![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি এগিয়ে যেতে চাই।অনেক বিশাল স্বপ্ন দেখি,স্বপ্ন দেখা দোষের কিছু নয়।লক্ষ্য স্হির রেখে বুহুদূর চলতে চাই।
আমাদের ব্যাচের শিক্ষা সংক্রান্ত যাতবীয় সমস্যা নিয়ে দুঃখের ইতিহাস রচনা করতে বসলাম।... আশা করি কোন কিছু বাদ পড়েনি। ভুল ত্রুটি সংশোধনযোগ্য।
পি.এস.সি → জে.এস.সি → এস.এস.সি → এইচ.এস.সি
৭ টা সৃজনশীল! ওমাগো!
==================
মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী যথাযত সম্মানের সহিত বলছি, সেন্স অব হিউমারের যথাযথ ব্যবহার করুন!!! আমি মানি শিক্ষা বোর্ডের সকল সিদ্ধান্ত আপনি নেন না, তবে বিলটা আপনার মাধ্যমেই পাশ হয়। তাই আমাদের দাবীটা আপনার কাছেই।
আমাদের জন্ম ১৯৯৮ অথবা ৯৭ অথবা ৯৬ এর দিকে। অথ্যাৎ এই তিন সনের শিক্ষার্থী মিলেই আমাদের ব্যাচ। দূরভাগ্য অথবা সুভাগ্য ক্রমে আমাদের ব্যাচ ১৫ ডাকা হয়ে কারন ২০১৫ সালে এস.এস.সি পরীক্ষা দিয়েছি। শিক্ষা জীবনের সূচনা কারো ২০০৩ আবার কারো ২০০৫ থেকে মানে কেউ প্লে, নার্সারি পড়েছে আবার কেউবা সরাসরি সরকারি বিদ্যালয় থেকে ১ম শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছে।
আপনার মনে পড়ে কি! ২০০৯ সালে এই ব্যাচের ছেলে মেয়েদের মধ্যে ভয় ডুকিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছেন! ইয়ে মানি, আমি সমাপনী পরীক্ষার কথা বলছি। ৫ম শ্রেনীতে উঠার পর জানতে পারলাম আমাদের পরীক্ষা হবে এস.এস.সি পরীক্ষার মত। এস.এস.সি কি সেটা জানতাম না তবে, মেট্রিক বলে কিছু একটা জানতাম। যাহোক, সমাপনী বা পি.এস.সি পরীক্ষার্থী বলে আমাদের উপর আযাব শুরু হল।আবার শুনেছিলাম তার সাথে বৃত্তিও আছে যা আগে বৃত্তি পরীক্ষা হত আলাদা। আমাদের বাচাই করা কিছু শিক্ষার্থী উপর শুরু হল কোচিং নামক এক্সপেরিমেন্ট বাকি রা সবাই স্ভাবিক নিয়মে ক্লাস করত আর আমরা করতাম কোচিং। সহজ ভাবে বলা যায় যারা পড়ালেখায় একটু দুর্বল ছিল তারা করত ক্লাস আর যারা সবল তারা করত কোচিং। ক্লাস এবং কোচিং দুটোই একি বিদ্যালয়েই হত। আমাদেরকে স্যারেরা হাতে ধরিয়ে দিল পাঞ্জেরি নামক এক বিশাল গাইড যা আলগানো ছিল অনেক কষ্ট সাধ্য ব্যপার। বই ছিল আমাদের ধরা ছোঁয়ার বাহিরে। সারাদিন গাইড ই পড়তে হত শুধু মাত্র গণিত করার জন্য মেইন বইয়ের প্রয়োজন হত। প্রতিদিন ১০ টিরও বেশি প্রশ্ন হুবুহু গাইডের নিয়মে মুখস্ত করে স্যারকে পড়া বলতে হত। না পারলে মাইর তো আছেই। মনে প্রশ্ন আসতে পারে ১০ টা প্রশ্ন কি অনেক বেশি!
কেন বেশি নয়! প্রশ্নের উত্তর ছিল আকারে বড় এবং উপরেই বলেছি যে গাইডে যা আছে তাই মুখস্ত করতে হত।তারপর বাড়িতে পড়া, কোচিং এর পড়া আবার প্রাইবেটের পড়া। ৫ম শ্রেনীর শিক্ষার্থীর জন্য এটা কি বেশি নয়! গ্রামের ছেলে-মেয়েদের এই অবস্থা না জানি শহরের ছেলে-মেয়েদের কি হয়েছিল। সে সময় গনিতের কোন এক চাপ্টারে এত নং প্রশ্ন বললে বই না তাকিয়ে অংক করে পেলতাম কারন এত প্রেসারে রাখা হয়েছিল যে অংকের নম্বর সহ মুখস্ত করে পেলেছিলাম। কিন্তু এই মুখস্তের কোন ফল আজও আমি পাইনি তাই তো অংকের প্রতি আমার ভীতি থেকেই গেছে। এখন যেখানে অংক আছে সেখানে আমি নাই।
এইসব কেন ঘটেছ? শুধু মাত্র পি.এস.সির জন্য। বুঝতে পেরেছেন কি!
