নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিবেকের ফাঁসি!

আজাদী আকাশ

সাদা মনে বলছি। পেশায় আইনজীবী। ভাবতে ভালবাসি। ভাবাতে ভালবাসি। ষোল কোটি সন্তানের হে মুগ্ধ জননী, রেখেছো বাঙালী করে মানুষ করনি!

আজাদী আকাশ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মহাগ্রন্থ পবিত্র আল-কোরআনে উল্লেখিত কিছু শিক্ষণীয় ঘটনা

০১ লা নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১২:২৯



কাবাশরীফ ধ্বংশের পরিকল্পনাকারী হস্তীবাহিনীর ঘটনা


‘আবিসিনিয়া’র বাদশাহর পক্ষ থেকে ‘ইয়ামানে’ ‘আবরাহা’ নামক একজন শাসনকর্তা ছিল। সে দেখল, গোঠা আরবের লোকেরা মক্কার কাবা শরীফে হজ্জ করতে যায়। বিষয়টি তার মোটেও পছন্দ হলো না। তার ইচ্ছা হলো, মক্কার পরিবর্তে সবাই আমাদের দেশে আসুক। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্যে সে ভাবল, কাবাগৃহের অনুকরণে আমাদের এখানেই একটি উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন গীর্জা নির্মাণ করবে। তাতে বিনোদন ও চিত্তাকর্ষণের সব ধরনের উপায়-উপকরণ থাকবে। তা হবে সর্বোচ্চ জাকজমকপূর্ণ। তাহলে মানুষ মক্কার সাদাসিধে সেই কাবা বর্জন করে মূল্যবান পাথরে সজ্জিত এই কাবার দিকে ছুটে আসবে। এতে মক্কার হজ্জ পর্বও বন্ধ হয়ে যাবে। সে এ উদ্দেশ্যে ইয়ামানের রাজধানী ‘সানআ’য় একটি কৃত্রিম কাবার ভিক্তি স্থাপন করে। সেখানে সে মন খুলে টাকা-পয়সা ব্যয় করে। কিন্তু এত কিছুর পরও মানুষ সে দিকে আকৃষ্ট হয়নি।
আরবরা, বিশেষ করে কুরাইশ গোত্রের লোকেরা যখন আবরাহার এ কৃত্রিম কাবা সম্পর্কে জানতে পারল, চরম উত্তেজিত হয়ে উঠল। একজন তো ঘৃণাভরে উক্ত কাবায় গিয়ে মলত্যাগ করে। কারো কারো মতে, আরবের একজন লোক আগুন জ্বালিয়েছিল। এক সময় ঐ আগুনের একটি স্ফুলিঙ্গ বাতাসের সঙ্গে উড়ে গিয়ে পড়ল ঐ ভবনে। ‘আবরাহা’ এতে ক্রুদ্ধ হয়ে কাবা শরীফকে ঘূলিসাৎ করার শপথ করে। শপথ অনুযায়ী বিপুল সংখ্যক হাতি সংবলিত সৈন্যদল নিয়ে বাস্তবেই সে কাবা শরীফ ধ্বংস করার উদ্দেশ্য বের হয়। পথে আরবের যে গোত্র তার প্রতিরোধ করে, তাদের সাথে সে যুদ্ধে লিপ্ত হয় এবং তাদের কে পরাজিত করে। নবীজির দাদা আব্দুল মুত্তালিব ছিলেন তখন কুরইশ গোত্রের নেতা এবং কাবা শরীফের মুতাওয়াল্লী। তিনি এ সংবাদ জানতে পেরে বললেন- ‘লোক সকল! তোমরা নিজেদেরকে রক্ষা করার ব্যবস্থা কর। কাবার মালিক-ই কাবাকে রক্ষা করবেন।’ আবরাহা পথ পরিস্কার দেখে বিশ্বাস করে নিল যে, এখন আর কাবা ধ্বংস করা কঠিন কাজ নয়। কারণ, সেদিক থেকে মোকাবেলা করার কেউ নেই।
আবরাহা যখন মক্কার নিকটবর্তী ‘মুহাস্সার’ উপত্যকার নিকট পৌঁছল, তখন সমুদ্রের দিকে থেকে হলূদ আর সবুজ রঙ্গের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পখির ঝাঁক আসতে দেখল। প্রতিটি পাখির ঠোঁটে ও পাঞ্জায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কঙ্কর ছিল। ঐ পখিগুলো সৈন্যদের উপর কঙ্করের বৃষ্টি বর্ষণ করতে লাগল। আল্লাহর কঙ্করজাতীয় সেই পাথরগুলো বন্দুকের গুলির চেয়েও বেশি কাজ করল। যারই গায়ে লাগত, একদিক থেকে প্রবেশ করে অপর দিক থেকে বের হতো। শরীরে এক আশ্চর্য ধরণের বিষাক্ত উপাদান রেখে যেত। তাতে অনেক সৈন্য ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায়। আর যারা পলায়ন করে, তারা মহা কষ্ট ভোগ করে মৃত্যু মুখে পতিত হয়।
এ ঘটনায় বিশেষ গায়েবী ইঙ্গিত হল, আল্লাহ তাআলা যেমন অলৌকিকভাবে তার ঘরের হেফাজত করেছেন, সে ঘরের সবচেয়ে পবিত্র মুতাওয়াল্লী এবং সবচেয়ে বড় পয়গম্বরের হেফাজতও তিনি ঠিক সেভাবেই করবেন। তাছাড়া তিনি খ্রিস্টান বা অন্য কোন ধর্মনায়কদেরকে কাবা এবং কাবার সত্য সেবকদের মূলোৎপাটন করার কখনো সুযোগ দেবেন না।
[সূত্র- দরসে কুরআন সিরিজ]


