নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এক ভদ্রলোকের খুব প্রিয়, কাছের একজন মানুষের মৃত্যু পরবর্তী দায়শোধ বা ৪০শা’র (যেটি কেউ মরে যাবার অপরাধে তার সন্তান বা বাবা-মা করতে বাধ্য হয়) অনুষ্ঠানে গরুর গোসতের ছালুন, মোলাম আলুর টুকরা, ডেকোরেটর, সেলফি, হাসি মুখে শোক প্রকাশ, পান চিবানো ইত্যাদি দেখে আর সহ্য হল না। আমি এরকম একটি সেনসেটিভ বিষয়ে কিছু বলি না। প্রত্যেকের তার নিজের মতো চলার পূর্ন অধিকার আছে। কিন্তু এতটা কি?
একজন বাবা, মা, ভাই-বোন বা স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যুতে আমরা অনতিবিলম্বে তার মরে যাওয়ার অপরাধে খাশি জবাই করে, ডেকোরেটর ডেকে, মিষ্টি-দধি সহযোগে আড়ম্বর করে তার দায় শোধ করি। কেন? স্বজনহারা একজন মানুষের সামনে আমরা আয়েশ করে খাশির পায়া চিবাই, কোল্ড ড্রিংকস দিতে দেরী হলে বেয়ারাকে ধমকাই, হাসিমুখে পিতাহারা সন্তানটিকে শোক জানাই!, পানের যোগাড় আছে কিনা সে খোজ নেই। “বাবা, তোমার খালাম্মার আসতে পারেনি, নাতীটার পাতলা পা......খানা..............” মানে বক্স করে বাসায় দাও-এই ধান্দাও করি। ফিরনীটাতে মিষ্টি আরেকটু দিতে হত-মর্মে বিজ্ঞ মন্তব্য করি। বাবুর্চীর বাড়ি কই-জানতে চাই এবং ফরিদপুরের বাবুর্চীর উপরে বাবুর্চী নাই-এই খবর জানান দিই।
মৃতের স্বজনেরা কখনো স্বেচ্ছায়, কখনো অনিচ্ছায়, কখনো নাম কামাতে মৃত্যু উপলক্ষে এই ভয়াবহ অমানবিক, পাশবিক, বিকৃত, নিষ্ঠুর, পৈশাচিক প্রহসনের যজ্ঞটি চাপিয়ে দেই বা নিজেরাই করি। আমার বাবার মৃত্যুর অপরাধে আমার কিছু “শুভাকাঙ্খি”! আমাকে বাবার মৃত্যুর অপরাধে কড়া ভাজা জিলাপী দিয়ে এই অপরাধের দায়শোধ করতে বাধ্য করেন। বাবার শোকে বির্দীর্ন কলিজার এই আমরা, ভাইয়েরা, বোনেরা, আমার মা বাধ্য হই জিলাপীর দরদাম জানতে, পরিমান নিয়ে হিসাবনিকাশ শুনতে। সমাজকে খুশি করতে বাবার মৃত্যুতে আমি সবাইকে মিষ্টিমুখ করাই। ৪০ দিবসের পাপস্খলন দিবসেও খাশি জবেহ করারও একটা মচ্ছব হয়েছিল কিন্তু আমি নিতান্তই দরিদ্র হওয়ায় আর আমার ভয়াবহ আপত্তির মুখে সেটি আর হয়নি।
আমাকে কেউ কেউ একটা খোড়া ব্যখ্যা দিয়েছেন পুরো ব্যপারটার। স্যরি! আমি এই দস্যুবৃত্তিটির কোনো সুশীল যুক্তি শুনব না। স্যরি।
©somewhere in net ltd.
১| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:২৩
আহলান বলেছেন: হুম ..মন্দ বলেননি ... আজকাল নীতি আর মূল্যবোধের ধার কেউ ধারে না ...