নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভুয়া মফিজ

ভুয়া মফিজের সাথে ভুয়ামি না করাই ভালো...

ভুয়া মফিজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটি ডুবে যাওয়া সত্ত্বার গল্প

২৫ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ১১:৪১



খুউব ভোরে লঞ্চ থেকে সদরঘাটে এসে নামলো ফারুক। ঢাকায় প্রথমবার একা এসেছে সে। ঢোলাঢালা ট্রাউজার্স আর ততোধিক ঢোলা একটা হাফ হাতা শার্ট পরনে। পায়ে হাওয়াই চপ্পল। লাগেজ বলতে একটা ব্যাগ আর একটা তোবড়ানো স্যুটকেস। ব্যাগটা কাধে ঝুলিয়ে স্যুটকেসটা বুকের সাথে চেপে ধরে এক কোনায় গিয়ে দাড়ালো। বাড়ি থেকে যখন বের হয়, তখন পর্যন্ত স্যুটকেসটাতে হাতল ছিল। রিক্সা ভ্যানে উঠতে গিয়ে হাতল ধরে টান দিতেই শুধু হাতলটা উঠে এসেছিল হাতে। দুর্বল হাতলটার ক্ষমতা ছিল না স্যুটকেসের ভার বইবার।

কোনায় দাড়িয়ে এদিক-ওদিক তাকালো ফারুক। ওকে নেয়ার জন্য জালাল ভাইয়ের আসার কথা। জালাল ওর পাড়াতো বড়ভাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। বাবা পই পই করে বলে দিয়েছেন, লঞ্চঘাট থেকে একা যেন বের না হয়। ঢাকার অলিতে গলিতে চোর-বাটপারের আস্তানা; জালাল না আসা পর্যন্ত লঞ্চঘাটেই যেন বসে থাকে। গতমাসে বাড়ি গিয়ে জালালও এটাই বলে এসেছে ফারুককে। বলেছে, আমার যদি আসতে একটু দেরীও হয়, ঘাটেই বইসা থাকবি। আমি আসবো নিশ্চিত! সেইমতে ও ঘাটেই বসে আছে। এরই মধ্যে কয়েকজন কুলি আহেন, কই যাইবেন, রিক্সায় তুইলা দেই…..বলে ওর বাক্স-প্যাটরা ধরে খানিকটা টানাটানিও করেছে। ফলে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে ওর মুল্যবান অস্থাবর সম্পত্তি আরো আকড়ে ধরে বসে আছে ও।

ফারুক আহমেদ। বরিশালের কোন এক গ্রামের দরিদ্র স্কুল শিক্ষকের বড় ছেলে। এসএসসি আর এইচএসসিতে মেধা তালিকায় থাকার কারনে এই ছেলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেতে কোন সমস্যা হয়নি। বাবা বড় আশা নিয়ে ওকে ঢাকা পাঠিয়েছে। ছেলে বড় হবে, পাশ করে বের হয়ে আরো বড় হবে। সংসারের হাল ধরবে। ছোট দুইভাই আর একমাত্র বোনের দায়িত্ব নিবে……..আরো কতো কি!! বুক চিড়ে একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস বেড়িয়ে এলো ফারুকের। পুরো সংসার তাকিয়ে আছে ওর দিকে। সামনে অনেক অনেক চ্যালেন্জ, পারবে তো! চোয়াল শক্ত হয়ে এলো ওর; পারতে ওকে হবেই। বাবা বলতে গেলে নিয়মিতভাবে তেমন কোন টাকাই দিতে পারবেন না। টিউশনী করে পড়ার খরচ চালাতে হবে। একা বসে বসে এসব আকাশ-পাতাল ভাবছিল ও। ভ্যানে ওঠার সময় যখন স্যুটকেসের হাতলটা ভেঙ্গে যায়, তখন বাবার যেই করুণ চেহারা হয়েছিল সেটা কিছুতেই মন থেকে সরাতে পারছে না। বাবা কিছুই বলেন নাই, কিন্তু চেহারাতে পরিস্কার লেখা ছিল নিজেকে ব্যর্থ মনে করা এক পিতার বেদনাকাতর প্রতিচ্ছবি!

সকাল নয়টা বেজে গিয়েছে। গতকাল সেই সন্ধ্যারাতে বাড়ির থেকে খেয়ে বের হয়েছে, তারপরে পেটে দেয়া বলতে লঞ্চে অল্পকিছু বাদাম। ক্ষুধায় মনে হচ্ছে নাড়িভুড়ি সব হজম হয়ে যাবে। ত্যক্ত-বিরক্ত হয়ে যখন ভাবছে একা একাই রওয়ানা দিবে, তখন দেখতে পেল জালাল আসছে। চোখে সানগ্লাস, পোশাক-আশাক বাড়িতে যেমন দেখে তার থেকে একেবারেই ভিন্ন। ওকে দুর থেকে দেখেই হাত নাড়লো। কাছে এসে বললো,

দ্যাখ অবস্থা! কাইল বলতে গেলে সারা রাত কাম করছি। সকালে ঘুম থিকা উঠতে দেরী হইলো। চল চল…..তোর তো দেখি হালুয়া টাইট অবস্থা। মুখের দিকে চাওন যায় না। খাস নাই কিছু? তারপরে উত্তরের অপেক্ষা না করেই বললো, চল আগে হোটেল থিকা নাস্তা কইরা লই। তারপরে যামু!

রিক্সায় উঠে ফারুক জিজ্ঞেস করলো, ভাই, সারা রাইত কিয়ের কাম করছেন?

জালাল চোখ নাচিয়ে বললো, জানবি, জানবি। সবই জানবি আস্তে আস্তে। আগে তোরে একটা খারাপ খবর দেই। তোর জন্য বেড ম্যানেজ করতে পারি নাই। ডাবলিংও না। আপাততঃ তুই আমার রুমে ফ্লোরিং করবি। কিচ্ছু করার নাই। তয়, বড়ভাই কইছে ছয় মাসের মইদ্দে তোর ব্যবস্থা করবো। তুই টেনশান করিস না।

রিক্সা এসে থামলো সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের সামনে। এটাই ওর হল। ঢাকায় আগামী ৫/৬ বছরের ঠিকানা।

