নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এই লোকটি আজকের বাংলাদেশকে একাত্তরের লজ্জা বলে ডেকেছিলো

অনুপম দেবাশীষ রায়

আমি অনুপম

অনুপম দেবাশীষ রায় › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভয় নাই, আমি আছি! কিছু হইলে আমি দেখব

০১ লা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:০৫

এক স্কুলের কিছু ছেলেপেলের সাথে আরেক স্কুলের ছেলেপেলের মারামারি হয়েছে। যেনতেন মারামারি না। ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে পিটিয়ে হাত পা ভেঙ্গে দেবার চেষ্টাও করেছে বলে শোনা যাচ্ছে।
এরা কিন্তু কোন গুন্ডাপান্ডা নয়। এরা সদ্য ক্লাস টেনে ওঠা কিছু ছেলেপুলে। হ্যাঁ! ক্লাস টেন। এদের বয়স বড়জোর পনেরো বছর। এরা একদল আরেকদলকে ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে পিটাচ্ছে। যেই ক্রিকেট স্টাম্প মাটিতে গেড়ে এদের একদল আরেকদলের বিপক্ষে ম্যাচ খেলে ঝগড়া বিবাদ সিধা করা দরকার, সেই ক্রিকেট স্টাম্প দিয়ে এরা একদল আরেকদলকে পিটাচ্ছে।
আমি যখন ক্লাস এইটে পড়তাম তখন একটা রম্য পত্রিকা বের করতাম। পত্রিকার নাম ছিলো পা লম্বা মাথা গোল। পত্রিকাটা হাসির হবার কথা ছিলো, কিন্তু আমি যেহেতু আমি-কাজেই আমি সেই হাসির মধ্য দিয়ে স্কুলের কিছু সমস্যা তুলে ধরার চেষ্টা করেছিলাম। এই ব্যাপারটি কিছু মানুষের পছন্দ হয়নি। তারা ঘোষণা করেছিলো, আমি যেখানে পাবে সেখানে তারা সবাই মিলে পিটাবে। আমি তখন নিতান্তই নাদান বাচ্চা। পোলাপানের মারামারি কি জিনিস আমি কিছুই জানতাম না। আমি ভয় পেলাম। এই ভয়ের কথা আমার এক সিনিয়র ভাইয়ের কানে গেলো। তিনি আমাকে এসে বললেন, তোকে নাকি কে মারবে বলসে? আমি বললাম, জ্বী ভাই।
কে মারবে বলসে নাম জানস?
না ভাই।
ভাই আমাকে তার ফোন নাম্বার দিলেন। বললেন, কিছু হইলেই কল দিবি। আর আমি দেখতেসি কিছু যাতে না হয়।
জ্বী ভাই।
শুন! ভয় নাই, আমি আছি! কিছু হইলে আমি দেখবো।
সেই ভাইটি আমার কোন রাজনৈতিক দলের বিরাট নেতাগোতা ছিলেন। তিনি কিছুই ছিলেন না। একজন সাধারণ মানুষ ছিলেন-একজন সিনিয়র বড়ভাই ছিলেন। সব জুনিয়র তাকে সম্মান করে চলতো। যদি কেউ আসলেই দোষের মতন কিছু করতো, তিনি এমনভাবে ঝাড়ি দিতেন যে সে বাপের জন্মে আর কোনদিন সেই কাজ করবে না। এলাকার বিচার এলাকায় হয়ে যাইতো। এলাকার বড়ভাইরা ছিলো সত্যিকারের বড়ভাইয়ের মতন।
যখন কোন ঝামেলা হতো, ভাইরে ফোন করতাম। ভাই ফোন ধরেই বলতো, কি লাগবে বল!
আসলে শুরুতে যে ঘটনাটি বলেছি সেটা আমার নিজের স্কুলে ঘটেছে। যে স্কুল নিয়ে আমি এবং আমার কাছের মানুষদের অনেক অনেক আনন্দ আর বেদনা আর ভালোবাসা। ঘটনাটা যখন শুনলাম আমার খুব রাগ হলো- আমি যখন আমার জুনিয়রদের বললাম যে তোরা কিছু করিস না ক্যান? কিছু আটকাস না ক্যান? তারা বললো-ভাই, আমরা কি করবো, ওদের ব্যাকআপ আছে। ওরা বড়ভাইদের কথায় চলে-আমাদের কথা শোনে না। আর পোলাপানগুলা কিছু করতো না ভাই। ওরা জাস্ট ধরে পুলিশের কাছে দিতে চাইসিলো। ওই বড়ভাইরা স্টাম্প দিয়ে বললো, তোদের মারলো আর তোরা কিছু বলবি না।
