নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ব্রাত্য ও সমাজচ্যুত হবার উচ্চ ঝুঁকি নিয়ে কথাগুলো বলছি।
আপনাদের কাছে অতিরঞ্জিত মনে হতে পারে, যে, মুক্ত বাজার অর্থনীতির যুগ হলেও, গ্লোবাল ভিলেজের দুনিয়া হলেও, এদেশে চাকরির বাজার ও কর্পোরেট ক্যারিয়ারে ফোরাম, কোরাম, সিন্ডিকেট, সালতানাত ও পরম্পরাহ’র কদর, প্রভাব, চাহিদা ও বাস্তবতা বাড়ছে। HR Arena তে তো সেটি ভয়ানকভাবে বিরাজমান।
আগেও ছিল, হয়তো মাত্রায় কম। এখন সেটা ফরজ, ওয়াজিবের পর্যায়ে চলে গেছে। কোরামের ‘হুক্কা’ অথবা ’হুক্কাহুয়া’ হওয়াটাই বরং এখন স্ট্যাটাস সিম্বল। (#সবাই১না বলে দিলাম কিন্তু। এক নোকতা।)
কোরামের ’হুক্কাহুয়া’বৃন্দ ও তাদের Roaring SIMBA-the white lion ওরফে পীরে মোদাচ্ছের, অর্থাৎ, গুরুভাইরা যখন পরস্পরের গুণকীর্তন, পিঠ চাপরানো ও পিঠ চুলকানোতে মজা নিচ্ছেন, ঠিক তখনই আবার অন্য প্রফেশনের মানুষেরা এই HR প্রফেশন ও প্রফেশনালদের ’হুক্কাহুয়া’ চরিত্র নিয়ে মজা নিচ্ছেন। তাতে অবশ্য HR প্রফেশনালদের (#সবাই১না দুই নোকতা।) খুব একটা কিছু যায় আসে না। আসলে, প্রফেশনাল প্যাশনের চেয়ে ক্ষুদ্র জাগতিক প্রাপ্তি ও স্বার্থই যখন হয় মূখ্য, তখন, গণমানুষের, বা, আরও স্পষ্ট করে বললে, সেবাগ্রহিতা শ্রেনীর দাঁত কেলানোতে কী-ই বা আসে যায়?
দিনকাল যা পড়েছে, তাতে আপনি এই কোরাম, ফোরাম, সালতানাতের দাসানুদাস না হলে ভাত পাবেন না। ঠিক যেমন গোটা দেশের শিক্ষক সমাজ লাল, নীল, সাদা, কালো (#rainbow) কোরামে বিভক্ত, যাদের দলভূক্ত ও রিসালাতের অংশ না হলে আপনি ‘বিশিষ্ট’ হতে পারবেন না। ব্যবসায়ী সমাজে, তথা পটল বিক্রেতা, খড়কুটো হতে কামান বিক্রেতাদের সিন্ডিকেট হতে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট-সবার মুখদর্শন শেষ করে আমরা যখন ত্যক্ত, বিরক্ত, তখন নতুন এই সিন্ডিকেটের আবির্ভাব। মজার বিষয়, এই সিন্ডিকেটই আবার আনাজপাতির বাজারের সিন্ডিকেট নিয়ে খুব সরব।
বিপদ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে একটা সত্য, যে, স্টার বোদ্ধা, বিজ্ঞ, গুরুভাই, পীরে কামেলে-HR, যাঁরা HR এর রিসালাত ও পরম্পরার সহিহ ও হালাল উত্তরাধিকার রক্তে বহন করেন বলে বিশ্বাস করেন, যাঁরা ব্রাহ্মণ গোত্রীয়, তাদের ভেট না দিয়ে আপনি কিছুই করতে পারবেন না। সহিহ রাজকীয় ও আরবীয় HR রিসালাত ও খান্দানের জাতকের তাফসীরের বিপরীতে আপনার মুখনিঃসৃত কোনো HR জ্ঞান, তাফসীর টিকবে না। কোরামের দাপটে প্রকৃত যোগ্য বর (প্রফেশনাল) তার যোগ্য ঘর (কর্পোরেট) পাচ্ছে না; যোগ্য ঘর তার যোগ্য বর পাচ্ছে না।
