![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজকে আমরা কথা বলবো যুদ্ধ নিয়ে।
যুদ্ধ মানবসভ্যতার খুব কোর একটা এলিমেন্ট। প্রাগৈতিকাসিক কাল থেকেই মানুষ যুদ্ধ করে আসছে কিন্তু প্রথমদিকের অধিকাংশ যুদ্ধই আমরা ইতিহাসে পাইনা কারণ সেইসময়ে আসলে সত্যিকারের ইতিহাস বলেই কিছু ছিলোনা। কাজেই আমরা ইতিহাসে প্রথম যে যুদ্ধের খুব ভালো একটা বর্ণনা পাই সেটা পাই ইতিহাসের প্রথম ঐতিহাসিক-হেরোডটাস এর কাছ থেকে।
সে যেসব যুদ্ধ নিয়ে অনেক কথা বলেছে তার একটা হলো ব্যাটল অব থার্মোপাইল। আমাদের মধ্যে অধিকাংশই এই যুদ্ধের কথা জানি কারণ এই যুদ্ধ নিয়ে 300 নামের মারাত্মক কুল একটা সিনেমা আছে যেখানে ৩০০ জন স্পার্টান হেরোডটাস এর ভাষ্যমতে ৫ মিলিয়ন পারসিয়ান সৈন্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। 300 এর সিক্যুয়াল যে হিসেবে যে সিনেমাটা বের হয়েছে সেখানে আবার দেখানো হয়েছে ব্যাটল অব ম্যারাথন এবং ব্যাটল অফ সালামির গল্প। মূলত এই সব যুদ্ধগুলোই খ্রিষ্টপূর্ব ৪৮০ সালের পারসিয়ান দের গ্রীস দখলের সময়কার গল্প।
300 এর সিক্যুয়ালের শেষ দৃশ্য যদি খেয়াল করে থাকেন,দেখবেন যে সেখানে শেষপর্যন্ত থার্মিস্টোক্লিস এর ডাকে পুরো গ্রীস একত্রিত হয়ে পারসিয়ানদের প্রতিরোধ করতে ঝাপিয়ে পড়ে আর এই ব্যাপারটা আসলে ঐতিহাসিকভাবেও সত্য। এর আগে গ্রীস ছিলো আলাদা আলাদা নগররাষ্ট্রের একটা সমন্বয় কিন্তু এই যুদ্ধের পরের থেকেই গ্রীস একত্রিত হয়ে একটা রাষ্ট্রে পরিণত হয়।
যেই রাষ্ট্রে কিছুদিন পরে আলেক্সান্ডার নামের এক সেনানায়ক জন্ম নেয় যে কিনা সেই 300 সিনেমার ভিলেন জারক্সিস এর বাবা দারিয়ুস এর নামে নামওয়ালা আরেক পারসিয়ান সম্রাট দারিয়ুস ৩ কে ধাওয়া করতে করতে বিশ্বের একটা বিরাট অংশ দখল করে ফেলে আর সেইজন্যে তার নাম হয় আলেকজান্ডার দ্য গ্রেট।
আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের এই গ্রেটনেস দেখে দেখে গ্রেট হবার স্বপ্ন দেখে আরো দুই সময়কার দুই বালক। এদের একজনের নাম জুলিয়াস সিজার যে আলেকজান্ডারের স্টাইলে রোমান সাম্রাজ্যের প্রচুর বিস্তৃতি ঘটায়। আরেকজন হলো নেপোলিয়ান বোনাপার্ট যে শুধু পার্ট খাওয়ার জন্যেই ফ্রান্সের সম্রাট হিসেবে বিরাট অঞ্চল জয় করে।
