নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আসিফ আহমেদ

হীমু

ব্লগের জগতে আমি সম্পূর্ণ নতুন একজন । দুই বছর আগে থেকেই ফেইসবুকে ছোট গল্প লেখালেখি করি । লেখালেখি করার আগ্রহটা পুরোটাই সখ থেকে ! আমার গল্পের কাহিনীগুলো অগোছালো চিন্তার সমষ্টি ! আমার প্রোফাইল পড়ার জন্য ধন্যবাদ ।

হীমু › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি সুন্দরী মেয়ের গল্প !

১৯ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৪:৪০

সময়টা জুলাই মাসের পাঁচ-সাত তারিখ হবে !

ভোর চারটা বেজে ত্রিশ মিনিট ।



অন্যান্য দিন

মায়ের ডাকে ঘুম ভাঙে আর আজ ঘুম ভাঙলো বাবার

ডাকে !



আসলে, আজ বাবার সাথে তাঁর এক বন্ধুর

বাসাতে যাওয়ার প্রোগ্রাম আছে তাই বাবা খুব

সকালেই ডেকে দিলো রেডী হওয়ার জন্য ।



এতো সকালে সাধারণত আমি কখনোই ঘুম

থেকে উঠি না !

তবুও বাবার কড়া হুকুমের একটুখানিও

নড়চড় করলাম না !



গত রাতেই প্লান করেছি ট্রেনে যাবো ।

ট্রেনে যেতে আমাদের বাসা থেকে বেশ

খানিকটা দূরে যেতে হয় ।



বাবা যাবার জন্য রেডী অথচ

আমি তখনো গুছিয়ে উঠতে পারি নি !

ধমক খাওয়ার পর আমার গোছানো পরিপূর্ণ

হয়েছিলো !



যাহোক, এবার আমাদের উদ্দেশ্য ছিলো রেল

স্টেশনে পৌছানো ।

ট্রেন আসার প্রায় আধাঘন্টা আগেই

আমরা স্টেশনে পৌছে যাই ।

ট্রেন আসলো !



আমি আর বাবা উঠে বসলাম ট্রেনে !

ট্রেন বেশ খালি ছিলো তাই অনেক ফুরফুরে মেজাজ

নিয়ে বসে পড়লাম জানালার পাশের এক সিটে ।

জানালার পাশের সিটগুলোতে বসতে প্রচন্ড রকমের

ভালো আমার !



এটা অবশ্য আমার প্রথম ট্রেন যাত্রা নয় !

এর আগে প্রখমবার ট্রেনে চড়েছিলাম ছোটকাকুর

সাথে করে !

অনেক মজা করেছিলাম !





ট্রেন চলতে শুরু করলো আস্তে আস্তে !

আর আমি জানালা দিয়ে বাইরের অপরুপ সৌন্দর্ষ্য

দেখছিলাম !

গাছপালাগুলো কেমন যেন পিছনের দিকে দৌড়াচ্ছে !

এভাবে বসে বসে প্রকৃতির চেহারা দেখতে দেখতে পার

করে দিলাম কয়েকটা স্টেশন !



তারপর আবারো এক স্টেশনে ট্রেন থামলো ।



আর ট্রেনের মতো আমার চোখটিও

থেমে গেলো একটা মেয়েকে দেখে !





চোখে চশমা,

হাতে সুন্দর একটা ঘড়ি,

আর সাথে একটা ব্যাগ !

আমি চেয়ে আছি অপলক দৃষ্টিতে !



আহা !

ট্রেন স্টেশনে এই সুন্দর সকালে এমন সুন্দর

একটা মেয়েকে দেখবো কখনো ভাবিনি !





আমি অবাক !

আমি অবাক মেয়েটির চোখদুটো দেখে !

চোখ দুটোতে কি যেন একটা মায়া মায়া ভাব আছে ।

একবার তাকালে সহজে চোখ ফিরিয়ে নেওয়া যায় না !



ভাবলাম, এইবার বোধহয় ফেইসবুকের রিলেশনশিপ

স্টাটাস "সিঙ্গেল" থেকে "ইন এ রিলেশনশিপে"

বদলে যাবে !



আমি আরোও অবাক হলাম যখন দেখলাম

মেয়েটি আমার দিকেই এগিয়ে আসছে !

খানিকটা অপ্রস্তুত ছিলাম আমি ।

মেয়েটির থেকে চোখ ফিরিয়ে অন্য দিকে তাকানোর

চেষ্টা করলাম ।

মেয়েটি জানালা দিয়ে আমাকে উদ্দেশ্য

করে একটি ব্যাগ দিলো পাশের সিটে রাখার জন্য ।



মেয়েটি আসতে আসতে জায়গাটুকো আর অবশিষ্ট

থাকলো না !

এক বৃদ্ধ মহিলা এসে দখল করে নিলো জায়গাটি !