পরদিন সকালে ফারুক গেল হল প্রভোষ্টের অফিসে। রেজাল্ট অনুযায়ী ওর হলে সীট পাওয়ার কথা। কিন্তু প্রভোষ্ট অফিস থেকে ওকে কোনরকমের আশ্বাস না দিয়ে একরকম তাড়িয়েই দিল। বের হয়ে আসার সময় পিয়ন তাকে এক কোনায় নিয়ে চুপি চুপি বললো, মামু, নতুন ভর্তি হইছেন, কাহিনী তো কিছুই জানেন না। রেজাল্ট দিয়া হলে সীট পাওনের দিন শ্যাষ। তয় আমারে ট্যাকা দিলে আপনের লেইগা ধারেকাছেই একটা মেস জোগাড় কইরা দিতে পারি। পিওনকে কিছু না বলে চলে এলো ও।

ছোট্ট একটা রুমের দুই খাটের মাঝখানে এক চিলতে জায়গায় বিছানা পেতে রাতে ঘুমাতে হয় ওকে; সবাই শুয়ে না পড়লে বিছানা পাততে পারে না। আবার সকাল সকাল ক্লাশের কারনে উঠতে হয়। এভাবে কেটে গেল তিনটা মাস। এদিকে হলের ছাত্র সংসদের সভাপতি আর সাধারন সম্পাদক আলাদা দলের হওয়াতে ক'দিন পর পরই হলের মধ্যে ধর ধর রব ওঠে। ফলে রাতের ঘুম মাঝে-মধ্যেই হারাম হয়ে যায়। একদিন জালাল সন্ধ্যাবেলা বললো, এ্যাই রেডি হ। বড়ভাই তোরে দেখা করতে কইছে।

হলের কমন রুমে রাজকীয় ভঙ্গিতে বসে রয়েছে হলের সাধারন সম্পাদক। চারিদিকে সাঙ্গ-পাঙ্গ। সিগারেটের ধোয়ায় ঘর যেন কুয়াশাচ্ছন্ন! আগেই জালাল ফারুককে বলেছে, গিয়েই বড়ভাইকে লম্বা করে সালাম দিতে। সেই অনুযায়ী সালাম দিতেই ভাই উঠে এসে ফারুকের হাত ধরে পাশে বসালো। বড়ভাইয়ের আন্তরিক ব্যবহারে একেবারে মুগ্ধ হয়ে গেল ফারুক। বড়ভাই ফারুককে দেখিয়ে জালালের দিকে তাকিয়ে কিছুটা ধমকের সুরে বললো,

কিরে…..অর চেহারা-সুরতের এই অবস্থা ক্যান? কাইল এলিফ্যান্ট রোডে নিয়া গিয়া অরে স্মার্ট বানায়া আনবি। তগো সব কথা কয়া দিতে হয়! আকাইম্মা কোনখানের!!!

তারপরে ফারুককে বললো, তোর মতোন মেধাবী একজন ছাত্র আমার হলে কষ্টের মধ্যে আছে; এইটা কোন ভালো কথা না। আর দুইটা দিন অপেক্ষা কর। তোর ব্যবস্থা করতাছি।

এরই মধ্যে বাইরে থেকে দুইজন এসে বড়ভাইকে সালাম দিয়ে বললো, ভাই, জিনিসপাতি সব রেডি। এখন আপনে খালি কইলেই কাম শুরু করুম।

তারপরে সবাই মিলে কি একটা অপারেশান নিয়ে কথা বলা শুরু করলো, যার কিছুই ফারুকের মাথায় ঢুকলো না। ফারুক ওঠার জন্য উশখুশ করতেই জালালের চোখের কড়া ইশারায় ঠান্ডা মেরে গেল। একটা সময়ে জালাল ওকে নিয়ে বাইরে চলে এলো। বললো, বড়ভাইয়ের সামনে কিছু আদব-কায়দা আছে। উনি নিজের থিকা না বললে উইঠা আসা যাবে না। আস্তে আস্তে তোরে এইসব শিখতে হইবো। আর শোন, পরশু রাইতে আমরা হলের সভাপতিরে হল থিকা খেদামু। তারপরে তুই সীট পাবি। কি…....অখন খুশী তো!!

সভাপতিকে খেদানোর সাথে ওর সীট পাওয়ার সম্পর্ক না বুঝলেও, সীট পাবে…..এই খুশীতেই আনন্দে আটখানা হয়ে গেল ফারুক।

পরদিন জালালসহ হলের আরো দুই সিনিয়রের সাথে এলিফ্যান্ট রোডে গেল ফারুক। সবাই মিলে পছন্দ করে ওর জন্য কয়েক জোড়া জিন্সের ট্রাউজার্স, স্নিকার্স, জিন্সের শার্ট এসব কিনলো। ফারুকের প্রতিবাদে কোন কাজ হলো না। জালাল ওকে জানালো, এটা বড়ভাইয়ের আদেশ। তবে সবচেয়ে যেটা ফারুককে আশ্চর্য করলো, সেটা হলো…...এসব দামি দামি জিনিসপত্রের কোন দামই পরিশোধ করলো না কেউ! ততোধিক আশ্চর্যের বিষয়, কোন দোকানদার ওদের কাছ থেকে কোন দামও চাইলো না। এসব নতুন দামী আউটফিট আর দু'দিন পরে নতুন রুম নিয়ে এক নতুন জীবন শুরু হলো ফারুকের।

মাস ছয়েক পরের কথা। কাপড়-চোপড় পরিবর্তনের সাথে সাথে ফারুকের জীবন যাত্রায়ও বেশ পরিবর্তন এসেছে। বড়ভাইয়ের আদেশে মাঝে-মধ্যে মিটিং-মিছিলেও যেতে হয়। একদিন সন্ধ্যাবেলা রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের সামনের মাঠ দিয়ে একা একা হেটে হলে ফিরছিল ফারুক। ও যেই রুমে এখন থাকে, সেইরুমের বিতারিত এক সিনিয়র ভাইসহ চারজন ওকে ঘিরে ধরলো। তাদের মধ্যে একজন বললো, কিরে, জিএসের চামচা! গেরাইম্যা খ্যাত……..ভালোই তো স্মার্ট হইছস দেখি!

ফারুকের কাছে ওদের মতিগতি সুবিধার মনে হলো না। বললো, আমি তো ভাই কারো চামচা না। একই হলে থাকি, নেতাদের মন জোগায় চলা লাগে।

একজন এগিয়ে এসে ঠাস করে ওর গালে একটা চড় কষিয়ে দিল। বললো, চামচার আবার মুখে মুখে কথা! এক্কেরে চোখ উঠায়া ফালামু। চামচা না হইলে রুম পাইলি কেমনে?

ফারুক প্রতিবাদের সূরে বললো, রুম তো আমার এমনেই পাওয়ার কথা। আপনে থাপ্পড় দিলেন ক্যান?

