নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এই লোকটি আজকের বাংলাদেশকে একাত্তরের লজ্জা বলে ডেকেছিলো

অনুপম দেবাশীষ রায়

আমি অনুপম

অনুপম দেবাশীষ রায় › বিস্তারিত পোস্টঃ

সহজ বাংলায় আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৩৭

দীর্ঘদিন ধরে আমার কাছে বহু মানুষ আমাকে এই বিষয়ে কিছু লিখতে বলছে।

বিশেষত আমি নিজে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড ইউনিভার্সিটিতে ফুল স্কলারশীপে চান্স পাবার পর থেকে প্রতিদিন অনেক মানুষের কাছ থেকেই এই অনুরোধটা পাচ্ছি। অনুরোধটুকু খুবই যৌক্তিক কারণ আসলে এই বিষয়ে বাংলায় এবং বিশেষত বাংলাদেশী ছাত্রদের দৃষ্টিকোন থেকে লেখা জিনিসপত্র ইন্টারনেটে কম পাওয়া যায়। যেসব পাওয়া যায় সেগুলো বেশ ঘোলাটে আর ইংরেজি হওয়ায় অনেকের বুঝে নিতে সমস্যা হয়। কাজেই সহজ বাংলায় ব্যাপারটা খোলাসা করে বোঝানোর চেষ্টা থাকবে এই রচনায়।

প্রথমেই বলে নেই এখানে উচ্চশিক্ষা বলতে আন্ডারগ্রাজুয়েট স্টাডিকে বুঝাচ্ছি আর আমেরিকা বলতে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র আর কানাডায় পড়াশোনার নিয়মাবলি লেখা হচ্ছে। যে কিছু লিখছি সেটা আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে জানা কথাবার্তা-শোনা কথা নয়। চেষ্টা করবো সবকিছু সহজ করে বুঝিয়ে বলতে। তবু যদি কারো কাছে কোন অস্পষ্টতা লাগে-আমাকে যেকোন সময়ে ফোন করতে পারেন। সাহায্য করবার চেষ্টায় কোন ত্রুটি থাকবে না।

পুরো রচনাজুড়ে একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে যে এখানে সাধারণত আর অধিকাংশ নিয়ে আলোচনা করে যাবো। কারণ আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রত্যেকটিতে নিয়ম কানুন আলাদা হওয়ায় প্রত্যেকটিতে আলাদা আলাদা কিছু নিয়ম থাকে। সেগুলোর পরেও সবগুলোতে সহজ ভাষায় একটা সামঞ্জস্য আছে। সেই সামঞ্জস্যের অংশটুকুন নিয়ে লেখা হচ্ছে। তারপরেও যে বিশ্ববিদ্যালয়ে এপ্লাই করতে চাচ্ছেন-তাদের স্পেশাল কোন নিয়মকানুন আছে কিনা সেটা তাদের ওয়েবসাইট থেকে দেখে নিতে অনুরোধ করবো।

এবার মূল রচনায় আসি।

আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলতে গেলেই আগে নিচের ব্যাপারগুল জানতে হবে।

১)আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রক্রিয়া আমাদের ভর্তি প্রক্রিয়ার চেয়ে অনেক অনেক অনেক আলাদাঃ

আসলে আমাদের দেশে যেমন একটা নির্দিষ্ট পরীক্ষায় ভালো করে সাথে সাথে একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে যাওয়া যায়-ওদের দেশের পদ্ধতিটা ঠিক এমন নয়। ভর্তির জন্য কিছু পরীক্ষা দেয়া লাগে বটে-তবে সেই পরীক্ষাগুলো ভর্তির অনেক অনেকগুলো অনুষঙ্গের মধ্যে একটা অনুষঙ্গ মাত্র-আর কিছুই নয়। পরীক্ষার রেজাল্ট যতটা গুরুত্বপূর্ণ-এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটি-এডমিশন এসে-লেটার অব রেকমেন্ডেশন ইত্যাদি সমভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আমি এমন অনেককেই চিনি যারা পরীক্ষায় মোটামুটি একটা স্কোর নিয়েও বাকি অনুষঙ্গগুলোর জোরে অনেক ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে।

