| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজনাদ মুন
স্কুলে থাকা অবস্থায় আমি টুকটাক লেখালেখি করতাম। আমার গুটি কয়েক কবিতা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় মাঝে মাঝে এসেছে। আমি সাম্প্রতিক বিষয় নিয়ে বেশ ভাবি, এবং তা প্রকাশ করার মাধ্যম হিসাবে ব্লগ লেখাকে বেছে নিয়েছি। আসা করি আপনারা আমার সাথে থাকবেন। -আজনাদ
ঢাকা শহরের কোন এক বাড়ির ৫ম তলার বাসিন্দা আমি। গনপ্রজাতন্ত্রিক বাংলাদেশ সংবিধান অনুযায়ী আমি জন্ম সূত্রে বাংলাদেশি নাগরিক। আমি মুসলিম নাকি হিন্দু তা বলার দরকার ছিল না তবু বলতে হচ্ছে আমি মুসলিম। কথাটা বলার প্রয়োজনবোধ করছি কারণ এই লিখাটা পড়ার পর কারো কারো মনে প্রশ্ন জাগতে পারে আমাকে নিয়ে। তাই আমি আগেই জানিয়ে রাখতে চাই আমার সাথে কোন মৌলবাদী গোষ্ঠীর সাথে সম্পৃক্ততা নেই। এবং মহান আল্লাহ-এর ওপর পুণ্য আস্থা ও বিশ্বাসও রয়েছে।
আজকে আমি যে বিষয় নিয়ে লিখছি তা বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি। বাংলাদেশের জনগণ বর্তমানে দুই ভাগে বিভক্ত। কিছু শাহাবাগের জাগরণ মঞ্চের মন্ত্রে উজ্জীবিত কেউ আবার দেলোয়ার হোসেন সাইদীর ফাঁসির বিপক্ষে। ২৮শে ফেব্রুয়ারির আগেও ঘটেছে অনেক বিচ্ছিন্ন ঘটনা। পুলিশের ওপর হামলা, পুলিশি নির্যাতন, প্রকাশ্যে বিশ্বজিৎ নামের যুবককে কুপিয়ে হত্যাসহ অসংখ্য ঘটনা। পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছে অসংখ্য মানুষ। কিন্তু একদিনে ৫৬জনের মৃত্যু কতটা স্বাভাবিক হতে পারে তা বুজতে নিশ্চয়ই মানবাধিকার কর্মী হওয়ার দরকার পড়েনা।
৫২’ ভাষা আন্দোলন আমি দেখিনি, দেখিনি ১৯৭১, বাবার মুখে শুনেছি ৮৯’-এর অভ্যুত্থান এর কথা। ইতিহাসে পড়েছি, সিনেমাতে দেখেছি মুক্তিযুদ্ধ। কিন্তু আজ কেন জানি সেই ৭১’ আমার চোখের সামনে। ঘর থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছে জনগণ, নিরাপত্তাহিনতায় ভুগছে শিক্ষাথীরা, সাঙ্গ হচ্ছে বন্ধুদের আড্ডা সন্ধ্যা নাগাদ। রাতের অন্ধকার আচ্ছন্ন গোমোঠ বাঁধা বাতাস আরও ভারি হচ্ছে বিজিবি ও পুলিশের লাল-নিল বাতিওয়ালা গাড়িগুলোর সশস্র মহড়াতে। সিনেমার সেই হানাদারের সাজ আজ আমার চোখের সামনে। রাত ১০টা না হতেই রাস্তা পুরোপুরি ফাঁকা। বাসার নিচের চায়ের দোকানটা বন্ধ হচ্ছে খুব তাড়াতাড়ি। অথচ কিছু দিন আগেও পড়ার ফাঁকে একচাপ চা চুমুক দিয়ে আসতাম রাতবিরাতে। আজ সবই আছে, আছে আমার দেশ, আছে আমার স্বাধীনতা, শুধু নেই আমার নিরাপত্তা।
এক অজানা ভীতি, অজানা হানাদার অথবা হায়নার ভয়ে আমরা আজ ভীত। আজ সরকার তাদের নেতা কর্মীদের মাঠে নামিয়ে দিচ্ছে হরতাল প্রতিরোধ করতে। হরতাল সমর্থন করি তা কখনো নয়। তবু রাজনৈতিক অধিকার আছে বলে এর বিরুদ্ধে বলতেও পারি না।
তবু আমার প্রশ্ন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থাকতে কেন নেতাকর্মী? আর যদি তারাই যতেষ্ঠ তাহলে কেন সরকারী টাকা দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুষবে সরকার? ত্রিমুখী সংঘর্ষের ফলে নিহত ব্যাক্তিদের দায়ভার নিবে কে? কোথায় মানবাধিকার সংগঠন? কে করবে এই সংঘাতের নিরসন? কে দূর করবে, জনতার মনের অজানা এই ভীতি?
আজনাদ হোসাইন
ছাত্র, আইন বিভাগ, সিটি বিশ্ববিদ্যালয়।
©somewhere in net ltd.