আবু লাহাব ও তার স্ত্রীর ধ্বংসের ঘটনা


বুখারী ও মুসলিম শরীফের বর্ণনানুযায়ী সূরা শু‘আরা-এর একটি আয়াত যার অর্থ- তোমার নিকট আত্মীয়বর্গকে [পরকাল সম্পর্কে] সতর্ক কর। আয়াতটি অবতীর্ণ হওয়ার পর নবীজি মক্কার ‘সাফা’ পাহাড়ে আরোহণ করে তাঁর নিকট আত্মীয়বর্গকে একত্র করেন এবং সকলকে আখিরাতের আজাব সম্পর্কে সতর্ক করেন। এ কথা শুনে আবু লাহাব ঔদ্ধত্যের সাথে হাত নেড়ে বলল- ‘তোমার ধ্বংস হোক। এ কথার জন্যে-ই কি আমাদের একত্র করেছ? এ ঘটনার প্রেক্ষিতে সূরা লাহাব অবতীর্ণ হয়। আবু লাহাবের এক স্ত্রী ছিল সে কাঁটা ও শুকনা কাঠ এনে নবীজির পথে বিছিয়ে রাখত, যেন তিনি কাঠে হোঁচট খেয়ে পড়ে যান এবং কাঁটাবিদ্ধ হয়ে কষ্ট পান। এ সূরায় স্বামী-স্ত্রী উভয়ের শোচনীয় পরিণতি বর্ণনা করা হয়েছে।
আবু লাহাবের পরিণতি-
বদর যুদ্ধের সাত দিন পর তার দেহে এক বিষাক্ত ফোঁড়া দেখা দেয়। অন্যদের দেহে এ রোগ সংক্রামিত হওয়ার আশংকায় পরিবারের লোকেরা তাকে একটি নির্জন স্থানে ফেলে আসে। সেখানেই নিতান্ত নিংঙ্গাবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তিন দিন পর্যন্ত লাশ এভাবেই পড়ে থাকে। অবশেষে পচন ধরলে একজন হাবশী মজদুরকে ডেকে আনা হয়। সে একটি গর্ত খনন করে লাঠি দিয়ে ঠেলে লাশটিকে উক্ত গর্তে ফেলে দেয় এবং উপরে পাথর চাপা দেয়। এই হলো দুনিয়ার লাঞ্ছনা ও ধ্বংসের অবস্থা আর আখিরাতের শাস্তি তো আছেই। সেই শাস্তি দুনিয়ার শাস্তি অপেক্ষা বহু গুণে বেশি।
আবু লাহাবের স্ত্রীর পরিণতি-
আবু লাহাবের স্ত্রীর নাম উম্মে জামিল ছিল। সে এতই খারাপ ছিল যে, সে কাঁটা ও শুকনা কাঠ এনে নবীজির পথে বিছিয়ে রাখত, যেন তিনি কাঠে হোঁচট খেয়ে পড়ে যান এবং কাঁটাবিদ্ধ হয়ে কষ্ট পান। কুরআন বলছে, সত্যের বিরুদ্ধাচারণ আর নবীকে কষ্টদানে দুনিয়াতে সে যেমন তার স্বামীর সঙ্গ দিয়েছে, জাহান্নামেও সে তেমনিভাবে তার স্বামীর সঙ্গে থাকবে। কোন কোন মুফাসসীরদের মতে আখিরাতে সে জাহান্নামের তিক্ত ও কন্টকময় গুলম, ‘যাক্কুম’ ও ‘দারী’ এর কাঠ সংগ্রহ করে ঘুরবে এবং তা দ্বারা তার স্বামীর আজাবকে আরো তীব্রতর করে তুলবে।
তাফসীরকারকগণ লিখেছেন- ঐ মহিলার গলায় অতি মূল্যবান একটি হার ছিল। সে বলত, ‘লাত-ওয্যার শপথ! মুহাম্মদের বিরুদ্ধাচরণের কাজে হারটি ব্যয় করব।’ তাই জাহান্নামেও তার গলায় একটি হার তথা শিকল থাকবে। বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, ঐ হতভাগা মহিলাটির মৃত্যু হয়েছে এভাবেই। উম্মে জমিল শক্ত রশি দিয়ে তার লাকড়ির আঁটি বাঁধত । একদিন সে এভাবে বাঁধা একটি লাকড়ির আঁটি মাথায় নিয়ে একটি পাথরের উপর বসে বিশ্রাম নিচ্ছিল। এমন সময় একজন ফেরেশতা সেখানে উপস্থিত হয়ে তার লাকড়ির আঁটিটি ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। ফলে তা গলায় ফাঁস লেগে যায় এবং সে অবস্থায়ই সে মারা যায়।


জিনজাতী মহানবী সা. এর প্রতি ঈমান আনার ঘটনা


রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নবুয়ত লাভের পূর্বে জিন জাতি আকাশ থেকে সংবাদ সংগ্রহ করত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নবুয়ত লাভের পর থেকে জিন জাতিকে আকাশের সংবাদ সংগ্রহ থেকে নিবৃত রাখা হয়। সে মতে তাদের কেউ সংবাদ শুনার মানসে উপরে গেলে তাকে উল্কাপিন্ড নিক্ষেপ করে বিতাড়িত করা হত। জিনরা এই নতুন পরিস্থিতির কারণ উদঘাটনে সচেষ্ট হলো এবং তাদের বিভিন্ন দল কারণ অনুসন্ধানে পৃথিবীর বিভিন্ন ভূখন্ডে ছড়িয়ে পড়ল।

একদল হিজাযেও পৌঁছাল। সেদিন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কয়েকজন সাহাবীসহ “বাতনে নাখলা” নামক স্থানে অবস্থান করছিলেন। তাঁদের ওকায বাজারে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। সে যুগে আরবরা আমাদের যুগের প্রদর্শনীর মতো বিভিন্ন জায়গায় বিশেষ বিশেষ দিনে মেলার আয়োজন করত। এসব মেলায় বহু লোক উপস্থিত থাকত, দোকান খোলা হতো এবং সভা-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হতো। ওকায নামক স্থানে প্রতি বছর এমনি ধরনের এক মেলা বসত।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্ভবত ইসলাম প্রচারের উদ্যেশ্যে সেখানে গমন করেছিলেন। নাখলা নামক স্থানে তিনি যখন ফজরের নামাজে কোরআন পাঠ করছিলেন। তখন জিনের অনুসন্ধানী দলটি সেখানে গিয়ে পৌঁছাল। তারা কোরআন পাঠ শুনে বলতে লাগল, এই সে নতুন ঘটনা যার কারনে আমাদেরকে আকাশের সংবাদ সংগ্রহে নিবৃত করা হয়েছে।
অন্য এক বর্ণনায় আছে যে, জিনরা সেখানে পৌঁছে পরস্পর বলতে লাগল, চুপ করে শোন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজ শেষ করলে জিনরা ইসলামের সত্যতায় বিশ্বাস স্থাপন করে ঈমান এনে তাদের সম্প্রদায়ের কাছে ফিরে গেল এবং তদন্ত কার্যের রিপোর্ট পেশ করে একথাও বলল, আমরা মুসলমান হয়ে গেছি।
তোমাদেরও ইসলাম গ্রহণ করা উচিত। কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সূরা জিন অবতীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত এই জিনদের গমনাগমন এবং তাদের কোরআন পাঠ শুনে ইসলাম গ্রহণের বিষয়ে কিছুই জানতেন না। সূরা জিনে আল্লাহ তাআলা তাঁকে এ বিষয়ে অবহিত করেন।
আরো এক বর্ণনায় আছে, নসীবাঈন নামক স্থানের অধিবাসী এই জিনদের সংখ্যা ছিল নয় অথবা সাত। তাদের প্রচারের ফলে পরবর্তীকালে আরো তিন শত জিন ইসলাম গ্রহনের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে উপস্থিত হয়।


