নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এই লোকটি আজকের বাংলাদেশকে একাত্তরের লজ্জা বলে ডেকেছিলো

অনুপম দেবাশীষ রায়

আমি অনুপম

অনুপম দেবাশীষ রায় › বিস্তারিত পোস্টঃ

জবানহীনের জবানবন্দী

১২ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৫:২৭

-নাম?

-প্রমির

-পদবী?

-আম্মু

-মানে?মানুষের পদবী আম্মু কি করে হয়?

-না,মানে,লোকে আমাকে প্রমির আম্মু বলে ডাকে। সেই হিসাবে তো পদবী আম্মু-ই হয়!

-আরে ধুরু মরা! ভালো নাম কি আপনার?

-নাম আমার অনেকগুলা।তার মধ্যে কোনটাই ভালো না। সবগুলাই খ্যাত। আগেরকালে সুন্দর ছিলো,এখন খ্যাত হয়ে গেছে।

-আহহা!ভালো নাম মানে-সার্টিফিকেটের নাম।বাপ-মায়ের দেয়া নাম।বুঝলেন? সেইটা কি?

-সার্টিফিকেটের নাম আর বাপ-মায়ের দেয়া নাম তো এক না। গায়ের রঙ ফর্সা দেখে বাপ মা নাম দিয়েছিলো গৌরি। দাদাজান বললেন,নাম হিন্দুয়ানী হয়েছে,বদলাতে হবে। বদলায়ে নাম দিলেন রেবেকা বানু।

-উফ! আপনার কাছে আপনার নামের ইতিহাস জানতে চেয়েছে কে? সার্টিফিকেটের নামটা বলুন খালি-রেবেকা বানু,তাইতো?

-স্যার,ওখানেও একটু গন্ডগোল আছে। আমি মেট্রিক পরীক্ষা দিলাম বিয়ের আগে, মেট্রিকের সার্টিফিকেটে নাম রেবেকা বানু। ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষা দিলাম বিয়ে পরে,সেখানে নাম রেবেকা চৌধুরী।

-হায়রে! আচ্ছা,তাহলে রেবেকা চৌধুরী দিয়েই চলবে। শিক্ষাগত যোগ্যতা?

-মাস্টার্স ডিগ্রী।

-স্থায়ী ঠিকানা?

-রান্নাঘর।

-জ্বী?

-মানে,স্যার,আমার বাপের বাড়ি রংপুর আর শ্বশুরবাড়ি কুমিল্লা।এখন কোনটা বলবো সেইটা নিয়ে কনফিউশনে পড়ে গেসিলাম তো,তাই আপনাকে আর না জ্বালায়ে বরং সত্যিকারের স্থায়ী ঠিকানাই বলে দিলাম।

-আপনি কি আমার সাথে মশকরা করছেন? আপনি জানেন না যে বিয়ের পর স্থায়ী ঠিকানা শ্বশুরবাড়ি দিতে হয়? আমি আর আপনার সাথে কোন কথা বলতে চাচ্ছি না।আপনি নিজের হাতে এখানে শ্বশুরবাড়ির ঠিকানা বড় করে লিখে দেন,আমি দেখে দেখে কম্পিউটারে তুলে নিচ্ছি।

-জ্বী।

-ধন্যবাদ।এবার বলেন,আপনার জন্মতারিখ কতো?

-বাড়ায়ে বলবো,নাকি কমায়ে?

-ধুত্তুরি!বাড়ায়ে কমায়ে বলবেন কেন? আসলটা বলেন।

-না মানে,আপনি আবার সার্টিফিকেটের তথ্য জানতে চাচ্ছেন তো।তাই!আমার বিয়ের সার্টিফিকেটে আঠারো মিলানোর জন্য বয়স বাড়ায়ে দেয়া আছে,আর পরীক্ষার সার্টিফিকেটে বয়স কমায়ে দেয়া আছে। আসলটা তো কোথাও নাই।

-কি যন্ত্রণা! আপনি ভোটার আইডি কার্ড এনেছেন না?ওইটা দেন,আর চুপচাপ বসে থাকেন।পাসপোর্ট দেখে লিখে নিচ্ছি আমি।

-জ্বী আচ্ছা।এই নিন।

-ধন্যবাদ। এবার বলুন,পেশা কি লিখবো?

-ক্ষুদ্র ব্যবসা।

-আচ্ছা! তাই নাকি? কিসের ব্যবসা করেন আপনি?

-দেখলেন,আপনিই কিন্তু এবার আমাকে কথা বলাচ্ছেন! সত্যি সত্যি কি আর ব্যবসা করি নাকি? পেশা আমার ঘরে বসে ভাত রান্ধা। কিন্তু হাসবেন্ড বলেছেন ক্ষুদ্র ব্যবসা লিখতে। কারণ,তাহলে আমার নামে টাকা রেখে কিছু ট্যাক্স ফাঁকি দেয়া যায়।খুশি?

-স্যরি,আমার আসলে জিজ্ঞেস করাই ভুল হয়েছে। লিখে দিচ্ছি ক্ষুদ্র ব্যবসা। শেষ প্রশ্ন,আপনি কেন আত্নহত্যা করতে চান?

-এতোক্ষণ ধরে আপনাকে সেগুলোই বলছিলাম।আমার আর এই পরিচয়হীন,ঠিকানাহীন,উদ্দেশ্যহীন জীবন রাখতে ইচ্ছে করছে না।স্যার,আমি কি আত্নহত্যার লাইসেন্সটি পাবো?অনেকদিন ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি।



মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১১

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: শেষের টুইস্ট, মেসেজটা সুন্দর| পুরোটা রসাত্মক

১৩ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১২:১২

অনুপম দেবাশীষ রায় বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া।

২| ১৩ ই মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:২২

প্রামানিক বলেছেন: চমৎকার রস রচনা। ধন্যবাদ

১৫ ই মার্চ, ২০১৫ সকাল ৭:৫৬

অনুপম দেবাশীষ রায় বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকেও

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.