![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
অন্তহীন সংগ্রামমুখর জীবন আমার । শৈশব-কৈশরের কষ্টকর অধ্যায় পেরিয়ে স্বপ্নযাত্রায় পাল তুলে নিরন্তর পথচলা শুরু করেছি । কর্মজীবনের শুরুতে শিক্ষকতার মহান পেশায় কিছুদিন নিয়োজিত ছিলাম । এরপর আমলার আটপেৌরে জীবনে প্রবেশ । স্বপ্ন দেখতে ও দেখাতে ভালবাসি । মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় । কখনো কখনো স্বপ্নের চেয়েও বড় হতে পারে মানুষ । অাজীবন এই বিশ্বাস লালন করেছি । একটা কিছু করার অদম্য ইচ্ছা রয়েছে অামার ।জীবনটাকে নিয়ে নানা এক্সপেরিমেন্ট করতে ভাল লাগে আমার ।
পিংলি নদীর তীর ঘেষে গণেন্দ্র চন্দ্র সরকার এর বাড়ি । বাড়ি বলতে ছোট্ট একটি দোচালা ঘর । ঘরের ভাঙ্গা বেড়ার ফাঁকগুলো পলিথিন দিয়ে আড়াল করার চেষ্টা করা হয়েছে । ঘরের ভিটে ছিল তাঁর একমাত্র সম্বল । স্ত্রী আর চৌদ্দ বছর বয়সের একমাত্র কন্যাকে নিয়ে তাঁর সংসার । হাড্ডিসার শরীর নিয়ে দিন মজুরের কাজ করে সংসার চালান । মাঝে মাঝে অসুস্থ থাকলে বাড়িতে চুলা জ্বলতো না । অভুক্ত মানুষটি ঘরের ভাঙ্গা বেড়ার ফাঁক দিয়ে পিংলি নদীর বহমান স্রোতের দিকে তাকিয়ে নিজের ব্যর্থতায় দীর্ঘ:শ্বাস ফেলতেন । হয়তো নদীর স্রোতে তাঁর যৌবনে দেখা স্বপ্নগুলো ভেসে যেতে দেখতেন, হয়তো ভাবতেন যৌবনের সে উত্তাল দিনগুলোর কথা । আর কি কি ভাবতেন যদি জানা যেত । হঠাৎ একদিন তাঁর ভাঙ্গা ঘরের সামনে প্রশাসনের কর্মকর্তা, পুলিশ গিয়ে হাজির । ওঠোনে ঔৎসুক জনতার ভীড় । নামীদামী অনেক মানুষ । লাল সবুজের পতাকায় আচ্ছাদিত গণেন্দ্র চন্দ্র সরকার এর নিথর দেহ । তাঁর শেষকৃত্য সমাগত তাই তাঁকে রাষ্ট্রের পক্ষে গার্ড অব অনার দিতে পুলিশ ফোর্সসহ গণেন্দ্র সরকারের বাড়ি গেলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবিদ । এই নিভৃতচারী দিনমজুর মানুষটি যেন রাতারাতি তারকায় পরিণত হলেন । গ্রামের মানুষজন জীবদ্দশায় মূল্যহীন গণেন্দ্র'র শেষ যাত্রার মহামুল্যবান আয়োজনে হতবাক । একদিন বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে শ্যামল বাংলার মুক্তির মিছিলে শামিল হয়ে অর্থনৈতিক মুক্তি আর স্বাধিকারের নেশায় ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধে । অনেক রক্তে স্বাধীনতার স্বাদ হয়তো পেয়েছেন কিন্তু আমৃত্যু সীমাহীন কষ্ট আর না পাওয়ার যন্ত্রণায় দগ্ধ হতে হয়েছে তাঁকে । বিশ্বমানচিত্রে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের সৃষ্টিতে অবদান রাখা গণেন্দ্র জীবনকালে কি পেয়েছেন আর কি পাননি সে হিসেব হয়তো কখনো তিনি করেননি বা করতে চাননি । কিন্তু রাষ্ট্রের দায় তাতে শেষ হয়ে যায়না । দেশের একজন বীর সন্তান ও তাঁর পরিবারের দুর্দশা সদ্য চাকুরিতে প্রবেশ করা আবিদকে প্রচন্ডভাবে নাড়া দেয় । পতাকা শোভিত গণেন্দ্র সরকার এর নিথর দেহ সামনে রেখে আবিদ সেদিন পণ করেছিলেন এই বলে "জীবদ্দশায় মুক্তিযোদ্ধা গণেন্দ্র যথাযথ সম্মান না পেলেও তাঁর অসহায় মেয়ে আর স্ত্রীর জন্য কোন অবদান রাখা যায় কিনা তিনি সেটা দেখবেন " । আবিদ তাঁর কথা রেখেছিলেন । ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা গণেন্দ্র সরকার এর স্ত্রী-কন্যার নামে ৫০ শতক জমি বন্দোবস্তের ব্যবস্থা করেছিলেন । একজন আবিদকে মুক্তিযোদ্ধা গণেন্দ্র সরকার ও তাঁর পরিবারের হতদরিদ্র অবস্থা স্পর্শ করেছিল বলে তিনি তাদের পূণর্বাসনের ব্যবস্থা করেছিলেন । কিন্তু দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য দেশপ্রেমিক অসহায় গণেন্দ্রদের যথাযথ পূনর্বাসনের কী হবে ? আজ হয়তো মুক্তিযোদ্ধারা মাসে পাঁচ হাজার টাকা সম্মানী পান , সেটাও বেশিদিন আগের কথা নয়, বছরের পর বছর এসব বীরসেনানীদের অনেকের সীমাহীন দু:খ-কষ্ট, দুর্ভোগে কাটানোর ইতিহাস তাতে মুছে যাবার নয় ।
২| ০৮ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১১:১৯
অাপেল মাহমুদ বলেছেন: মন্তব্য এবং পরামর্শের জন্য ধন্যবাদ কাবিল ।
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ৮:০১
কাবিল বলেছেন: ভাল হচ্ছে চালিয়ে যান।
তবে ধারাবাহিক গল্প বিরতি নিয়ে লিখলে ভাল হয়।
যথার্থ মন্তব্য পাবেন।