" মায়ের কাছে লিখা চিঠি "

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১০

আজ মনে পড়ছে প্রচন্ড ভাবে মা তোমার কথা, শীতের সকাল গুলোতে কন কনে শীতের হিম শরীরে সোনালি রোদের নরম আদর। যা সত্যিই মায়ের আদরের কাছে কিছুই ছিল না, যা আজ টের পাচ্ছি। দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ার সময় শীতের কোন এক সকাল, বরাবরের মতো ঘুম থেকে ডেকে দিলেন মা, আমায় আদর করে তিনি বকু ডাকতেন, সজাগ করে বললেন বাবা বকু উঠো, তাড়াতাড়ি দাত মেজে পড়তে বস। বাড়ীর উঠোনে হুগলা পেতে পড়তে বসতাম, রোদের মাঝে। সকালে নাস্তায় প্রায়ই থাকতো শীতের সু-স্বাদু পিঠা সব, পড়তে বসলাম, নাস্তা বানানোর এক পর্যায়ে মা তাড়াতাড়ি শীতের ঠান্ডা থেকে সুরক্ষার জন্য নিজের শরীরের উলেন সুতোয় বোনা চাদর আমার শরীরে ভালো ভাবে পেচিয়ে দিলেন, যেনো তার ছেলের আশেপাশে কিছুতেই শীত ভিড়তে না পারে। পড়ার মাঝে মায়ের হাতে বানানো গরম ভাপা পিঠা, গ্রামের মেয়ে ছিলেন বলে সু-স্বাদু পিঠা বানানোয় মায়ের হাত ছিলো পাকা, বয়সের ভারে মা যখন সংসারের কাজ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিলেন এই স্বাদ জনিত ব্যাপার গুলোও জীবন থেকে দূরে যাওয়া শুরু করলো, প্রিয় অনেক খাবার এখন খাইনা, কারন মায়ের হাতের ঐ স্বাদটা পাইনা বলে। আমার জীবনে মায়ের অন্য রকম অবদান, যা বর্ণনা অসম্ভব। আমরা ৬ ভাই বোনের মধ্যে আমার জন্য মা যা করেছেন তা আমার বড় ভাই-বোনদের তুলনায় এক চোখা দৃষ্টির মতো, এখন হিসেব করলে বিবেক তাড়না দেয়। যে মায়ের ভালোবাসা, আদর, যত্নে আজকের এই আমি, কি করেছি মায়ের জন্য??? কেন যে মানুষ বড় হয়? অনিয়মের মধ্যেই কেন থেমে থাকলোনা পৃথিবীর নিয়ম! মায়ের আদর, যত্ন, ভালোবাসা থেকে দূরে থাকতে হতোনা, বাস্তবতার দৌড়ে ছুটতে হতোনা, চাইলেই মায়ের সান্নিধ্য অসম্ভব হতোনা। মা তোমাকে খুব মিস করছি, তুমি ভালো থেকো, সুস্হ থেকো, আমি ভালো আছি, তবু তোমার দোয়া চাইছি। মহান আল্লাহ্ তোমায় ভালো রাখুন তার রহমতের ছায়ায়, মা তোমাকে ভালোবাসি।



তোমার ছেলে, তোমার বকু,

বাহালুল! ০২-০১-২০১৩।

০ টি +০/-০