![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
Do u know what is success.\nWhen ur signature becomes an autograph that\'s call success.
মেয়েটার এত ভাব কেন?এ এত ভাব সে কোথায় থেকে পায়?
এর ভাবের জ্বালায় তো সিভিল ডিপার্টমেন্ট জ্বলে-পুড়ে ছারখার হয়ে যাওয়ার অবস্থা!
বুঝতে পেরেছি তো মেয়ে যে তুমি ধুমায়ে পড়ালেখা করো,তাই
ফাটাফাটি রেজাল্ট করো,স্যার-
ম্যাডামরা তোমাকে নিয়ে লাফায়,তোমার ওই গরুর চোখের মত ইয়া বড় বড় চোখ দেখে আর তোমার ভারী গলার
কাঠ-ফাঁটা আওয়াজ শুনে অনেক ছেলে হোঁচট খেয়ে তোমার। প্রেমে পড়ে যায়!তো হয়েছেটা কি?এর জন্য তোমার এত
ফুটানি!!আমি পড়ি না তাই,পড়ালেখা করলে ওইসব রেজাল্ট
আমার কাছে পান্তাভাত!আমি না পড়ে যা রেজাল্ট
করি তুমি না পড়ে আমার সেই রেজাল্টের ধার-কাছ দিয়েও
যেতে পারবা না।তোমার ওইসব পুঁথিগত বিদ্যার
আমি কেয়ারই করিনা।খালি আমার চোখের
সামনে এইসব ভাব মেরে ঘুরবা না।মনে হয় থাপ্পড়
দিয়ে তোমার থোবড়া ফাটায়ে দেই।
ভাবতে ভাবতেই সুপ্তি চোখের সামনে......!!!!!!
সুপ্তি রিক্সা থেকে নেমে পঞ্চাশ টাকার নোটটা দিতেই রিক্সাওয়ালা বেজার
মুখে বললো ভাংতি নাই। এটা অবশ্যই সমস্যার ব্যাপার। সুপ্তি বুঝতে পারছে না দেশে ভাংতি টাকার এতো আকাল তবুও
সরকার নোট
বানিয়ে চলেছে, একশো-পাঁচশ-হাজার। সরকারের উচিত ১০-২০ টাকার নোট
বেশি বেশি করে বানানো বলে ঙ্গান দিচ্ছিল রিক্সাওয়ালাকে। এসব
চিন্তা করতে করতে পাঁচ
দোকান
ঘুরে ঘুরে সে নোটটা ভাংতি পেলনা।পাঁচ টাকা ছিল না,
অগত্যা তাই কলেজের গেইটের সামনে অভ্র বসে বসে সিগারেট
ফুঁকছে দেখে অভ্ররের কাছে এসে বললো,
-- পাঁচ টাকা হবে......?
-- পাঁচ টাকা আমি ভিক্ষা দেইনা...
-- কি, আমি ভিক্ষা চাইছি। এজন্যই বলছে অশিক্ষিত ছেলেদের
সাথে কথা বলতেই নেই । একজন বিপদে পড়েছে আর সাহায্য
না করে মজা করছে......
-- ভাবলো এ সুযোগে একটা কাজ করিয়ে নিই।দিতে পারি এক শর্তে,আমার
সামনের প্রাকটিক্যাল ক্লাসে সাইনটা দিয়ে দিতে হবে। আমি ঐদিন ফ্রেন্ডদের
নিয়ে ঘুরতে যাব
-- চারপাশের দিকে তাকিয়ে সুপ্তি দেখলে এ অন্যায় আবদার
মেনে নেয়া ছাড়া উপায় নেই। তাই অনিচ্ছা সত্বেও বলল ঠিক আছে
রিক্সার ভাড়া মিটিয়ে হন হন করে চলে গেলো ক্লাসে । হঠাৎ সুপ্তির মনে হল
অভ্রর সাথে এমন ব্যাবহার করা উচিত হয়নি, ভাবলো অভ্র
ক্লাসে আসলে ওকে সরি বলে দিবে......
কিন্তু, অভ্রকে যে আমাবস্যার চাঁদ তাই আজও দেখা মিললো না।
মেয়েটা নিজের
মধ্যে কেমন যেন চাপা মন খারাপ করা অনুভব করলো। এই অনুভবের
নাম কি? মেয়েটা তা জানে না! তাই, কিছুটা মনের অনুশোচনা নিয়েই বাসায়
রওনা হওয়ার পথে দেখা হলো রিক্সায় .....
-মামা,দাঁড়ান,দাঁড়ান।আমি যাব।
-তুমি যাবা মানে কি?
-একটাও রিক্সা পাচ্ছি না।তুমি তো বাসায়ই যাচ্ছ। হেঁটে হেঁটে চলে যাও
অভ্র তার বিটকেল মার্কা হাসি দিয়ে সুপ্তির কোন কথার
তোয়াক্কা না করে রিক্সায় উঠে মামাকে বললো,
"আগান,মামা।"
মনে মনে অভ্র ভাবছে,
- যেন নিজেই রিক্সা ঠিক করেছে আর
আমাকেই দয়া করে রিক্সায় নিয়েছে।আচ্ছা,অন্য সবার
সাথে তো এই মেয়ে খুব সুন্দর করে হাসে।একদিন সৌরভের
সাথে গল্প করার সময় দেখেছি,হাসি ভালোই আছে।
তাহলে আমাকে দেখলে এমন মুখটা হাঁড়ির মত করে রাখে কেন ?আমাকেও বোধ
হয় এই মেয়ে পছন্দ করে না।আসলেই,আমি যাকে পছন্দ
করি না সে আমাকে পছন্দ করবে এমন ভাবাটাই
তো অস্বাভাবিক এবং হাস্যকর।সত্যিই অপছন্দ করি কি?