এমনকি, ওই সহিহ HR রিসালাতের বাইরের মানুষ হলে, আপনি যাই জানুন না কেন, যাই পারুন না কেন, যতই আপনার বিলাতি বা নেড়ি বিদ্যা থাকুক না কেন-সেগুলোসহ, আপনার কৃত বিদ্যা কোনো সামাজিক স্বীকৃতির হকদার হবে না। আপনাকে মেনে নিতে হবে, যে, আপনার পেটের বিদ্যা বিশুদ্ধ রিসালাতের না হওয়ায় সবই বাতেল। আপনার কথার মূল্য দুই কঁড়ি মাত্র। আপনার কদর ও আপ্যায়ন তিন কঁড়ি মাত্র। ভাল পদ-পদবী-কঁড়ির মহান দাসত্ব, মানে চাকরি আপনার জন্য ‘বামুন হয়ে চাঁদের পানে হাত বাড়ানো’র মতো।
বিগত ৯০ দিনে আমি অন্তত ৫ জন বিভিন্ন রকম পেশার মানুষের সাথে ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং নিয়ে কথা বলবার সময়ে তারা আমাকে নানাভাবে বলেছেন (আসলে অনুযোগ করেছেন) যে, ভাল চাকরির খবরগুলো যেন চত্তিরের ফাটা মাঠের গর্তে লুকিয়েছে, যেমনটা লাঙ ফিশ জমীনের পানি শুকিয়ে গেলে মাটির তলে লুকোয়। অথবা, যেন অনেকটা মিলিয়ে গেছে মরুর মরিচিকার মতো। প্রথম সারি ও দ্বিতীয় সারি, অথবা, ব্রাহ্মন কর্পোরেট ও ক্ষত্রিয় বর্গের কর্পোরেট জব, তথা উত্তর পাড়া ও পশ্চিম পাড়ার ’অরজিনিয়াল’ বিলাতি কর্পোরেট, ভাবনায় কর্পোরেট, জায়ান্ট কর্পোরেট, উদীয়মান কর্পোরেটের উঁচু তলার ও ভাল ভাল পজিশনের জবগুলো যেন ডুমুরের ফুল হয়ে গেছে। অথচ, লিংকডইন খুললেই রোজ গন্ডায় গন্ডায় অমুকের, তমুকের
"I am happy to share, that, I have started my new journey with..................." এর শেষ নেই।
অথচ, তারা ঘুনাক্ষরেও জানতে পারেননি, যে, ওই কোম্পানী (যেটা তারও স্বপ্নের ঘর)তে আদৌ ওপেনিং ছিল। বাজারে শুধু হা-হুতাশ, যাকেই জিজ্ঞেস করেন, হা-হুতাশ, “ভাই, মার্কেট ডাল।” অথচ, অনেকে নাকি এরই মধ্যে রীতিমতো বাচ্চার ন্যপি বদলাবার মতো, অথবা, উঠতি সুন্দরীর বয়ফ্রেন্ড বা সুগার ড্যডি বদলাবার মতো ক্ষনে ক্ষনে চাকরি বদলাচ্ছেন। সেটাও আবার তাগড়া তাগড়া জব। কীভাবে সেটা হচ্ছে-তারা অবাক।
ওনাদের সাহস করে একটি কথা বললাম। (আমি ভুলও হতে পারি, আর আমি ভুলভাল বকার জন্য কুখ্যাতও।)
ভাই, ব্রাহ্মণ ও ক্ষত্রিয় কর্পোরেট জবগুলো চলে গেছে কয়েকটি ঘরানার সিন্ডিকেটের পকেটে।
