নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাকে মুছে ফেলা যায় ইরেজার ঘষেই\nতোমার প্রিয়,প্রিয়তম আমি সে-ই

৪৫

কিছু হতে না পারা কেউ আমি এই জীবনের ঢেউ

৪৫ › বিস্তারিত পোস্টঃ

শাকসবজি ও ফলমূল থেকে বালাইনাশকের অবশিষ্টাংশ দূরীকরণের পদ্ধতি

২৭ শে আগস্ট, ২০২৩ রাত ১:৫৫

ফসলের রোগবালাই এবং পোকামাকড়ের আক্রমণ হতে ফসলকে রক্ষা করার জন্য এবং কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় উৎপাদনকে ধরে রাখার জন্য কৃষকরা প্রতিনিয়তই বিভিন্ন প্রকার রাসায়নিক বালাইনাশক ব্যবহার করে থাকে। এ সমস্ত রাসায়নিক বালাইনাশক ব্যবহারের ফলে পরিবেশে এবং জনস্বাস্থ্যে নানারূপ বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হচ্ছে। ফসলে রাসায়নিক বালাইনাশক ব্যবহারের পর বালাইনাশকের অপেক্ষমান সময় পর্যন্ত অপেক্ষা না করে তার পূর্বেই ফসল সংগ্রহ করলে ফসলে বিষাক্ত রাসায়নিক বালাইনাশকের অবশিষ্টাংশ থেকে যেতে পারে। কীটতত্ত্ব বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর বালাইনাশক বিশ্লেষণ গবেষণাগারের প্রাপ্ত ফলাফল নিম্নোক্ত বাস্তবতা প্রতীয়মান হয়-

(MRL- Maximum Residue Limit বা খাদ্যদ্রব্যে বালাইনাশক উপস্থিতির সর্বোচ্চ সহনীয় মাত্রা)
সবজিতে
MRL এর নিচে বালাইনাশকের অবশিষ্টাংশের পরিমাণ- ৩০-৪০%
MRL এর উপরে বালাইনাশকের অবশিষ্টাংশের পরিমাণ- - ১০-১২%
ফলমূলে
MRL এর নিচে বালাইনাশকের অবশিষ্টাংশের পরিমাণ- ৮-১০
MRL এর উপরে বালাইনাশকের অবশিষ্টাংশের পরিমাণ- - ৩-৪%

যদিও উপর্যুক্ত গবেষণায় সংগৃহীত নমুনার সংখ্যা তুলনামুলকভাবে কম, তবুও এ সম্ভাবনা থেকেই যায় যে, আমরা যে সমস্ত ফল-মূল বা শাকসবজি বাজার থেকে ক্রয় করে খাচ্ছি, হতে পারে সে সমস্ত ফল-মূল ও শাকসবজিতে বালাইনাশকের অবশিষ্টাংশের পরিমাণ সর্বোচ্চ সহনীয় মাত্রার (MRL) উপরে। কাজেই আমাদের জন্য প্রয়োজন বালাইনাশকের অবশিষ্টাংশ কিভাবে ফল-মূল এবং শাকসবজি হতে হ্রাস করা যায় তা অনুসরণ করা ।

যে সমস্ত পদ্ধতির মাধ্যমে ফল-মূল ও শাকসবজি হতে বালাইনাশকের অবশিষ্টাংশ দূর করা যায় (৬০-৮০%) সেগুলো হলো:

১.ধৌতকরণ
গবেষণায় দেখা যায় যে, গরম পানিতে ধৌত করলে ফল-মূল ও শাকসবজি হতে বালাইনাশকের অবশিষ্টাংশ ঠান্ডা পানির দ্বারা ধৌত করার চেয়ে বেশী দূর করা যায় । ধৌত করার সময় যদি ১ মিনিট হাত দ্বারা ভালভাবে ফল-মূল, শাকসবজি পরিষ্কার করা হয় (gentle rubbing) তবে এ পদ্ধতির কার্যকারীতা আরো বৃদ্ধি পায় । এখানে উল্লেখ্য যে, ধৌতকরণ পদ্ধতির মাধ্যমে অন্ত:র্বাহী বালাইনাশকের (systemic pesticide) অবশিষ্টাংশ উল্লেখযোগ্যভাবে দূর করা যায় না, তবে স্পর্শ ও পাকস্থলী (contact & stomach) বালাইনাশকের অবশিষ্টাংশ উল্লেখযোগ্য পরিমাণ হ্রাস পায়।

২. ফল-মূল ও সবজির খোসা ছাড়ানো
সাধারণত: সবজির বাহিরের পাতা এবং ফল-মূল ইত্যাদির বাহিরের আবরনে তুলনামূলকভাবে বেশী বালাইনাশকের অবশিষ্টাংশ উপস্থিত থাকে। এক গবেষণা প্রতিবেদন হতে দেখা যায় যে, খোসা ছাড়ানোর মাধ্যমে ৫০% বালাইনাশকের অবশিষ্টাংশ দূর করা যায়। এ পদ্ধতিটি বেশী কার্যকর যে সমস্ত ফল ও সবজি খোসা ছাড়া ভক্ষণ করা হয় যেমন: শসা, কলা, পেঁপে, আম এবং লেবু জাতীয় ফল ইত্যাদি।