দ্বিতীয়ত,একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়াটি আসলে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ভর্তি করে নেয়-কোন সাবজেক্টে ভর্তি করে না।ওদের আন্ডারগ্রাজুয়েটে প্রথম দুই বছর মূলত সবাই মোটামোটি একই জিনিস পড়ে। এই দুইবছর চাইলে কেউ কোন নির্দিষ্ট সাবজেক্ট বাছাই নাও করতে পারে। ঘুরে ঘুরে সব সাবজেক্ট পড়ে পড়ে দেখতে পারে। এরপর দুইবছর পরে গিয়ে মেজর ডিক্লেয়ার করতে হয় অর্থাৎ যে সাবজেক্টে স্পেশালাইজ করতে চাও তার নাম বলতে হয়। কাজেই কোন ইউনিভার্সিটিতে চান্স পাওয়া মানেই মোটামুটিভাবে সব সাবজেক্টে পড়তে পারার স্বাধীনতা। তবে বিশেষ প্রতিষ্ঠানে বিশেষ বাধ্যবাধকতা থাকতে পারে-কিন্তু আমি শুরুতেই বলেছি-বিশেষদের নিয়ে কথা হবেনা-কথা হবে সাধারণত আর অধিকাংশকে নিয়ে। বিশেষ নিয়মকানুনগুল সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে দেখে নিতে হবে।

তৃতীয়ত, কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর সেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রেডিট ট্রান্সফার করে চলে যাওয়া যায়। ব্যাপারটা খুব কঠিন না। কাজেই সুঁচ হয়ে ঢুকে ফাল হয়ে বেরোনোর একটা উপায় থাকছে এবং এমন অনেককেই আমি চিনি যারা মোটামুটি গোছের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে পরে অনেক নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে পাস করেছে।



২)আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে কোটিখানেক টাকা লাগে নাঃ

অনেকের ধারণা আছে যে আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে গেলে মহা বড়লোক হওয়া লাগে আর ব্যাংকে কোটি কোটি টাকা দেখানো লাগে। আসলে ব্যাপারটা এরকম নয়। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের কেউ যদি সেই পর্যায়ের মেধাবী হয়-তাহলে ফুল স্কলারশীপে আমেরিকায় পড়তে পারে। হ্যাঁ-এটা সত্যি যে গ্রাজুয়েট পর্যায়ের তুলনায় আন্ডারগ্রাজুয়েটে ফুল স্কলারশীপের সংখ্যা অনেক কম আর বেশ প্রতিযোগিতামূলক-তবে ব্যাপারটা অসম্ভব নয়। আমার মতন গাধাগোছের কেউ যদি ফুল স্কলারশীপ পেয়ে ফেলতে পারে-তাহলে অনেকেই চেষ্টা করলেই পারবে। অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুল স্কলারশীপ দেয় আর সেইগুলোর কয়েকটার নাম নিচে বললাম। বলে রাখি যে এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফুল স্কলারশীপে পড়ছে এমন মানুষদের আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি-কাজেই তথ্যে ভুল হবার সম্ভাবনা কম।

ফুল স্কলারশীপ দেয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলো-



১)Amherst College

২)Dartmouth College

৩)Harvard University

৪)Massachusetts Institute of Technology

৫)Princeton University

৬)Yale University

৭) Goucher College

৮) Brown University

৯) Drexel University

১০)New York University

১১)Columbia University

১২)Duke University

১৩)Cornell University

১৪)Washington and Lee University

১৫)American University



এর বাইরেও আরো অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুল স্কলারশীপ দেয় যেগুলোর নাম একটু ঘাটাঘাটি করলে পেয়ে ফেলা যাবে। কাজেই কেউ যদি কারো কাছে শুনে থাকো যে কোটিপতির বাচ্চা আর সুপার জিনিয়াস ছাড়া কেউ আমেরিকায় পড়তে পারে না-তারা নিরাশ হইয়ো না। কিছু মানুষ থাকে যারা সবাইকে নিরাশ করার চেষ্টা করে। এরা নিরাশুক। এরা আমাকেও নিরাশ করার চেষ্টা করতো। কই?আমি তো পারলাম! কাজেই তুমিও পারবা। নিরাশুকদের কথায় একদম কান দেয়া যাবে না।



