![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রাজনীতির ময়দানে অস্থিতিশীলতার প্রধান নিয়ামক নির্বাচনে দলীয় কিংবা নির্দলীয় সরকার ব্যবস্থার টানাপড়েন চলছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সন্দেহমুক্ত নয়, আবার দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দেশে বিদেশে গ্রহণযোগ্য নয়। এ অবস্থার সমাধান হওয়া জরুরি, না হলে সংঘাত অনিবার্য। দুটি বড় দলের ভেতর সংঘাত দলীয় মতাদর্শে বিভক্ত সকল পক্ষের মধ্যে বিবাদ-বিসংবাদ বাড়ায়। বল প্রয়োগে সব সমস্যার সমাধানে মানুষকে উত্সাহিত করে এবং পুরো জাতির জীবনীশক্তি ও সৃষ্টিশীল উদ্যমকে নিঃশেষ করে দেয়। এ সংঘাত এড়ানোর একটা ভালো উপায় হতে পারে বিবদমান দলগুলোর মধ্যে আলোচনা বা সংলাপ। সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য বিশিষ্টজনদের পাশাপাশি নতুন প্রজন্মও এর প্রয়োজন গভীরভাবে অনুভব করে।
একটি রাষ্ট্রে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হলে সরকার ও বিরোধী দলের সহাবস্থান প্রয়োজন। সংসদীয় রাজনীতিতে দলীয় কর্তৃত্ব রয়েছে বটে, কিন্তু বিরোধী দলের ভূমিকাও এখানে মুখ্য। বিরোধী দলও সরকারের একটি অংশ। সংসদীয় রাজনীতিতে বিরোধী দলের নেতাকে বলা হয় ছায়া প্রধানমন্ত্রী। বিরোধী দলকে যদি মূল ভূমিকায় আনা না যায়, সে দেশে গণতন্ত্র বিকাশ লাভ করতে পারে না। পশ্চিম ইউরোপ, যেখানে গণতন্ত্রের ভিত্তি অত্যন্ত শক্তিশালী, সেখানে বিরোধী দলের সম্মান কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরকারি দলের চাইতেও বেশি। অনেক সময় বিদেশে বিরোধী দলের নেতা সরকারেরও প্রতিনিধিত্ব করে থাকেন । সেখানে সংসদে বিরোধী দলের কোনো নেতা কিংবা সংসদ সদস্যের মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে—এ রকম কোনো ঘটনা বিরল। কিন্তু বাংলাদেশে বিরোধী দলের ভূমিকা উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে। তাতে বাড়ছে ক্ষোভ আর সেই ক্ষোভ জন্ম দিচ্ছে সহিংসতার। এ ধারা সামপ্রতিক কালের নয়, এ ধারা চলে আসছে পঞ্চম সংসদ থেকে । লাগাতার সংসদ বর্জন বাংলাদেশের সংসদীয় রাজনীতিতে একটি স্থায়ী বৈশিষ্ট্য হয়ে গেলো বলেই মনে হয়। প্রধানমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন—অনির্বাচিত কোনো ব্যক্তির হাতে ক্ষমতা দেওয়া হবে না। আর সুপ্রীমকোর্টের রায় অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্বহালের সুযোগ নেই। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা যে তত্ত্বাবধায়ক নামে হতে হবে এমন কথা নেই, ভিন্ন নামেও হতে পারে যেমন অন্তর্বর্তী সরকার, কোয়ালিশন সরকার, নির্দলীয় সরকার। বাংলাদেশে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন কখনও গ্রহণযোগ্যতা পায়নি । ১৯৮৬, ৮৮ এবং ৯৬-এর নির্বাচন সে কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। স্থানীয় সরকার নির্বাচনের উদাহরণ টেনে দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব বলা হলেও মনে রাখা প্রয়োজন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আর জাতীয় নির্বাচনের গুরুত্ব ও প্রকৃতি এক নয় । কোন্ পদ্ধতিতে হলে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে তা নিয়ে জাতি আজ দ্বিধাবিভক্ত। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় সরকার প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব জনগণের, তাই জনগণ কোন্ পদ্ধতিতে তাঁদের সরকার নির্বাচন করতে চান সে বিষয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়ভারটাও জনগণের ওপরই বর্তায়। এদিকে বিরোধী দল বিএনপি ঈদের পর আন্দোলনের কথা বলছে। সবমিলিয়ে সামনে দিনে রাজনীতির মাঠ বেশ গরম থাকবে বলে ভাবছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা।
####
মো. আরিফুল ইসলাম
মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ
লেভেল-১; সেমি: -২
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।
©somewhere in net ltd.