পনের বছর বয়েসী ছেলেগুলো ভয়ে ভয়ে তাকালো। তারা কখনো স্টাম্প দিয়ে কোন মানুষের হাত পা ভেঙ্গে দেবার কথা চিন্তা করেনাই।
বড়ভাই বললেন, ভয় নাই, আমি আছি! কিছু হইলে আমি দেখবো।
আমি মুহুর্তে বুঝে গেলাম এখানে কি ঘটে যাচ্ছে। এই বড়ভাইরা কোন বড়ভাই বুঝতে আমার বেশি বাকি থাকলো না। এই বড়ভাইরা এলাকার বড়ভাই না। এই বড়ভাইরা পার্টির বড়ভাই। এদের কাছে পনের বছর বয়েসী ছেলেগুলো জুনিয়র টুনিয়র কিছু না, এমনকি মানুষও না। এদের কাছে পনের বছর বয়েসী ছেলেগুলো দাবার সৈন্য। সৈন্যের হাতে এরা অস্ত্র তুলে দেবে, তাহলেই তারা নিজেরা সৈন্য থেকে কিছুটা উপরে উঠে হয়তো উজির নাজির হতে পারবে। কেন্দ্রীয় নেতারা বেকার বখাটে গুন্ডা ছেলেদের ক্যাডার নামক সৈন্য বানায়। তারা তাদের চেয়ে ছোট ছাত্রদের ক্যাডার বানায়ে নিজেরা যুবনেতা সাজে। ছাত্ররা তাদের চেয়ে ছোটদের ক্যাডার বানায়ে নিজেরা ছাত্রনেতা সাজে। এভাবে নামতে নামতে কলেজ পর্যন্ত সারি এসেছে জানতাম। স্কুলের ছেলেদের যে টার্গেট করা হচ্ছে। এই ব্যাপারটা জানতাম না। জানলাম।
ভয়ে আমার শরীর ঠান্ডা হয়ে গেলো। কারণ আমি জানি এরপর কি হবে। স্টাম্প দিয়ে আরেকটা ছেলেকে পেটানো এই ছেলেটার মোবাইলে কয়দিন পরে একটা কল আসবে। পার্টির ভাই কল দিয়েছে। বলবে, শোডাউন আছে তাড়াতাড়ি আয়। ছেলেটা যখন পৌঁছাবে তখন ছেলেটার হাতে একটা সরকি তুলে দেয়া হবে। এরপর বলা হবে সরকিটা প্যান্টের ভেতর ঢুকায়ে রাখ। দরকার মনে হইলে বাইর করে বাইড়ানো শুরু করবি। আর শোন-মাথায় ঘাড়ের ওপরে মারবি না। সিরিয়াস ঝামেলা হয়ে গেলে সমস্যা। পা বরাবর মারবি বুঝলি-পা বরাবর!
ছেলেটার রক্ত গরম হয়ে যাবে। নিজেকে অনেক ক্ষমতার মালিক মনে হবে। সরকি হাতে জাদুকর হয়ে উঠতে তার বেশি সময় লাগবেনা। বড়ভাই তাকে বলবে, অনেক ভালো কাজ করতেসিস তুই। এরকম করলে আর দুইবছর পরে তোকে তোদের স্কুলের শাখার প্রচার সম্পাদক বানায়ে দিবো।
ছেলেটার আনন্দে বুকটা ফুলে যাবে। শার্টের কলার উল্টায়ে রাস্তায় হাটবে সে। ইচ্ছা করে স্কুলের মাঠে নীরিহ ছেলেদের সাথে ধাক্কা লাগাবে আর বলবে-কিসসে! সমস্যা কি? দেইখা হাটতে পারস না! কেউ কোন উত্তর দিতে গেলেই বলবে-অই! কি কইলি? কি কইলি তুই? জানস আমি কে? জানস আমি কার পাওয়ারে চলি?
কিছুদিনের মাঝে তার পাওয়ারেও আরো কিছু জুনিয়র চলা শুরু করবে। এই পাওয়ারে পাওয়ারে তার দুনিয়া বড় রঙ্গিন হয়ে যাবে।
দিনশেষে সেই ছেলেটা যখন বাসায় ফিরবে আম্মা তার জন্য পানি গরম করে বলবে-আয় বাবা কতোদিন গোসল করসনা তোকে ডলে গোসল করায়ে দেই। ছেলেটা বলবে-ধুর আম্মা! তোমার মাথা খারাপ হইসে! আমি কতো বড় হইসি তুমি জানো? আম্মা বলবে-কিসের বড় হইসস তুই? নিজের গা টাও তো ঠিকমতো ডলতে পারস না!