এইটুকু শুনে মনে হতে পারে যে আসলে যুদ্ধ খুব চমৎকার একটা ব্যাপার আর সেই যুদ্ধ জিতে আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের মতন করে গ্রেট হওয়া যায়।
কিন্তু এই পুরা ব্যাপারটাই একটা ইলিউশন-কারণ গ্রেট হয়ে আলেকজান্ডারকে ছোঁবার ধান্দায় জুলিয়াস সিজার খেয়াল করেনা যে সে ভুলে আলেকজান্দ্রিয়া লাইব্রেরী পুড়িয়ে মানবসভ্যতাকে হাজার বছর পিছায়ে দিচ্ছে আর নেপোলিয়নও টের পায়না যে তুন্দ্রার শীতে তার সৈন্যদের না খেয়ে মরা তার গ্রেট হবার বাতুলতার চেয়েও বেশি প্যাথেটিক।
আসলে যুদ্ধকে নিয়ে পশ্চিমারা যতই গ্রেটনেসের জাল বুনুক না কেন-মূলত ভিতর থেকে তারাও চেঙ্গিস খানের মতন জমি,সম্পত্তি-টাকাপয়সা আর বলপূর্বক নারীসঙ্গী পাবার জন্যেই যুদ্ধে যেত। চেঙ্গিস খানের পশ্চিমাদের মতন রঙচঙ্গা মুকুট আর সিংহাসন ছিলোনা বলে একপক্ষী ইতিহাস তাকে অসভ্য আর ইউরোপিয়ান এম্পায়ারের সম্রাটদের সভ্য বলে। কিন্তু ভিতরে ভিতরে এই রাজ্যভোগী রাজারাই সবচেয়ে অসভ্য। সত্যিকারের সভ্য ছিলাম আমরা-সিন্ধু নদের তীরের সভ্য মানুষ। কিন্তু সেই সভ্যতা নিয়ে হয়তো পরে কথা হবে। আজ কথা বলছি যুদ্ধবাজ অসভ্যদের নিয়ে।
প্রাথমিকভাবে সব যুদ্ধ হতো এই সাম্রাজ্যগুলো বাড়ানোর জন্য। আবার এক সাম্রাজ্যে আরেক সাম্রাজ্যে একটা নির্দিষ্ট অঞ্চলের দখল নিয়েও যুদ্ধ হতো। যেমন মাঞ্চুরিয়া আর কোরিয়ার দখল নিয়ে রাশিয়া আর জাপানী সাম্রাজ্যের মাঝে যুদ্ধ, ফ্রান্স আর প্রুশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ, আমেরিকার দখল নিয়ে ফ্রান্স আর বৃটেনের মধ্যে যুদ্ধ। আর আফ্রিকার দখল নিয়ে তো সাম্রাজ্যগুলোর মাঝে এমন দ্বন্দ লেগে যায় যে এই ঘটনাটার নামই দেয়া হয় Scramble for Africa অথবা আফ্রিকা নিয়ে কামড়াকামড়ি। আর আফ্রিকা এখন সেই ভয়াবহ কামড়াকামড়ির থেকে আর উঠে দাঁড়াতে না পারলে ইউরোপিয়ানরা সুন্দর করে বলে দেবে যে আফ্রিকানরা বর্বর।
তো এই যুদ্ধবাজ অসভ্যরা গ্রেটনেসের পেছনে দৌড়াতে দৌড়াতে একসময় পৃথিবীকে অনেকগুলো সাম্রাজ্যের মাঝে নিজেরা নিজেরা ভাগ করে নিলো। বিশ শতকের শুরুতে বিভাজনটা দাঁড়ালো এই ছবিটার মতন।
