের বোন জামাই। ঐ কাঁচাপাকা চুলের মহিলাটা। সে আর ওই বার মালিক দুজন একই পরিবারের সদস্য।

ক্লান্তিতে শরীর ভেঙ্গে পড়ছিল আমার। সেটাই আমাকে সাহায্য করলো এমন সব ছেঁড়া সূত্র জোড়া লাগাতে অন্য কোন সময় যেগুলো আমি হেসেই উড়িয়ে দিতাম। যুক্তির আওতা ছেঁড়ে, পুরো ঘটনাটাকে অন্যদিক থেকে দেখতে শুরু করলাম আমি। কুবোতার নামে এত অভিযোগ, উপযুক্ত তথ্য প্রমাণের অভাবে আমাদের হাত ফসকে বেড়িয়ে যাওয়া, সারা শহর জুড়ে মাকড়শার জালের মত ছড়ানো চাঁদাবাজির ফাঁদ। ঐ ওয়েট্রেসের বলা কথাটা মনে হল আমার। কিছু একটা চাই পুলিশের কুবোতাকে ধরতে চাইলে। একটা লাশ কিংবা পোড়া একটা দোকান। নিদেনপক্ষে একজন মানুষ যে কিনা একটা গুলি খেয়েছে কুবোতার সাথে লাগতে গিয়ে। রীচারের বিছানার পাশে থাকা মনিটর আর তার জোরালো শব্দের কথা মনে আসলো আমার। অনেক বেশিই সুস্থ সবল মনে হচ্ছিল রীচারকে। যেন কিছুই হয় নি। স্বচ্ছ নীল চোখ, স্পষ্ট গলায় বলা কথাগুলো। ঘোড়ার মতন একগাদা পেইন কিলার খেয়েও এত তাড়াতাড়ি জ্ঞান ফিরে পাওয়া ও আমাকে পুরো কাহিনী টানা বলে যাওয়া, কোনরকম ভুলভ্রান্তি ছাড়া।

তৃতীয়বারের মত হাসপাতালে ঢুকলাম আমি। পাঁচ তলায় রীচারের রুম পুরো ফাঁকা। দেখে মনে হচ্ছে গত এক সপ্তাহে কোন রোগী আসে নি এই রুমে। কাঁচাপাকা চুলের ডাক্তারকে জেরা করলাম আমি। চোখের পাতা না ফেলে তিনি অস্বীকার করলেন রীচারের কথা। গতকাল কোন গুলিতে আহত রোগী ভর্তি হয় নি হাসপাতালে। রোগীদের ভর্তির তালিকায় চোখ বুলিয়ে দেখলাম আমি। রীচারের নাম নেই সেখানে। প্রত্যেকটা নার্সের সাথে আলাদা আলাদা বসে প্রশ্ন করে একই উত্তর পেলাম আমি। রীচার নামের কোন রোগী বা গুলিতে আহত কোন রোগী এখানে ভর্তি হয় নি গতকাল।

তারপর সবকিছু যেন চোখের সামনে দেখতে পেলাম আমি। ঐ রাতে রীচার কুবোতাকে খুঁজতে তার বাসায় পোঁছে গেল। কিন্তু বাসায় কেউ নেই। কুবোতা তখন অন্য এক শহরে। দেখলাম রীচার হেঁটে হেঁটে ফিরে আসলো সেই বারে। মালিকের হাতে টাকা ভর্তি খামটা তুলে দিল। আর তারপর ঠাণ্ডা মাথায় তাকে বুঝিয়ে বলল ঠিক কি করলে কুবোতাকে নিয়ে আর মাথা ঘামাতে হবে না কখনো। চোখের সামনে ভেসে উঠলো, বারের মালিক ডাক্তারকে ফোন করছে। নকল ব্যান্ডেজ, বিছানায় শুয়ে থাকা। আর থানায় একটা কল করে জানানো। তারপর আইনের চাকা ঘুরতে শুরু করল। অপ্রস্তুত কুবোতা একগাদা তথ্য প্রমাণ সহ আমাদের হাতে ধরা পরল।