যাহোক-সাহিত্যের কথা বলা শুরু করলাম কেন? কাজের কথায় আসি।

এখন প্রশ্ন হলো কি দেখে আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এই ফুল স্কলারশীপ বা এডমিশন ডিসিশনগুলো দেয়। আসলে একেক বিশ্ববিদ্যালয় একে জিনিস দেখলেও মোটামুটি একটা কমন লাইনআপ দেয়া যেতে পারে। সেইটার একটা লিস্ট দিলাম নিচে।

১)কমন এপ্লিকেশন আর কমন এপ্লিকেশনের এসে

২)SAT আর SAT Subject Test এবং IELTS

৩)একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট

৪)এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটিস

৫) লেটার অব রেকমেন্ডেশন

এবার একটা একটা করে ব্যাখা করি



||কমন এপ্লিকেশন আর কমন এপ্লিকেশন এসে||

কমন এপ্লিকেশন হল একটা কমন অনলাইন এপ্লিকেশন যেটা কিনা অধিকাংশ আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয় গ্রহণ করে। যারা করেনা-তাদের এপ্লিকেশনটাও অনেকটা কমন এপ্লিকেশনের মতন। কাজেই একবার কমন এপ্লিকেশন ফিল আপ করলে-সেখান থেকে কপি পেস্ট করে করে বাকি এপ্লিকেশনও ফিল আপ করা যায়।

কমন এপ্লিকেশনটা পাওয়া যায় এই ওয়েবসাইটেঃ http://www.commonapp.org

এবার বলি কিভাবে ফিলআপ করতে হয়। ওয়েবসাইটে ঢুকেই প্রথমে ফেসবুকের মতন করে একটা একাউন্ট খুলতে হয় আর সেই একাউন্টটা দিয়ে লগইন করতে হয়। লগইন করলেই উপরে চারটা ট্যাবের মধ্যে একটা দেখা যাবে কমন এপ। ওইটা ক্লিক করলেই বামপাশে চারটা ট্যাব দেখা যাবে। এখানে অধিকাংশ ব্যাপারস্যাপার খুব স্বাভাবিক। নিজের নামধাম-বাপ মায়ের নামধাম এইসব। এছাড়াও এখানে একটা যায়গায় এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটিসের একটা লিস্ট দিতে হয়। সেইটার ব্যাপারে পরে বলছি। একটা যায়গায় SAT-IELTS এর স্কোর দিতে হয়। একটা যায়গায় স্কুলের নামধাম লিখতে হয়। এগুলো ফেসবুক জেনারেশনের ছেলেপেলে একটু গুতাগুতি করলেই বুঝে ফেলবে। তবু যদি কারো বুঝতে সমস্যা হয়-আমি তো আছিই। আমাকে ফোন করে দিলেই সাহায্য করে বাধিত থাকবো।

এখানের যে ব্যাপারটা অনেকের বুঝতে ভুল হয় সেটা হলো গাইডেন্স কাউন্সিলর। এই বিষয়টা একটু বুঝিয়ে বলার প্রয়োজন বোধ করছি।



গাইডেন্স কাউন্সিলরঃ আমেরিকান স্কুলগুলোতে একজন বিশেষ অফিসার থাকে যে ছেলেপুলের প্রোগ্রেস-ট্রোগ্রেসের খেয়াল রাখে। তাকে বলে গাইডেন্স কাউন্সিলর। আমাদের দেশের কিছু ইংরেজি মিডিয়াম স্কুল কলেজে গাইডেন্স কাউন্সিলর থাকলেও অধিকাংশ বাংলা মিডিয়াম স্কুল কলেজে গাইডেন্স কাউন্সিলর থাকে না। সেই ক্ষেত্রে নিজের পছন্দের কোন শিক্ষককে গাইডেন্স কাউন্সিলর বলে ঘোষনা দেয়া যায়। তার নামটা কমন এপ্লিকেশনের যথাযথ স্থানে লিখতে হয়। এই গাইডেন্স কাউন্সিলর খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার কেননা যাবতীয় একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট তার মারফতেই পাঠাতে হবে আর তার লেটার অব রেকমেন্ডেশন একটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যপার। কাজেই দেখে শুনে বুঝে একজন ক্লোজ টিচারকে গাইডেন্স কাউন্সিলর বানাতে হবে যে কিনা তোমাকে ভালোমতন চেনে-জানে আর তোমাকে সাহায্য করতে ইচ্ছুক এবং অবশ্যই ইংরেজিতে খুব দখল।