খানকীর পোলার তো দেখি বড় বাড় বাড়ছে………...বলে একজন আরেকটা চড় দিতেই চারজনই একসাথে ওর উপর ঝাপিয়ে পড়লো। সমানে উপুর্যপুরি চড়, লাথি আর ঘুষির মুখে টিকতে না পেরে একসময়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো ফারুক। ওই অবস্থাতেই আরো কিছুক্ষণ স্টীমরোলার চললো ওর উপর। তারপরে একসময়ে ওকে ফেলে চলে গেল ওরা। এক রিক্সাওয়ালার সাহায্যে কোন রকমে হলে আসতে পারলো ফারুক। তারপরে আর কিছুই মনে নাই ওর।

ওই ঘটনার পরে জীবন পুরাটাই পাল্টে গেল ফারুকের। বড়ভাইয়ের কড়া নির্দেশে সন্ধ্যার পর আর একা একা চলাফেরা করে না ও। এর মধ্যে একদিন রাতে জালাল ওকেসহ আরো দু'জনকে হলের ছাদে নিয়ে গেল। একটা কাটা রাইফেল বের করে বললো, এইটা দেখছস? চালানো শিখতে কইছে বড়ভাই। সামনে কামে লাগবো।

রাইফেলটা হাতে নিল ফারুক। এই জিনিস ও আগে দেখেছে, কিন্তু চালায় নাই কখনও। জালাল ইন্সট্রাক্টরের সুরে বলা শুরু করলো, এইটার আসল নাম লী এনফিল্ড রাইফেল। প্রচলিত নাম থ্রি নট থ্রি রাইফেল। নল কাইটা ছোট করা হইছে, তাই এইটারে কাটা রাইফেল কয়। নল কাটার কারনে এইটা শব্দ করে ভয়াবহ রকমের, তবে কাউরে টার্গেট কইরা গুলি ছুড়লে লাগার সম্ভাবনা কম। গুলি এলোপাতাড়ি কোনদিকে যে যাইবো, তার কোন ঠিক ঠিকানা নাই। তাছাড়া, এইটার স্টক কাইটা ছোট করার কারনে লুকায়া ক্যারী করতে সুবিধা কিন্তু যে চালায়, সে এইটার ধাক্কা ঠিকমতোন সামলাইতে পারে না, তাই টার্গেট শুটিংয়ের চান্সও কম। সোজা কথা, এইটা মারার চাইতে ভয় দেখায় বেশী। বুঝাইতে পারছি? তিন শিক্ষানবীশ সবেগে মাথা নাড়ায়…….বুঝেছে!!!

ভার্সিটিতে দুই বছর হতে চললো ফারুকের। লেখাপড়া মাথায় উঠেছে। পরীক্ষা দেয় কি দেয় না, কিন্তু পাশ ঠিকই করে যায়। পুরো সময় কাটে পার্টির কাজে। ক্যাম্পাসের উঠতি ক্যাডার এখন ও। নাম-ডাক হয়েছে মোটামুটি। ক্যাম্পাসে একটা চক্কর দিলে সালাম খুব একটা কম পায় না! এমন অবস্থায় একদিন রাতে দুই চামচাসহ বৃটিশ কাউন্সিলের সামনে দিয়ে সলিমুল্লাহ হলে যাচ্ছিল, হঠাৎ দেখা হয়ে গেলো ওকে প্যাদানী দেয়া সেই বিতারিত সিনিয়র ভাইয়ের সাথে। মনে মনে একে অনেকদিন ধরেই কায়দামতো পাওয়ার চেষ্টা করছিল; কি সৌভাগ্য! আজ একেবারে খাপে খাপে মিলে গেল। ব্যাটার কাকুতি মিনতির ধারে কাছে দিয়ে গেল না; মাটিতে পেড়ে ফেলেই সময় নষ্ট না করে ধারালো ছুরিটা দিয়ে দ্রুত কয়েকটা পোচ দিল বুকে-পিঠে। এক চামচা বললো, ভাই এতো ভেজালের দরকার কি? দেই মাদারচোদের মাথায় একটা বিচি ঢুকায়া! কড়া একটা ধমক দিল ও। ভিসির বাংলোর আশেপাশে সবসময়ে পুলিশের টহল দল থাকে। গুলির শব্দে এখানে আসা মিনিটের ব্যাপার মাত্র!!!

কাজ শেষ করে হাত দিয়ে ঘামে চটচট করা মুখটা মুছলো ফারুক। মুখে কেমন একটা নোনতা স্বাদ পেল। অন্ধকারে খেয়ালই করে নাই, হাতে লেগে থাকা হারামজাদাটার রক্ত ঘামের সাথে মিশে মুখে চলে এসেছে! স্বাদটা খুব একটা খারাপ লাগলো না ফারুকের। এর সাথে দীর্ঘদিনের আশা পূরণ হওয়ার একটা আত্মতৃপ্তির ব্যাপার মিশে আছে যে! আসলে রক্তের নেশা খুব খারাপ জিনিস। মানুষকে জানোয়ারে পরিনত করতে সময় নেয় না খুব একটা।

কয়েক মাস পরের কথা। ছেলের পরিবর্তনটা দরিদ্র স্কুল মাস্টার বাবার নজর এড়ায়নি। তাছাড়া কানে কানে ভেসে অনেক উরাধুরা কথাই কানে আসে। সবকিছু নিজের চোখে দেখার জন্য কোন এক কাকডাকা ভোরে হলে এসে হাজির হলেন তিনি। ছেলেকে ঘুম থেকে উঠালেন। ছেলে বাবাকে বিছানায় বসতে বলে বাথরুমে গেল ফ্রেশ হতে। রুমে ফিরে এসে দেখে বাবা ওর সব সময়ের সঙ্গী বালিশের নীচে রাখা সিক্স শুটারটা কোলে নিয়ে বসে আছেন। উদভ্রান্ত দৃষ্টি। সেই দৃষ্টি তুলে বাবা যখন ছেলের দিকে চাইলেন, ছেলে বাবার সেই সেদিনের চেহারাটা দেখতে পেলো; যেদিন স্যুটকেসের ভাঙ্গা হাতলটা হাতে উঠে এসেছিল!!

দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ৩০৩ নম্বর কামরায় সময় সেদিন থমকে গিয়েছিল। ছেলে বাবার দিকে, আর বাবা ছেলের দিকে তাকিয়ে….হয়তো কয়েক মূহুর্ত কিংবা কয়েক ঘন্টা! তাদের দু'জনের মনের আকাশে সেদিন কি ঝড় উঠেছিল, তা কেউ জানেনা। হয়তো এক বাবা তার সামনে দাড়িয়ে থাকা চেনা কিন্তু অচেনা এক ছেলের মাঝে তারই হারিয়ে যাওয়া ছেলেকে খুজছিলেন! আর ছেলে? ডুবে যাওয়ার যে একমুখী রাস্তা সে ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় বেছে নিয়েছে, হয়তো বা তার পরিণতি নিয়ে চিন্তামগ্ন ছিল।

তবে সেদিনের আসল দৃশ্যপট কারো জানা নাই। কেউ জানার চেষ্টাও করে না। কারন, সবরকমের ভাগ্যের নিয়ন্তা সমাজের কিছু অমিত শক্তিধর, অদৃশ্য বাশীওয়ালা…...যাদের বাশীর মাদকীয় সুরে নিয়ন্ত্রিত হয়, ডুবে যায় মেধাবী কিছু তরুনের ভবিষ্যত; আর সেই সাথে সলিল সমাধি ঘটে কিছু পরিবারের দীর্ঘদিন লালিত সুখস্বপ্নের।

ফটো ক্রেডিটঃ view this link

মন্তব্য ৫৬ টি রেটিং +১৭/-০

মন্তব্য (৫৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ১১:৫৩

রানার ব্লগ বলেছেন: আর একটু রসালো করে লিখলে হেব্বি জমে যেতো।

২৫ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ১১:৫৬

ভুয়া মফিজ বলেছেন: এইটা রসালো করে লেখার মতো গল্প না। বেশী জমার দরকার কি? :)

২| ২৫ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১২:২১

মাসউদুর রহমান রাজন বলেছেন: গল্প ভালো লাগলো। শেষ দৃশ্যটা ঝিম ধরায়া দিছে মাথায়।

২৫ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:৫০

ভুয়া মফিজ বলেছেন: শেষ দৃশ্য লেখতে গিয়া আমারও মাথা ঝিম ঝিম করছে!! B-)

৩| ২৫ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১:১৯

শোভন শামস বলেছেন: জীবনের গল্প, বাস্তবতার নিরিখে

২৫ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:৫১

ভুয়া মফিজ বলেছেন: ঠিক বলেছেন, ধন্যবাদ। :)

৪| ২৫ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১:৪৬

জুন বলেছেন: বাস্তব গল্পে অনেক ভালো লাগা রইলো।
+

২৫ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:৫৮

ভুয়া মফিজ বলেছেন: থ্যাঙ্কু আপা! আপনেরেও ধন্যবাদ!!! ;)

৫| ২৫ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ১:৫১

রোকসানা লেইস বলেছেন: স্যুটকেস ধরে ক্যাবলা কান্ত দাঁড়িয়ে থাকা গ্রাম থেকে আসা ছেলেটার এমন পরিনিতি আসলে ইচ্ছা অনিচ্ছায় কত পরিবারের পরিবর্তন হয়ে গেছে।
এখনও কি একই অবস্থা হলে সিট পাওয়া এবং পড়া লেখার।
ভালো হয়েছে গল্প।

২৫ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:৫৬

ভুয়া মফিজ বলেছেন: এখনকার অবস্থা তো জানি না, তবে পড়ালেখার পরিস্থিতি ভালো হওয়ার কোন কারন নাই। আর বর্তমানে হল দখলের ব্যাপারটা যেহেতু গুরুত্বপূর্ণ না তেমন একটা, তাই মনে হয় সিট পাওয়া খুব কঠিন না।

ছাত্র রাজনীতির খপ্পড়ে পড়ে বহু পরিবারেরই সর্বনাশ হয়েছে। গ্রামের ছেলেরাই এসবের ফাদে পা দেয় খুব দ্রুত!! :(

৬| ২৫ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:৪৪

যাযাবর চখা বলেছেন: বাস্তব গল্প ভালো লাগলো।

২৫ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:৫৭

ভুয়া মফিজ বলেছেন: ধন্যবাদ। :)

৭| ২৫ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:১৬

অপু তানভীর বলেছেন: গল্পের শুরুতে মনে হচ্ছিলো যেন বেচারা ফারুক হয়তো বেঘোরে মারা পরবে নয়তো বড় ভাইদের কোন আকামের দোষ এসে পড়বে তার ঘাড়ে । তবে শেষ পর্যন্ত তা হয় নি ।

এই গল্পটারই একটা বাস্তব রূপ আমার নিজের চোখের সামনে ঘটতে দেখেছি । আমি যখন প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম তখন এই ফারুকের মত একজন লঞ্চে করেই এসেছিলো । শুরুর দিকে নিরীহ ছেলেই ছিল সে । কিন্তু প্রথম সেমিস্টার যেতে না যেতেই সে ভীড়ে গেল দলে । এবং বছর দুয়েকের ভেতরেই তার ভাবসাব সব বদলে গেল । হাটার ভঙ্গি বদলে গেল । চোখে সানগ্লাস ছাড়া চলেই না ।
একবার আমাদের ক্লাসেরই এক ছেলেকে মারধোর করলো । ক্লাসের সব কাজে নিজ থেকে মোড়লী করতে হাজির ।

২৫ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:২৯

ভুয়া মফিজ বলেছেন: গল্পের শুরুতে মনে হচ্ছিলো যেন বেচারা ফারুক হয়তো বেঘোরে মারা পরবে নয়তো বড় ভাইদের কোন আকামের দোষ এসে পড়বে তার ঘাড়ে। এমনটা তো হরদম হয়। ফারুকের মতো মানুষদের মারা পরতে কতোক্ষন? আজ না হয় কাল.....পরিণতির খুব একটা হেরফের হয় না।

ফারুকের মতো কম নাই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। ইন ফ্যাক্ট, আমার দেখা বেশীরভাগ ক্যাডারই এসেছে ঢাকার বাইরে কোন গ্রাম বা মফস্বল শহর থেকে। তাছাড়া, এদের বেশীরভাগই নিম্নবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্ত ঘরের। এর একটা মনস্তাত্বিক ব্যাপারও আছে। আপনিও নিশ্চয়ই জানেন বিষয়টা। কাজেই আর ব্যাখ্যাতে জাচ্ছি না।

একজন সেলেব্রেটি গল্পকার হিসাবে আমার এই গল্পটার ব্যাপারে আপনার মুল্যায়ন কি? :)

