![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ব্লগের জগতে আমি সম্পূর্ণ নতুন একজন । দুই বছর আগে থেকেই ফেইসবুকে ছোট গল্প লেখালেখি করি । লেখালেখি করার আগ্রহটা পুরোটাই সখ থেকে ! আমার গল্পের কাহিনীগুলো অগোছালো চিন্তার সমষ্টি ! আমার প্রোফাইল পড়ার জন্য ধন্যবাদ ।
(প্রথম অংশ)
মাথার উপর বিশাল এক খোলা নীল আকাশ !
রিয়ন হাঁটছে, মেইনরোডের একপাশ দিয়ে ।
একেবারে আনমনা হয়ে !
পাশে হাজারো গাড়ি আসছে-যাচ্ছে ।
ঐতো !
সামনেই ঐ লাল ব্রিজটি দেখা যাচ্ছে !
রিয়নের গন্তব্য ওখানেই ।
ঠিক এই মুহুর্তে রিয়নের মাথায় হাজারটা চিন্তা এসে অবিরত ঘুরপাক খাচ্ছে !
রিয়ন হাঁটছে আর ভাবছে !
এর আরোও প্রায় পনেরো-কুঁড়ি মিনিট হাঁটার পর রিয়ন তাঁর গন্তব্যের লাল ব্রিজটার কাছে এসে পৌঁছালো ।
এই এলাকার লোকজন এই ব্রিজটিকে লাল ব্রিজ নামেই চেনে ।
অনেকের ধারণা, ব্রিজের রংটা লাল তাই এই ব্রিজের নামটা "লাল ব্রিজ" দেওয়া হয়েছে ।
রিয়নদের বাসাটা আধা গ্রাম, আধা শহুরে ।
ওদের বাসা থেকে দু কিলো দূরে এই লাল ব্রিজটি,
এই ব্রিজ থেকে আরো দু-তিন কিলো সামনে এগোলে একটা ছোটখাটো বাজারের সন্ধান মিলবে !
রিয়নের কাছে এই লাল ব্রিজটি বেশ পছন্দের একটি জায়গা ।
প্রায় প্রতিদিনই রিয়ন আসতো এ জায়গাটিতে ।
কখনও রাস্তার গাড়িগুলো দেখে,
কখনও বা আবার আনমনে ব্রিজের নিচের নদীর স্বচ্ছ পানি দেখে সময় কাটিয়ে দিতো ।
কিন্তু আজকের ব্যাপারটি একটু অন্যরকম !
আজ রিয়ন এখানে এসেছে কারণ ওর মনটা আজ খুব খারাপ !
এতোটাই খারাপ যে চোখ ফেটে যেন পানি বেরিয়ে আসতে চাইছে !
রিয়ন সহজে কাঁদে না,
কিন্তু আজ রিয়ন তাঁর চোখের পানি কিছুতেই আটকে রাখতে পারছেনা !
একটুখানি পরীক্ষার রেজাল্ট-টা খারাপ হয়েছে মাএ !
এতোটুকুর জন্য এভাবে বকবে তাঁর বাবা-মা ?
রিয়ন ভাবে, না পড়ে সে যে রেজাল্ট করেছে অন্য কেউ না পড়ে তা কোনও ভাবেই পারবেনা !
রিয়ন জানে, যদি না পড়ে অথবা খুব কম সময়ে স্বল্প সুযোগ দিয়ে কোন পরীক্ষা নেওয়া হতো তবে সেই পরীক্ষায় রিয়নকে কেউই হারাতে পারতো না !
কিন্তু এই কথাগুলো তাঁর বাবা-মাকে কে বোঝাবে ?
তাঁর বাবা-মা যে নাছোড়বান্দা !
পরীক্ষায় যেকোন ভাবে রিয়নকে একটা ভালো রেজাল্ট করতেই হবে !
শুধু বাবা বকলেও রিয়ন এতোটা কষ্ট হয়তো পেতোনা !
কিন্তু বাবার সাথে সাথে তাঁর মা ও আজ সমানে রিয়নকে বকেছে !
যে মা সবসময় রিয়নকে সাপোর্ট করে এসেছে,
যে মা রিয়নের সকল দুষ্টামীগুলোকে এতোদিন প্রশ্রয় দিয়ে এসেছে, সেই মায়ের কাছ থেকে বকুনী খাবার পর রিয়ন অনেক ভেঙ্গে পড় !
রাগ, ক্ষোভ, অভিমান আর দুঃখে রিয়ন আজ ঠিক করেছে সে ব্রিজ থেকে লাফিয়ে আত্নহত্যা করবে !
এই মুহুর্তে মা-বাবার থেকেও বেশি রাগ হচ্ছে নওশীনের উপর !
সব দোষ এই মেয়েটার !
ইচ্ছে হচ্ছে ওর চুলগুলো সব টেনে টেনে ছিড়ে দিই !
নওশীন হলো রিয়নের কাজিন,
মানে সম্পর্কে মামাতো বোন ।
সারাদিন এই মেয়েটি পড়াশোনা করে আর তাই স্বাভাবিকভাবেই রিয়নের চাইতে নওশীনের রেজাল্ট অনেক ভালো এসেছে !
আর ফ্যামিলির কোন একজন পড়াশোনায় অন্যদের চাইতে ভালো হলে যা হয় আর কি !
উঠতে বসতে নওশীনের কথা শুনতে হয় রিয়নের !
নওশীনের ভালো রেজাল্ট নিয়েও কটু কথা শুনতে হয় রিয়নের ।
এতে আরো বেশি রাগ হয় রিয়নের !
