নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

...

অর্ক

...

অর্ক › বিস্তারিত পোস্টঃ

চায়ের জাদুকরের চলে যাওয়া

০২ রা ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৪৪



(নিজের দোকানে সুলতান ভাই। ২০১৬ সালে তুলেছিলাম ছবিটি। সব আজ নিছকই সাদাকালো স্মৃতি।)

ঠিক কতো দিন আগের কথা পরিষ্কার বলতে পারবো না। এক যুগের কম হবে না। মুক্তদেশ প্রকাশনের স্বত্বাধিকারী জাবেদ ইমন মজুমদারের মাধ্যমে প্রথম চা পান সেখানে। তখন তিন টাকা ছিলো প্রতি কাপ। পরবর্তীতে দুয়েক টাকা করে বাড়তে বাড়তে শেষ খেয়েছিলাম দশ টাকা। লেবু বিটলবণ চা, গুড়ের চা, তেতুলের চা। সড়কের পাশে ওরকম ভ্রাম্যমাণ দোকানে কাঁচের ছোটো কাপে সম্ভবত সুলতান ভাইয়ের রং চা-ই বাংলাদেশের প্রথম দশ টাকা মূল্যর চা। এর আগেও এখানে একটি লেখা লিখেছিলাম সুলতান ভাইয়ের চা নিয়ে। ওটার লিংক যুক্ত করবো।

আমার জীবনের প্রিয় একটি ব্যাপার ছিলো, পুরান ঢাকায় সুলতান ভাইয়ের দোকানে চা পান করা। চা খেতে খেতে যেন হারিয়ে যেতাম কোথাও। পৃথিবী নামের এ গ্রহের বাইরে। হতে পারে অন্য আরেক গ্রহে। দারুণ সুস্বাদু উপভোগ্য, লেবু বিটলবণ দিয়ে বানানো সে চা, আহা! সত্যি, যারা পান করেনি, তারা কখনও জানবে না, আসলে কতোটা সুস্বাদু আনন্দদায়ক হতে পারে এক কাপ চা। অনেকদিন পর সদরঘাটে বিশেষ একটি দরকারে গিয়েছিলাম। বেশ রাত। যাচ্ছিলাম সুলতান ভাইয়ের দোকানে। কেমন যেন একরকম দ্বিধা ছিলো মনে যে, হয়তো দোকানটা আর নেই সেখানে! এর আগেও একবার এরকম হয়েছিলো। পেট্রোল পাম্প থেকে পাশের পানির টাংকির নিচে স্থানান্তরিত হয়েছিলো। অমঙ্গল আশংকায় বুকের ভেতরটা কেমন হাহাকারে ভরে উঠছিলো বারবার। বেশ দীর্ঘদিন পর এসেছি। আছে তো দোকানটা!

এভাবে একসময় টাংকির নিচে পৌঁছে গেলাম। যা আশঙ্কা করেছিলাম তাই সত্য হলো। খা খা করছে জায়গাটা। নেই। ওমনি তীব্র হতাশা গ্রাস করলো আমাকে। দোকানটা নেই! এভাবেই কিছু মুহূর্ত কেটে গেলো। দুজন যুবক গল্প করছিলো পাশে। ওদের জিজ্ঞেস করলাম এ ব্যাপারে। বিস্মিত হতে দেখলাম উভয়কে। একজন জানালো যে, সুলতান ভাই মারা গেছে দেড় বছর হতে চললো। শুনে স্থবির হয়ে পড়লাম যেন। তখনকার সে অনুভূতি আসলে শব্দ বাক্যে ব্যাক্ত করা যাবে না। একজন প্রকৃত বন্ধু শুভাকাঙ্ক্ষী ছিলো সুলতান ভাই। এক যুগেরও অধিককাল সম্পর্ক। হাজারো স্মৃতি এসে ভিড় জমালো করোটিতে। কতো কথা কতো গল্প! সব মুহূর্তেই বড্ড অর্থহীন মনে হতে লাগলো। যেন আদৌ কখনও ঘটেনি, সব মিথ্যে!

তারপর এক পর্যায়ে শ্লথ পা’য়ে হাঁটতে লাগলাম গন্তব্যের দিকে। পিছনে পরে থাকলো, সাদা রঙের অতিকায় পানির টাংকিটা।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:১৫

অর্ক বলেছেন: পুরনো লেখাটি।

২| ০২ রা ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১১:০০

অপু তানভীর বলেছেন: জীবনের চলার পথে এরকম অনেক মানুষের সাথে আমাদের পরিচয় হয় । যখন স্কুলে পড়ি তখন রতন মানে এক লোক টিকিয়া কাবাব বানাতো রেলবাজারের রাস্তার পাশে । এমনও দিন গেছে কেবল মাত্র সেখানে টিকিয়া খাওয়ার জন্য ৫ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে গেছি । তারপর একদিন হঠাৎ করে সেই দোকান বন্ধ হয়ে গেল । তার আর কোন খোজ নেই । আজ থেকে প্রায় ১৫/১৬ বছর আগের ঘটনা তবুও সেই টিকিয়া কাবাব আর রতন মিয়ার কথা মনে রয়ে গেছে ।

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১:০৭

অর্ক বলেছেন: খুব ভালো লাগলো আপনার এ মন্তব্য। হ্যা, এরকম অভিজ্ঞতা কমবেশি সবার আছে। এটা স্বাভাবিক। বড়ো ভালো মানুষ ছিলেন সুলতান ভাই!

ভালো থাকবেন। শুভকামনা সবসময়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.