৮| ২৫ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০৮

সাজিদ! বলেছেন: বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় গন্ডিতে অনেক ডিপার্টমেন্টের ভীড়ে যেহেতু পড়িনি তাই ঝাঁঝটা আন্দাজ করতে আমার সমস্যা হচ্ছে। চমৎকার হয়েছে৷ শেরজা তপন ভাইয়ের রাশিয়া নিয়ে সিরিজে এমন একটা চরিত্র ছিল, যে এই রাজনীতির শিকার হয়ে রাশিয়া চলে গেছিল পড়তে।

২৫ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৫৪

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আসলে ঝাঝ আন্দাজ করা কঠিন কিছু না। আপনাদের মেডিক্যাল কলেজ আর বিশ্ববিদ্যালয়.......প্রোপোরশনেটলি ভাবলেই হবে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে এমন কারনে বাইরে চলে যাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রচুর; একটা সময়ে রাশিয়া (সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন) অনেকেই গিয়েছিল যারা বিশেষ করে বাম রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। তাদের জন্য তখন ব্যাপারটা সহজ ছিল।

পরিসর বিশাল হওয়ার কারনে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অলিগলিতে এমন লক্ষ লক্ষ গল্প জমা হয়ে আছে। দেয়ালে কান পাতলেই শোনা যায়। :)

৯| ২৫ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১১

মিরোরডডল বলেছেন:



এটা কি করে সম্ভব । ভুম এই গল্প লিখেছে !!!
কোথাও ভুল হচ্ছে নাহতো #:-S

এতো ভুম টাইপ লেখা না ।
ভুমের কি শরীর খারাপ, নাকি মন খারাপ ।
কিছু একটা হয়েছে নিশ্চয়ই । নইলে হঠাৎ B:-)

২৫ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৫৫

ভুয়া মফিজ বলেছেন: 'ভুম টাইপ লেখা' বলে কোন কথা নাই। আমার একই অঙ্গে অনেক রুপ! একেক সময় একেক রুপ দেখাই!! :P

শরীর-মন ঠিকই আছে, আবার ঠিক নাইও। বিদেশে বসে দেশের বর্তমান অবস্থার কথা ভাবলে মন খারাপ হয়। বিড়ি খাওয়ার কারনে শরীরও খারাপ হয়। ইটস অল এবাউট স্টেট অফ মাইন্ড!!!

১০| ২৫ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:১৪

মিরোরডডল বলেছেন:



ভুম এরকম জীবনের গল্পও লিখতে পারে বা লেখে, আসলেই ঝানতাম না :)
যাইহোক, ভালো লিখেছে ।
মানুষের জীবনে ঘটে যাওয়া সচরাচর ঘটনা যার পরিণতি খুবই করুণ ।
একজন মেধাবী নক্ষত্রের খসে পরার গল্প ।
আনএক্সপেক্টেড এন্ড আনওয়ান্টেড, তারপরও ঘটছে ।


২৫ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০২

ভুয়া মফিজ বলেছেন: কেন......জীবনের গল্প কি আগে লেখি নাই? চোখ-কান খোলা রাখলে ঝানা কোন ব্যাপারই না। ;)

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারনভাবে মেধাবীরাই ভর্তি হয়। তবে, সেই মেধাকে ধরে রেখে কিংবা আরো শাণিত করে কয়জন বের হয়ে আসে, সেটাই একটা বড় প্রশ্ন। ফারুকের মতো এমন অসংখ্য মেধাবী নক্ষত্র খসে পড়ে শুধুমাত্র নোংরা ছাত্র রাজনীতির কারনে। আর এর প্রধান দায় শিক্ষক এবং রাজনৈতিক দলগুলোর নীতি-নির্ধারকদের।

এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে পারলে দেশ আজ আরো অনেক অনেক এগিয়ে যেতো।

১১| ২৫ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৩

মিরোরডডল বলেছেন:



ভুমের আজকের পোস্টে যেহেতু ফান নেই, তাই একটা ভিডিও দিচ্ছি ।
আগেই সারেন্ডার করছি গানের মিনিং ভালো না , ইটস আ ডার্টি সং ।
পোস্টে এক টুকরো প্রান দিয়ে গেলাম ।
সো এঞ্জয় দ্যা ড্যান্স :)











২৫ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:০৯

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আগেই সারেন্ডার করছি গানের মিনিং ভালো না কোন ব্যাপার না.........এটা অনেকবার দেখেছি, তবে প্রতিবারই নতুন করে মজা পাই। আবারও দেখি এখন। মেনি মেনি থ্যাঙ্কস মিড!!! :)

১২| ২৫ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৫৩

ইসিয়াক বলেছেন: বাস্তবতার ওপর ভিত্তি করে স্বপ্ন ভঙ্গের গল্প।
ভালো লেগেছে।

২৫ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:১১

ভুয়া মফিজ বলেছেন: ভালো লাগলেই ভালো। আমি আবার টেনশানে ছিলাম **ছাল কিছু লিখে ফেললাম কিনা!!! =p~

১৩| ২৫ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৮:২০

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের এই রকম পরিবেশ পৃথিবীর আর কোথাও আছে কি না আমার জানা নাই। এর প্রতিকার আছে কি না সেটাও জানা নাই। আপনার গল্প নিঃসন্দেহে অতি বাস্তব। গল্প ভালো লাগলো।

২৫ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:১২

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আমারও জানা নাই, পৃথিবীর আর কোথাও আছে কিনা, তবে প্রতিকার তো আমরা সবাই জানি। সমস্যা হলো, আমাদের কর্ণধাররা এতোটাই স্বার্থপর যে, এসব সমস্যা নিয়ে কাজ করার কোন ইচ্ছাই তাদের নাই। তাদের মনোযোগ অন্যত্র!! :(

১৪| ২৫ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৮:২৮

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আরি সাব্বাশ! পাক্কা গল্পকার। ব্লগের পক্ষে অত্যন্ত সুখবর। বুঝতেই পারছি বিরিটেনের রাজকার্য সামলিয়ে এবার ব্লগিং করার সময় পাওয়া গেছে... পাশাপাশি বুঝতে পারছি এতদিন নিজেকে লুকিয়ে রেখেছিলেন। প্রতিভা কোনো দিন চাপা থাকে না। অঙ্কুরোদগম হবেই।

গল্পে ভূয়া নয় বাস্তবতা ফুটে উঠেছে।বড়ভাইদের এই ডনগিরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নৈরাজ্যের এক করাল চিত্র। তবে প্রশ্নটি আমার নয়,ব্লগে অনেকেই বলাবলি করছে কিনা, ভূয়া ভাইয়ের মধ্যে কোনো এক সময় কি ফারুক লুকিয়ে ছিল? দেখুন আপনি আবার আমাকে নিয়ে যেন না পড়েন..