তারপর ২০১০ ক্লাস সিক্সে পদার্পণ। শুনলাম সৃজনশীল বলে কিছু একটা আছে। যাহোক, সেটা আমাদের বড় ভাইদের থেকেই শুরু হয়েছে। সৃজনশীল পদ্ধতির কোন কুফল দেখলামনা ভালই চলছিল।
২০১২ এর দিকে আমরা ৩য় বারের মত জে.এস.সি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করি। কিন্তু সমস্যা হল ২০১০, ২০১১ এবং ২০১২ এই তিন ব্যাচের শিক্ষার্থীরা জে.এস.সি পরীক্ষা থেকে কোন আশানুরুপ ফল পাইনি। A+ এর পরিমান ছিল নগন্য কারন তখন কোন ঐচ্ছিক বিষয় ছিলনা। যার কারনে এক বিষয়ে A+ বাদ পড়ে গেলেই আর A+ থাকত না। কত শিক্ষার্থী মাত্র একটি বিষয়ের জন্য A+ মিস করেছে তা হয়ত আপনি ভাল জানেন। পরবর্তী বছরে কৃষিকে ঐচ্ছিক বিষয় ধরে নতুন পরীক্ষা পদ্ধতি প্রবর্তন করা হয়েছিল ফলে গণহারে A+ বাড়তে থাকে। আহা! শিক্ষার্থীদের মনে কি আনন্দ।
জে.এস.জি পরীক্ষাকে একধরনের বাইক্কা কাম বা ইউজলেস বলা যেতে পারে। শুধু শুধু একটা পাবলিক পরীক্ষা নেওয়া।
এরপর, ২০১৪ অর্থাৎ নবম শ্রেণীতে এসে শুনতে পারলাম গনিত এবং উচ্চতর গনিতে সৃজনশীল যুক্ত হয়েছে এবং এস.এস.সি ও সে মানবন্টনে অনুষ্ঠিত হবে।
কি হবে!! আশা করতে লাগলাম এটি বাতিল হয়ে যাবে তাই, আশা করতে করতে গনিতে আর ভাল প্রস্তুতি নেওয়া হলনা। অন্য দিকে, জানু, ফেব্রু এবং সম্ভাব্য মার্চের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত চলেছিল শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধির আন্দোলন, ক্লাস হত না। খেয়ে গেলাম বাঁশ, টানা হিচড়া করে নবম শ্রেণী ফাইনালে গনিতে পাশ করলাম। তাও কাটায় কাটায় ৩৩ হবে। শুনেছিলাম এস.বি.এ যোগ হবে তা আর হলনা। তার পর এস.এস.সি তে গনিতে ভাল ফলাফলের চিন্তা বাদ দিয়ে পাশের পদ্ধতি অবলম্বন করতে শুরু করলাম মানে সেটের অংক ১০ নম্বর আর পরিসংখ্যান ১০ নম্বর এই হল ২০ তার মানে পাশ। এরপর জোর দিলাম ধারা এবং বীজগণিতের অংকের দিকে। যাহোক এস.এস.সি গনিতে "A-" আশানুরুপ না হলেও আলহামদুলিল্লা টেস্ট পেপারের কল্যানে এই ফল।
তবে একটা জিনিস বুঝতে পারিনি যে দীর্ঘ ২ মাস যাবত চলা এস.এস.সি পরীক্ষা আমাদের জন্য কল্যানের ছিল না কি অভিশাপ! বলা যেতে পারে ৫০% কল্যান আর বাকি ৫০% অভিশাপ।
৫০% হচ্ছে ভালভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার সময় ছিল আর অভিশাপ হচ্ছে সে-শন জট হওয়ার সম্ভাবনা এবং খাতা কাটা, ফলাফল প্রকাশে দ্রুটি হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ব্যাপার হচ্ছে এই যুগে ছেলে-মেয়েরা আত্নহত্যাপ্রবণ কিছু হলেই সুইসাইড!!!
