নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

...

অর্ক

...

অর্ক › বিস্তারিত পোস্টঃ

কিছু বাচাল প্যাঁচাল ও এক কনকনে শীতের রাতে রাজশাহীতে চা পানের স্মৃতি

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১২:৫৬



শীতকাল এসেছে। আমাদের দেশে শীত বড্ড ক্ষণস্থায়ী! মাত্র দুটি বা তিনটি মাসই আমরা পাই শীতের। বাকি সারাবছরই মোটামুটি গ্রীষ্ম থাকে। মে জুনের দিকে তো আবহাওয়া রীতিমতো গা'য়ে ফোস্কা পড়ার মতো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে! দরিদ্র, অসহায় কিছু মানুষ এ সময় মরেও যায় হিটস্ট্রোকে। পত্র পত্রিকায় আসে সে সব খবর। পড়ি, তারপর যথারীতি ভুলে যাই। তবে আশার কথা, ইদানীং এ ধরণের মৃত্যুর খবর অনেক কমে এসেছে। এই দশকের গোড়ার দিকেও বিস্তর এসব অনাকাঙ্ক্ষিত দুঃখাবহ খবরে ভরে থাকতো পত্র পত্রিকার পাতা!
উহু, শীত নিয়ে দুয়েকটি কথা লিখতে যেয়ে আবার গ্রীষ্মে চলে গেছি! অন্য কারও কথা জানি না তবে ডারউইন'র বিবর্তনবাদ তত্ত্বে আমার অগাধ বিশ্বাস। নিজেকে দিয়েই বুঝি। দৌড়াদৌড়ি লাফালাফি ছাড়া জীবন আবার কোনও জীবন হলো নাকি! লাফালাফিতে বরং বানরের শ্রেষ্ঠত্বকেও চ্যালেঞ্জ করা উচিৎ আমাদের। মানে এ্যাথলেটদের মতো টাইট এবং ফিট থাকার কথা বলছি। অন্যকোনভাবে নেবেন না দয়া করে। ইউরোপ আমেরিকায় পঞ্চাশ'র ওপর বয়সের অসংখ্য ম্যারাথন রানার আছে। এশিয়ার জাপান, কোরিয়া ও চীনেও অনেক পাবেন।
যাই হোক আমি ভ্রমণ দারুণ ভালবাসি। একটা নতুন শহর, নতুন জায়গায় যাওয়া, অনেকটা সেই শহর বা জনপদকে আবিষ্কার করার মতো আনন্দের, রোমাঞ্চকর। পৃথিবী নামের এই গ্রহের ছোট্ট একটি দেশ, আমাদের এই বাংলাদেশ। অথচ কতো বৈচিত্র্যে ঠাসা এখানকার অঞ্চলভেদে মানুষের জীবনধারা! তা সেসব জায়গায় না গেলে জানা যাবে না। একবার কুমিল্লায় এক স্থানীয় লোক তো আমার দেশের বাড়ির নাম শুনে আমাকে বিদেশীই বলে বসলো! হা হা হা।
চা শীতের একটি অন্যতম অনুষঙ্গ। শীতকালে আমাদের দেশের মানুষের চা পানের প্রবণতা তুলনামূলক অনেকটাই বেড়ে যায়। অন্য জায়গাতেও বোধহয় এরকমই হয়ে থাকে। এখন অবশ্য অটোমেটিক মেশিনে বানানো কফিও দেশের সবখানে দেদার বিক্রি হতে দেখতে পাই। বাংলাদেশে কফিরও বেশ প্রচলন হয়েছে ইত্যবসরে নিঃসন্দেহে। ভালো। উন্নতি হচ্ছে। শীতের অন্যতম অনুষঙ এই চা নিয়ে আমার একটি মজার অভিজ্ঞতা সবার সাথে শেয়ার করছি। কয়েক বছর আগে কনকনে শীতের এক রাতে রাজশাহীতে, বাস টার্মিনালের কাছে রাস্তার পাশের এক ভ্রাম্যমাণ দোকানে এক কাপ চা'র অর্ডার দিয়ে, মুখ দিয়ে শো শো শব্দ করে, হাতে হাত ঘষছি বরফ শীতল ঠান্ডায়। জানুয়ারির এক কনকনে শীতের রাত। দারুণ শীত পড়েছিল সেবার।
এ সময় অবাক হয়ে দেখলাম, সেই ভ্রাম্যমাণ দোকানে কোনও চা আদৌ রান্নাই হয় না। কাঁচা পাতি বড় একটা ছাঁকনির মধ্যে রেখে ওর মধ্যে টগবগানো গরম পানি ঢেলে চা পরিবেশন করা হয়। মানে কেটলিতে চা রান্না করার কোনও ব্যাপার নেই। কাঁচা পাতি ছাঁকনির ওপরে রেখে গরম পানি ঢেলে চা বানানো হয়। এতে সময় খুব কম লাগে। ঝটপট চা। কেটলি বা হাড়িতে কেবলই গরম পানি ফোটানো হয়। ওই একটা দোকানই শুধু নয়, রাজশাহী চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও অত্র অঞ্চলের মানুষ এইসব কাঁচা পাতির চা পানে অভ্যস্ত। আমি বাসাবাড়ির কথা বলছি না, ভ্রাম্যমাণ দোকান, ছোট ছোট হোটেল এসব জায়গায় দেখেছি, এভাবেই সেখানে চা বানানো হয়, এভাবে চা পানেই অভ্যস্ত সেখানকার মানুষ। এটাই সেখানে তাদের চা পানের সংস্কৃতি।
আরেক জায়গা থেকে যেয়ে বিপদে পরলাম আমি! চা'য়ে চুমুক দিয়ে দেখলাম একেবারে ট্যালট্যালে মিষ্টি গরম পানি! এদিকে আমার আবার অভ্যাস গাঢ় ঘন থমথমে কালো লিকারের চা পানের। মেজাজটাই গেল খারাপ হয়ে। চা কোথায় চা! আমি চা খেতে চাই! আমি তো চায়ের অর্ডার দিয়েছিলাম! কী বিড়ম্বনা!
'ভাই, আমার ঘন কড়া লিকার খাওয়া অভ্যাস। এই চা আমি ঠিক খেতে পারছি না।' কাঁচুমাচু মুখ করে বলে বসলাম দোকানদারকে।
দোকানদার হাত বাড়িয়ে নিল চায়ের কাপটা, চোখেমুখে তার রাজ্যের বিরক্তি। তারপর দেখলাম কনডেন্সট মিল্কের একটি কৌটা নিয়ে আবার ছাঁকনির ভেজা পাতির ওপর চা-টা ঢেলে কি কি সব করে, আবার আমাকে পরিবেশন করলো সেই চা-টা। চরম ব্যস্ততার মাঝেও আমার চা-র জন্য বেশ কষ্ট করলো বেচারা!
তারপর সমাজ রক্ষার্থে কোনরকমে রসগোল্লার মতো কাঁচা পাতির মিষ্টি সাদা চা পান করলাম। চা!