কমন এপ্লিকেশনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো কমন এপ্লিকেশনের এসে বা রচনা। এই বিষয়টাও একটু বুঝিয়ে বলার জন্য ব্যাখ্যা হিসাবে লিখছি-



এডমিশন এসেঃ অনেকের(এবং আমার) মতে এডমিশন এসে বা রচনাটাই ভর্তি প্রক্রিয়ার সবচেয়ে ভাইটাল অংশগুলোর মাঝে একটা। এই এসে দিয়ে একজন এডমিশন অফিসার শিক্ষার্থীকে চিনতে পারবে-জানতে পারবে। এসের টপিক থাকে এবং সেই টপিকে মোটামুটি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে তোমার এবং তোমার প্যাশনের সম্বন্ধে জানতে চাওয়া হয়। এই এসেটা একটু ধীরেসুস্থে-বুঝে শুনে লিখতে হবে। এই এসেটা এমন ভাবে লিখতে হবে যাতে সবার থেকে আলাদা করে তোমার লেখাটা ফুটে ওঠে। এসে লেখার তেমন কোন নিয়মকানুন নেই তবে একটা ইনফরমাল আপন-আপন আবহাওয়া আছে যেটা আমাদের অতিফরমাল এসএসসির 'ক্লাইমেট চেইঞ্জ' মার্কা রচনার অনেকটাই বিপরীত। কাজেই এই ভাবধারাটা বোঝার জন্য কিছু স্যাম্পল এসে পড়া যেতে পারে। গুগলে সার্চ দিলেই অনেক স্যাম্পল এডমিশন এসে পাওয়া যাবে। কেউ যদি চায় তাহলে https://www.facebook.com/groups/BdBeyondBorder এই গ্রুপটাতে গিয়ে ফাইল সেকশনের স্যাম্পল এসেগুলোও দেখতে পারে। স্যাম্পল এসে ছাড়াও এখানে আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায় আর প্রয়োজনে অনেক প্রশ্ন পোস্টও করা যায়। কাজেই ভর্তিচ্ছু সকলকে বলবো গ্রুপটা একবার ঘুরে দেখতে।

কেউ যদি আমার এসেটা দেখেতে চায়-তাহলে সেটাও দেখতে পারে। আমার ফেইসবুক পেইজে এসেটা দেয়া আছে।



||SAT এবং SAT Subject Tests||

এডমিশনের এই অংশটাকে নিয়ে অনেকে অনেক স্বাচ্ছন্দ বোধ করতে পারেন কারণ এই পরীক্ষাত ব্যাপারটি আমাদের মোটামুটি পরিচিত। আর এই পরীক্ষাটি একক নির্ধারণী বিষয় না হলেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই বিষয়ে জানাও দরকার।

প্রথমে বলি SAT এর কথা। এটা একটা বেসিক পরীক্ষা। আপনি যে বিষয়েই পড়তে চান না কেন-আপনাকে এই পরীক্ষাটি দিতে হবে। পরীক্ষাটি ২৪০০ মার্কে হয়-চার ঘন্টার পরীক্ষা।পরীক্ষা নেয়া হয় তিনটি অংশে-ম্যাথ,ক্রিটিকাল রিডিং আর রাইটিং।তিনটাতে আটশ করে মোট চব্বিশ শো।

ম্যাথ অংশটা বেশ সোজা। মোটামুটি মাথা ঠান্ডা রাখলে ক্লাস টেনের একটা ছেলেরও ম্যাথগুলো ভুল করার কোন কারণ নেই। তবে সমস্যাটা হলো-কম সময়ে অনেক বেশি অংক করতে হয়। কাজেই এই সময়ের মধ্যে মাথা ঠান্ডা রেখে ঠিকঠাক অংক করতে পারাটা একটা প্রাকটিসের ব্যাপার।