আপনি কি বুঝতে পেরেছেন এখানে সমস্যা কোথায়? হুম, জোর করে গনিতে সৃজনশীল চাপিয়ে দেওয়া। ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখতে পাবেন যে যারা ফেল করেছে তাদের অধিকাংশই গনিতে ফেল করেছে। যদি গনিতে সৃজনশীল না হত এবং তার কারনে পেল না করত তাহলে ১৫-১৬ বছর বয়সের এই ছেলেদের কর্মজীবনে জড়িয়ে পড়তে হতো না এবং মেয়েদের বাল্যবিবাহ হতোনা।
গনিতের সৃজনশীলটা শিক্ষক ছাত্র শ্রেনী কেউই মেনে নিতে পারে নি। গনিত বিষয়টা এমনেই অনেক টাপ।
এইবার একাদশ শ্রেনীতে ভর্তি নিয়ে কিছু সমস্যার কথায় আসা যাক। আমাদের ২০১৫ তে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল অনলাইনে সর্বচ্চো ৫ টি কলেজে আবেদন করা যাবে যা এই বছর হয়েছে ১০-১৫ টি কলেজ তাহলে আমাদের সময়ে কেন কম ছিল। এছাড়া ফলাফল নিয়ে ছিল বিশৃঙ্খলা অনেকে তো কলেজ না পেয়ে কান্নায় হন্ত দন্ত হয়ে পড়েছিল। তার উপর ফলাফল দেওয়া হয়েছিল সপ্তাহ খানেক পরে এছাড়া একজনের কলেজ অন্য জনে আবেদন করে পেলায় কি মহাবিপদে পড়েছিল শিক্ষার্থীরা। অবিভাবকরাও হয়েছিল হয়রানির শিকার একবার বোর্ডে যাওয়া আবার কলেজে যাওয়া।
এখন ২০১৬ আগামী বছরে চূড়ান্ত পরীক্ষা। টেস্টের বাকি ১ মাস। বছরের শুরু থেকে শুনে আসতেছি সৃজনশীল ৭০ নম্বর এবং নৈব্যত্তিক ৩০ নম্বর করা হবে। শুনতেই অবাক লাগে ২:১০ মিনিটে ৬ টা প্রশ্নের উত্তর দিতে শিক্ষার্থীদের এক প্রকার যুদ্ধে অংশ গ্রহন করতে হয় যা খাতার শেষ লেখাগুলো দেখলে বুঝা যায়। সম্ভাব্য স্যারেরা শেষের লেখা গুলোতে অনুমান নির্ভর নাম্বার দিয়ে থাকেন বিশেষ করে যারা দয়ালু। আমি সাধারন ১ ঘন্টায় ২ টি প্রশ্নের উত্তর লিখে থাকি সর্বোচ্চ ৩য় প্রশ্নে 'গ' নম্বরটা শুরু করে থাকি তখনি বেল বেজে উঠে। আর পরবর্তী ১ ঘন্টা ১০ মিনিটে বাকি গুলো উত্তর দেওয়া চেষ্টা করি। পাবলিক পরীক্ষা ছাড়া খুব কম সময়ই ৬ টা প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সম্ভব হয়না। সবাই পূর্ণাঙ্গ ৬টি প্রশ্ন লিখতে পারে এটার নিশ্চয়তা আমি দিতে পারবোনা। তবে এটার কোন নজির নেয় যে সবাই ৬ টা প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দিতে পেরেছে।
অবজেক্টিভ বা বহুনির্বাচনী প্রশ্ন ১০ টা কমানোর কোন উদ্দেশ্য আমি খুঁজে পাচ্ছিনা। ১০ টা বহুনির্বাচনী দাগাতে ৫ মিনিট এর কম সময় লাগে কিন্তু ১ টা সৃজনশীল পূর্ণাঙ্গ লিখতে ২৫ মিনিট কোন মতে লিখলে ১৫-২০ মিনিট আর প্রথম দিকের সৃজনশীল হলে ৩০ মিনিট তো এখানে আমি সময়ের অংকটা কষতে পারছিনা, আপনি কি দয়া করে একটি টাইম মেশিন আবিষ্কার করতে পারেন!!
আচ্ছা আপনাকে একটি প্রশ্ন করি। পরীক্ষা মানে প্রতিযোগিতা না কি, আমি কি শিখলাম তা উপস্থাপন করা?
