নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সত্যান্বেষী

আবেদ আল ইসলাম

আমি তাই করি ভাই যখন চাহে এ মন যা, করি শত্রুর সাথে গলাগলি, ধরি মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা, আমি উন্মাদ, আমি ঝঞ্ঝা!

আবেদ আল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

কুরবানি; নাকি বানভাসি: কোনটা গুরুত্বপূর্ণ?

২৪ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:০৯

দেশজুড়ে চলছে ভয়াবহ বন্যা। ভুক্তভোগী মানুষের হাহাকারে বুক ভারী হয়, চোখের পাতা ভারী হয়ে আসে। তাদের দুঃখে দুঃখী হয়ে অসংখ্য তরুন-যুবক-বৃদ্ধ, বিভিন্ন সংগঠন এগিয়ে এসেছে। তাদের দুঃখ ঘুচানোর চেষ্টা করছে। এরকমই তো হওয়া চাই। একজনের কষ্ট অন্যজন অনুভব করবে। তার কষ্ট দূর করতে চেষ্টা করবে। (যদিও নিন্দুকেরা বলে এখানে ফেসবুকে নিজের চেহারা দেখানোরও একটা বিষয় আছে! ওসব দুর্মুখের মুখে ছাই দিমু। এগুলো আমরা চিন্তার বাইরে রাখতে চাই)

দিন-কয়েক আগে একজন অভিনেতা ঘোষণা দিলেন তিনি কুরবানি না করে সে অর্থ বানভাসি মানুষদেরকে দান করবেন। খুবই ভালো কথা। উনার এতোটুকু ধর্মীয় জ্ঞান না থাকারই কথা। তারপরেও মানুষের ব্যথায় সমব্যথী হয়েছেন সেটা আমার কাছে ইতিবাচকই মনে হয়েছে। যাকগে, উনার কথা না হয় বাদই দিলাম। এখন কিছু অত্যাধুনিক লোক, সাথে কিছু মোটামুটিরকম ধার্মিকও এর সাথে গলা মিলাচ্ছেন। আসুন, এবার একটু হিসেব মিলাই।

দেশে বন্যা দেখা দিয়েছে মাসখানেক হলো। এর মধ্যে নায়ক সাহেবের কিংবা আপনার ব্রেকফাস্ট কোনদিন বন্ধ থেকেছে? নাস্তায় আইটেম কমেছে? নাহ, কমেনি।
আপনি এই একমাসে নাস্তাখরচ অর্ধেক কমিয়ে সেই টাকা বন্যার্তদের দিতে পারতেন। মিথ্যা বলবেন না, আপনার নাস্তা কোনদিনও হাফ হয়নি।

দেশের দামী-দামী হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলো একদিনের জন্যও বন্ধ থাকেনি। কফিশপগুলোও নয়।শপিংমলগুলো মোটেও নয়। দেদারছে চলছে কাচ্চি-হাজী বিরিয়ানি। বিফ-চিকেন-মাটন খাওয়া বাঙালি কি বাদ দিয়েছে? চিন্তা করুন, একমাসের এ খরচগুলো বন্ধ রাখলে কতো টাকা সেভ হতো! হাজার-দুহাজার টাকায় আপনার একবেলা খাবারের টাকায় কতোজন বন্যার্তের মুখে ভাত তুলে দেয়া যেতো?

এগুলো নিয়ে চিন্তা হয় না। কুরবানিই খালি বেমানান মনে হয়! বাংলাদেশে ১ কোটির বেশি লোক ইন্টারনেট ব্যবহার করে। আপনিও করেন। এই বিশাল জনসংখ্যার একমাসের ইন্টারনেট বিলের টাকা কত হয়! একমাস ফেসবুক না চালালে আপনি মরে যাবেন না। কিন্তু সেই টাকাটা সেভ করে বন্যার্তদের দেওয়ার কথা কেউ বলে না। আপনিও না।

কুরবানি সবার জন্য ওয়াজিব নয়। সম্পদশালীর জন্যই ওয়াজিব। কুরবানির মাংসও তো কুরবানিদাতা একা খান না। তিনভাগের একভাগ গরীবদেরকে দান করেন। আরেকভাগ আত্নীয়দেরকে। বাকীটুকু নিজের পরিবারের জন্য। এমন অনেকেই আছেন সামান্য একটু রেখে বাকীটা বা সবটাই গরীবদের দিয়ে দেন। এতে জনসেবা হচ্ছে না? আর এতোগুলো পশু যে বিক্রি হচ্ছে, বিক্রয়ের টাকাটা কোথায় যাচ্ছে? সেই গরীব মানুষগুলোর হাতেই তো। কোন ধনী ব্যক্তি কুরবানি করার কারনে পকেট গড়ের মাঠ হয়ে যায় না। তিনি চাইলে এরপরেও বন্যার্তদের সাহায্য করতে পারেন। আপনি কুরবানির বাজেট কমিয়ে আনুন। প্রয়োজনে কয়েকজন মিলে একটা গরু কোরবানি করুন। বাকী টাকা বন্যার্তদের দিয়ে দিন। এটা বিরাট পূণ্যের কাজ হবে। কোরবানির মূল শিক্ষাই হলো ত্যাগ। বিপদগ্রস্তদের সাহায্য করা ইসলাম শিক্ষা দেয়। আল্লাহ পাক বলেন, "তোমরা শ্রেষ্ঠ জাতি, তোমাদেরকে মানুষের কল্যাণে সৃষ্টি করা হয়েছে"। নবী কারীম (স.) বলেন, "যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের একটি কষ্ট দূর করবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার একটি বিপদ দূর করে দিবেন"।
" প্রতিবেশিকে অভুক্ত রেখে যে পেটভরে খায়, সে মু'মিন নয়"। এটা ইসলামের শিক্ষা। এরকম অনেক আয়াত-হাদীস আপনি পাবেন।

২০০৭ সালের সিডর পরবর্তী কুরবানির কথা হয়তো আপনার মনে আছে। তখন অনেককেই দুর্গতদের জন্য পাতিলে করে আর্মির মাধ্যমে কুরবানির মাংস পাঠাতে দেখেছি। চলুন, এবার আমরা আবার একই নজির দেখাই। আচ্ছা, আপনার কি মনে হয় যে ব্যক্তি অজুহাত দেখিয়ে কুরবানি দিবে না সে আসলেই বন্যার্তদের সেই টাকাটা দিবে?

একটু স্বরণ করিয়ে দিই, ধর্মীয় বিধান নিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করলে ঈমান চলে যাবে। তাই আবেগতাড়িত হয়ে কিছু বলার আগে সাবধান! কুরবানি বিরোধীদের প্রচারণার নতুন ফাঁদে পা দিবেন না।

অাল্লাহ পাক সবাইকে হেফাযত করুন। বিপদাপদ দূর করে দিন। আমিন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.