এরপর অনেক মুলামুলি করে সেই ছেলেটা তার মাকে বোঝাবে সে অনেক বড় হয়ে গেছে। ক্লান্ত মা মেনে নেবেন। তারপর শেষ অনুরোধ করবেন-বাবা, শার্টটা খোল, পিঠে সরিষার তেল মেখে দেই, ঠান্ডার মধ্যে গোসল করতে ভালো লাগবে।
ছেলেটা চোখ লাল করে নিজের ঘরে ঢুকে ধড়াম করে দরজা বন্ধ করে দেবে। তারপর আস্তে করে শার্টটা খুলে আয়নায় পিঠের দিকে তাকাবে। পিঠের এইমাথা থেকে ওইমাথা পর্যন্ত একটা গভীর দাগ। সেলাইয়ের ভাজে ভাজে সেখানে মাছের কাটার মতন হয়ে আছে। সে আর কোনদিন মায়ের সামনে শার্ট খুলতে পারবেনা। মা তার মরেই যাবে জানলে!
ছেলেটার হঠাৎ হু হু করে কান্না পাবে। তার মনে হবে কারো সাথে একটু সব খুলে কথা বলে। কিন্তু সব বলার মতন তার কেউ নাই। আশেপাশে যারা তাকে ঘেন্না করেনা, তারা সবাই ভয় পায়। ছেলেটার আকাশকুসুম ক্ষমতা সব ঠুনকো ভয়ের ওপরে দাঁড়িয়ে আছে। সে যখনই তার দৈত্যের রূপ থেকে বের হয়ে মানুষ হবার চেষ্টা করবে-তার সব ক্ষমতা হুশ করে উড়ে চলে যাবে। নিজেকে ঘিরে এতো কষ্ট করে বেড়ে তোলা ভয়ের দেয়ালটা ভেঙ্গে পড়ে যাবে। নাহ! নিজের ভয় সে কাউকে দেখাতে পারবে না। নিজের ভিতরে জিপারে এটে রাখবে।
এরপর একদিন ছেলেটাকে রাস্তার মোড়ে আর অনেকগুলো ছেলে ঘিরে ধরবে।এই ছেলেগুলোকেই সে সে স্টাম্প দিয়ে মেরেছিলো। সেবারে ওরা মার খেয়েছিলো-এবারে ওদের পালা।
স্টাম্পের একটা দুইটা বাড়ি পড়ার আগেই কোনমতে ছুটে পালিয়ে এসে ছেলেটা বড়োভাইকে কল দেবে।
বল, কি হইসে?
ভাই, ঝামেলা হইসে খুব ভাই। প্লিজ। একটু আসেন।
আমি তো জেলা কমিটির মিটিং এ আসছি। দাড়া, দেখতেসি।
ফোন কেটে দেবেন ভাই। আবার ফোন দেবে ছেলেটি। এই মুহুর্তে মোবাইল সংযোগ দেয়া সম্ভব হচ্ছেনা। ততক্ষনে ওই ছেলেদের দল চলে এসেছে। তাদের হাতে স্টাম্পগুলো তারা দুইহাত দিয়ে ধরলো।
অথচ এইসব ছেলেগুলো এখন বিজয়ের আনন্দে এই স্টাম্পগুলো একহাতে মাঠের থেকে উখড়ে নিয়ে দৌড়ে বেড়াতে পারতো। যে ছেলেটা এখন মার খেতে খেতে রক্তাক্ত হয়ে যাচ্ছে-সে বলতে পারতো, ধুর তোরা খালি চিটিং করস। সাহস থাকলে আবার আয়! এইবার দেখায়ে দিবো।
এমন সময়ে একটা ছোট ছেলে দৌড়ায়ে আসবে। এসে বলবে-ভাই ভাই! ঝামেলা হইসে। একটু আসেন। ডে শিফটের পোলাপান এসে আমাদের মাঠে খেলা শুরু করসে। আপনি কিছু বলেন ভাই ওইগুলারে।
এরমাঝে ডে শিফটের আরেকটা ছেলে চলে এসেছে। সে বলছে, ভাই আমরা আগে এসে মাঠ দখল করসি। ওরা পরে আসছে।
আগের ছেলেটা কথাটা মাটিতে পড়ার আগেই বলবে, এহ! বললেই হইলো? আমি ফার্স্ট পিরিয়ডে এসে ব্যাগ রেখে গেসি!
ধুন্ধুমার কলরোল লেগে যাবে!
তার মাঝে আমাদের বড়ভাই বলবেন, থাম তোরা! আমি দেখতেসি। মর্নিং শিফট এক টিম হ! ডে শিফট এক টিম। এইবার তোদের নিজেদের মধ্যে ম্যাচ নে। যে টিম জিতবে তারা যেই টিম হারবে তাদের সবাইকে মমিন ভাইয়ের দোকানে খাওয়াবে। যা এইবার, ফোট!