হযরত ইবরাহীম আলাইহিস্সালাম ও সারা রা. এর ঘটনা


হযরত ইবরাহীম আ. যখন নমরূদের অগ্নীকুন্ড থেকে সহী-সালামতে বের হয়ে আসলেন তখনও তার সম্প্রদায়ের লোকেরা ঈমান আনতে রাজী হলো না বরং অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করলো তখন তিনি বললেন ঃ إني ذاهب إلى ربي سيهدين
অর্থ ঃ আমি পৌত্তলিকতার স্থান ছেড়ে এমন জায়গায় চলে যাব যেখানে স্বাধীনভাবে আমার রবের ইবাদত করতে পারবো। সত্তর তিনি আমাকে এমন স্থানের পথ বাতলে দিবেন। -(দেখুনঃ সূরাঃ সাফ্ফাত আয়াত- ৯৯)
এরপর তিনি স্বীয় স্ত্রী হযরত সারা আলাইহাস্সালাম কে নিয়ে নমরূদের নির্যাতন থেকে বাঁচার জন্য বাবিল শহর থেকে পবিত্র ভূমি শাম দেশে হিজরতের উদ্দেশ্যে বের হয়ে পড়লেন।
হযরত সারা আলাইহাস্সালাম ছিলেন যুগের শ্রেষ্ঠ সুন্দরীদের একজন। এদিকে তৎকালিন সময়ে মিশরের বাদশার সভাবজাত ধর্ম ছিল, যে কোন সুন্দরী মহিলার ইজ্জত লুন্ঠন করা। এ জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে সে লোক নিয়োগ করে রেখেছিল। যাদের কাজ ছিল, সুন্দরী সুন্দরী রমণী বিভিন্ন স্থান থেকে পাকড়াও করে আনা। অতঃপর বাদশার কাছে পেশ করা। সে যুগে সুন্দরী রমণীদের জন্য উক্ত বাদশার কবল থেকে রেহাই পাওয়া ছিল বড় দূরহ ব্যাপার।
পথ চলতে চলতে হযরত ইবরাহীম আলাইহিস্সালাম স্বীয় স্ত্রীকে নিয়ে যখন বাবিলের সিমান্ত পাড়ি দিয়ে মিশরের সিমান্তে প্রবেশ করলেন, তখনই মিশরের বাদশা ‘সাদেফ বিন সাদেফ’ মতান্তরে ‘সেনান বিন উলওয়ান’ অথবা ‘ওমর বিন ইমরউল কাইছ’ এর বাহিনী হযরত ইবরাহীম আলাইহিস্সালাম এর কাছে হাজির হয়ে জিজ্ঞাস করলো, আপনার সংগে এই মহিলা কে?
হযরত ইবরাহীম আলাইহিস্সালাম শুনেছিলেন কোন রমনীর সাথে তার আপন ভাই অথবা পিতা থাকলে তাকে ছিনিয়ে নেয়া হয় না। তাই তিনি জবাব দিলেন, এ আমার বোন। অর্থাৎ ধর্মীয় বোন। এছাড়াও তিনি চাচাত বোনকে বিবাহ করেছিলেন। সেদিক থেকেও বংশগত বোন। এ কথা বলেও হযরত ইবারাহীম আলাইহিস্সালাম রেহাই পেলেন না। শেষ পর্যন্ত তারা হযরত সারা আলাইহাস্সালাম কে ছিনিয়ে নিয়ে বাদশার হাতে অর্পন করলো।
বাদশা এত সুন্দরী রমণী দেখে প্রায় হুশ হারিয়ে ফেললো এবং তখনই তাকে ধর্ষণ করার জন্য শাহী মহলের খাস কামরায় প্রবেশ করালো। এদিকে স্ত্রী হাত ছাড়া হয়ে যাওয়ার সাথে সেেথই হযরত ইবরাহীম আলাইহিস্সালাম আল্লাহর স্মরণাপন্ন হয়ে নামাযে দন্ডায়মান হয়ে গেলেন।
তখন আল্লাহ তাআলা কুদরতিভাবে হযরত ইবরাহীম আলাইহিস্সালাম এর জন্য সমস্ত প্রাচীর এবং গাছ পালার অবরণ উঠিয়ে দিয়ে বাদশার খাছ মহলে সারা আলাইহাস্সালাম এর অবস্থান সচ্ছ কাঁচের ন্যায় পরিস্কার করে দিলেন। যাতে হযরত ইবরাহীম আলাইহিস্সালাম স্বীয় স্ত্রীর সাথে বাদশার আচরণ ও কার্যকলাপ স্বচক্ষে দেখে স্ত্রীর সতীত্বের ব্যাপারে সন্দেহ মুক্ত থাকেন । কেননা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস্সালাম চরিত্রগত সব ধরণের অসৎ আচরণকে সর্বাবস্থায় বড় ঘৃণা করতেন।
এদিকে শাহী মহলে খাস কামরায় অসৎ উদ্দেশ্যে বাদশা যখনই হযরত সারা আলাইহাস্সালাম এর দিকে হাত প্রসারিত করতে উদ্যত হলো তখনই বাদশার হাত সম্পূর্ণ বিকল হয়ে গেল। তৎক্ষনাত বাদশা বিকলতা লাঘবের জন্য হযরত সারা আলাইহাস্সালাম এর কাছে ক্ষমা প্রার্থী হলো।
তখন হযরত সারা আলাইহাস্সালাম এর দোয়ায় সে আবার হাতের মধ্যে পূর্বের শক্তি ফিরে পেল। এরপর সে আবার অসৎ উদ্দেশ্যে হযরত সারা আলাইহাস্সালাম এর দিকে হাত বাড়াতে চাইলে দ্বিতীয়বার বিকল হয়ে গেল।
বাদশা আবার ক্ষমা প্রার্থাী হয়ে দোয়া ভিক্ষা চাইলো। তখনও হযরত সারা আলাইহাস্সালাম আবার দোয়া করলে সে পুনরায় হাতের মধ্যে পূর্বের শক্তি ফিরে পেল।
এরপর সে আবার ৩য় বার অসৎ উদ্দেশ্যে হযরত সারা আলাইহাস্সালাম এর দিকে হাত বাড়াতে চাইলে ৩য় বার আবার বিকল হয়ে গেল । বাদশা এবার খুব কাকুতি মিনতি কারে ক্ষমা চাইলো এবং ওয়াদা করলো যে, আর কখনও এমন কাজ করবো না। তখন হযরত সারা আলাইহাস্সালাম আবার দোয়া করলে সে আবার হাতের মধ্যে পূর্বের শক্তি ফিরে পেল।
বাদশা এবার পরাজিত চেহারায় কোন রকমে কামরা থেকে বের হলো এবং দারোয়ানকে ডেকে বললো তোমরা এটি কি নিয়ে এসেছ? এত মানুষ নয়। বরং স্বর্গচ্যুত কোন হুর! যাও একে আজাদ করে দাও । আর এর খেদমতের জন্যে হাজেরা নামক বাঁদী দিয়ে দাও। তাই দেয়া হলো।
হযরত সারা আলাইহাস্সালাম ও হাজেরা আলাইহাস্সালাম উভয়ে যখন হযরত ইবরাহীম আলাইহিস্সালাম এর নিকট পৌঁছলেন তখন তিনি নামাযে লিপ্ত ছিলেন। হাতের ইশারায় তিনি নামাযেই হযরত সারা আলাইহাস্সালাম কে জিজ্ঞেস করলেন কি খবর? (ঐ শরীয়তে নামাযের মধ্যে ইশারায় কোন কিছু জিজ্ঞেস করা জায়েয ছিল) হযরত সারা আলাইহাস্সালাম জবাব দিলেন, আল্লাহ তাআলা পাপিষ্ঠের চক্রান্ত নস্যাৎ করে দিয়েছেন। আর হাজেরা নামক এই বাঁদী আমি উপহার পেয়েছি।
এদিকে হযরত সারা আলাইহাস্সালাম এর গর্ভে এ পর্যন্ত কোন সন্তান হয়নি বলে তিনি নিজেকে বন্ধ্যা মনে করতেন। তাই তিনি স্বামীর নিকট হাজেরা নামক বাদী পেশ করে আরজ করলেন, আপনি একে বিবাহ করুন, তাহলে হয়তো তার থেকে আপনার কোন সন্তান হবে। হযরত ইবরাহীম আলাইহিস্সালাম তাকে আজাদ করে বিবাহ করলেন এবং এই বলে দোয়া করলেন ঃ
অর্থ ঃ হে আমার রব! আমাকে এমন সন্তান দান করুন যে হবে সৎকর্মশীলদের থেকে। -(দেখুনঃ সূরা সাফ্ফাত, আয়াত-১০০)
হযরত মুকাতিল রা. বলেন হযরত ইবরাহীম আলাইহিস্সালাম ইরাকের বাবিল শহরে থেকে পবিত্র ভূমি শাম দেশে হিজরতের পর এ দোয়া করেন। এর কিছু কাল পর যখন হযরত হাজেরা আলাইহাস্সালাম এর গর্ভে সত্য সত্যই হযরত ইসমাঈল আলাইহিস্সালাম জন্মগ্রহণ করলেন। হযরত হাজেরা মা হবার পর হযরত সারাহ এর মা হবার বাসনা আকুতি আরও বহুগুণ প্রাবল্য লাভ করে। কিন্তু আকুতি পোষাণ করলেও তা পরিপূরণের বাহ্যিক কোন আলামাত ছিল না। কারণ এ সময় হযরত সারাহ অতিশয় বৃদ্ধ এবং হযরত ইবরাহীম নবতিপর বৃদ্ধ। মা হবার আকাক্সক্ষা পূরণের বাহ্যিক কোন উপকরণ তিনি দেখতে পাচ্ছিলেন না। ইতিমধ্যে ফেরেশতাগণ মানব আকৃতিতে মেহমান হয়ে হযরত ইবরাহীম এর গৃহে উপনীত হন এবং তাঁকে এক পুত্র সন্তান জন্ম নেবার সুসংবাদ প্রদান করেন। যাঁর নাম হবে ইসহাক। ফেরেশতাগণ ইসহাকের ঔরস থেকে হযরত ইয়াকুব এর জন্ম নেবার সুসংবাদও প্রদান করেন। ফেরেশতাদের এ সুসংবাদ প্রদানের কিছু দিন পরেই সারাহ অন্তঃসত্ত্বা হন এবং নির্দিৃষ্ট সময়ে হযরত ইসহাক জন্ম নেন। তিনি বয়সে হযরত ইসমাঈল এর তের বছরের ছোট ছিলেন।