রাইটিং অংশ মূলত গ্রামারভিত্তিক। এরর আইডেন্টিফিকেশন-রিরাইটিং এর মতন বিষয়গুলো থাকে। তবে এই গ্রামারটুকুন আমাদের চিরপরিচিত ব্রিটিশ গ্রামার থেকে একটু ভিন্ন ধাঁচের। একটু বেশি কনভারসেশনাল। তবে মোটামুটি একটু পড়াশোনা আর কারো সামান্য গাইডেন্স পেলে ব্যাপারটা বেশি একটা কঠিন নয়। সাথে অবশ্য একটা এসেও লিখতে হয়। কেউ যদি এডমিশন এসে নিয়ে একটু ঘাটাঘাটি করে তাহলে এই এসেতেও খুব একটা সমস্যা হবেনা-তবু বইয়ের কিছু মডেল দেখা যেতে পারে।

রিডিং অংশটা একটু ক্রিটিকাল বলেই নাম ক্রিটিক্যাল রিডিং। আনসিন পেসেজ থাকে-সেগুলোর থেকে প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়। এইখানে কিছু টিপস-ট্রিকসের ব্যাপার আছে। বই আর কারো সাহায্য নিলে সহজেই পারা যেতে পারে। সাথে যে ঝামেলার জিনিসটা আছে সেটা হল সেনটেন্স কমপ্লিশন। এইখানে প্রচুর ভোকাবুলারির জ্ঞান লাগে আর বেশ কিছু শব্দ মুখস্ত করতে হয়। তাই বলে ডিকশনারি নিয়ে বসে যেতে হবে এমন নয়। শব্দ শেখারও কিছু কায়দা আছে।

এইসব কায়দা-নিয়মকানুন-টিপস ট্রিকস খুব সুন্দর করে লেখা আছে Princeton Review এর Cracking the SAT বইটাতে। এছাড়া Barrons এর SAT বইটাও বেশ ভালো। তবে প্রাকটিস টেস্টের জন্য Collegeboard এর নীল রঙের SAT বইটি ব্যবহার করা নিরাপদ।

এই বইগুলোর দাম খুব বেশি না। নীলক্ষেতে আর চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লায় সহজেই পাওয়া যেতে পারে।তেমন সমস্যা নেই।

কেউ প্লিজ মনে করবেন না যে পরিক্ষাটি খুব কঠিন-কারণ এটা খুব একটা কঠিন নয়। শুধু দরকার একটু পরিশ্রম আর গাইডেন্স। আমার SAT এর সেরা স্কোর ২২০০ যেটা কিনা ৯৯ পারসেন্টাইল-অর্থাৎ সারা পৃথিবীর শতকরা ৯৯ জন পরীক্ষার্থীর চেয়ে বেশি-আর বিশ্বাস করেন-আমি একদম সুপার জিনিয়াস লেভেলের কেউ না। আর আমি যখন পরীক্ষার পর কিছু মানুষকে SAT পরীক্ষার জন্য পড়িয়েছি তখন তাদেরকেও সহজেই ২০০০+ পাবার জন্য সাহায্য করতে পেরেছি। কাজেই ব্যাপারটা নিয়ে এতো ঘাবড়ানোর কিছুই নেই।

কেউ যদি SAT এর জন্য কোচিং করতে চান তাহলে ঢাকায় Mentors আর চট্টগ্রামে Executive Care এ যোগাযোগ করতে পারেন। ঢাকায় চারিদিকে Mentors ছড়ানো আর চট্টগ্রামে Executive Care হলো ইঞ্জিনিয়রস ইন্সটিউটে। এরা তাদের কোর্সটা নিয়ে অনেক বেশি সিরিয়াস এবং বেশ ভালো অংকের টাকা চার্জ করে। আমার জানামতে এরা তিনমাসের কোর্সের জন্য বিশ হাজার টাকার মতন নিয়ে থাকে। এই ব্যাপারটা অনেকের কাছে পেশাদারিত্ব-অনেকের কাছে কমার্শিয়াল ব্যবহার। তবে কোচিং ছাড়া পরীক্ষাটা দিয়ে ফেলা অসম্ভব কিছু না আর আমি সাহসী শিক্ষার্থীদের সেটা করতেই অনুপ্রাণিত করবো। সবচেয়ে ভাল হয় যদি প্রাইভেট কোন টিউটর খুঁজে পান-কারণ সেক্ষেত্রে আপনার নির্দিষ্ট সমস্যা-বিশেষ করে এসের ব্যাপারে খুব ভালো নজরদারি পেরে পারেন।