রাশিয়া তখন রাশিয়ান সাম্রাজ্য। ইংরেজ সাম্রাজ্য তখন সারা দুনিয়াজোড়া। ফ্রান্স তখন ইউরোপ,আমেরিকা আর আফ্রিকা জুরে ইংরেজদের কঠিন প্রতিদ্বন্দী আর ফ্রান্সের দুইমাথায় অপেক্ষাকৃত নতুন দুইটা সাম্রাজ্য জার্মানী আর ইতালি যারা কিনা তাদের সাম্রাজ্যের ক্ষমতা নিয়ে যথেষ্ট ইনসিকিওরিটিতে ভোগে। জার্মানীর নিচেই আছে অস্ট্রিয়া আর হাঙ্গেরি মিলায়ে অস্ট্রো হাঙ্গেরিয়ান সাম্রাজ্য যেটা সেসময়ের একটা বেশ বড় শক্তি। আর ইসলামী শক্তি হিসেবে মধ্যপ্রাচ্য আর পার্শ্ববর্তী এলাকায় আছে অটোমান সাম্রাজ্য। এরা ছাড়াও স্পেন আর পর্তুগালের বেশ বড় বড় সাম্রাজ্য ছিলো।
নিয়মিত এক রাজ্য আর আরেক রাজ্যে যুদ্ধ লাগতো সেটা ঠিক আছে। কিন্তু একসময় আস্তে আস্তে যুদ্ধগুলো আরো বড় হতে লাগলো। এক রাজ্য আর আরেক রাজ্যের যুদ্ধে তৃতীয় রাজ্য নাক গলানোর চিন্তাভাবনা আসলো। এইরকম একটা ঘটনা ঘটে ১৭৭৮ সালে আমেরিকার স্বাধীনতার যুদ্ধে তাদের সহায়তায় ফ্রান্স,স্পেন আর নেদারল্যান্ডস আগায়ে আসে। সেইসময়ে মূলত আমেরিকা,ফ্রান্স,স্পেন আর নেদারল্যান্ডস মিলে বৃটেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জয়ী হয় কিন্তু তবু এইটাকে বিশ্বযুদ্ধ বলা হয়না কারণ এইখানে একদিকে অনেক সাম্রাজ্য থাকলেও অন্যপক্ষে শুধু একটাই সাম্রাজ্য ছিলো।
সত্যিকারের প্রথম বিশ্বযুদ্ধ একটা রাষ্ট্রের স্বাধীনতার মতন একটা ব্যাপারে হলেও হয়তো আজ আমি যুদ্ধের দর্শন নিয়ে এতো কথা বলতাম না-কারণ হয়তো সেক্ষেত্রে এখনো যুদ্ধ একটা গ্লোরিয়াস ব্যাপার বলেই গণ্য হতো। আমি বলতে পারছি কারণ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ হয় খুব হাস্যকর একটা কারণে।
ও আচ্ছা স্যরি-একজন মানুষ মারা গেছে। হাস্যকর বলা যাবে না। তবে কমপক্ষে কারণটা বিশ্বযুদ্ধ শুরু করার মতন কিছু ছিলো না।দুইটা রাষ্ট্রের মাঝেই ব্যাপারটার মিটমাট হয়ে যেতে পারতো।