হযরত সোলায়মান (আঃ) এর মৃত্যুর বিস্ময়কর ঘটনা


হযরত সোলায়মান (আঃ) অদ্বিতীয় ও অনুপম সম্রাজ্যের অধিকারী ছিলেন। কেবল সমগ্র বিশ্বের নয়, বরং জিন জাতি বিহঙ্গকুল ও বায়ুর উপরও তাঁর আদেশ কার্যকর ছিল। কিন্তু এতসব উপায় উপকরণ থাকা সত্বেও তিনি মৃত্যুর কবল থেকে রেহাই পেলেন না। নির্দিষ্ট সময়ে তার মৃত্যু আগমন করেছে। বায়তুল মোকাদ্দাসের নির্মান কাজ হযরত দাউদ (আঃ) শুরু করেছিলেন এবং হযরত সোলায়মান (আঃ) তা শেষ করেন। তাঁর মৃত্যুর পুর্বে কিছু কাজ অবশিষ্ট ছিল। কাজটি অবাধ্যতা প্রবণ জিনদের দায়িত্বে ন্যস্ত ছিল। তারা হযরত সোলায়মান (আঃ) এর ভয়ে কাজ করত। তারা তাঁর মৃত্যু সংবাদ অবগত হতে পারলে তৎক্ষণাৎ কাজ ছেড়ে দিত। ফলে নির্মাণ অসমাপ্ত থেকে যেত। হযরত সোলায়মান (আঃ) আল্লাহর নির্দেশে এর ব্যবস্থা এই করলেন যে, মৃত্যু পূর্বক্ষণে তিনি মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হয়ে তার মেহরাবে প্রবেশ করলেন। মেহরাবটি স্বচ্ছ কাঁচের নির্মিত ছিল। বাইরে থেকে ভিতরের সব কিছু দেখা যেত, তিনি নিয়মানুযায়ী এবাদতের উদ্দেশ্যে লাঠিতে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন যাতে আত্মা বের হয়ে যাওয়ার পরও দেহ লাঠির সাহায্যে স্বস্থানে অনড় থাকে। যথা সময়ে তার আত্মা দেহপিঞ্জর ছেড়ে গেল। কিন্তু লাঠির উপর ভর করে তাঁর দেহ অনড় থাকায় বাইরে থেকে মনে হত তিনি এবাদতে মশগুল রয়েছেন। কাছে গিয়ে দেখার সাধ্য জিনদের ছিল না। তারা জীবিত মনে করে দিনের পর দিন কাজ করতে লাগল। অবশেষে এক বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেলে বাইতুল মোকাদ্দাসের নির্মাণ কাজও সমাপ্ত হয়ে গেল। হযরত সোলায়মান (আঃ)-এর লাঠিতে আল্লাহ তায়ালা উইপোকা লাগিয়ে দিয়েছিলেন। কোরআন পাকে একে ‘দাব্বাতুল আরদ ’ বলা হয়েছে। উইপোকা ভিতরে ভিতরে লাঠি খেয়ে ফেলল। লাঠির ভর খতম হয়ে গেলে সোলায়মান (আঃ) এর অসার দেহ মাটিতে পড়ে গেল। তখন জিনেরা জানতে পারল তার মৃত্যু হয়ে গেছে।
হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে আরও বর্ণীত আছে যে, মৃত্যুর পর হযরত সোলায়মান (আঃ) লাঠিতে ভর দিয়ে এক বছর দন্ডায়মান থাকেন। -[কুরতুবী] কতক রেওয়াতে আছে, জিনরা যখন জানতে পারল যে, হযরত সোলায়মান (আঃ) অনেক পুর্বেই মারা গেছেন কিন্তু তারা টের পাইনি। তখন তাঁর মৃত্যুর সময় কাল জানার জন্য একটি কাঠে উইপোকা ছেড়ে দিল। একদিন এক রাত্রে যতটুকু উইপোকা খেল সেটি হিসাব করে তারা আবিস্কার করল যে, হযরত সোলায়মান (আঃ)-এর লাঠি উইয়ে খেতে এক বছর সময় লেগেছে।