রিয়ন কথাগুলো ভাবতে ভাবতে আস্তে আস্তে হেঁটে লাল ব্রিজটার একেবারে মাঝখানটায় চলে যায় ।
মাথাটা ঝুকে রিয়ন নিচের পানির স্রোত দেখতে থাকে,
চোখ দিয়ে বেশ কয়েক ফোঁটা পানি পড়ে !
রিয়ন দেখে, চোখ থেকে ফোঁটা ফোঁটা পানি পড়ে নিচের নদীর পানির সাথে মিশে যাচ্ছে ।
সূর্যটা আস্তে আস্তে পশ্চিম কোণে হেলে যাচ্ছে,
রাস্তায় যানবাহনের প্রচন্ড ভিড় !
এখন যদি ব্রিজের উপর উঠে লাফিয়ে পড়া যায় তবে কেউ খেয়লই করবে না !
রিয়ন ভাবে, তার কাঙ্খিত সময় এখনই,
আর এক মুহুর্তও দেরী করা যাবে না !
যা করার এখনই করতে হবে !
এক পা করে আগিয়ে ব্রিজটির আরেকটু কাছে চলে যায় রিয়ন ।
নিজেকে থামানোর কোন ইচ্ছেই নেই রিয়নের !
রিয়নের একটা খারাপ অভ্যাস আছে !
কোন কাজের কথা একবার মাথায় আসলে ঠিক ঐ কাজটি শেষ করা না পর্যন্ত রিয়ন শান্ত হয় না !
এমনটিতেই রিয়ন খুব শান্ত ছেলে ।
কোন কাজ করার আগে অন্তত একবার ভেবে দেখে ।
আন্তু আজ আর কোনকিছু ভেবে দেখলো না সে !
নিজে আত্নহত্যা করে বাবা-মার উপর বকুনীর শোধ নিতে চায় সে !
ভাবতে ভাবতে রিয়ন ব্রিজটার একেবারে উপরে উঠে যায় !
এইতো সময় !
রিয়ন লাফানোর জন্যে সমস্ত প্রস্তুতি সেরে নিলো ।
লাফাতে যাবার ঠিক কয়েক সেকেন্ড আগমুহুর্তে পিছন থেকে একটা ডাক শুনতে পায় সে !
একটা মেয়ের কন্ঠ !
কন্ঠটা রিয়নের কাছে বেশ অপরিচিত !
এর আগে সে এই কন্ঠ কখনও শোনেনি !
-এই যে শুনছেন ?
রিয়ন পিছন ফিরে তাকায় ....
একটা অপরিচিত মুখ, আর অপরুপ সৌন্দর্যের এক মোহনীয় চেহারা !
দেখলেই যেন মায়া লেগে যায় !
রিয়ন কয়েক মিনিট মেয়েটির দিকে তাকিয়ে থাকে ।
এর আগে এতো সুন্দর কোন মেয়েকে দেখেনি সে !
রিয়নের অবাক আর নিস্পলক দৃষ্টি ভাঙিয়ে আবারো একটা ডাক ভেসে এলো !
-এই যে আপনাকে বলছি ....
এতো উপরে কি করছেন ?
পড়ে যাবেন তো !
রিয়ন শুধু ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে থাকে মেয়েটির দিকে !
কি বলবে ভেবে পায় না !
মেয়েটির আরো কয়েকবার অনুরোধে ব্রিজের উপর থেকে নিচে নেমে আসে রিয়ন ।
নিচে আসার পর রিয়ন আরো বেশি অবাক হয়ে যায় !
উপর থেকে যতোটা সুন্দর মনে হচ্ছিলো নিচে এসে তার চেয়ে দ্বিগুন সুন্দর দেখতে লাগছে মেয়েটিকে !
যেন হঠাত্-ই আসমান থেকে নেমে এসেছে মেয়েটি !
খোলা চুল,
কপালের ঠিক মাঝখানটাতে ছোট একটা কালো টিপ,
আর পরনে রয়েছে সাদা রঙয়ের থ্রী-পিস !
চোখদুটো একেবারে ঘোর কালো বর্ণের,
যেন এইমাএ চোখে কাজল দিয়ে এসেছে !
এক কথায় মেয়েটিকে অনেক সুন্দর দেখতে লাগছিলো !
রিয়নের ও ঠিক এই রকম মেয়েদেরই পছন্দ ।
খুব বেশি ফ্যাশানেবল নয়,
অনেকটাই সাদাসিধে টাইপের পোশাক আর সাজগোজ পছন্দ করে রিয়ন ।
কলেজের একটি মেয়েকে রিয়ন পছন্দ করতো !
কলেজের সেই পছন্দের মেয়েটির সাথে এই মেয়েটির খানিকটা মিল খুঁজে পায় ও !
মেয়েটিকে রিয়ন কি বলবে ঠিক ভেবে পেলোনা !
আসলে, সুন্দরী মেয়েদের সামনে রিয়ন ভীষনই লজ্জা পায় !
এমনিতেই ছোট থেকেও রিয়ন একটু লাজুক স্বভাবের ।
ঠিক এই মুহুর্তে কোন কথা বললে ঠিক হবে সেটি বুঝতে পারে না ও ।
এভাবে কেটে যায় আরো প্রায় দু -তিন মিনিট সময় !
(চলবে....)
২| ১১ ই অক্টোবর, ২০১৪ বিকাল ৪:৪৫
হীমু বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া !
গল্পের পরবর্তী অংশটুকো পড়ার জন্য আমন্ত্রণ রইলো......
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ১০:০২
অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: চলুক +++++++++
পোস্ট দুইবার এসেছে ।
ঈদের শুভেচ্ছা রইল