নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বাংলাদেশি বাঙালি

বাংলাদেশি বাঙালি › বিস্তারিত পোস্টঃ

"মহাপৃথীবি"-র পাতা থেকে

২৪ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:০৯



একবার নক্ষত্রের দিকে চাই--একবার প্রান্তরের দিকে
আমি অনিমেখে।
ধানের ক্ষেতের গন্ধ মুছে গেছে কবে
জীবনের থেকে যেন; প্রান্তরের মতন নীরবে
বিচ্ছিন্ন খড়ের বোঝা বুকে নিয়ে ঘুম পায় তার;
নক্ষত্রেরা বাতি জ্বেলে--জ্বেলে--জ্বেলে-- 'নিভে গেলে--নিভে গেলে?'
বলে তারে জাগায় আবার;
জাগায় আবার।
বিক্ষত খড়ের বোঝা বুকে নিয়ে--বুকে নিয়ে ঘুম পায় তার,
ঘুম পায় তার।

অনেক নক্ষত্রে ভরে গেছে এই সন্ধ্যার আকাশ--এই রাতের আকাশ;
এইখানে ফাল্গুনের ছায়া মাখা ঘাসে শুয়ে আছি;
এখন মরণ ভালো--শরীরে লাগিয়া রবে এই সব ঘাস;
অনেক নক্ষত্র রবে চিরকাল যেন কাছাকাছি।

কে যেন উঠিল হেঁচে--হামিদের মরখুটে কানা ঘোড়া বুঝি!
সারা দিন গাড়ি টানা হল ঢের--ছুটি পেয়ে জোছনায় নিজ মনে
খেয়ে যায় ঘাস;
যেন কোনো ব্যাথা নাই পৃথিবীতে--আমি কেন তবে মৃত্যু খুঁজি?
'কেন মৃত্যু খোঁজো তুমি?' চাপা ঠোঁটে বলে দূর কৌতুকী আকাশ।

ঝাউফুলে ঘাস ভরে--এখানে ঝাউয়ের নিচে শুয়ে আছি ঘাসের উপরে;
কাশ আর চোরকাঁটা ছেড়ে দিয়ে ফড়িং চলিয়া গেছে ঘরে।
সন্ধ্যার নক্ষত্র, তুমি বলো দেখি কোন্ পথে কোন্ ঘরে যাব!
কোথায় উদ্যম নাই, কোথায় আবেগ নাই--চিন্তা স্বপ্ন ভুলে গিয়ে
শান্তি আমি পাব?
রাতের নক্ষত্র, তুমি বলো দেখি কোন্ পথে যাব?
'তোমারই নিজের ঘরে চলে যাও'--বলিল নক্ষত্র চুপে হেসে--
'অথবা ঘাসের 'পরে শুয়ে থাকো আমার মুখের রূপ ঠায় ভালোবেসে;
অথবা তাকায়ে দেখো গরুর গাড়িটি ধীরে চলে যায় অন্ধকারে
সোনালি খড়ের বোঝা বুকে;
পিছে তার সাপের খোলস, নালা খলখল অন্ধকার--শান্তি তার
রয়েছে সমুখে;
চলে যায় চুপে-চুপে সোনালি খড়ের বোঝা বুকে--
যদিও মরেছে ঢের গন্ধর্ব, কিন্নর, যক্ষ,--তবু তার মৃত্যু নাই মুখে।'
---জীবনানন্দ দাশ
নিরালোক (মহাপৃথীবি)।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:৫০

দেবজ্যোতিকাজল বলেছেন: অনেক কিছু জানলাম

২| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৫:১৭

বাংলাদেশি বাঙালি বলেছেন: অশেষ ধন্যবাদ সুহৃদ!! শুভ বসন্তের শুভেচ্ছা!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.