উত্তর পাড়ার বড় বড় পজিশনগুলো চলে গেছে বিশেষ রাষ্ট্রের ‘আদম খোঁজক’ তথা হেড হান্টিং ফার্মের কব্জায়। ওসব কপ্পোরেটের বড় পজিশনে হয় বিশেষ যোগ্যতাসম্পন্ন বিলাতি কর্তারা স্থান পাবেন, আর, তা না হলেও দেশী অথচ ওনাদের মনপছনদ কেউ সুযোগ পাবে। (গেস করে নিন উত্তর পাড়া কোনটা। আমার আগে পরের লেখা পড়লেও বুঝবেন।)
পশ্চিম পাড়া ও খাঁটি দেশী অথচ ক্ষত্রিয় বর্ণের কর্পোরেটের লোভনীয় পজিশনগুলোর জব এ্যকসেস চলে গেছে দেশীয় আদম ব্যাপারী ও কতিপয় পীর-ফকির, ব্রাহ্মণ কর্তা, সহমদ ভাই, ভাইয়া, ছ্যাড় এর মিলিত সিন্ডিকেটের পকেটে। ওনাদের এলিট ক্লাবের সদস্য না হলে আপনার ভাগ্যে শিঁকে ছিড়বে না। কদাচিত আপনাকে ডেকে ইন্টারভিউ নামের নাটক হলেও রেজাল্ট ফক্কা। দেশের বিশাল ও টপ একখানা বিলাতি প্রতিষ্ঠানে এক বড়ভাই ২ মাসব্যপী সুদীর্ঘ ও ক্লান্তিকর ইন্টারভিউ দিয়ে এসেছেন। কোনো ফলাফল নেই। ফিডব্যক তক নেই। বিলাতি কোম্পানী ও ব্রাহ্মন।
তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেন, ভাই, কী করতে হবে, কী করলে দেবতার দেবলয়ে ভাগ্যের ঘন্টা বাজবে?
বললাম, ভাই, আপনাকে এলিট ক্লাবে ঢুকতে হবে। কোরাম ও সিন্ডিকেটের বাজারে, ক্লাবে, সোসাইটিতে বিলঙ করতে হবে। লাল শাড়ি ও লাল পানির বাজার, যেখানে শাড়ি ও পানি হাত বদল হয়, সেই বাজারে গমনাগমন, সূরা ও হুরায় মন না ডোবালে জাতে উঠতে পারবেন না, রসালো চাকরিও মিলবে না। আরেকটা কাজ করতে হবে। সেটা হল, যেমনটা আপনি নন, তেমনটা নিজেকে উপস্থাপন করতে হবে। আজ অমুক স্থানে চেকিন, কাল তমুক সেভেনস্টার হোটেলে চেকিন, সকালে সেমিনারে চেকিন, বিকেলে ক্লাবে চেকিন, এই মাসে পাতাইয়া, পরের মাসে ভ্যানিশ, তারপরের সপ্তায় ড্যানিস, ওই ভাইয়ার সাথে কফি পান, আরেক আপ্পির সাথে সূরা পানের পোস্ট ও ছবি দিয়ে গণমানুষের চোখে আপনাকে একজন কেউকেটা, গ্ল্যামরাস, পাওয়ারফুল, ইনফ্লুয়েন্সার ও দশজনের একজন হিসেবে প্রোথিত করে নিতে হবে। আপনার সত্যিকারের সামর্থ্য যা-ই হোক। লাগলে ভাড়া করে এনে হলেও পঙ্খীরাজে চড়বেন, ধারে এনে আচকান পরবেন। ছুটির দিনে হোক, কাজের দিনে হোক, ছ্যড়ের কাছে চলে যান, ছ্যড়কে তোহফা হস্তান্তর করুন, নিজের কেনা টি-শার্ট ভাইয়াকে/আপ্পিকে দিয়ে নিজেকে দেয়ান, তারপর পিক দিন, “শ্রদ্ধেয় ও অতল ভালোবাসার ‘পূ’র কাছ থেকে গিফট পেলাম। মানুষের মনে জ্বালা ও পোড়া ধরিয়ে দিন। ভয় ধরিয়ে দিন কর্পোরেট মহাকাশের সবার চিত্তে।
দেখবেন, আপনি তখন চাকরি নন, চাকরি আপনাকে খুঁজছে। ভাইয়া ও আপ্পিরা আপনাকে ডাকছে।
কোরামের আলাপে ফিরি।