সাবা সম্প্রদায় ও তাদের প্রতি আল্লাহর নেয়ামত রাজি


ইয়ামানের সম্রাট ও সে দেশের অধিবাসীদের উপাধি হচ্ছে ‘সাবা’। ‘তাবাবেয়া’ সম্প্রদায়ও সাবা সম্প্রদায়ের অন্তভুক্ত ছিল। তারা ছিল সে দেশের ধর্মীয় সম্প্রদায়। সূরা নামলে সোলায়মান (আঃ) এর সাথে রাণী বিলকিসের ঘটনা বর্ণীত হয়েছে। তিনিও এই সম্প্রদায়েরই একজন ছিলেন। আল্লাহ তা’য়ালা তাদের সামনে জীবনোপকরণের দ্বার উম্মুক্ত করে দিয়ে ছিলেন। এবং পয়গাম্বরগণের মাধ্যমে এসব নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করার আদেশ দান করেছিলেন। দীর্ঘকাল পর্যন্ত তারা এ অবস্থার উপর কায়েম থাকে, এবং সর্বপ্রকার সুখ ও শান্তি ভোগ করতে থাকে। অবশেষে ভোগ বিলাসে মত্ত হয়ে তারা আল্লাহ তা’য়ালার প্রতি গাফেল হয়ে পড়ে, এমনকি তারা আল্লাহ তা’য়ালা কে অস্বিকার করতে থাকে। তখন আল্লাহ তাআলা তাদের কে হুশিয়ার করার জন্য তের জন পয়গাম্বর প্রেরণ করেন। তাঁরা তাদেরকে সৎপথে আনার জন্য সর্ব-প্রযতেœ চেষ্টা করেন। কিন্তু তাদের চৈতন্যোদয় হয়নি। অবশেষে আল্লাহ তা’য়ালা তাদের উপর বন্যার আযাব প্রেরণ করেন। ফলে তাদের শহর ও বাগ-বাগিচা বিধ্বস্ত হয়ে যায়।
ইবনে কাসীরের বর্নণা অনুযায়ী সাবা সম্প্রদায়ের বাঁধের ইতিহাস এইঃ ইয়ামনের রাজধানী সানআ থেকে তিন মনজিল দূরে মাআরেব নগরী অবস্থিত ছিল। এখানে ছিল সাবা সম্প্রদায়ের বসতি। দুই পাহাড়ের মধ্যবর্তী উপত্যকায় শহরটি অবস্থিত ছিল বিধায় উভয় পাহাড়ের উপর থেকে বৃষ্টির পানি বন্যার আকারে নেমে আসত। ফলে শহরের জনজীবন বিপর্যস্থ হয়ে যেত। দেশের সম্রাটগণ উভয় পাহাড়ের মাঝখানে একটি শক্ত ও মজবুত বাঁধ নির্মাণ করলেন। এ বাঁধ পাহাড় থেকে আগত বন্যার পানি রোধ করে পানির একটি বিরাট ভান্ডার তৈরী করে দেয়। পাহাড়ী ঢলের পানিও এতে সঞ্চিত হতে থাকে। বাঁধের উপরে-নীচে ও মাঝখানে পানি বের করার তিনটি দরজা নির্মাণ করা হয় যাতে সঞ্চিত পানি সুশৃংখলভাবে শহরের লোকজনের মধ্যে এবং তাদের ক্ষেতে ও বাগানে পৌঁছানো যায়। প্রথমে উপরের দরজা খুলে পানি ছাড়া হত। উপরের পানি শেষ হয়ে গেলে মাঝখানের এবং সর্বশেষে নীচের তৃতীয় দরজা খুলে দেওয়া হত। পরবর্তী বছর বৃষ্টির মওসমে বাঁধের তিনটি স্তরই আবার পানিতে পূর্ণ হয়ে যেত। বাঁধের পানি নিচে সংরক্ষন করার উদ্দেশ্যে একটি সুবৃহৎ আধার নির্মাণ করা হয়েছিল। এতে পানির বারটি খাল তৈরি করে শহরের বিভিন্ন দিকে পৌঁছানো হয়েছিল। সব খালে একই গতিতে পানি প্রবাহিত হত এবং নাগরিকদের প্রয়োজন মেটাত।
শহরের ডানে ও বায়ে অবস্থিত পাহাড়দ্বয়ের কিনারায় ফল-মুলের বাগান তৈরী করা হয়েছিল। এসব বাগানে খালের পানি প্রবাহিত হত। এসব বাগান পরস্পর সংলগ্ন অবস্থায় পাহাড়ের কিনারায় দু’সারিতে বহুদুর পর্যন্ত ছিল। এগুলো সংখ্যায় অনেক হলেও কোরআনে দু’টি বাগানের কথা ব্যক্ত করা হয়েছে। কারণ, এক সারিতে সমস্ত বাগান পরস্পর সংলগ্ন হওয়ার কারণে এক বাগান এবং অপর সারির সমস্ত বাগানকে একই কারনে দ্বিতীয় বাগান বলে অভিহিত করা হয়েছে।
এসব বাগানে সবরকম বৃক্ষ ফল-মূল প্রচুর পরিমাণে উৎপন্ন হত। কাতাদাহ প্রমুখের বর্নণা অনুযায়ী, একজন লোক মাথায় খালি ঝুড়ি নিয়ে গমন করলে গাছ থেকে পতিত ফলমূল দ্বারা তা আপনা-আপনি ভরে যেত। হাত লাগানোরও প্রয়োজন হত না। -(ইবনে কাসীর)
