নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি কেউ নই, আমি আমার নই, আমি তোমার নই, আমি তুমিও নই

বেচারা

Walid

বেচারা › বিস্তারিত পোস্টঃ

দূর্নীতির কালো বেড়াল ও সাদা ঘোড়াগণ

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:৫৯

বুড়ো বয়সে চাকরী চলে গেলে বা চাকরিতে কেউ না পুঁছলে কী করে খাব-যখনই কোনো জেষ্ঠ্যতাতকে এই প্রশ্ন করি, তারা পরামর্শ দেন, ”ভাই, লেখালেখি বাদ দ্যান। কনসালটেন্সির চেষ্টা করেন।” আমি প্রশ্ন করি, কনসালটেন্সী যে করব, নিজেই তো কিছু জানি না। শুনে তারা অর্থপূর্ন একটি হাসি দেন। যার অর্থ হতে পারে দুই রকম-এক; মিয়া, কিছুই যখন জানো না, তখন ফেসবুকে এত রাজা উজির কেন মারো?” কিংবা, “তুমি যদি কিছুই না জেনে থাকো, তাহলেই তুমি কনসালটেন্সি করার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত।” হা হা হা হা [মজা করলাম। আমার শ্রদ্ধেয় স্যাররা দয়া করে বিষয়টিকে মজা হিসেবেই নিন। আর অবশ্যই “সবাই এক না।”]

সরকারী অফিসের দূর্নীতি নিয়ে এই দেশের প্রত্যেক ফেসবুকিয়ান ও জাগ্রত জনতাসহ নানা পদের দেশী বিদেশী সংস্থা অত্যন্ত সোচ্চার। যদিও সামাজিক মাধ্যমে দূর্নীতি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার একটি বড় অংশই উৎসারিত হয় এই আফসোস বা হিংসা হতে, যে, “ঈশশশশশ, ও ই কেন? আমি কেন নয়!” যাহোক। ‍নিয়ত গুনে বরকত।

তা, এই জাগ্রত জনতা ও নানা রকমের জনহিতৈষী লাতি ও বিলাতি সংগঠনগুলো কি জানে বা জেনেও না জানার ভান করে, যে, খোদ তারা নিজেরা এবং এই দেশের বিশাল সংখ্যক লাতি ও বিলাতি দাতব্য, সুশীল সংস্থা প্রচন্ড রকম ধান্দাবাজ ও দূর্নীতিবাজ? এই দেশ যেহেতু গুজব, রব, হাইপ, ভাইরাল, সেলেব, প্রচারেই প্রসার নির্ভর একটি আজব দেশ, এদেশে সবাই তাই বরাত গুনে করে খাচ্ছে। দু’হাতে সমানে দুইয়ে নিচ্ছে সুযোগ নামক কামধেনুর স্ফীত বাট হতে।

