![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এই যে, শুনছেন?...... ট্রেনের জানালায় মাথা দিতে নেই।
[কোন সাড়া শব্দ পাওয়া গেল না]
এই যে, আপনাকেই বলছি, শুনছেন?
-হু, শুনছি ... বলুন।
.বলছিলাম, ট্রেনের জানালায় মাথা দিবেন না। কাচ পড়ে গিয়ে বিপদ হতে পারে।
কথাটা বলে মনে মনে ভাবছি, অপরিচিতা কাউকে এতোটা অধিকার নিয়ে কিছু বলা বোধ হয় উচিত হয় নি। উনি কিছু মনে করতে পারেন। কিন্তু, ওনার কোন ভ্রুক্ষেপই নেই যেন। খেয়ালই করলেন না। ট্রেনের জানালায় মাথা দিয়ে দিব্যি তাকিয়ে আছেন বাইরে, অচীন সীমান্তে।
ট্রেনে যাচ্ছি। ট্রেনে খুব যাত্রী ছিলনা। রাতের ট্রেন, জানালার পাশে বসেছি। আর আমার একদম মুখোমুখি জানালার পাশে সেই অপরিচিতা। সমবয়সী বা দু'এক বছর ছোটই হবে।
আমি রুক্ষ সুক্ষ মানুষ। একবারের কথা দু'বার বলা আমার স্বভাবের সাথে যায় না। সহপাঠীরা বলে আমি নাকি একস্ট্রা ভাব নিয়ে চলি। তো একজন অপরিচিতা জানালায় মাথা দিয়ে আছে, থাক! তাতে আমার কি?....... কিন্তু, এবেলায় যেন আমি নিজেকে নিজ স্বভাবের বাক্সতে বন্দী করে রাখতে একদমই পারছিলাম না। বারবার যেন ওনার দিকে নজর চলে যাচ্ছিলো। কোমল কঠিনে মিশ্রিত একজন। যার চোখের দিকে তাকালে মনে হবে সারা পৃথিবীর মায়া যেন একই বিন্দুতে সমাহিত। তার জানালার বাইরে অপলক দৃষ্টি, একদমই যেন ওই কালো ঘুটঘুটে অন্ধকারের জন্য নয়। জীবনানন্দের ''নাটোরের বনলতা সেন'' , কিংবা শেকসপিয়রের ''কৃষ্ঞবালিকা" এর প্রেমে পড়েছি। হয়তো স্বপ্নদেশে এদের জন্য বিশ্বব্রহ্মাণ্ড তন্ন তন্ন করে ১০৮ টি নীলপদ্মও নিয়ে এসেছি। কিন্তু না, আমি মেলাতে পারছি না। একদমই পারছি না, একদমই না।
ট্রেন চলছে। অদ্ভুত এক মাদকতায় যেন সবাইকে ঘুম পাড়িয়ে রেখেছে কেউ। জেগে আছি আমি। আর সেই মেয়েটি, যথারীতি জানালায় মাথা দিয়ে।
আচ্ছা, যাবেন কোথায়?..... জিজ্ঞাসা করলাম।
-জানিনা! আপনি? [প্রথমবার কিছু একটা বলার সুযোগ পেলাম]
সুযোগের সম্পূর্ণ সদ্ব্যবহার করলাম। বললাম, 'জানিনা!'
আবার নির্বিকার। কি মেয়ে রে বাবা। এতো আমার চেয়েও রুক্ষ। দেখে ভবিষ্যদ্বাণী করাটা যে নিতান্তই মনের ভুল তা একদম রন্ধ্রে রন্ধ্রে টের পাচ্ছি। বারবার কি অবলীলায় আমার সব চিন্তাগুলোকে ভেঙেচুড়ে দিয়ে যাচ্ছে।........ কিন্তু, আমিও যে দমে যাবার পাত্র না।
আচ্ছা, বাইরে কি দেখছেন?
-স্বভাবজনিত নির্বিকারত্ব, 'কিছু না!'
ও আচ্ছা..... ওই যে বাইরে আলোটা দেখছেন, একবার জ্বলছে আর নিভছে?... দেখছেন কি?
-হু...
ধরুন, ওই আলোটা থেকে কেউ আপনার দিকে এগিয়ে আসছে। আপনার একটু স্পর্শ পাবার জন্য।
[মনোযোগ আমার দিকেই আসছে]
অনেকটা কিন্তু কাছে চলে এসেছে সে। এখন, শুধু আপনার হাত বাড়িয়ে তাকে তুলে নেবার অপেক্ষা। হাত বাড়াবেন না?
[সম্পূর্ন মনোযোগই হয়তো নিতে পেরেছি। কিন্তু, উনি চুপচাপ। জানালা থেকে মাথা সরিয়ে কি যেন ভাবছেন ]
কিন্তু, আপনি তো হাত বাড়ালেন না!
-তারপর কি হল??
এই প্রথমবার মনে হল যে কিছু একটা ওনার কঠিন মনে দাগ কেটে গেছে।
কি আর হবে!...... হয়তো করুন পরিনতি!
আমি তার দু'চোখে অশ্রুর ঝড়ে পড়া দেখলাম। আবার জানালায় মাথা রাখলেন। এবার আর মনোযোগ আকর্ষন করার চেষ্টা করিনি। আমি যে প্রতিনিয়ত খুন হয়ে চলছিলাম ওই খুনী দু'চোখে।
শেষবারের মত জিজ্ঞাসা করলাম, 'নামটা জানতে পারি?'
কাতর কন্ঠে ভেসে আসল......... "অপরাজিতা!"
https://m.facebook.com/oporajeo.oprotim.5?ref_component=mbasic_home_header&ref_page=/wap/home.php&refid=7
২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ২:১৫
Saikat Palash বলেছেন: ছোটগল্প
২| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৫
এহসান সাবির বলেছেন: ভালো লিখছেন।
২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ২:১৬
Saikat Palash বলেছেন: ধন্যবাদ
৩| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৮
আরণ্যক রাখাল বলেছেন: বর্ণনা কাব্যিক| অতিরিক্ত ভাবালুতা গল্পের উপরের আকর্ষণকে কমিয়ে দিয়েছে| তবুও সুখপাঠ্য ছিল|
২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ২:১৭
Saikat Palash বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য
৪| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:১৩
নাবিক সিনবাদ বলেছেন: ভালো লাগলো পিলাচ।
২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ২:১৭
Saikat Palash বলেছেন: ধন্যবাদ
৫| ১৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০২
অতঃপর হৃদয় বলেছেন: আসলেই চমৎকার লিখেছেন,,,এক মুহুরতের জন্য মনে হলো আমি ট্রেনে যাচ্ছি অপরাজিতার সাথে
২০ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ২:১৯
Saikat Palash বলেছেন: না.. না!!!! প্লিজ! অপরাজিতার সাথে যাবো শুধু আমি!
..... অশেষ ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:৪১
মিথ্যে বল না বলেছেন: শেষ হইয়াও হইল না শেষ...