২৫ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:১৩

ভুয়া মফিজ বলেছেন: এতোদিন নিজেকে লুকায়েও রাখি নাই, আর আমার পতিবা চাপাও ছিল না। এইটা আপনের ব্যর্থতা যে, আপনে আমার পতিবা'র দিকে ঠিক মতোন নজর দেন নাই। B-)

ব্লগে অনেকেই বলাবলি করছে কিনা, ভূয়া ভাইয়ের মধ্যে কোনো এক সময় কি ফারুক লুকিয়ে ছিল? বানায়ে বানায়ে কথা বইলেন না, ব্লগের কেউই এইসব বলাবলি করে নাই। এইসব আপনের অনুর্বর মস্তিস্কের কল্পনা। আপনে যতোবড় গুপ্তচরই হন না কেন, আমার ব্যাপারে এইসব স্পর্শকাতর তথ্য কোনদিনই বাইর করতে পারবেন না। :-B

ভালো কথা, ১৩ নং মন্তব্য দেখেন। আপনাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কি অবস্থা? আমাদের মতো এই মাত্রার সন্ত্রাসী ওইখানে পয়দা হয়?

১৫| ২৫ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১০:১৭

স্প্যানকড বলেছেন: আমার এক বন্ধু এস এম হলে থাকত কি যে হলো রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়ল। নানান আকাম কুকাম করছে মাঝসাঝে এ নিয়া আফসোস করে। দীর্ঘদিন নাইন এম এম নিয়া চলাফেরা করছে। শেষমেশ কি হলো ঢাবি থেকে ডাব্বা মেরে অনেক জুনিয়র দের সাথে একটা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনমতে এম বি এ শেষ করে এখন ব্যবসা করছে। খুব কাছ থেকে দেখছি এসব। অবশ্য ওর পরিবার যোগান দিতে পেরেছে বলে নইলে কবেই শেষ হয়ে যেত। ভালো থাকবেন এবং সুস্থ ও নিরাপদ থাকুন ।

২৬ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৪:৩৮

ভুয়া মফিজ বলেছেন: বর্তমানে ছাত্র রাজনীতি মানেই অসুস্থ রাজনীতি; এখান থেকে ভালো কিছু আশা করার কোন অর্থই হয় না। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই এটা ক্যান্সারের মতো, একবার ব্যক্তিজীবনে ঢুকে গেলে জীবনকে শেষ করে ছাড়ে, নয়তো সারাজীবন বয়ে চলার মতো একটা ক্ষত রেখে যায়।

আপনার বন্ধুর কপাল ভালো; তবুও শেষ পর্যন্ত স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পেরেছে। তবে সেটা সম্ভব হয়েছে পরিবারের কারনে, যেটা বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই হয়ে ওঠে না।

আপনিও ভালো আর সুস্থ ও নিরাপদ থাকবেন।

১৬| ২৬ শে জুলাই, ২০২১ ভোর ৫:০৬

সোহানী বলেছেন: আসতাছি আবার, ইটা রাখলাম। এত্তো বড় পোস্ট দিলে কেমনে চলবো!!!!!

২৬ শে জুলাই, ২০২১ রাত ৯:৪১

ভুয়া মফিজ বলেছেন: ওকে.......আপনের ইটা পাহারা দেই। দেখি কতো তাড়াতাড়ি আসেন! ;)

এত্তো বড় পোস্ট দিলে কেমনে চলবো!! গল্পটাই তো এমন, ছোট কেমনে করমু? কিছু সাজেশান দিয়েন; পরেরটায় কামে লাগামু। :)

১৭| ২৬ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১০:৪৫

জাদিদ বলেছেন: কঠিন বাস্তবতা! এক বুক স্বপ্ন নিয়ে নতুন জীবনের সন্ধানে এসে যে নতুন জীবনের স্বাদ ফারুকরা পায়, সেই নতুন জীবন কতটা কাম্য?

প্রিয় ভুয়া মফিজ ভাই, গল্প লেখার প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানাই। প্রাঞ্জলতা বা লেখার দুর্বলতা এইগুলো নিশ্চয়ই সময়ের সাথে সাথে কেটে যাবে!

২৬ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১১:৩৪

ভুয়া মফিজ বলেছেন: পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দেশের তুলনামূলকভাবে বেশী মেধাবী শিক্ষার্থীরাই পড়ালেখা করার সুযোগ পায়। এদেরকে যদি ঠিকমতো পাশ করে বের হওয়ার সুযোগ দেয়া হতো, তাদের মেধার মুল্যায়ন করা হতো, তাহলে এরা প্রত্যেকেই জাতির একেকটা এ্যসেট হতে পারতো। আমাদের দেশের নষ্ট রাজনীতি, যার সাথে শিক্ষকরাও জড়িত.......সেই প্রাপ্তি থেকে জাতিকে বন্চিত করছে বেশ সাফল্যজনকভাবে! :(

গল্প লেখার প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানাই। প্রাঞ্জলতা বা লেখার দুর্বলতা এইগুলো নিশ্চয়ই সময়ের সাথে সাথে কেটে যাবে! ভালো একটা প্রসঙ্গের অবতারনা করেছেন। ব্লগে গল্প দেয়ার ক্ষেত্রে আমার অলসতা সবচাইতে বেশী। কারন, কোনবারই গল্প লিখে আমি পরিপূর্ণ তৃপ্তি পাই না। মনে হয়, আরো ভালোভাবে এটাকে লেখা যেতো।

ব্লগে এখন পর্যন্ত আমি ২০টার মতো গল্প পোষ্ট করেছি। প্রশংসাও পেয়েছি অনেক; কিন্তু আফসোস! গঠনমূলক সমালোচনা তেমন একটা পাই নাই। আমি সব সময়েই চাই আমার গল্পের উপর পয়েন্ট ধরে নির্দিষ্ট সমালোচনা হোক, যেটার উপর ভিত্তি করে আমি আরো ভালো লিখতে পারি কিংবা আমার দূর্বলতাগুলো দুর করতে পারি। তবে তা অবশ্যই ''আবর্জনা লেখা'' জাতীয় ইডিওটিক, ছাগলামী আর জেনারালাইজড সমালোচনা না। মুখ ফুটে অনেক সময়ে অনেককে অনুরোধও করেছি, কিন্তু রেসপন্স আশাব্যন্জক না একেবারেই। :((

