নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কবিতার খাতা

আশিক ফয়সাল

আশিক ফয়সাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

খাদ্য শৃংখল

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:১০

অনুগল্প
                    আ শি ক   ফ য় সা ল
-------------------------
বিষন্ন মনে স্কুল থেকে ফিরলো রহিত। স্কুল পোষাক ছেড়ে সোজা চলে গেলো নিজের ঘরে,মা খেতে ডাকলে একটু রাগান্বিত হয়ে বলল খিদে নেই, এখনো তার মাথায় চেপে আছে বাসের আলোচনা গুলো। মাংসের জন্য নির্দিধায় হত্যা করা হচ্ছে গো মাতাকে। সরকার একটু পদক্ষেপ নিলে তাতেও নাকি দোষ এটা নাকি অন্য ধর্মের মানুষের প্রতি অন্যায়। আমরা কারো ধর্মের দেবতা কে এই ভাবে হত্যা করে ভক্ষণ করি!, সত্যিই খুব নিষ্ঠুর ঐ ধর্ম গুলো। নিজের সাথে কথা বলতে বলতে ঘুমিয়ে পড়ল রহিত। ডুব দিলো স্বপ্নের দেশে। দেখলো স্বর্গে দেবতারা জরুরি সভা ডেকেছে, সব দেবতারা উপস্থিত। ব্রাহ্মা বললেন মর্ত থেকে নারদ খবর নিয়ে এসেছে সেখানে নাকি দেব দেবীদের নিয়ে চরম বৈষম্য চলছে, শিবের বাহন নন্দীকে নিয়ে মাতামাতি অথচ বাকি দেবতারা তুচ্ছ। তাই তো আজকের এই জরুরী সভায় আপনাদের আমন্ত্রন জানানো হয়েছে, কৈ আমার আর সরস্বতীর বাহন রাজ হংস কে নিয়ে তো কোন ভ্রূক্ষেপ নেই বরং মর্তের মানুষেরা ঝাল নারকেল দিয়ে কষিয়ে মজা করে খাই ,স্বর্গ থেকে দেখে আমারই জিবে জল আসে।
বিষ্ণু গম্ভীর গলায় ব্রহ্মার কথায় সুর মেলালেন, বললেন সত্যিই চরম বৈষম্য। আমি সৃষ্টির পরিচালক অথচ আমার বাহক পক্ষীকুল আজ বিলুপ্তির পথে। খাদক গুলো শিকার করে খাচ্ছে পক্ষীকুল। খাবার উপযোগী পক্ষী চড়া দামে বিক্রি হয় বাজারে, লোক দেখানো কিছু আন্দোলন যদিও হয় কিন্তু সেখানেও শস্যের মধ্যে ভূত। যারাই আন্দোলন করে তারাই দাম দিয়ে বাজার থেকে কিনে খাই।
নারায়ণন নারায়ণন হঠাৎ নারদের কন্ঠ ,প্রভু শুধু কি তাই সব দেশের বড় বড় রাষ্ট্রিয় ভবনে শোভা বর্ধনের সাজিয়ে রাখা হয়েছে দূর্গা দেবীর বাহন সিংহ ও বাঘের চামড়া সহ মাথার খুলি ,দেখলেই পিটিয়ে মারা হচ্ছে কালী মাতার বাহন শৃগাল ও মা মনসার সাপ কে। গনেশ ঠাকুরের বাহন ইদুর কে মারার জন্য মাইকে ও টিভিতে প্রচার করে বিক্রি হচ্ছে ইদুর মারার যম। কলা গাছের থোড় খাওয়ার জন্য চেরা হচ্ছে গনেশ ঠাকুরের বৌ এর শরীর এবং অবশিষ্টাংশ খাওয়ানো হচ্ছে ছাগল কে, দেব দেবীদের সব বাহনকে চিড়িয়াখানার খাঁচায় বন্দি করে মজা নিচ্ছে। আরো কত যে লীলা হচ্ছে মর্তে তা ভাবলেই গায়ে কাটা দেয়। সব শুনে দেবতারা খুব চিন্তায় পড়লেন।ধ্বংসের দেবতা শিব তো রেগে সভা ত্যাগ করলেন। চারিদিকে কি হবে কি হবে রব। এমনই সময় দাদুর ডাকে ঘুম ভাঙ্গল রহিতের। দাদু জিজ্ঞাসা করলেন কি হয়েছে তোর না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়লি, চল খেয়ে নে। খিদে নেই দাদু বিছানা থেকে উঠতে উঠতে বললো রহিত। তারপর দাদু কে বাসের ঘটনা ও স্বপ্নের কথা খুলে বললো। দাদু বুঝতে পারলেন এবং রহিত কে বললেন আসলে পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছে মানুষের জন্য, এটার রক্ষক ভক্ষক দুটোই মানুষ। এক শক্ত খাদ্য শৃংখল দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে এই পৃথিবী। যেখানে বাঘ সিংহের প্রিয় খাদ্য গরু-মহিষ, পেঁচার ও সাপের খাদ্য ইদুর, আর গরু মহিষের প্রিয় খাদ্য কচি কলা পাতা ও ঘাস। লক্ষ করলে দেখবে এরা সবাই দেব দেবতার বাহন কিন্তু জীবন ধারণের তাগিদে একে অন্যকে খেয়ে বেচে থাকে। এটাই হলো খাদ্য শৃংখল। আর মানুষও এই শৃংখলের বাইরে নয়।ধর্ম বর্ণ গোত্র ভেদে থাকবে খাদ্যের ভিন্নতা থাকবে স্বাধীনতাও। রহিত বুঝতে পারলো এবং দাদুর সাথে খাবার ঘরের দিকে গেলো।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৭ দুপুর ১:২৩

অতঃপর হৃদয় বলেছেন: এক পোস্ট পর পর দুবার হয়েছে। একটা ডিলিট করেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.