মেয়েটি আসলো,

আর এসে ঠিক আমার পাশে দাঁড়ালো !

তারপর ব্যাগটা চাইলো আমার কাছে থেকে ।

আমি ব্যাগটা দিয়ে দিলাম !

মেয়েটি ব্যাগটিকে ট্রেনের ছাঁদের নিচে ব্যাগ রাখার

জায়গায় রাখার বৃথা চেষ্টা করলো ।

অনেকক্ষন চেষ্টার পরও যখন

মেয়েটি পারলো না তখন আমি নিজেই

উঠে মেয়েটিকে সাহাষ্য করলাম !





উল্লেখ্য, কাউকে সাহাষ্য করতে আমার অনেক

ভালোই লাগে আর সেটি যদি কোন এক

সুন্দরী ললনা হয় তবে তো কোন কথাই নেই

মেয়েটিকে সাহাষ্য করতে গিয়ে মেয়েটির হাতের

সাথে আমার হাতের সামান্য স্পর্শ হয়েছিলো !



এটাই হয়তো কোন সুন্দরী মেয়ের হাতের সাথে আমার

হাতের স্পর্শের প্রথম কোন ঘটনা !





যাহোক, মেয়েটি সিট না পেয়ে আমার সামনেই

দাঁড়িয়ে থাকলো ।

আমি একটা ভালো-ভদ্র ছেলে,

এভাবে কোন সুন্দরী মেয়ের অসম্মান

কিভাবে হতে দিতে পারি ???



তাই নিজের আসনটি ছেড়ে দিলাম মেয়েটির জন্য ।

মেয়েটি কোন কথা না বলে বসে পড়লো !





গত কয়েকদিন আগেই মাএ অসুস্থ থেকে সুস্হ

হয়েছি !

শরীর প্রচন্ড রকমের দুর্বল,

তাছাড়া, পায়ের একটা আঙুলে বাজে ধরণের

একটা ইনফেকশনও হয়েছে !

মাঝে মাঝেই পা থেকে রক্ত ঝড়ছে তাই টিস্যু

রেখেছি সাথে !



এই অবস্থা নিয়েই দাঁড়িয়ে রইলাম ট্রেনের ভিড়ের

একঝাঁক মানুষের মাঝে !



বাবা কিন্তু বুঝতে পেরেছিলেন

যে দাঁড়িয়ে থাকতে আমার কষ্ট হচ্ছে তাই নিজের

আসনে আমাকে বসার জন্য বললেন ।



আমি না করলাম !



আবারো একটা স্টেশন !

ট্রেন থামলো বেশ কিছুক্ষন আর তারপর আভার

যাত্রা শুরু...

অনেকক্ষন নিরবতার পর সাহস করেই

মেয়েটিকে প্রশ্ন করলাম...



-আপু , বাসা কোথায় আপনার ?



-আলমডাঙ্গা ।



-কোথায় যাবেন ?



-কুষ্টিয়াতে ।

ঐখানে থাকি । কুষ্টিয়া সরকারী কলেজ

থেকে ইংরেজীতে অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে পড়ছি !



আমি যেন আকাশ থেকে পড়লাম !

ভেবেছিলাম, হয়তো আপুটা এস এস

সি অথবা ইন্টারে পড়াশোনা করে ।

অনার্সে পড়ার কথা চিন্তাতেও আসেনি একবারও !



আমি মাএ ইন্টার ফাইনাল পরীক্ষা দিলাম !

এতো ছোট হয়ে অনার্স পড়া একটা মেয়ের

সাথে কি কিছু করা যায় !



একটুখানি নিরবতার পর আবারো জিঙ্গেস করলাম...



-পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে ট্রাই করেন নি ?



-হুম,

রাজশাহী ইউনিভার্সিটিতে চারুকলা বিভাগে চান্স

হয়েছিলো !

কিন্তু নাচ পারিনা আর ঐ বিভাগটা আমার পছন্দ

ছিলোনা তাই ভর্তি হয়নি !



সামনেই আমার স্টেশন !



মেয়েটি উপর থেকে ব্যাগটি পাড়লো !

আমার আর ঐ মেয়েটির স্টেশন একই !

আস্তে আস্তে মেয়েটি নামার জন্য দরজার

দিকে এগিয়ে গেলো ।





ট্রেন থামলো !

মেয়েটিকে নেমে যেতে দেখলাম ।



আমিও ট্রেন থেকে নামলাম ।

মেয়েটিকে খোঁজার চেষ্টা করলাম,

কিন্তু কোথাও পেলাম না !

চোখের পলকেই কোথায় যেন হারিয়ে গেলো সেই

সুন্দরী মেয়েটি !





সকালের ঐ ট্রেনে প্রায়ই যায় কুষ্টিয়াতে ।

কে জানে, হয়তো আবারো কোন একদিন

দেখা হয়ে যাবে সেই সুন্দরী ললনার সাথে........

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.