৩. শাকসবজি রান্না করা
এ পদ্ধতির কার্যকারীতা নির্ভর করে রান্নার সময়কাল, তাপমাত্রার পরিমাণ, খাদ্য দ্রব্যে পানি সংযোজনের পরিমাণ এবং রান্নার ধরণ (খোলা বা বন্ধ) ইত্যাদির উপর । সাধারণত: খোলা পদ্ধতিতে বাষ্পীভবন (Volatilization) এবং বন্ধ পদ্ধতিতে পানির সাথে রাসায়নিক ক্রিয়ার ফলে বিয়োজনের (Hydrolysis) মাধ্যমে বালাইনাশকের অবশিষ্টাংশ হ্রাস পায়।

৪. ফল-মূল ও শাকসবজি বিভিন্ন প্রকার রাসায়নিক দ্রবনে ডুবিয়ে রাখা
i) লবণ পানির মিশ্রণে ডুবিয়ে রাখা:
কীটতত্ত্ব বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর বালাইনাশক বিশ্লেষণ গবেষণাগারে পরিচালিত বিভিন্ন গবেষণা প্রতিবেদন হতে প্রতিয়মান হয় যে, ১ লিটার পানিতে ২০ গ্রাম বা ২ চা চামচ খাবার লবণ (২% লবণ-পানির দ্রবন) মিশিয়ে ১৫ মিনিট পর্যন্ত ফল-মূল, শাকসবজি ডুবিয়ে রাখলে বালাইনাশকের ক্রিয়ার ধরনের উপর ভিত্তি করে শতকরা ৩০-৮০ ভাগ পর্যন্ত বালাইনাশকের অবশিষ্টাংশ দূর করা যায়।
ii) ভিনেগার পানির মিশ্রণে ডুবিয়ে রাখা:
এ ক্ষেত্রে প্রথমে ৫% ভিনেগার দ্রবন তৈরী করতে হবে। এ জন্য ১ লিটার পানিতে ৫০মিলিলিটার সাদা ভিনেগার ঢেলে মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর কাংখিত ফল-মূল ও শাকসবজি ১৫ মিনিট ডুবিয়ে রাখতে হবেঅত:পর পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে নিলে বালাইনাশকের অবশিষ্টাংশ ৪০-৮০ ভাগ হ্রাস পায়।

ফল-মূল ও শাকসবজি হতে বালাইনাশকের অবশিষ্টাংশ দূরীকরণের সবচেয়ে সহজ ও কার্যকরী পদ্ধতি
উপর্যুক্ত পদ্ধতি সমূহের মধ্যে সহজে এবং নিরাপদভাবে সকলের জন্যই ব্যবহারযোগ্য, সাশ্রয়ী ও অত্যন্ত কার্যকরী একটি পদ্ধতি কীটতত্ত্ব বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর বালাইনাশক বিশ্লেষণ গবেষণাগার হতে উদ্ভাবন করা হয়েছে যা । এ পদ্ধতি ব্যবহার করে ফল-মূল এবং শাকসবজি হতে শতকরা ৬০-৮০ ভাগ বালাইনাশকের অবশিষ্টাংশ দূর করা যায় । নিচে ছবির মাধ্যমে পদ্ধতিটি দেখানো হল:


তথ্যের উৎস : কীটতত্ত্ব বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, জয়দেবপুর, গাজীপুর-১৭০০

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে আগস্ট, ২০২৩ সকাল ৯:৫৫

রাােসল বলেছেন: দরকারী পোষ্ট। ধন্যবাদ। আরো লিখবেন, আশা করি।

২৭ শে আগস্ট, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:০৯

৪৫ বলেছেন: লেখার আশা রাখি। আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

২| ২৭ শে আগস্ট, ২০২৩ সকাল ১০:২২

খায়রুল আহসান বলেছেন: ভালো, উপকারী পোস্ট। জনস্বার্থে এ রকম পোস্ট আরও লিখুন।

২৭ শে আগস্ট, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:১০

৪৫ বলেছেন: ধন্যবাদ। একসময় নিশচয়ই নিয়মিত লিখবো।

৩| ২৭ শে আগস্ট, ২০২৩ রাত ১০:৩৭

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো লিখেছেন।
তবে ব্লগে কোনো কৃষক নেই।

২৭ শে আগস্ট, ২০২৩ রাত ১১:৫৬

৪৫ বলেছেন: প্রথমত লেখাটা আমার নয়, তথ্যসূত্র দেয়া আছে।
দ্বিতীয়ত, কে কোন ফসলে কোন কীটনাশক বা বালাইনাশক ব্যবহার করছে এবং ব্যহারের কতদিন পর বাজারজাত করছে তা ভোক্তার জানার কথা নয়। সে জায়গা থেকে লেখাটা কৃষকের জন্য নয়। আপনাকে ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.