আমি সবকিছু খোলাখুলি জানিয়ে রাখছি বলে কারো কাছে চাঁছাছোলা মনে হলে দুঃখিত-আমি আসলে অন্যদের মতন ঘোলাটে করে একটা ব্যাখা লিখতে চাইনি। যেমন ঘটনা তেমন করে লিখে দিলাম। এখন আপনারা বুঝে নিন।

যাহোক SAT পরীক্ষাটি নেয় Collegeboard নামের একটা বেসরকারী সংগঠন। এটার জন্য অনলাইনে রেজিস্টার করা যায় বা Mentors থেকেও রেজিস্ট্রেশন করা যায়। Mentors থেকে রেজিস্ট্রেশন করাই কম ঝুকিপূর্ণ। চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীতা Executive Care এর সাহায্য নিতে পারেন।

SAT subject test হলো মূলত নির্দিষ্ট সাবজেক্টের উপর একেকটা পরীক্ষা। এই পরীক্ষাটি না দিলেও চলে তবে বিশেষত বিজ্ঞানের বিষয়গুলোতে পড়তে চায় এমন মানুষদের এই পরীক্ষাটি দেয়া উচিত। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় নির্দিষ্ট কোর্সের জন্য আবার এটাকে অনিবার্য বলেও ঘোষণা দেয়। Mathematics,Physics,Chemistry,Biology বিভিন্ন বিষয়ে Subject test দেয়া যায়। কে কোন কোন সাবজেক্ট টেস্ট দেবে এটা তার সাবজেক্ট চয়েসের ওপর নির্ভর করে। আমার এক বন্ধু গণিতে অনার্স করতে চায়-সে Mathematics আর Physics এর Subject Test দিয়েছে। এই সাবজেক্ট টেস্টগুলোর রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়াও এমনি SAT এর মতন।এগুলোর জন্যেও Barrons এর বই পাওয়া যায়। সিলেবাসগুলো আমাদের ইন্টারের সিলেবাসের মতই আর প্রশ্ন বেশ একটা কঠিন নয়। Barrons থেকে কিছু প্রাকটিস করলেই পারা যেতে পারে।

IELTS একটা অপরিহার্য পরীক্ষা। অনেকে আবার IELTS এর বদলে TOEFL ও দেয়-কিন্তু আমার চোখে IELTS সহজতর আর অনেক দেশের জন্য প্রযোজ্য। মূলত এই পরীক্ষার ফলাফলের উপর রেজাল্ট নির্ভর করেনা। এইটা একটা ইংরেজিতে কমিউনিকেট করতে পারার প্রমাণ। অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় IELTS এর জন্য একটা পাসিং মার্জিন দেয়(সাধারণত 6) তার বেশি পেলেই তারা ইংরেজিতে পারদর্শী ধরে নেয়। IELTS এর জন্যে অনেকেই কোচিং করায়। রাস্তায় হাটলেই হাজার বিজ্ঞাপন দেখা যায়। তবে আমার মতে যে SAT দিয়েছে তার কাছে IELTS পানিভাত। আমি SAT দেয়ার এক সপ্তাহ পর মোটামোটি কোন প্রস্তুতি ছাড়াই IELTS এ 9 এর মধ্যে 8 স্কোর করেছিলাম যেটা খুব একটা খারাপ না।তবুও কেউ মনের শান্তির জন্য কোচিং করতএ চাইলে করতে পারে।



||একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট||

একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট হিসেবে এসএসসির সনদ,ফার্স্ট ইয়ার ফাইনালের রেজাল্ট আর সেকেন্ড ইয়ারের টেস্টের রেজাল্ট জমা দিতে হয়। ভয় পাওয়ার কারণ নেই-এইগুলা খুব একটা অতিজরুরি না। কিন্তু প্রথম সারির ছাত্ররা স্কলারশীপের ক্ষেত্রে কিছু অগ্রাধিকার পায়।