চেয়ারে চুপচাপ বসে থাকলাম আমি। মনে মনে পৌঁছে গেছি এই ছোট্ট শহরের বাস স্ট্যান্ডে। যেখানে একটা লম্বা, একহারা গড়নের লোক কোন এক নাম না জানা শহরে যাওয়ার জন্য বাসের টিকেট কেটে অপেক্ষা করছে। সাথে কোন ব্যাগ নেই, কোথাও যাওয়ার তাড়া নেই। অফুরন্ত সময় তার হাতে। বাস এসে থামল স্টপেজে। দরজা খুলে গেল। লোকটা উঠে গেল বাসে। এই বিশাল দেশের হাজারো শহরের ভিড়ে হারিয়ে যাবে সে। এটাই তার জীবন, এটাই তার পরিচয়। জ্যাক রীচার - নামটা মনে থাকবে আমার।

মন্তব্য ২৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ৯:৫৭

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: অসাধারণ।

০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ১:০৯

অন্তরা রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য৷ আপনার ভালো লাগাই আমার জন্য পুরষ্কার।

২| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ১০:৩৫

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: রীচারের বুদ্ধিটা বেশ ভালো এবং কাজের ছিলো।
খুব ভালো লেগেছে।

০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ১:১০

অন্তরা রহমান বলেছেন: রীচার এরকমই। লাঠি না ভেঙে সাপ মারাটাই তার পছন্দের কাজ। ভালো লেগেছে জেনে ভালো লাগলো।

৩| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ১০:৪১

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: এই শেষ পার্টটাও ভালো অনুবাদ হয়েছে।

রীচারের বুদ্ধির তারিফ করতেই হয় !

নারী জেরাকারী নিয়ে একটা গল্প পড়েছিলাম বহু আগে। সেখানে অপরাধী জেরাকারীর পনিটেইল চুল দেখে ঘাবড়ে যায়। তারপর সব তথ্য উগলে দেয়।

নিজে কিছু লেখার চেষ্টা করুন। শুরু করুন জানালার পাশের গাছটি দিয়ে। তারপর ধীরেধীরে গাছ বেয়ে নামতে থাকুন। প্রতি তলার ছবি আঁকার চেষ্টা করুন। হয়ে যাবে :)

০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ১:১২

অন্তরা রহমান বলেছেন: যাক, অনুবাদের ফ্লোটা তাহলে ধরে রাখতে পেরছি। দুশ্চিন্তায় ছিলাম। এটাও কিন্তু নিজেই লিখেছি। বুঝতে পেরছি আপনার কথাটা। উত্তর পাবেন দ্বিতীয় পর্বে চাঁদগাজী ভাইয়ার করা মন্তব্যের প্রতিউত্তরে।

০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৩:০৬

অন্তরা রহমান বলেছেন: আমি লিখতে চাই। কিন্তু মৌলিক বই লেখার মত এখনও আমার ক্যালিবার হয় নি। নিজের ত্রুটিগুলোর ব্যাপারে আমি সম্যক অবগত। তাই একটা পরিকল্পনা নিলাম। এই বছরটা অনুবাদ করবো। ২০২০ এ ছায়া অবলম্বনে লিখবো। অনুবাদও চলবে তবে বেছে বেছে। আর ২০২১ সালে মৌলিক বই লিখবো ইনশাআল্লাহ।

৪| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ১১:১৩

অজ্ঞ বালক বলেছেন: এন্ডিং ভালো ছিল। অন্য রকম কিছু ভাবছিলাম তবে এইটাও চলে। সুন্দর।

০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ১:১৩

অন্তরা রহমান বলেছেন: আমি হলে অন্যরকম সমাপ্তিই হয়তো দিতাম। কিন্তু অনুবাদে তো আর সেই স্বাধীনতা নেই। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

৫| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ সকাল ৭:১৭

আনমোনা বলেছেন: প্রথম পর্বে হাসপাতাল থেকে পুলিশকে রিপোর্ট করে। শেষ পর্বে হাসপাতালের সবাই অস্বীকার করে। ঠিক মেলাতে পারলামনা। অন্তত রিপোর্টটাতো থাকা উচিত। যাক এটা মুল লেখক বলতে পারবে।

গত পর্বে চাঁদগাজী ভাইয়া যেটা স্লো কাহিনী বলেছিলো, আমার মনে হয়েচিলো সেটা ঝড়ের আগের থমথমে অবস্থা। তাই অপেক্ষা করছিলাম ঝড়টা বয়ে যাওয়ার জন্য। ভালোভাবেই ঝড় হয়ে গেলো।

অনুবাদ সুন্দর হয়েছে।

০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ২:৪৭

অন্তরা রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য। আসলে পুরোটাই ঐ ডাক্তারের প্ল্যান। তাই আলাদা একটা ফ্লোরে রীচারকে রাখা, ফোনটাও নিশ্চয়ই ভুয়াই ছিল। আর রেকর্ড পালটানো তো দুই মিনিটের কাজ।