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১:২৬

জাহিদ অনিক বলেছেন:

দুই এক দিনের মধ্যেই রাজশাহী যাওয়ার প্ল্যান ছিল। অনিবার্য কারনে সেটা বাতিল হয়েছে। দেখি শীতে জমে গেলে জানুয়ারীতে যেতে পারি। এর আগে একবার গেছি।

রাজশাহী শহরকে আমার কাছে বেশ ছিমছাম লাগে।

আপনি তো দেখি আমার মতই চা খোর ! ;)

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ১:৫৫

অর্ক বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
রাজশাহীতে জানুয়ারিতে ভালো শীত পড়ে। গেলে অবশ্যই পর্যাপ্ত শীতের কাপড় নিতে ভুলবেন না। আমি গিয়েছিলাম ২০১৪ তে। রাতে সুচ হয়ে কাঁটা হানে হিম শীতল বাতাস।
পদ্মার পাড়, বরেন্দ্র মিউজিয়াম আর চিড়িয়াখানা ছাড়া রাজশাহীতে বেড়ানোর মতো কিছু নেই।
রাজশাহী ছিমছাম বটে, তবে ঠিক কি কারণে যেন তেমন কোনও উন্নতি নেই! ওখানকার জীবনযাত্রার মান বাংলাদেশের বাকি যে কোনও জায়গার থেকে সুলভ। সাহেব বাজারে হোটেল 'মেমরি'তে খেতে ভুলবেন না। খাবারের দাম তুলনামূলক অনেক সুলভ। খুব ভিড় থাকে সবসময়।
হা হা হা ঠিক ধরেছেন। আমি চা খোরই বৈকি!

২| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ২:১৬

নূর-ই-হাফসা বলেছেন: আপনার চা নিয়ে লেখা পড়ে আমাকে এখন চা খেতে হবে । টং দোকানের চা মজা হয় কখনও কখনও । আমার একজন স‍্যার ছিলেন যিনি ২ ঘন্টায় ১ ফ্লাস্ক চা শেষ করতেন । স‍্যার অনেক মজার মানুষ ছিলেন । এখন কেমন আছেন জানিনা । চায়ের প্রসঙ্গ এলেই ওনার কথা মনে পড়ে ।আমি তার মতো চা খোর এখনও দেখি নি ।

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:২৭

অর্ক বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। বেশি চা পান শরীরের জন্য ক্ষতিকর। যখন তখন চা না খাওয়াই ভালো। আপনার স্যার'র মতো অতো চা খোর আমি নই। এমন কাওকে দেখিওনি। ২ ঘন্টায় ১ ফ্লাস্ক চা! ওরে বাবা! হয়তো ছোট আকৃতির ফ্লাস্ক হয়ে থাকবে! প্রকৃতই চা খোর যাকে বলে!
অনেক শুভকামনা। ভালো থাকবেন।

৩| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৭ রাত ২:২২

ওমেরা বলেছেন: ৫ বছর আগে দেশে গিয়েছিলাম,তখন এক বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলাম, চা খেতে দিয়েছিল, আমি বলেছিলাম ঐ বাসার লোক খুব আশ্চার্য় বলেছিল চা আবার খায় না কিভাবে!! শুধু আমি আমাদের পরিবারের কেউ ই চা খায় না। চা খোর মেহমান এলে খুব বিরক্ত লাগে। তবে কফি খাই দিনে একবার তবু বাসায় না জবে থাকলে ফ্রীতে স্কুলে থাকলে কিনে।

আপনার চা খোরের গল্প লাগল।

১৬ ই নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৭

অর্ক বলেছেন: আপনি চা পান করেন না জেনে আমি নিজেও অবাক হলাম! চা'র মতো একটা নির্দোষ পানীয়'তে আপনি ও আপনার পরিবারের নিরাসক্তি জেনে কিঞ্চিৎ অবাক হলাম বৈকি! হা হা হা। কফি ভালো। বোধহয় ওখানে স্টারবাক্স আছে!
চা খোর নিয়ে লেখা ভালো লাগায় আমারও অনেক অনেক ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ।
সবসময় ভরপুর শুভকামনা আপনার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.