আল্লাহ তা’য়ালা পয়গাম্বরগণের মাধ্যমে তাদেরকে আদেশ দিয়েছিলেন, তোমরা আল্লাহ প্রদত্ত এই অফুরন্ত জীবনোপকরণ ব্যবহার কর এবং কৃতজ্ঞতা স্বরূপ সৎকর্ম ও আল্লাহর আনুগত্য করতে থাক। আল্লাহ তা’য়ালা তোমাদের এই শহরকে পরিচ্ছন্ন স্বাস্থ্যকর করেছেন। শহরটি নাতিশীতোষ্ণ মন্ডলে অবস্থিত ছিল এবং আবহাওয়া স্বাস্থ্যকর ও বিশুদ্ধি ছিল।
সমগ্র শহরে মশা-মাছি ছারপোকা ও সাপ-বিচ্ছুর মত ইতর প্রাণীর নামগন্ধও ছিল না। বাইরে থেকে কোন ব্যক্তি শরীরে কাপড়-চোপড়ে উকুন ইত্যাদি নিয়ে এ শহরে পৌছালে সেগুলো আপনা আপনি মরে সাফ হয়ে যেত।
আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে এও জানিয়ে দিয়েছেন যে, এসব নেয়ামত ভোগ-বিলাস কেবল পার্থিব জীবন পর্যন্তই সীমিত নয়, বরং শুকরিয়া আদায় করতে থাকলে পরকালে আরও বৃহৎ ও স্থায়ী নেয়ামতের ওয়াদা রয়েছে। কারণ এসব নেয়ামতের স্রষ্টা ও তোমাদের পালনকর্তা ক্ষমাশীল। শুকরিয়া আদায়ে ঘটনাক্রমে কোন ত্রুটি- বিচ্যূতি হয়ে গেলে তিনি ক্ষমা করবেন।
আল্লাহ তায়ালা সুবিস্তৃত নেয়ামত ও পয়গম্বরগণের হুশিয়ারী সত্ত্বেও যখন সাবা সম্প্রদায় আল্লাহর আদেশ পালনে বিমুখ হল, তখন আল্লাহ তায়ালা তাদের উপর বাঁধভাঙ্গা বন্যা ছেড়ে দিলেন। বন্যাকে বাঁধের সাথে সম্বন্ধযুক্ত করার কারণ এই যে, যে বাঁধ তাদের হেফাযত ও স্বাচ্ছন্দের উপায় ছিল, আল্লাহ তায়ালা তাকেই তাদের বিপর্যয় ও মুসিবতের কারণ করে দিলেন। তফসীরবিদগণ বর্ণনা করেন, আল্লাহ তায়ালা যখন এ মস্প্রদায়কে বাঁধভাংঙ্গা বন্যা দ্বারা ধ্বংস কারার ইচ্ছা করলেন, তখন এই সুবৃহৎ বাঁধের গোড়ায় অন্ধ ইঁদুর নিয়োজিত করে দিলেন। তারা এর ভিত্তি দুর্বল করে দিল। বৃষ্টির মওসুমে পানির চাপে দুর্বল ভিত্তের মধ্যে ফাটল সৃষ্টি হয়ে গেল। অবশেষে বাঁধের পেছনে সঞ্চিত পানি সমগ্র উপত্যকায় ছড়িয়ে পড়ল। শহরের সমস্ত ঘর-বাড়ী বিধ্বস্ত হল এবং গাছপালা উজাড় হয়ে গেল। পাহাড়ের কিনারায় দু’সারি উদ্যানের পানি শুকিয়ে গেল। কোন কোন বর্ণনা কারী বর্ণনা করেছেন যে, তাদের কিতাবে লিখিত ছিল এ বাঁধটি ইঁদুরের মাধ্যমে ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে। সে মতে বাঁধের কাছে ইঁদুর দেখে তারা বিপদ সংকেত বোঝতে পারল। ইঁদুর নিধনের উদ্দেশ্যে তারা বাঁধের নীচে অনেক বিড়াল ছেড়ে দিল যাতে ইঁদুররা বাঁধের কাছে আসতে না পারে। কিন্তু আল্লাহর তকদীর প্রতিরোধ করার সাধ্য কার? বিড়ালেরা ইঁদুরের কাছে হার মানল এবংং ইঁদুরেরা বাঁধের ভিত্তিতে প্রবিষ্ট হয়ে গেল।
ঐতিহাসিক বর্ণনায় আরও বলা হয়েছে যে, কিছুসংখ্যক বিচক্ষণ ও দূরদর্শী লোক ইঁদুর দেখা মাত্রই সেস্থান ত্যাগ করে আস্তে আস্তে অন্যত্র সরে গেল। অবশিষ্টরা সেখানেই রয়ে গেল; কিন্ত বন্যা শুরু হলে তারাও স্থান্তরিত হয়ে গেল এবং অধিকাংশই বন্যায় প্রাণ হারাল। মোটকথা, সমস্ত শহর জনশূন্য হয়ে গেল। বন্যার ফলে শহর ধ্বংস হওয়ার পর তাদের দু’সারি উদ্যানের অবস্থা পবিত্র কুরআনুল কারীমে এভাবে বিবৃত হয়েছে যে, আল্লাহ তায়ালা তাদের মুল্যবান ফল-মুলের বৃক্ষের পরিবর্তে তাতে এমন বৃক্ষ উৎপন্ন করলেন, যার ফল ছিল বিস্বাদ। এ ছিল সাবা সম্প্রদায় ও তাদের প্রতি আল্লাহর নেয়ামত রাজির কাহিনী।