এই ট্রান্সক্রিপ্টগুলো একাডেমিক কাউন্সিলরের মারফত পাঠাতে হবে। নিজের মতন করে কাউন্সিলরকেও একটা কমন এপ একাউন্ট খুলে দিতে হবে আর সেইখানে এই ডকুমেন্টগুলো পিডিএফ আকারে আপলোড দিতে হবে।



|| এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটি ||

এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটি ওদের কাছে বড় একটা বিবেচনার বিষয়। এই জিনিসটা এডমিশনের কাজে অনেক সাহায্য করে। মূলত কারো যদি কোন চ্যারিটি-সোশ্যাল ওয়ার্ক বা আন্তর্জাতিক সনদ থাকে-তাহলে সেটাকে ওরা বিশেষ মূল্যায়ন করে। কারো যদি বুঝতে সমস্যা হয় যে ঠিক কোন কোন জিনিসকে এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটিতে লেখা যায়-তাহলে আমার এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটির প্রোফাইল দেখে একটা ধারণা নিতে পারে।

আমার বিতর্কের জাতীয় আর আন্তর্জাতিক অর্জন আছে। আমি এশিয়ান স্কুলস ডিবেটিং চ্যাম্পিয়নশীপের বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় সেমিফাইনালিস্ট ছিলাম। আমার নিজের একটা প্রকাশিত গল্পের বই আছে। আমি রাজউক কলেজ ডিবেট ক্লাব আর রাজউক কলেজ সাহিত্য ক্লাবের বর্তমান প্রেসিডেন্ট। আমি চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলের স্কুল ছাত্র সংগঠন পথিকৃৎ কলেজিয়েটের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে পাঁচ বছর দায়িত্ব পালন করেছি। আমি ওজভা নামের একটা দাতব্য সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আর সাধারণ সম্পাদক। আমার আবৃত্তি,অভিনয় আর উপস্থিত বক্তৃতায় জাতীয় সনদ আছে। আমি মার্কস অলরাউন্ডার নামের একটা টেলিভিশন ট্যালেন্ট হান্ট রিয়েলিটি শোর ফাইনালিস্ট ছিলাম-সেই শোটার উপস্থাপনা করেছি একটা পার্টটাইম জব হিসেবে। একটা রাজনৈতিক প্রতিবাদ আন্দোলনে নেতৃত্ব দেবার অভিজ্ঞতা আছে আমার।

এরকম বিষয়গুলাকে এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটি বলে লেখা যায়। তবে কারো যদি মনে হয় তার এরপর কোন এচিভমেন্ট নেই-তাহলে খুব ভয় পাবার কিছু নেই কারণ আমি এমন অনেককেই চিনি যাদের এমন কোন রেকর্ড নেই কিন্তু অন্য অনুষঙ্গগুলো এতটাই পাকপোক্ত যে অনেক ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে। আর যাদের এখনো সময় আছে-তাদের বলবো-এখনও পারলে কিছু চ্যারিটি আর সোশ্যাল কাজ করে রাখো। এডমিশনের জন্য না হোক-দেশের জন্য-কাজে দেবে!



|| লেটার অব রেকমেন্ডেশন ||

লাস্ট বাড় নট দ্য লিস্ট-লেটার অব রেকমেন্ডেশন!

এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার। মূলত গাইডেন্স কাউন্সিলর সহ আরো দুইজন টিচারের কাছ থেকে সুপারিশ পত্র নিয়ে সেটা সাবমিট করতে হয়। কমন এপ্লিকেশনে একাউন্টের মাধ্যমে বা মেইল করে সেগুল ইউনিভার্সিটিতে পাঠানো যায়। তবে কোনভাবেই এই চিঠিগুলো যাতে ম্যাড়মেড়ে চারিত্রিক সনদের মতন না হয়। পত্রটা পড়ে মনে হতে হবে যে পত্রকার শিক্ষার্থীকে ব্যক্তিগতভাবে চেনে এবং ব্যক্তিগতভাবে তার গুণাবলি তুলে ধরে তাকে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা যোগ্য চয়েস হিসেবে ব্যাখ্যা করবে। এই পত্রটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে সবচেয়ে ভালো হয় যদি শিক্ষক আর ছাত্র মিলেঝুলে ঠিক করে যে কি কি লেখা যায়। আমার ক্ষেত্রে যেটা হয়েছিলো যে আমি আমার টিচারদের একটা ড্রাফট লিখে দিয়েছিলাম-তারা সেটাকে এডিট করে-সই করে পাঠিয়ে দিয়েছিলো। কেউ যদি কোন স্যাম্পল লেটার অব রেকমেন্ডেশন চায়-তাহলে গুগল করলেই পাওয়া যাবে। পাওয়া না গেলে আমার সাথে যোগাযোগ করতে পারে-আমার কাছে কিছু আছে।