৬| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ১:০০

রাজীব নুর বলেছেন: দারুন সুন্দর।
থ্রিলার গল্প সিনেমা আমার সব সময় প্রিয়।

০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ২:৪১

অন্তরা রহমান বলেছেন: ধন্যবাদ। কিন্তু, আমার তো সন্দেহ হচ্ছে আসলে খুব একটা ভালো হয় নি। কারন আগের পর্বগুলোর পাঠকদের এখানে দেখছি না। তার মানে হয় গল্পটা টানে নি কিংবা অনুবাদটা ঝুলে গিয়েছে। যাই হোক, থ্রিলার মুভি হল চানাচুর মুভি। ভালো লাগবেই।

৭| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৪:২৬

অন্তরা রহমান বলেছেন: আমার অনুবাদ করা লী চাইল্ডের লেখা জ্যাক রীচার সিরিজের ছোটগল্প "এভরিওয়ান টকস" ডাউনলোড করে পড়ে নিতে পারবেন নীচের লিংকে গিয়েঃ

গুগল ড্রাইভ লিংক

৮| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৫

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আপনার আগের দুটি অংশ পড়া। যদিও সময়াভাবে মন্তব্য করতে পারেনি। অত্যন্ত বলিষ্ঠভাবে অনুবাদ কাজটি করেছেন। আজকের পর্বে ডক্টরের সঙ্গে পুলিশ অফিসারের কথোপকথন পর্বটি খুবই সাবলীল হয়েছে। তবে জেরা কথার অধ্যায়টির সঙ্গে রিপোর্ট পেশ করার মধ্যে একটু বুঝতে অসুবিধা লাগলো। দেখি আবার একবার পড়তে হবে।
শুভকামনা জানবেন।

১০ ই আগস্ট, ২০১৯ সকাল ৯:৫৫

অন্তরা রহমান বলেছেন: আরেকবার পড়ে জানাবেন নিশ্চয়ই অসুবিধাটা কোথায়। বুঝতে পারলে আমার জন্য ভালো হত। শুধরে নিতাম ভবিষ্যতে। অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনার প্রশংসাময় মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন।

৯| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ৮:১৩

আনমোনা বলেছেন: আমি হলে অন্যরকম সমাপ্তিই হয়তো দিতাম

এক কাজ করুন। অন্য রকম সমাপ্তিটাও লিখে ফেলুন। ওটা নাহয় আনঅফিসিয়াল থাকবে। আপনারও চর্চা হবে, আমরাও অন্যরকম স্বাদ পাব।

১০ ই আগস্ট, ২০১৯ সকাল ৯:৫৬

অন্তরা রহমান বলেছেন: অনুবাদ গল্প নিয়ে এত কষ্ট করে কি আর লাভ? কষ্ট করলে মৌলিকের জন্য একসময় করবো ইনশাআল্লাহ।

১০| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ১১:৫৭

মাহের ইসলাম বলেছেন: আপনার এবারের পর্বটাই সবচেয়ে ভালো অনুবাদ করেছেন।
কোথাও ধাক্কা খাইনি।

ঈদ মোবারক।

১০ ই আগস্ট, ২০১৯ সকাল ৯:৫৭

অন্তরা রহমান বলেছেন: যাক বাবা, অনুবাদটা নিয়েই চিন্তা ছিল। ধন্যবাদ এবং ঈদ মোবারক।

১১| ১০ ই আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৩:২৯

সোনালী ডানার চিল বলেছেন: সেবা’র অনুবাদের মতো হয়েছে-
উপভোগ্য! থ্রিলার পচ্ছন্দ করি-
আপনার অনুবাদ তো দেখছি পড়তে হবে!!

১৯ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১১:৫৮

অন্তরা রহমান বলেছেন: অনেক বড় একটা প্রশংসা করলেন। সেবার অনুবাদ দিয়েই বিদেশি সাহিত্যের সাথে পরিচয় শুরু। অনেক অনেক ধন্যবাদ।

১২| ১১ ই আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৪:০৮

রোহান খান বলেছেন: এটা কি অনুবাদ ? প্রিয়তে রাখলাম। পরে পড়বো।

১৯ শে আগস্ট, ২০১৯ রাত ১১:৫৯

অন্তরা রহমান বলেছেন: ওরে বাবা। সরাসরি প্রিয়তে। খুব খুশি হলাম। ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.