মা’রেফুল কোরআন (বাংলা), ১১০৮-৯পৃঃ


হযরত সালেহ (আঃ) এর ঘটনা


সামুদ জাতির নিকট হযরত সালেহ (আঃ) রাসূল হিসেবে প্রেরিত হয়েছিলেন। সামুদ জাতি অত্যন্ত্ম সমৃদ্ধশালী ছিল, শস্য-শ্যামলিমায় পরিপূর্ণ ছিল তাদের এলাকা। বাগ-বাগিচা, ঝর্ণায় এক নয়নাভিরাম দৃশ্যের অবতারণা করা হয়েছিল তাদের চতুর্দিকে। কিন্ত্মু এ হতভাগা জাতি আলস্নাহ পাকের অবাধ্য অকৃতজ্ঞ ছিল। মূর্তি পূজা ও ডাকাতি- রাহজানিতে লিপ্ত ছিল। তাই হযরত সালেহ (আঃ) তাদেরকে উপদেশ দিয়েছিলেন।
হযরত (আঃ)- কওমের লোকজন যখন তাঁর দাওয়াতের দরম্নন বিরক্ত হয়ে গেল, তখন তাদের নেতৃত্বস্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি জনতার সামনে হযরত সালেহ (আঃ) কে বলল যে, সত্যিই যদি তুমি আলস্নাহর প্রেরিত নবী হও, তাহলে এ ব্যাপারে কোনো মুজেযা বা নিদর্শন দেখাও। এতে আমরা তোমার সত্যতায় বিশ্বাস করবো। হযরত সালেহ (আঃ) বললেন, এমন যেন না হয় যে, উক্ত নিদর্শন দর্শনের পরও তোমরা তোমাদের ভ্রান্ত্ম মতবাদ ও ধর্ম বিশ্বাসের উপর অনড় থাকবে। নেতৃবর্গ তখন জোরালো ভাবে বলল, না, আমরা তা দেখার মাত্রই ঈমান আনায়ন করবো। হযরত সালেহ (আঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা কোন ধরনের নিদর্শন চাও? তারা জবাবে বলল- সামনের পাহাড় বা বসতির এ পাথর থেকে একটি গর্ভবতী উষ্ট্রী বের করে দেখাও, আর উক্ত উষ্ট্রীটি বের হওয়ার পর পরই সবার সামনে বাচ্ছা প্রসব করবে।
হযরত সালেহ (আঃ) আলস্নাহ তা’য়ালার দরবারে দোয়া করলেন। ফলে তখনই উক্ত পাথর থেকে একটি গর্ভবতী উষ্ট্রী বেরিয়ে এলো এবং সাথে সাথে একটি বাচ্ছা প্রসব করলো। এ থেকে তাদের নেতৃবর্গের মধ্য হতে জুনদা ইবনে ওমর তো তখনই ঈমান নিয়ে এলো, আর অন্যান্যরাও যখন তার অনুকরণে ঈমান আনবে এমন সময় তাদের মন্দিরের ঠাকুর ও পুরোহিতরা তাদের কে নানা কথা বলে ঈমান আনা থেকে বিরত রাখল।
হযরত সালেহ (আঃ) কওমের সকলকে বিভিন্ন ভাবে বুঝালেন। তিনি বললেন- দেখ! তোমাদের কামনা মতেই এ উষ্ট্রী প্রেরিত হয়েছে। আলস্নাহ তা’য়ালার এটাই সিদ্ধান্ত্ম যে, এর জন্য পানি পানের পালা নির্দিষ্ট থাকবে। একদিন এই উষ্ট্রী, আরেক দিন অন্য সকল লোকজনের ও তাদের পালিত পশুর জন্য নির্দিষ্ট থাকবে। আর সাবধান! এর যেন কোনোরূপ কষ্ট না হয়। এর যদি কোনোরূপ কষ্ট হয় তাহলে তোমাদের কোনো নিস্ত্মার নেই। বেশ কিছু দিন পর্যন্ত্ম এ ধারা বহাল ছিলো। বহু লোক তার দুধ দ্বারা উপকৃত হতো। তবে ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে এ বিষয়টি অসহনীয় হয়ে উঠে। তাদের পরস্পরের মধ্যে পরামর্শ ও ষড়যন্ত্র হতে থাকে যে, এ উষ্ট্রীকে মেরে ফেলতে হবে। যাতে পালাবণ্টন থেকে মুক্তি লাভ হয়। কেননা এটা আমাদের নিজেদের ও আমাদের পশু-পাখিদের জন্য অত্যন্ত্ম দুর্বিসহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা সবাই এর দরম্নন কষ্টের শিকার হচ্ছি। তবে তাকে হত্যা করার কারো হিম্মত হচ্ছিল না।
পরে সামূদ নামক জনৈক সুন্দরী ধণবতী রমনী নিজেকে ‘মিসদা’ নামক ব্যক্তির সামনে এবং অপর ধণবতী রমনী উনায়যা তার সুন্দরী কন্যাকে কায়দার বা [কুদার] নামক ব্যক্তির সামনে এ কথা বলে পেশ করল যে, তারা যদি উক্ত উষ্ট্রীকে মেরে ফেলতে পারে, তাহলে এরা তাদের মালিকানাধীন হয়ে যাবে। তাদের কে বিবাহ করে আনন্দ উপভোগ করবে। তাদের এই উত্তেজনাকর প্রস্ত্মাবে কায়দার ইবনে সালিফ ও মিসদা উদ্ধুদ্ধ হয়ে এর জন্য প্রস্ত্মুতি নিলো। তারা সিদ্ধান্ত্ম নিল যে, উষ্ট্রীর চলাচল পাথে আত্বগোপন করে বসে থাকবে। উষ্ট্রীটি যখন মাঠের দিকে যাওয়ার জন্য বের হবে, তখন অতর্কিত তার উপর আক্রমণ করবে। এ ব্যাপারে তারা আরো কয়েকজনের সহায়তা কামনা করলো এবং তারা তাতে সম্মত হলো।
মোটকথা উপরিউক্ত সিদ্ধান্ত্ম মাফিক উষ্ট্রীকে হত্যা করে ফেলল। তারা পরস্পরে এও প্রতিজ্ঞা করল যে, রাতে আমরা সবাই একত্র হয়ে সালেহ (আঃ) ও তার পরিবারের সবাইকে হত্যা করব। তাদের অভিবাবকদের কেউ আমাদের কে সন্দেহ বা দোষারোপ করলে আমরা বলব যে, এ কাজ আমরা করিনি। আমরা তো সেখানে হাজিই ছিলাম না। উষ্ট্রীকে হত্যা করার পর তার বাচ্ছাটি পালিয়ে পাহাড়ে উঠে চিৎকার করতে করতে এক পর্যায়ে অদৃশ্য হয়ে গেল। হযরত সালেহ (আঃ)- এ বিষয়ে অবগত হওয়ার পর বললেন, অবশেষে তাই হলো আমি যার আশঙ্কা করছিলাম। এখন তোমরা আলস্নাহর আজাবের অপেÿা কর। তিনদিনের মধ্যে আলস্নাহর আজাব এসে তোমাদের কে অনিবার্য ধ্বংস করে ফেলবে। তাই হল। আর ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য এক শিক্ষনীয় কাহিনী হয়ে রয়ে গেল।