-কি ভাবছো সুপ্তি?
-কিছু না।
-তাহলে মুখ ভোঁতা করে রেখেছ কেন এভাবে?
-আমার মুখ ভোঁতাই।
-হা হা হা হা।আমার কিন্তু চুলকানি নেই সুপ্তি।
-মানে কি?
-আমার গায়ের সাথে ছোঁয়া লাগলে তোমার চুলকানি হবার
চান্স নেই।তাই তুমি আরাম করে বসতে পারো।
তুমি যেভাবে ধারে সরে যাচ্ছো কখন না আবার
রিক্সা থেকে বাইরে চলে যাও।
-আমি ঠিক আছি।তুমিই আরাম করে বসো।
-হা হা হা হা......ভাড়া না দিয়েই চলে যাচ্ছো যে, এইযে ভাড়াটা কে দিবে...?
- তুমি দিবা..???
- আমি কেন...?টাকা আমার বেশি হয় নাই
-রিক্সা তুমি ভাড়া করছো, আমি করছি যে আমি ভাড়া দিবো
-তুমি তো শেষে আমাকে রিক্সা থেকে নামিয়ে দিলে না...!!! তাহলে আমি ঠিক
করলাম কোথায় আর তুমি আমার গার্লফ্রেন্ডও না
-অনেকক্ষণ কথা কাটাকাটির পর, সুপ্তি ভাড়া দিতে বাধ্য হয়
সেদিনের পর থেকে কেন যেন সুপ্তির উপর দূর্বল হয়ে পড়েছিল
অভ্র,ওকে বলতে পারছিলোনা যে সুপ্তি তোকে না দেখলে আমার মমন
খারাপ হয়ে যায়। সুপ্তিও বাসায় এসে ভাবলো, অভ্রকে তো সরিটাই
বলা হয়নি চিন্তা করলো ফেবুতে বলে দিই কিন্তু অভ্রর সাথে যে এড নেই।
হঠাৎ কৌতূহল বশত অভ্রের টাইমলাইনটা ঘুরে আসতে গিয়ে অবাক হল,
প্রতিদিনের ঝগড়া আর ঘটনাগুলোকে কি সুন্দর করে তুলে ধরেছে।
মনের অজান্তেই ভালোবেসে ফেলে অভ্রকে মেসেজে সরি না বলে লিখে ফেলে
- এই তোমার কি পাঞ্জাবী আছে?
- উত্তর দেয়, জি আছে, কেন?
- কাল পাঞ্জাবী পরে সি.আর.বি তে বসে থাকবে আমি আসবো।
- অভ্র অবাক হয়ে যায় মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি।
- সিগারেট খাবেনা কখনো
-ভদ্র ছেলের মত বলে, জ্বি আচ্ছা..
-মাঝে মাঝে মন চাইলে খেতে পারো
অভ্র চিন্তিত মুখে সি.আর.বি তে দাঁড়িয়ে আছে, স্লেট কালারের
পাঞ্জাবী পরে। পাঞ্জাবীটা পরিষ্কার নয় কুচকোনো
সুপ্তি বেশ সেঁজে এসেছে, কপালে টিপ,
হাতে চুড়ি পরনে নীল শাড়ি। সুপ্তিকে দেখে মনে হচ্ছে এই
মেয়েটার পাশে ছেলেটাকে মানাবে না!
সুপ্তি এগিয়ে যায় অভ্রের কাছে। এই প্রথম অভ্র কাঁচুমাচু
হয়ে বলে, সরি, পাঞ্জাবীটা পরিস্কার নেই!
মেয়েটা ছেলেটার কলার টেনে ফিসফিসিয়ে বলে, এবারের
জন্য ক্ষমা করে দিলাম।
- এই অভ্র এত চিন্তা কিসের তোমার?
-তোমার
শাড়ির নীল এলোমেলো না,তোমায় নীলে দেখে আমিই
এলোমেলো হয়ে গিয়েছি।লুকিয়ে লুকিয়ে তোমায়
যে আমি ক্লাসরুমে,ক্যাম্পাসে,ক্যান্টিনে কতবার দেখেছি সে খেয়াল তোমার
ছিল?
-সেদিন ইচ্ছে করেই তোমার রিক্সায় উঠেছি।মনে হচ্ছিল
রাস্তাটা যেন শেষ না হয়।কিন্তু বেরসিক রাস্তাটা এত দ্রুত
ফুরিয়ে গেল!কি করবো বলো তো আমি?তোমার ভীষন
ভালোবাসি যে।
চোখটা কেন যেন জ্বলছে।চোখের কোনায় পানি জমেছে কি?
-এই মেয়ে,কাঁদ কেন?
-হাতটাতে কোন সাড় পাচ্ছি না অভ্র।তোমার হাতের
মাঝে নাও।সারাজীবন এভাবে রাখতে পারি হাতটা?
-এইভাবে না রাখলে তোমার থোবড়া আমি ফাটিয়ে দেব।
-হা হা হা হা হা...।
-বাহ।এই মেয়েটার হাসি কি সুন্দর।মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছি।
সবমিলিয়ে মনে হচ্ছে ঠিক যেন আমার নীলাবতি
সুপ্তি আমার হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে।
মেয়েটা আর ছেলেটা পাশাপাশি হাঁটছে। মেয়েটা বক বক
করছে, ছেলেটা শুনছে নাহ ছেলেটাও মাঝে মাঝে বকবক করছে। নাহ! খারাপ
লাগছে না, বেশ ভালোই
মানিয়েছে দুজন কে!
#অভ্র
©somewhere in net ltd.