আজ একজন প্রখ্যাত ’দাতব্য’ কনসালটেন্ট সাহেবকে বহুদিন পরে সামাজিক মাধ্যমে দেখে একটি কথা মনে পড়ে গেল। আমি আমার চাকরী জীবনের এক যুগেরও বেশি সময়ে ছোট বড় নানা রকম লাতি ও বিলাতি ‘দাতব্য’, ‘সুশীল’, ‘জনদরদী’ জনহিতৈষী সংস্থার সাথে কাজ করেছি। তা করুন ওনারা জনহিতৈষ। সমস্যাটা হল, ওনারা জনহিতৈষের জন্য বিলাত ও দেশীয় খাত হতে যে বিপুল পরিমান অর্থ বাগিয়ে থাকেন, তার বিপুল অংশই ওনারা ব্যক্তিগত, সমষ্টিগত, দলগত ও সংস্থাগত পকেটে পকেটস্থ করে থাকেন। অর্থ পকেটস্থ করার একটি বড় মাধ্যম হল প্রজেক্ট। আর সেই প্রোজেক্ট নামানোর জন্য আবার থাকেন কনসালটেন্ট। উভয়ে উভয়কে পিঠ চুলকান। দুয়ে মিলে লীন হন। মাঝখান হতে দুই মাস, ছয় মাস, নয় মাস মেয়াদী নানা আজগুবি প্রোজেক্ট ল্যাপটপ হতে মাঠে নামিয়ে টাকা বগলদাবা করে কনসালটেন্ট ও প্রোজেক্ট-উভয়ে আল বিদা। প্রোজেক্টের জন্য গাড়ি, বাড়ি, প্রি-এসেসমেন্ট, পোস্ট-এসেসমেন্ট, কনসালটেন্ট, সেমিনার, উদ্বোধনী অনুষ্ঠান, মনিটরিং ব্যায়, প্রোমো, বিদেশ ভ্রমন-কত কত খাত যে তৈরী হয়। দুঃখীর দুঃখ নিবারনীর জন্য নড়ে চড়ে বসার ব্যয়ের পেছনেই দাতব্য খাতের ৮০ শতাংশ খেয়ে নেয় সংস্থাগুলো। আমি আমার সারা কর্মজীবনেই এমন গন্ডা গন্ডা প্রোজেক্ট গিলতে বাধ্য হয়েছি সুশীলদের ও প্রতিষ্ঠান প্রধানদের আগ্রহের চাপে। ফলাফল এমনকি শূন্যও নয়। কারন ফলাফল কাম্যইতো ছিল না। মাঝখান হতে যে প্রতিষ্ঠানগুলো ওইসব প্রোজেক্টের শিকার-মানে স্টেকহোল্ডার বা সার্ভিস রিসিভার-তারা ও তাদের লোকজন মাস কয়েক ধরে উদয়াস্ত নিজেদের জরুরী কাজকাম বাদ দিয়ে ওনাদের নানা সেবা ও সমন্বয় দিতে দিতে গলদঘর্ম। তারপর মাস ছয়েক পরে তারা গায়েব। কনসালটেন্ট, প্রোজেক্ট কোর্ডিনেটর সাহেবরা ততদিনে অন্য নতুন প্রোজেক্টের মহান তদারকিতে ব্যস্ত ও ন্যস্ত। ফোন করলে বলবে, “আমি কার আমি কার, কে তোমার, কে তোমার?” কিংবা ‘রঞ্জনা, আমি আর আসব না।” গার্মেন্টস সেক্টরে যারা কাজ করেন, তারা ভাল জানবেন, বিশেষভাবে গত ২০১৩ সালের পর হতে গার্মেন্টস সেক্টরকে টার্গেট করে কোটি কোটি টাকার জনহিতৈষী দাতব্য অথবা দাঁতে কাটতব্য হিসেবে ফান্ড এসেছে এদেশে কর্মরত কিংবা বিলাত হতে প্রসবিত নানা সংস্থার হাতে। আর তাতে একদল ধান্দাবাজ মানুষ নতুন করে এখানে খুঁজে পেয়েছে “সুখের ঠিকানা”। দরকারী, বেদরকারী, আজগুবি, পরীক্ষামূলক, হাস্যকর নানা হিতেষী প্রোজেক্টে সরকার ও বেসরকার দেদারসে টাকা ঢেলেছেন। আসল কাজ বাদ দিয়ে। অন্তত গার্মেন্টস খাতে ট্রেনীংয়ের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারী ও বেসরকারী ফান্ডের টাকার স্রেফ শ্রাদ্ধ হচ্ছে বললেও কম বলা হবে।

এই জনহিতৈষী লাতি ও বিলাতি সংস্থা ও এর উদ্যোক্তা, কনসালটেন্টবৃন্দ যখন সরকারী খাতের দূর্নীতি নিয়ে নানা মাধ্যমে সুকুমার বুলি ঝাড়েন, তখন কি নিজেদের পাজামার বা অন্তর্বাসের বুকপকেটের নিচে গোপনাঙ্গের খুব কাছাকাছি চোরা পকেটে দূর্নীতির যে টাকা রাখেন, সেটার কথা একবারও মনে পড়ে?

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৪:৫৬

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক মধ্যাহ্নভোজের ব্যবস্থা করলেন। ভোজ হলো। ছবি তোলা হলো। পুরস্কার পেতে তার দুই সপ্তাও লাগলো না। বলুন, ‘আমেন’।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.