ব্যাপারটা হলো অস্ট্রো হাঙ্গেরিয়ান সাম্রাজ্যের আর্চডিউক ফ্রান্স ফার্ডিনান্ড নতুন দখল করা সার্বিয় এলাকা পরিদর্শনে গেলে গ্যাব্রিলো প্রিন্সিপ নামের একজন সার্বিয় জাতীয়তাবাদী তাকে মেরে ফেলে। তো এই ঘটনায় অস্ট্রো হাঙ্গেরিয়ান এম্পায়ার দেখলো যে সাবাশ! সার্বিয়ারে আরো দখল করার অজুহাত পাওয়া গেছে। তাই তারা সার্বিয়াকে একটা আল্টিমেটাম দিলো যেটা সার্বিয়ার পক্ষে পূরণ করা সম্ভব ছিলোনা। কাজেই সার্বিয়া অস্ট্রো হাঙ্গেরিও নিজের বড়ভাই জার্মান সাম্রাজ্যকে ডাক দেয়। জার্মানি বলে ভয় নাই-আমি আছি। বলে সার্বিয়ার সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করে। তখন রাশিয়া ফ্রান্সকে ডাক দেয়-ফ্রান্স বলে আমি আছি। জার্মানি তখন তবে রে! বলে ফ্রান্সের দিকে আগানোর নাম করে বেলজিয়াম দখল করে ফেলে। কিন্তু বেলজিয়াম আবার ইংল্যান্ডের বন্ধুরাষ্ট্র। তাই ইংল্যান্ড জার্মানীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে।
এরপর একসময়ে অটোমান সাম্রাজ্য আর বুলগেরিয়া জার্মানি আর অস্ট্রো হাঙ্গেরির সাথে যোগ দেয় আর বাকি দুনিয়া যোগ দেয় ইংল্যান্ড আর রাশিয়ার সাথে। ব্যস,বিশ্বযুদ্ধ প্রস্তুত।
তো এইরকম আজাইরা একটা কারণে যখন প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়-তখনই মানুষ প্রথম ভাবতে শুরু করে যে সত্যিকারে যুদ্ধ কোন গ্লোরিয়াস ব্যাপার কি না। কারণ রাশিয়ান একজন সৈন্য যখন অটোমান সৈন্যের হাতে নিজের সহযোদ্ধাকে মরতে দেখে তাকে হত্যা করতে উদ্যত হয়-তখন তাদের মাথার মাঝে প্রশ্ন আসে যে সার্বিয়া আর অস্ট্রিয়ার যুদ্ধে আমরা কেন জীবন দিচ্ছি।
সেই সময়টাতে পুরো পৃথিবীকে একটা হতাশার চাদর জাপটে ধরে। এমনকি যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সব সৈন্যদের প্রজন্মকে বলা হতো ‘হারানো প্রজন্ম বা The lost generation.’ পুরো পৃথিবী আস্তে আস্তে অবিশ্বাসী হয়ে পড়ে। মানুষের মনে হতে থাকে যে মানুষের জীবন অর্থহীন(Nihilism). সারা পৃথিবীতে যুদ্ধবিরোধী আন্দোলন জোরদার হয়। আমেরিকা এস্পিওনাজ এক্ট আর সেডিশন এক্ট দিয়ে যুদ্ধবিরোধী কথা বলাকে শাস্তিযোগ্য ঘোষণা দিলেও ইউজিন ভি ডেবস এর মতন মানুষরা প্রকাশ্যে যুদ্ধবিরোধী ভাষণ দিয়ে কারাবরণ করতে প্রস্তুত থাকে। উইলিয়াম ফকনারের দ্য ফ্যাবল বা এনরিক মারিয়া রেমার্কের অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট এর মতন যুদ্ধবিরোধী সাহিত্য রচিত হয়। পৃথিবীজুড়ে মানুষ জিজ্ঞেস করতে শুরু করে-কেন যুদ্ধ?
এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে থমাস হবস নামের ইংরেজ দার্শনিক বলেছেন যে মানুষের জীবনটাই একটা চলমান যুদ্ধ আর ফ্রেইডরিখ নিতচা বলেছেন যে ভিতর থেকে আমরা সকলেই যোদ্ধা আর সত্যিকারের গ্লোরিয়াস যুদ্ধ কোন তুচ্ছ যুদ্ধের কারণকেও গ্লোরিফাই করে দিতে পারে। অন্যদিকে জিন জ্যাক রুসো বলছেন যে মানুষ জন্মগতভাবে শান্তিপ্রিয় আর আদিম সভ্যতা ছিলো শান্তিপূর্ণ আর যুদ্ধহীন।
তাহলে প্রশ্নটা দাঁড়ায় যে আসলে কি আমরা ভিতর থেকে শান্তিপূর্ণ নাকি আক্রমণাত্মক। আমার মনে হয় দুইটাই। আমার মনে হয় মানুষের মধ্যে একইসাথে দুইটা পরিচয় সাংঘর্ষিক অবস্থায় থাকে। প্রথমত এই যে আমরাও পশু এবং পশুদের মতো আমাদেরও বেঁচে থাকার জন্য রিফ্লেক্স আর আত্মরক্ষার ইনেট সেন্স আছে এবং একই সাথে পশুদের মতই আমাদের একটা ডমিনেন্স বা প্রভাব বিস্তারের আকাঙ্ক্ষা আছে। কিন্তু একই সাথে আমাদের মধ্যে শান্তিপূর্ণ আর যৌক্তিক মানবতাও বিদ্যমান। আর এই পাশবিকতা আর মানবিকতার মধ্যে যে দ্বন্দ সেইটাই হলো মানবজীবন।
ইতিহাসের অধিকাংশ সময় ধরে পাশবিকতা মানবিকতার উপর ছড়ি ঘুরিয়েছে ঠিক কিন্তু একেবারে আদিম সভ্যতাগুলোর দিকে তাকালে দেখা যাবে যে তারা অনেক অংশেই শান্তিপূর্ণ। আমার মনে হয় যুদ্ধের ইভলিউশনটা এরকম-চুরি-চুরি থেকে ডাকাতি-ডাকাতি থেকে দলবধ্য ডাকাতি বা দস্যুবৃত্তি-সেখান থেকে যুদ্ধ আর যুদ্ধ করে জয় করা অঞ্চল হলো সাম্রাজ্য।
কিন্তু আমারা মানব সভ্যতা হিসেবে আস্তে আস্তে ম্যাচিওর হচ্ছি এবং শান্তির দিকে আগাচ্ছি। গত শতাব্দির চেয়ে এই শতাব্দিতে এখনও পর্যন্ত যুদ্ধ আর যুদ্ধে হতাহত মানুষের সংখ্যা কমছে। পাশবিকতার থেকে আমরা মানবিকতার দিকে আগাচ্ছি যেটা খুব আশার একটা ব্যাপার।
আমি আশা করবো যে এই ব্যাপারটা নিয়ে আমরা কমেন্টে আরো আলোচনা করবো এবং নিজেদের মধ্যে মুক্ত বিতর্ক করে বোঝার চেষ্টা করবো যে আসলে আমরা ভিতর থেকে কি আক্রমণপ্রিয় নাকি শান্তিপ্রিয়।
পরের রচনায় প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী যুদ্ধগুলো আর মানবসভ্যতার উপর সেগুলোর প্রভাব নিয়ে কথা হবে পরের রচনায় তার আগ পর্যন্ত এই রচনা শেষ করছি জিন পল সাট্রের একটি সুন্দর উক্তি দিয়ে-
When the rich wage war, it’s the poor who die.
৩০ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১:২৩
অনুপম দেবাশীষ রায় বলেছেন: ধন্যবাদ। শুভকামনায় রাখবেন।
কোন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার প্রয়োজন অনুভব করছেন?
২| ৩০ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:৫২
মোঃ শিলন রেজা বলেছেন: আমাদের আদিম অবস্থা আসলেই অনেকটা শান্তিপ্রিয় ছিল। তখনকার যুদ্ধগুলা মানুষের বিরুদ্ধে মানুষের ছিলনা। পড়ে যখন আমরা পশুত্ত্ব থেকে বের হয়ে সভ্য সমাজের চিন্তা আনয়ন করি, কিন্তু তাতে প্রভাব বিস্তার কে সামনে রেখে আসলে সংঘর্ষের সুচনা হয়। অনেক ধার্মিক ঐতিহাসিক আবার এটাকে কাল্পনিক হাবিল কাবিলের সংঘর্ষের সাথে মিলায়। হ্যা হতে পারে এমন কিছুই। কিন্তু ঐ যে জুলিয়াস সিরাজের অসতর্কতায় লাইব্রেইরির ধংশ আমাদের আসলেই হাজার ইতিহাস থেকে বঞ্চিত করে ফেলেছে।
তবে বিশিষ্ট যুদ্ধবিশারদবিদ গভেশনায় দেখেছেন ৭২% মানুষের মস্তিস্ক আসলেই শান্তি চাই।
৩০ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১:২৫
অনুপম দেবাশীষ রায় বলেছেন: আদিম সভ্যতা সত্যিই শান্তিপ্রিয় ছিলো কিনা তাই নিয়ে নৃতাত্ত্বিকদের মধ্যে বিবাদ আছে।
তবে আমি রুশোপন্থী মানুষ। আমার মনে হয় মানুষ ভেতর থেকে শান্তিপ্রিয়।
৩| ৩১ শে মে, ২০১৫ সকাল ১১:৫৪
কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: চমৎকার লাগলো। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।!!