এই কোরাম, এই পরম্পরাহ’র উৎস ও শান-এ-মাকাম হতে পারে অভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব (ওই যে আজকাল নানারকম ইয়ান/টিয়ান শোনা যায়, যেমন ঢাবিয়ান, চবিয়ান, খুবিয়ান, জাক্কায়ান, বুয়েটিয়ান, রুয়েটিয়ান, নসুয়ান, ইউলাভান-ওসব আরকি), হতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি (ব্যবসাবানিজ্য, ছলাকলা, বিজ্ঞান, অজ্ঞান কত কী), হতে পারে সাবজেক্ট, হতে পারে দাদার বাড়ির অঞ্চল, হতে পারে বিলাতি ডিগ্রীর ব্যাচমেটিত্ব, হতে পারে এলিট কেলাবের চাঁদাদাতা ডোনারশীপ, হতে পারে বুড়োকালের বন্ধুত্বের প্লাটফরম, হতে পারে যৌথ কারবারের সংযোগ, হতে পারে কমোন স্বার্থের যোগসূত্রও। অনেকটা ওই “উত্তরা বারো নম্বরস্থ লাইসেন্সবিহীন ভ্যানচালক লীগ’ এর মতো।
কোরামের বালামে ও পবিত্র তীর্থে আপনার নাম অন্তর্ভূক্তির জন্য আপনার হাই TRP এবং সেলেব হওয়া বাঞ্চনীয়। বাঞ্চনীয় কী বলছি, ফরজে আঈয়েন।
যে প্রকারেই অর্জিত হোক, আপনার উচ্চ TRP যুক্ত স্টারডম ও স্টারডাস্ট আপনাকে কোরামের দলভূক্তিতে সাহায্য করবে। এই দলভূক্তি আবার অসংখ্য নাজনেয়ামতের নিশ্চয়তা দেয়। যার ভিতরে লোভনীয় পদ-পদবী, উচ্চবেতনের নোকরি, স্বপ্নের প্লাটফরমে জব, ‘অন্যরকম বিষয়সমূহ’ কত কী-ই না আছে। কোরাম হুজুরের ফুঁ থাকলে, বা, ইজমের তাবিজ গলায় ঝুলালে আপনার “এক পা কোরামে, আরেক পা হেরেমে (স্বপ্নের কর্পোরেটে)।” ফোরামের ছু মন্তরে ক্যাবলাকান্তও হয়ে যাবে কমলাকান্ত। যোগ্যতা টোগ্যতা সব ফুহ।
একজন অত্যন্ত বোদ্ধা প্রফেশনালের রেওয়ায়েত খুব মনে ধরায় এখানে একটু কুচুত করে শেয়ার করি,
“আপনি যখন নতুন কোথাও চাকরি নিয়ে চলে যাবেন, তখন, পুরোনো সংসারের ম্যাজিকাল কুরসীখানায় সবসময় আপনার অনুগত ও বিশ্বস্ত কাউকে রেখে যাবেন।”
অর্থাৎ, প্রতিষ্ঠানগুলোও কোরাম ও সিন্ডিকেটের নির্ধারিত পরম্পরা ও ঘরানার শিকার। অনেকটা গুলাম আলি ঘরানার গজল শোনা প্রতিষ্ঠান কখনো জগজিৎ সিংয়ের গজল গাঈয়ে পাবেন না। কারন, মহান, মহিয়ান ও পবিত্র কোরাম হতে যা উৎসারিত হবে, তারাতো সেটির ঔরশজাত কাউকেই পাবেন। ফলে ডাইভারসিটির বাপ্পি কো মাম্মি।
কোরাম ও ইজম- দুটোই বিলেতি শব্দ। আগে ও দুটো কেবল বাস্তব জগতে বিদ্যমান থাকলেও সেটা আজকালকার যামানার রীতি অনুসরন করে ভার্চুয়ালেও এসে গেছে। ফেসবুক বা লিংকিতে কোরাম ও ইজমের জয়জয়কার। এখানে ব্যক্তি টু ব্যক্তি, ফেবু ফ্রেন্ড টু ফেবু ফ্রেন্ড, গ্রূপ বা পেজের সদস্যদের মধ্যে কোরাম ও ইজম মারাত্মক। এই কোরাম আবার পিঠ চুলকানো নীতিতে অপারেট হয়।