এইবার আপনেই না হয় কিছু বলে শুরু করেন! অন্যদেরকে তাহলে দেখাতে পারবো, আর আমার লেখার সমালোচনা আরো জোরেশোরে করতে উৎসাহ প্রদান করতে পারবো। :)

১৮| ২৭ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১:৩৩

জাদিদ বলেছেন: অবশ্যই আপনার সাথে আমি তীব্র ভাবে সহমত। সমালোচনার একটি নির্দিষ্ট ধারা আছে, ইচ্ছে মতন মানসিক বিকারগ্রস্থ প্রলাপ বকাকে সমালোচনা বলা যায় না।

আমাদের বর্তমান সময়ে আমি গঠনমূলক সমালোচনার প্রচন্ড অভাব অনুভব করছি। এর প্রধান কারন আমার মনে হয় কেউ কারো বিরাগভাজন হতে চান না, দুই আমাদের পড়ুয়া ব্লগারের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। ব্যক্তিগত জানা শোনার কারনে অনেকেই হয়ত সমালোচনা করতে দ্বিধা করে।

আমি অবশ্যই প্রত্যাশা করব আমাদের সহ ব্লগাররা আমাদের লেখার ভালো মন্দ দিক নিয়ে বলবেন। নইলে এই ফিডব্যাকের উপর ভরশা করে পেশাদার লেখক বা বই প্রকাশ করতে চাইলে মহা বিপদে পড়তে হবে।

আপনার এই গল্পে পাঠক হিসাবে আমার মনে হয়েছে, আপনি গল্পটি সম্ভবত এক বসায় লিখেছেন বা খুব অল্প বিরতিতে সম্পন্ন করেছেন। ফলে কিছু কিছু দৃশ্যায়নে হঠাৎ কিছুটা ছেদ পড়েছে বা আবার শুরু হয়েছে। প্রথম তিনটি অনুচ্ছেদ আরো একটু গুছিয়ে লিখলে আমার মনে হয় শুরুটা দারুন হতে পারত। আমার মনে হয় গল্প লিখে তা নিজে যদি কয়েকবার পড়া যায় তাহলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।

গল্পের বাকি অংশটি সম্পর্কে আমার মনোভাব হলো - এটা একটি প্রেডিকটেবল কাহিনী। কিন্তু আপনার লেখার একটা গতি ছিলো সেই কারনে পাঠক শেষ পর্যন্ত যেতে বাধ্য হয়েছে। এটা লেখক হিসাবে অবশ্যই আপনার স্বার্থকতা।

ছোট গল্পের ক্ষেত্রে লেখককে জানতে হবে ঠিক কোথায় থামতে হবে। উপযুক্ত জায়গায় থামা ও গল্পের একটি অংশ। যেমন আপনার গল্পটি শেষ হয়ে যেত পারত ফুলার রোডের ঐ হত্যাকান্ডের সময়। প্রতিশোধ নেয়ার সময় ফারুকের মুখে রক্তের নোনতা স্বাদের সাথে তার দরিদ্র স্কুল শিক্ষক বাবার ঘামের নোনতা স্বাদের একটা ম্যাটাফরিক তুলনা হতে পারত। আসলে এই ফুলার রোডে মোট দুটো খুন হয়েছে। এক দরিদ্র সেই স্কুল শিক্ষকের স্বপ্ন আর ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের কথিত সেই বড় ভাই। স্বপ্ন না জীবন কোনটা বড়? কে কার কাছে পরাজিত হয়েছে? এখানে শেষ হলে পাঠকের সাথে তৈরী করা যেত একটি জটিল মনস্তাত্ত্বিক দন্দ! যার রেশ পড়ার পরেও আমাদের মনে রয়ে যেত!!

- উফফ!! নিজেকে সেই পন্ডিত প্রমান করার জন্য অনেক আবে তাবে কিছু বললাম! B-) আপাতত ক্ষ্যামা দেই।
আপনি এই গল্পটা যেভাবে শুরু করেছিলেন, আমি অনেক বছর আগে একটা গল্প অনেকটা এই প্যাটার্নেই শুরু করেছিলাম। গল্পটার নাম ছিলো যাত্রা বনী

আসলে সত্যি বলতে, আমার খুব ইচ্ছে করে বিভিন্ন পোষ্টে মন্তব্য করি, কিন্তু সময়ের অভাবে অনেক সময় মন্তব্য করা হয়ে উঠে না। ভালো থাকবেন ভাইয়া, শুভেচ্ছা রইল।

২৭ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ১১:২১

ভুয়া মফিজ বলেছেন: একজন ব্লগার হিসাবে আপনার এই মন্তব্য এবং ব্লগের মডারেটর হিসাবে আপনার পর্যবেক্ষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্যে আপনার মন্তব্যের সূত্র ধরেই কিছু কথা বলি।

আমাদের বর্তমান সময়ে আমি গঠনমূলক সমালোচনার প্রচন্ড অভাব অনুভব করছি। এর প্রধান কারন আমার মনে হয় কেউ কারো বিরাগভাজন হতে চান না, দুই আমাদের পড়ুয়া ব্লগারের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। ব্যক্তিগত জানা শোনার কারনে অনেকেই হয়ত সমালোচনা করতে দ্বিধা করে। এটা আসলেই একটা সমস্যা। বেশীরভাগ ব্লগারই তাদের লেখার এমনকি গঠনমূলক সমালোচনাও শুনতে নারাজ, শুধু প্রশংসাই শুনতে চায়!! বুঝতে চায় না যে, উন্নতির কোন সীমা নাই; এটা লেখালেখির জন্যও প্রযোজ্য। আপনার কথার সূত্র ধরেই বলি, আমিও জানি এটা। এর ফলে ব্লগে একটা পিঠ চাপড়া-চাপড়ির সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। যেটা আসলেই ভয়াবহ। এর জন্য প্রধানতঃ দায়ী লেখক ব্লগার, তারপরে পাঠক ব্লগার!!! একজন ব্লগার গঠনমূলক সমালোচককে কেন শত্রু মনে করে, এর মনস্তাত্বিক বিশ্লেষণ পর্যালোচনা করা জরুরী। একটা নিরপেক্ষ আর নির্মোহ গঠনমূলক সমালোচনা যে কতোটা কার্যকর, এটা কতিপয় ব্লগার কবে বুঝবেন?