৩১ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১:৫৯
অনুপম দেবাশীষ রায় বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই
৪| ১৯ শে জুন, ২০১৫ ভোর ৪:২৫
রিয়াসাত মোর্শেদ খান বলেছেন: প্রথমেই বলে রাখা ভালো অসাধারণ লেখা!
তবে কিনা কিছু প্রশ্ন থেকে যায়। যেমন- মানুষ আসলে শান্তিপ্রিয় নাকি যুদ্ধবাজ মোটাদাগে এমন কোন সিদ্ধান্তে আসা মনে হয় না সঠিক হবে। কারণ ধরা যাক, একেবারে আদিম সমাজের কথা যেটাকে অর্থনীতিবিদেরা প্রিমিটিভ কমিউনিস্ট সমাজ বলছে সেখানে কিন্তু যেহেতু মানুষের মধ্যে কোনো ধরণের ব্যক্তি-চাহিদা ছিলো না কাজেই পুরো সমাজের মধ্যে ইন্ডিভিজুয়ালের নিজের লাভালাভের কথাও উঠে না। ফলে যুদ্ধের প্রধান মোটিভ কিন্তু দেখা যাওয়ার কথা না। আবার যদি তারপর মানুষ যখন আস্তে আস্তে পশুর সংস্পর্শে আসলো তখন পাশবিকতা তার মধ্যে প্রভাব ফেলে থাকতে পারে কেননা তখন মাত্র সে পরিপার্শ্ব কে চিনতে শুরু করেছে। ফলে আশপাশ তার মনে প্রভাব ফেলতে পারে। আর ততোদিনে পশু শিকারে কৃতিত্ব দেখানো মানুষেরও কদর বাড়তে পারে সমাজে। ফলে পাশবিকতা, নৃশংসতা সমাজে প্রভাব বিস্তারের উপকরণ হিসেবে পরিগণিত হতে থাকে বলে আমার ধারণা। আর ক্রমে ক্রমে সম্পদে ব্যক্তির অধিকার, ব্যক্তির লাভকে নিশ্চিত করার টেন্ডেসিতে সমাজে যুদ্ধ স্বীকৃত সিস্টেম হতে থাকে। ফলে সভ্যতার এক পর্যায়ে তাকে শান্তিপ্রিয় আবার ক্রমে ক্রমে তার যুদ্ধবাজ মানসিকতা পরিচয় পেতে থাকে।
আর তাছাড়া, যুগে যুগে এতো যুদ্ধ হয়েছে আর তাতে যুদ্ধের সমর্থকও এতো বিপুল পরিমাণে দেখা যায় যে, আসলে শতকরা সঠিক পরিমাপ করেও হয়তো আমরা নিশ্চিত হয়ে বলতে পারি না যে মানুষ আদতে শান্তিপ্রিয় নাকি যুদ্ধবাজ!
©somewhere in net ltd.
১|
৩০ শে মে, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৯
লেখাজোকা শামীম বলেছেন: একটা ভালো সিরিজ হতে যাচ্ছে লেখাটা। আরেকটু বিস্তারিত লিখলে ভালো লাগত।