এতো সুন্দরভাবে এই সমস্যাটার সমাধান করা যায়, এইটা কারো মাথায়ই আসেনাই। ওরা আরো একদল আরেকদলের খেলা নষ্ট করে কেউ না খেলার প্ল্যান করছিলো। আর এখন তারা একসাথে খেলবে! মর্নিং আর ডে একসাথে খেলবে! ভাবা যায়? নাহ! ভাইয়ের আসলেই অনেক ক্ষমতা।
এই যে ক্ষমতা, এই ক্ষমতার কোন কোন এক্সপায়ারি ডেট নাই। কোন ম্যানুফ্যাকচার ডেট নাই। এই ক্ষমতা ছিলো, আছে আর থাকবে। এই ক্ষমতার জন্য কোন পরীক্ষা দেয়া লাগে না, নিজেকে প্রুভ করা লাগেনা আর সবচেয়ে বড় কথা-নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু করা লাগেনা। এই ক্ষমতাকে ভালোবাসার ক্ষমতা বলে।এই ক্ষমতা প্রবল তীব্র। সময়টা চলে যাবে, স্কুল পার হয়ে যাবে, সব নেতাগোতারা কোথায় কোন অন্ধকারে চলে যাবে একসময়-তবু ক্ষমতাটা রয়ে যাবে।
অনেক বছর পরে অনেক মাইল দূর থেকে দেখা যাবে ছোটভাইরা ম্যাসেজ পাঠিয়েছে, ভাই, ভালো আছেন? আপনার কথা খুব মনে পড়ে।
কল্পনার গল্পটার বড়ভাই আমার পরিচিত। তার বড়ভাই ছিলো আমার সেই বড়ভাই যে আমাকে অভয় দিয়েছিলো। তার ছোটভাইরা আর কারো বড়ভাই হয়েছে।
সবই ভালো চলছিলো-কিন্তু হঠাৎ আমাদের স্কুলে একটা পার্টি অফিস গড়া হলো। সেখানে শোডাউনে যাবার মূল্যে ক্ষমতা খরিদ করতে পাওয়া যায়। ভয়ের উপরে গড়া সেই ক্ষমতা কিশোরগুলোকে পুড়িয়ে দিতে থাকে। এই ছোটভাই আর বড়ভাই বলে কাউকে পায়না। তারা ভয়ের ক্ষমতার সিড়ি বেয়ে উপরে ওঠা কিছু সরীসৃপ দেখতে পায়।টিকে থাকতে তারাও সরীসৃপ হয়ে যায়। আর তাদের ছোটভাইরা বড়ভাই ছাড়া বেড়ে ওঠে। বড়ভাইদের তারা ভয় পেয়ে বেড়ে ওঠে। ভয় আরো ভয়ের জন্ম দেয়। তখন মনে হয় আমিও নিজের স্বত্ত্বা বেঁচে একটু ভয়ের ক্ষমতা কিনে নেই।
প্রজন্মের পরে প্রজন্ম ভয়ের মধ্যে কাপতে কাপতে বড় হয়। বড় হয়েও তারা সারাক্ষণ ভয়ে ভয়ে থাকবে।ভয়ে অন্ধ সাপের মতন একবার এ ওকে ছোবল দেবে, ও একে ছোবল দেবে।
এদের জন্য জীবন দেয়ার কোন বড়ভাই থাকবে না, এদের জীবন বাজি রেখে বাঁচানোর মতন কোন ছোটভাই থাকবে না।

আর এর কিছুই হবেনা-সব এক ধাক্কায় সিধা হয়ে যাবে, যদি আমার সেই ছোটভাইটা, যে এই লেখাটা এতোটুকু পড়ে আসছে-সে একটু সাহস করে কমদামী ভয়ের ক্ষমতা না কিনে অমূল্য ভালোবাসার ক্ষমতা অর্জন করার চেষ্টা করে। একটা বড়ভাই হবার চেষ্টা করে। ছোটভাইদেরকে নিয়ে ভালো কিছু কাজ করার চেষ্টা করে। ভয়ের ক্ষমতা না কিনিয়ে তাদের মাঝে নিজের ভালোবাসার ক্ষমতা বিলিয়ে দেয়।
তাহলেই এই ভয়ের দুষ্টচক্র ভেঙ্গে যাবে। ভালোবাসার অমূল্য চক্র আবার সবজায়গায় ফিরে আসবে।

কিরে? পারবি তো তুই। পারবি না?
পারবি আমি জানি। যা পারস কর। যতটুকু পারস কর।
ভয় নাই, আমি আছি! কিছু হইলে আমি দেখবো।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.