নিজ নিজ কোরামের কাজে লাইক বন্যা, কমেন্ট হাইপ। আবার অপজিট কোরাম হলে সব স্পিকটি নট। বিশেষত গ্রূপ হলে। তা সে যতই সুশীল গ্রূপ হোক, বিশুদ্ধ ভাষা চর্চা, বিশুদ্ধ শাস্ত্রীয় সঙ্গীত গ্রূপ, মায় ধ্যানের গ্রূপ তক। কাহিনী কমোন। এখানে, এক কোরামের সদস্যরা তার কোরামের লোকেদের কাজ, লেখা, পোস্ট ও ক্রিয়েশনে দলবেঁধে হাইপ তুলবে, লাইক, কমেন্ট, আহা, উহু, মরে গেলাম, কঠিন, জটিল, অস্থির, বাহ, সহমত ভাই, সহবাস ভাই হতে শুরু করে তেলবাজির অর্গাজম ঝড় তুলবে।
একটা সময় ছিল, মানুষ ব্যক্তিগত স্বার্থে ব্যক্তিগত পর্যায়ে চাটুকারিত্ব বা তোষামোদিত্ব করত। এখন সময় পাল্টেছে।
ব্যক্তিগত মোসাহেবি ও তৈল প্রদান তো আছেই। তার সাথে যোগ হয়েছে দলগত, গোষ্ঠীগত, কোরামগত এবং কর্পোরেট মোসাহেবি ও চাটুকারিত্ব।
এই শেষ দলটা দলেবলে মিলে এখন গোবরের পায়েসকেও মহামূল্যবান কোহিনূরের পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে। নিয়ে যায়। এদের গোয়েবলসিয় প্রচারনা নির্দিষ্ট মিথ্যাকে সত্যে পরিণত করে দেয়।
দল বেঁধে এরা চাটুকারিত্বের সিন্ডিকেট করে পরস্পরের পিঠ চুলকায়। আর তা দেখে দেখে নেটিজেন বা ফেসবুকাগ্রনতা (ফেসবুক+জাগ্রত+জনতা) গোবরের পায়েসকেই মহাভোগ মনে করে গেলে, কিংবা গেলার জন্য লাইন দেয়।
ঠিক তার বিপরীতে, এক কোরামের লোক আরেক কোরামের কারো লেখা, পোস্ট, কাজে-দলবেঁধে পঁচাবে, একত্রে প্ল্যান করে ঘোঁট পাঁকাবে, দলবেঁধে নেগেটিভ হামলা করবে, ব্যক্তিআক্রমণ করবে। একজন গুড়ের, মানে সাইজ করার মতো ভিন্নমতাবলম্বী কাউকে পেলে সে হরি হরি বলে ট্যাগ ও মেনশন করে তার কোরামের বাকিদের ডেকে আনবে গালাগাল দিতে। ওই যে, এক ঝাঁকের কুকুরকে কিছু বললে সে গিয়ে বাকিদের ডেকে নিয়ে এসে সবাই মিলে ঘেউ ঘেউ করার মতো। কিংবা কউয়া কা কা করার মতো।
রান্নাবান্না, বেঁচাকেনা ও রমনী নির্ভর গ্রূপগুলোতে এই ধুন্দুমার আরও মশহুর।
বিশেষত, যেসব নারীবাদী ও পুরুষবাদীরা একচেটিয়াভাবে বিশ্বাস ও প্রচার করেন, যে, নারীরাই কেবল অবলা ও নির্যাতিত, তাদের জ্ঞাতার্থে জানাব, সাইবার বুলিংয়ে মেয়েরা সংখ্যায় হয়তো পুরুষের সমান এখনো হতে পারেনি, তবে ধারে ও বিষাক্ততায় তারা মেডাল পাবার পর্যায়ে চলে গেছেন।
চিয়ার্স।
নারী স্বাধীনতা ও নারী মুক্তি জিন্দাবাদ।
নারীবাদ জিন্দাবাদ।
সুশীল সমাজ হতে তুমি বাদ।