যদি উত্তর হয় নিজের জ্ঞানকে উপস্থাপন তাহলে আমি কেন সময়ের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হব? কেন এত তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে আমার ব্রেনে প্রসার দিব! আমার জ্ঞানকে কেন ৬টা বা ৭টা প্রশ্ন দিয়ে বিবেচনা করবেন কেন? ২:১০ মিনিটে যেখানে ৬ টা সৃজনশীল লেখা সম্ভব হয়ে উঠেনা সেখানে কিভাবে ৭ টা লেখা সম্ভব হবে। তাও আবার পাশ নম্বর ২৩ করা হচ্ছে! এই গুলো তো মেন্টাল বিষয় আর ফিজিক্যালি বলতে গেছে ৬ টা প্রশ্ন লিখতে গিয়ে হাতে ব্যাথা করেনা এমন কাউকে খুজে পাওয়া যাবেনা।
আচ্ছা নতুন নতুন পদ্ধতির প্রধান কারন কি? শিক্ষার্থীদের যুগোপযোগী করে তোলা না কি ঝরিয়ে পেলা। আমার মনে হচ্ছে ঝরিয়ে পেলা... তাহলে, এই দেশে বিল গেটস, স্টিফেন জবস, মার্ক জাকারবার্গ, হেনরি ফেওল পাবেন কোথায়!
শুনেছি, গিনেপিগদের ওপর সকল প্রকারের এক্সপেরিমেন্ট চালানো যায়, কিন্তু আমরা তো গিনিপিগ না মানুষ!
আমরা রোবটও না যে প্রোগ্রাম করে ইনপুট করবেন আর আমরা আউটপুট দেব। আমরা মানুষ। দয়া করে আমাদের কোমলমতী মন ভাঙ্গবেন না।
দয়াকরে ৭ টা সৃজনশীল প্রত্যাহার করুন।এটা আমাদের জন্য অনেক অনেক বেশি চাপের ব্যাপার। আশা করি, আপনি স্টুডেন্ট পাওয়ার সম্পর্কে ভালই জানেন।সুতরাং আমাদের আন্দোলন চলছে চলবে...
সর্বশেষঃ থ্রি ইডিয়টস মুভিটা অনেক বার -ই দেখেছি কিন্তু বাস্তব ফলটা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় আজও নেই হয়ত বা চাইলেও পাবোনা। অনুন্নত দেশ বলে হয়ত সেটা মেনে নিতেই হচ্ছে শিক্ষাখাতে বরাদ্ধ কম তাই পরিবর্তন আসছেনা। আমি আজও শিক্ষার প্রধান উদ্ধেশ্য বুঝতে পারি নি, বইতে পড়েছি শিক্ষার প্রধান উদ্ধেশ্য "মনুষ্যত্ব অর্জন" কিন্তু আমাদের দেশে শিক্ষার সাথে মনুষ্যত্বের কোন সংযোগ নেই। সবাই চাকুরি পাওয়ার জন্য পড়া-লেখা করে বিশেষ করে B.C.S হতে পারলে ৩০ বছর নো চিন্তুা ডু ফুর্তি। এই প্রবণতা দূর করা আদো সম্ভব কি না আমি জানিনা। অতএব, যে শিক্ষা ব্যবস্থা আমাদের সাথে যায় তা প্রবর্তন করুন। ৭ টা সৃজনশীল বাদ দিলে কোন ক্ষতি হবে না বরং যুক্ত করলে ক্ষতি হবে। সুতরাং মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী আমরা আপনার মতামতের যাথার্য মূল্যায়ন করি আশা করি আপনার কাছ থেকে পজেটিভ রেজাল্ট পাব।
ধন্যবাদ।
১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:০৬
Atsboyarif বলেছেন: হ্যা, একদম ঠিক বলেছনন। দুঃখিত ব্লগে আসা হয়না পরীক্ষা ছিল।
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে অক্টোবর, ২০১৬ দুপুর ২:৪৫
করুণাধারা বলেছেন: তোমার দুঃখের ইতিহাস শুনে আমি সত্যিই দুঃখিত । পড়াশোনা যদি আনন্দময় না হয় তাহলে কি তা কোন ভাল ফল আনতে পারবে? তোমাদের অবস্থা যেন কচি ঘাসকে ভালভাবে পায়ে মারিয়ে বড় একটা পাথর চাপা দিয়ে বলা হল "নে, কত বাড়বি বাড় "। এই ধরনের শিক্ষার ফল কি হয় তা সাম্প্রতিক কালে ঢাকা ভার্সিটির ভরতি পরীক্ষার ফল দেখেই বোঝা যায়।
তুমি খুব ভাল ভাবে শিক্ষা ব্যবস্থার অবস্থা তুলে ধরেছ
ধন্যবাদ এবং শুভকামনা।