কারূনের সম্পদ প্রথিত হওয়া


বনী ইসরাঈল সমূদ্র পার হবার পর নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব হযরত মূসা (আঃ) ও হারূন (আঃ) উপর ন্যস্ত্ম ছিল। এবং হযরত মূসা (আঃ) স্বীয় ভ্রাতা হযরত হারূন (আঃ) কে বাইতুল কুরবান তথা কোরবানি ও উৎসর্গীত দ্রব্যের তত্ত্বাবধায়ক নির্ধারণ করলেন, অর্থাৎ আলস্নাহর রাহে উৎসর্গের জন্য যে সব সামগ্রী আসবে, তা হযরত হারূন (আঃ) এর মারফত কুরবানগাহে রাখা হবে। সে সময় আসমানী আগুন এসে তা পুড়িয়ে ফেলতো। আর এটাই ছিল কোরবানি ও নজর- নেওয়াজ আলস্নাহর দরবারে কবুল হওয়ার নিদর্শন। এ বিষয়ে কারূনের হিংসা হল। সে বলল, আপনি নবীও আবার কওমের সরদারও, আর হারূন কুরবানগাহ’ এর তত্ত্বাবধায়ক হবে; কিন্ত্মু কোন বিষয়ে আমার কোন ÿমতা ও কর্তৃত্ব থাকবে না, তা কি করে সহ্য করা যায়? অথচ আমি তাওরাতের হাফেজ ও আলেম! হযরত মূসা (আঃ) বললেন এটা আলস্নাহ তা’য়ালার পÿ থেকেই নির্ধারিত, এ বিষয়ে আমার কোন কর্তৃত্ব নেই। আলস্নাহর পÿ থেকেই এই সিদ্ধান্ত্ম হয়েছে। কারূন তখন বলল, এটা অবশ্যই জাদু বলে ঘটেছে। এই কথার পর বনী ইসরাঈলের অনেক সর্দারকে বিভিন্ন প্রলোভন এবং ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সে তার দল ভুক্ত করে নিল। এভাবেই উভয়ের মধ্যে সংঘাত শুরম্ন হলো।
এরপর আলস্নাহ তা’য়ালা যখন যাকাত ওয়াজিব করলেন, তখন মূসা (আঃ) কারূনের নিকট এসে প্রতি হাজারে এক দীনার (স্বর্ণমুদ্রা) যাকাত তলব করলেন। কারূন হিসাব করে দেখল, এতে তার প্রচুর অর্থ হাতছাড়া হয়ে যায়। ফলে সে চিন্ত্মিত হয়ে বনী ইসরাঈলকে একত্র করে বলল, এতদিন যাবত মূসা যা বলেছেন, তা তোমরা মেনে নিয়েছ। কিন্ত্মু সে তাতে সন্ত্মুষ্ট হয়নি। এখন সে তোমাদের মাল সম্পদ গ্রাস করার ফন্দি করছে। লোকজন বলল, আপনি আমাদের সর্দার, জ্ঞানী গুণী ও বুদ্ধিমান। সুতরাং আপনি যা বলেন আমরা তা মেনে নিতে প্রস্ত্মুত আছি।
কারূন নির্দেশ দিল যে, অমুক ব্যভিচারিণীকে নিয়ে এসো, তাকে তার চাহিদা মতো অর্থ সম্পদ দিয়ে তাকে একথা বলতে সম্মত করো যে, সে মূসার উপর তার সঙ্গে ব্যভিচারের অভিযোগ তুলবে। লোকজন যখন একথা শুনবে, তখন তার থেকে দূরে সরে যাবে, এবং তাঁর বিদ্রোহী হয়ে যাবে। ফলে আমাদের সবার জন্য তার গোলামী থেকে নিষ্কৃতি মিলবে।
নরাধম কারূনের নির্দেশ মতে উক্ত ব্যভিচারিণীকে নিয়ে আসা হলো। তাকে প্রচুর অর্থের প্রলোভন দিয়ে এ বিষয়ে সম্মত করা হলো। কারূন এবং তার লোকজন বনী ইসরাঈলকে সমবেত করে মূসা (আঃ) এর নিকট গেল এবং বলল, এসব লোকজন সমবেতদ হয়েছে এদের উদ্দেশ্যে কিছু ওয়াজ-নছিহত করম্নন। হযরত মূসা (আঃ) বাইরে এসে ওয়াজ নছিহত শুরম্ন করলেন। ওয়াজের মধ্যে শরীয়তের বিভিন্ন দ-বিধি সম্পর্কে আলোকপাত করলেন। তার মধ্যে চোরের সাজা হস্ত্ম কর্তন, ব্যভিচারের অপবাদ আরোপের সাজা ৮০ কোড়া, এবং ব্যভিচারী বিবাহিত ও সুস্থ বিবেকসম্পন্ন না হলে ১০০ কোড়া, আর বিবাহিত ও সুস্থ মস্ত্মিস্কসম্পন্ন হলে তাকে ‘সঙ্গেসার’ অর্থাৎ পাথর মেরে জীবনপাত করার বিধানও উলেস্নখ করলেন।
এ সময় কারূন দাঁড়িয়ে বলে উঠল, এ অপকর্ম যদি আপনি করেন তাহলে তার সাজা কি হবে? তিনি বললেন আলস্নাহর বিধান সবার জন্য সমান। কারূন তখন বলল, আপনি অমুক মহিলার সাথে ব্যভিচার করেছেন। হযরত মূসা (আঃ) বললেন, তাকে ডেকে নিয়ে এসো ! যদি সে স্বীকার করে তাহলে সত্য হবে। সুতরাং উক্ত মহিলাকে হাজির করা হলো, হযরত মূসা (আঃ) তাকে বললেন, হে মহিলা ! সত্যিই কি আমি তোমার সাথে কখনো এ অপকর্ম করেছি, যা এরা বলেছে? আমি তোমাকে সেই সত্তার দোহাই দিচ্ছি, যিনি বনী ইসরাঈলেন জন্য সমুদ্রে রাস্ত্মা করে দিয়ে ছিলেন এবং তাওরাত নাজিল করেছিলেন ! তুমি ঠিক ঠিক বলবে। উক্ত মহিলা তখন তাদের শিখানো কথা ভুলে গেল এবং বলল, এরা মিথ্যবাদী। কারূন আমাকে এ পরিমান অর্থ দিয়ে আপনার উপর ব্যভিচারের অপবাদ আরোপ করতে বলেছিল। কারূন একথা শ্রবণে চিন্ত্মাগ্রস্থ হয়ে গেল। এবং মাথা নিচু করে ফেলল। অন্যান্য নেতারা নিশ্চুপ হয়ে গেল। সবাই তখন আলস্নাহর আজাবের ভয়ে ভীত হয়ে গেল। হযরত মূসা (আঃ) সেজদায় লুটিয়ে পড়লেন। কেঁদে কেঁদে আরজ করলেন, হে আমার পরওয়ারদেগার! এ দুশমন আমাকে যথেষ্ট পরিমাণ কষ্ট দিয়েছে। আমাকে সে লাঞ্ছিত অপমানিত করতে চেয়েছে। যদি আমি সত্য রাসূল হয়ে থাকি, তাহলে আমাকে তার উপর ক্ষমতাবান কর। আলস্নাহ তা’য়ালার পÿ থেকে ওহী এলো, হে মূসা! মাথা উত্তোলন কর এবং জমিনকে নির্দেশ দাও যা তুমি চাও, সে তা পালন করবে। সুতরাং হযরত মূসা (আঃ) জমিন কে নির্দেশ দিলেন যে, কারূনকে গ্রাস করে নাও! সাথে সাথে মাটি কারূনকে গ্রাস করতে শুরম্ন করল। আস্ত্মে আস্ত্মে সে মাটির মধ্যে দেবে যেতে লাগল। কারূন ‘মূসা! মূসা!’ বলে চিৎকার শুরম্ন করল। অপরিসীম কান্নাকাটি করতে লাগল। এমনকি সে ৭০ বার মূসা বলে ডাকল। কিন্ত্মু তার ডাকে কোনো উপকার হলো না। অবশেষে সে মাটির অতল গহ্বরে তলিয়ে গেল।
এ ঘটনার পর বনী ইসরাঈলের কতিপয় লোক মন্ত্মব্য করল যে, হযরত মূসা (আঃ) কারূনের সম্পদ লাভ করার জন্য তাকে মাটির মধ্যে ধ্বসিয়ে দিয়েছেন। একথা জানতে পেরে তিনি আলস্নাহর তা’য়ালার দরবারে দোয়া করলেন, হে আমার প্রভু কারূনের ধন ভা-ারকেও মাটির নিচে ধ্বসিয়ে দাও। ফলে তার সমস্ত্ম ধন ভা-ারও মাটির নিচে ধ্বসে গেল। আর এ ধ্বস কিয়ামত পর্যন্ত্ম অব্যাহত থাকবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.