নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এই লোকটি আজকের বাংলাদেশকে একাত্তরের লজ্জা বলে ডেকেছিলো

অনুপম দেবাশীষ রায়

আমি অনুপম

অনুপম দেবাশীষ রায় › বিস্তারিত পোস্টঃ

শব্দতাঁতী

০৩ রা মে, ২০১৫ দুপুর ২:৫২

খট্টর খট খট্টর খট
তাঁত চলছে,চলছে তাঁত
তাঁতের আড়ালে বসে অভিজ্ঞ তাঁতি
দ্রুত হাতে সাজিয়ে দিচ্ছেন সুতোগুলো
দেখছেন,সজ্জা এবং বিন্যাস গভীর মনোযোগে এবং
পরম মমতায়
তারপর,হাত রাখছেন হাতলে
খট্টর খট খট্টর খট
তাঁত চলছে,চলছে তাঁত
সুতোগুলো তাঁতি এনেছেন অনেক দূর থেকে,
অনেক খাটাখাটনি,এবং বহু সূক্ষ্ম প্যাঁচঘোচ পেরিয়ে
উনি অনেক কষ্টে নিয়ে এনেছেন এই সুতোগুলো
যারতার হাতে ধরাও দেয়না এইসব সুতো
অতীব সূক্ষ্ম বলে,
খালি চোখে দেখতেই পায়না কেউ।
দেখতে হলে চোখ লাগে,
শব্দতাতীর চোখ।
সেই চোখের তীক্ষ্ণতা প্রয়োগ করে উনি মানুষের প্রতিটি আবেগ থেকে
একেকটি সুতো টেনে এনেছেন।
রাগ থেকে এনেছেন,দুঃখ থেকে এনেছেন,
এনেছেন হাসি,ভালোবাসা,স্নেহের থেকে
এমনকি হিংসা এবং ঘৃণা থেকেও এনেছেন
আসলে তিনি নাম জানা এবং না জানা যাবতীয় মানবিক আবেগের থেকেই সুতো টেনে এনেছেন
লক্ষ লক্ষ সুতো এসে মিশেছে তার তাঁতে
তার তাঁত হয়েছে লক্ষ আবেগের মোহনা
সেই লক্ষ সুতো তিনি সাজিয়ে নেন একটার পরে একটা
সজ্জা দেখে দুর্বোধ্য কোন হিজিবিজি মনে হয়
কিন্তু শব্দতাতী এর ভেতরই রচনা করেন মানবিক বস্ত্রের নীলনকশা
তার হাত খুব দ্রুত চলে
একসময় কপালে জমে মৃদু ঘাম
হাত চলে বাতাসের চেয়ে দ্রুত
একসময় সাজানো সেষ হয়।
তিনি আরেকবার দেখে নেন
সুতোগুলির সজ্জা ও বিন্যাস গভীর মনোযোগে
এবং
পরম মমতার
অতঃপর হাত রাখেন তার তাঁতের হাতলে
লক্ষ আবেগের মোহনায় হঠাৎ উত্তাল জোয়ার ওঠে।
খট্টর খট খট্টর খট
তাঁত চলছে,চলছে তাঁত
খট্টর খট খট্টর খট
তাঁত চলছে,চলছে তাঁত
তাঁতের অপরপ্রান্তে লক্ষ লক্ষ সুক্ষ্ম সুতোর দুর্বোধ্য সজ্জা বেরিয়ে আসে অলৌকিক সুন্দর মানবিক বস্ত্র হয়ে
সেখানে ফুটে ওঠে মানুষের অতীত এবং বর্তমান
এবং ভবিষ্যত
ফুটে ওঠে ভালোবাসা ও স্বপ্ন
চিন্তা ও দুশ্চিন্তা,আশা ও হতাশা
অতীব জটিল মানব ও মানবচরিত সহজ সরল হয়ে ফুটে ওঠে শব্দতাতীর মানবিক বস্ত্রে।
এই মানবিক বস্ত্রের ওপর হুমড়ি খেয়ে পড়ে সকলে
একটুকরো ভাগ্যে জুটলে
আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে নেয়
শব্দতাতীর ঝিলমিলে বস্ত্র মননে জড়িয়ে তারা ঢেকে রাখতে চায় নিজেদের মনের যাবতীয় কলুষ এবং আবর্জনা এবং দূর্গন্ধ
পরম মমতায়,তারা এই বস্ত্রকে কবিতা বলে ডাকে
শব্দতাতীকে ডাকে কবি বলে
এবং
প্রতিদিন তারা তাঁর মুখ চেয়ে বসে থাকে
কখন শব্দতাতীর তাঁত থেকে বেরুবে নতুন কোন বস্ত্রখন্ড
যার দ্বারা তারা পারবে ঢাকতে তাদের নৈমিত্তিক কলুষ।
এবং
নিজেদের কাছে নিজেরা হয়ে উঠবে শুদ্ধ মানুষ
শব্দতাতী জানেন সব
পৃথিবীকে শুদ্ধতার স্বপ্ন দেখানোর ভার,তাঁর কাঁধেই ন্যস্ত
প্রত্যাশার ভারে চার কুব্জ দুকাঁধ
তবু তিনি বসে নেই
ফের তিনি সুতো আনেন খুঁজে সারা দুনিয়ার থেকে
ফের তিনি সুতো সাজান তাঁতের গোড়ায়
ভিন্ন সজ্জার ভিন্ন আঙ্গিকে ভিন্ন বস্ত্র রচনা করবেন আজ
সেই বস্ত্রে ঢেকে দেবেন সারা পৃথিবীর গলি মাঠ প্রান্তর
বিশ্বজগৎ দেবেন মুড়ে শুদ্ধতার বস্ত্রে
ঢেকে দেবেন যাবতীয় কলুষ এবং আবর্জনা এবং দূর্গন্ধ
তারপর তিনি হাত রাখেন হাতলে
খট্টর খট খট্টর খট
তাঁত চলছে,চলছে তাঁত
খট্টর খট খট্টর খট
তাঁত চলছে,চলছে তাঁত

মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা মে, ২০১৫ বিকাল ৩:১০

জেন রসি বলেছেন: কবিতা ভালো লেগেছে ভাই :)

০৩ রা মে, ২০১৫ বিকাল ৩:১৬

অনুপম দেবাশীষ রায় বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.