এই হল মোটামুটি সহজ বাংলায় আমেরিকায় ভর্তি প্রক্রিয়া। যদি কোন ভুলভ্রান্তি হয়ে থাকে তাহলে অভিজ্ঞরা দয়া করে জানাবেন-আমি ঠিক করে নেবো।

কারো যদি কোন বিভ্রান্তি থাকে তাহলে যেন কমেন্ট সেকশনে জানায় আর যদি আরো সমস্যা হয় তাহলে আমাকে ফোন করে জিজ্ঞেস করতে পারে।আমার ফোন নাম্বার হল ০১৮৪২৮৪৯৯৯৪।

আমি এতো গায়ে পরে সাহায্য করতে চাচ্ছি কারণ আমি জানি যে অনেকের সাহায্য দরকার আর আমার সময়ে নাজিয়া চৌধুরী আপুদের মতন অসাধারণ মানুষেরা আমাদের সাহয্য করেছেন। কাজেই সেই দায় থেকেই আমাদের অন্যদের সাহায্য করাটা কর্তব্য।

সব কথার শেষ কথা-কেউ যেন কখনো নিরাশ না হয়।সত্যি করে চেষ্টা করলে আসলে সব স্বপ্নই অর্জন করা যায়। আমার খুব প্রিয় মানুষের খুব প্রিয় একটা কথা আছে-মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়...

চলো...বড় হই...

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৯

কলাবাগান১ বলেছেন: কোন সাবজেক্টে মেজর করার ইচ্ছা?

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৫

অনুপম দেবাশীষ রায় বলেছেন: আমি-পলিটিক্যাল সায়েন্স :)

২| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১০:১৯

টু-ইমদাদ বলেছেন: অসাধারণ হয়েছে . . .শুভ কামনা রইল আপনার জন্য . . .

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১:৪২

অনুপম দেবাশীষ রায় বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই-ভালো থাকবেন

৩| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১১:৩৯

এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন:
খুব সুন্দর লিখেছেন অনুপম দেবাশীষ রায়
আমারও এ ব্যাপার নিয়া লিখার ইচ্ছা ছিল । টাইপের অনগ্রসরতা না লখার অন্যতম একটা কারন ।
আমাদের দেশের নতুন প্রজন্মদের উদ্ভুদ্ধ করতে এমনই সুন্দর সুন্দর লিখা লিখে ।
আমনার এমন মহত প্রচেষ্টায় আমার আন্তরীক সভেচ্ছা রহিল ।

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৪:০৪

অনুপম দেবাশীষ রায় বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই :)

৪| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৫

এইচ তালুকদার বলেছেন: অসাধারন লিখেছেন।শিরোনামটি আলাদা করে দৃষ্টি আকর্ষন করেছে,আপনার জন্য শুভকামনা।

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১৩

অনুপম দেবাশীষ রায় বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই

৫| ১১ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:৩৯

অব্যক্ত স্লোগান বলেছেন: অনেকদিন ধরেই শুনেছিলাম আমেরিকা আন্ডারগ্র্যজুয়েট স্কলারশিপ অফার করেনা। যেতে হলে পোস্টগ্র্যজুয়েটেই যেতে হবে। এখন তো অনেক কিছুই বুঝে গেলাম। ধন্যবাদ ভাইয়া!
গান এর ক্ষেত্রে অর্জন গুলো ও কি প্রায়োরিটি পাবে? জানাবেন প্লিজ।
ধন্যবাদ আবারও! :)

১৩ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:০৬

অনুপম দেবাশীষ রায় বলেছেন: অবশ্যই পাবে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.