আজকাল বন্ধু হতেও যোগ্যতা লাগে, কোটা লাগে, কোরাম লাগে, হ্যাডম লাগে-পকেটের, সকেটের। তা না হলে কেউই পুঁছবে না। তেলাপোকা আর ডাউনোসরের বন্ধুত্ব বাবা আদমের যুগে হলেও এই জুকারবার্গ যুগে সেটা হবার নয়।
যদি পারতাম, আমিও একটা আন্দোলন শুরু করতাম। ’কোরামমুক্ত’ বা ‘ব্লকমুক্ত’ বন্ধুত্ব আন্দোলন।
এটা এমন একটি স্বপ্ন যেখানে বন্ধুত্বে থাকবে না, কোরাম, ব্লক, কমিউনিটি, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, ’এ্যালাকা’, ‘অমুক প্রজন্ম’, ‘তমুক ব্যাচ’, ”ওই বিশ্বাসের’, নির্দিষ্ট বলয়ের, সীমিত ঘরানার, ”নিজের কোলের”, “আমাদের মতো আমরা”-টাইপের কোনো সীমানা বা গন্ডি।
বন্ধুত্ব হবে ওপেন, সবার সাথে সবার। কোনো ফিল্টারিং থাকবে না। নিজেদের ঘরের ছিটকীনি দিয়ে নিজেরা বন্ধু থাকব, বাকিদের সাথে বন্ধু বন্ধু কুতকুত খেলব-দারুন তামাশা।
খুব কি অসম্ভব সেটা?
এই লেখার সাথে আপনি যদি কোনো চলমান হাইপের সম্পর্ক খোঁজেন, তার দায় আপনার। আর যদি এটা পড়ে আপনার মনে হয়, “হালায় কি আমারেই কইলো?”-তাহলে কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের চিকিৎসা করান। আমি অসংখ্যবার বলেছি, লাগলে একবুক গঙ্গাজলে দাড়িয়ে আরও দশবার বলব, ব্যক্তিগতভাবে ও একক কাউকে বা কিছুকে নিয়ে আমি কোনোদিন লিখি না। আর যদি আমাকে ব্যন করেন, আমার রিজিক মেরে দেবার ধান্দা করেন, তাহলে বলব, ভাই, আমি একজন গারমেন শ্রমিক। আমাকে নিয়ে সময় নষ্ট করাই বেহুদা। যতক্ষণ আমাকে গালাগালে নষ্ট করবেন, সেই সময়টাতে ‘গণোরিয়া জিন্সে’ কফির ঘটিটাতে আরেকটা বাড়তি চুমুক দিন না, আপনার প্রিয় কোনো ‘পূঁ’র সাথে।
০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:১৭
বেচারা বলেছেন: আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
২| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:০৫
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: লেখাটি সুন্দর হয়েছে তবে কি মন্তব্য করবো বুঝে উঠতে পারছিনা।
০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:১৭
বেচারা বলেছেন: হা হা। এটাই অনেক কিছু বলা হয়ে গেল।
৩| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:২৩
রাজীব নুর বলেছেন: কি মন্তব্য করবো? বুঝতে পারছি না।
০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:১৭
বেচারা বলেছেন: অবস্থা আসলে এর চেয়েও নোংরা
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:৫৬
নিবর্হণ নির্ঘোষ বলেছেন: বলবার কিচ্ছু নেই ! কেবল কৃতজ্ঞতা জানবেন !