আপনার এই গল্পে পাঠক হিসাবে আমার মনে হয়েছে, আপনি গল্পটি সম্ভবত এক বসায় লিখেছেন বা খুব অল্প বিরতিতে সম্পন্ন করেছেন। আপনি ঠিক ধরেছেন।

ফলে কিছু কিছু দৃশ্যায়নে হঠাৎ কিছুটা ছেদ পড়েছে বা আবার শুরু হয়েছে। এই কথাটার মর্মার্থ ঠিক বুঝি নাই। :``>>

প্রথম তিনটি অনুচ্ছেদ আরো একটু গুছিয়ে লিখলে আমার মনে হয় শুরুটা দারুন হতে পারত। প্রথম তিনটা অনুচ্ছেদে আমি ফারুকের সামাজিক এবং পারিবারিক অবস্থান, অসহায়ত্ব, চ্যালেন্জ, ভবিষ্যত পরিকল্পনা ইত্যাদি বলার চেষ্টা করেছি, যেটা গল্পের পটভুমি। আপাতঃদৃষ্টিতে আমি লেখাতে কোন সমস্যা দেখতে পাচ্ছি না। তবে আপনি হাইলাইট করার কারনে এটা নিয়ে আমি আরো ভাববো। বিভিন্ন দৃষ্টিকোন থেকে দেখার চেষ্টা করবো।

আমার মনে হয় গল্প লিখে তা নিজে যদি কয়েকবার পড়া যায় তাহলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। এটা আমি সব সময়ে করার চেষ্টা করি। লেখার পড়ে পাঠক হিসাবে কয়েকবার পড়ি। তবে সবসময়ে এটা হয়ে উঠে না। এই লেখার ক্ষেত্রে বেশ খানিকটা সময় কম দিয়েছি, এটা ঠিক।

গল্পের বাকি অংশটি সম্পর্কে আমার মনোভাব হলো - এটা একটি প্রেডিকটেবল কাহিনী। যে কোনও লেখা অনেক পাঠক পড়ে। কারো সাথে লেখকের চিন্তা মিলে যাবে, কারো সাথে মিলবে না; এটাই স্বাভাবিক। যেমন আপনি আমার মতো করে ভেবেছেন, তাই প্রেডিক্টেবল মনে হয়েছে। আবার ৬নং মন্তব্যে অপু তানভীরের মন্তব্য যদি দেখেন, তাহলে দেখবেন উল্টাটা। এটা হবেই…….কাজেই এটা নিয়ে আমার মনে হয় করার কিছু নাই। ঠিক বললাম কি?

ছোট গল্পের ক্ষেত্রে লেখককে জানতে হবে ঠিক কোথায় থামতে হবে। উপযুক্ত জায়গায় থামা ও গল্পের একটি অংশ। এটা আমার জন্য একটা বিরাট সমস্যা। টু বি অনেষ্ট, হত্যাকান্ডের অংশটা লেখার সময়ে একবার মনে হয়েছিল, এখানেই থামি। আপনি যেভাবে চমৎকার করে ব্যাখ্যা করেছেন, সেভাবে কিংবা প্রায় সেভাবেও যদি লেখার সময়ে ভাবতে পারতাম, তাহলে অবশ্যই ওখানেই শেষ করতাম। কিন্তু গল্পটা লেখার আগেই ঠিক করে রেখেছিলাম, শেষ দৃশ্যটা ওর বাবার সাথে একটা আবেগীয় ইন্টারেকশান দিয়ে শেষ করবো, যেখানে পাঠক ভাববে, উপলব্ধি করবে…..দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে এই ধরনের দৃশ্যের অবতারণা হওয়া কতোটা দুঃখজনক!!

ভাগ্যিস নিজেকে পন্ডিত প্রমাণ করার জন্য অনেক কিছু বললেন! এটা আমাকে নতুনভাবে ভাবতে যে কতোটা সাহায্য করবে, আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। নিজের লেখার এই ধরনের ব্যবচ্ছেদের বদলে মানুষ কেন যে অনর্থক শুধু প্রশংসাই শুনতে চায়, আমার মাথায় আসে না। :(

আপনার গল্পটা সময় করে ঠান্ডা মাথায় অবশ্যই পড়বো। আমি নিশ্চিত, সেখান থেকেও নেয়ার মতো কিছু অবশ্যই পাওয়া যাবে।

সময়ের অভাবের মধ্যেও এমন একটা অসম্ভব প্রয়োজনীয় মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভালো আর সুস্থ থাকবেন।

১৯| ২৭ শে জুলাই, ২০২১ ভোর ৪:২৯

সোহানী বলেছেন: অনেকদিন পর ইউনি লাইফ মনে পড়ে গেল। অভি/ইলিয়াস/জসিম/মাসুদ/মুকুল বিতাড়িত.... আমান গং লাইম লাইটে। চোখের সামনে চারটা লাশ....... অদ্ভুত সে ছেলেটি একেবারেই ঢুকে পড়লো হলে। চোখের সামনে ব্রাশফায়ার করলো ভাষা ইনিস্টিউট এ থাকা প্রতিপক্ষকে। ওরা ভাবতেই পারিনি হলে কেউ ঢকে এমন কিছু করতে পারে। আমরা ক'জন দৈাড়ে রুমে ঢুকতে ঢুকতে আর্তনাদ ভাসতে লাগলো চারপাশে...............।

এসব লিখতে গেলে শেষ হবে না......।

২৭ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৪:৫০

ভুয়া মফিজ বলেছেন: অনেক কয়জন সেলেব্রেটি ক্যাডারের নাম বললেন। তবে এই লিস্টে নীরুর নাম না বললে এটা অপূর্ণ থাইকা যায়। এরশাদের সময়ে এই নীরু আর অভির ক্ষমতার দ্বন্ধ ছিল ক্যাম্পাসের অন্যতম ভয়াবহ ব্যাপার। এই সময়ে খালি ছাত্রই না, ক্যাম্পাস দিয়া যাতায়াতকারী অনেক সাধারন মানুষ, রিক্সাওয়ালারও জীবনাবসান হয়। আর নীরুর বড়ভাই বাবলুর কথাও কি ভুইলা গেলেন?

এসব লিখতে গেলে শেষ হবে না......। আসলেই! ক্যাম্পাসে গল্পের অভাব নাই। কান পাতলে এমন অসংখ্য গল্প শোনা যায়। আমার মনে হয় ক্যাম্পাস এখন অনেক শান্ত। আমাদের সময়ে হলের ছাত্র-ছাত্রী আর আশেপাশের বাসিন্দাদের নিয়মিতই রাতের ঘুম হারাম হয়ে যেতো গোলাগুলির শব্দে।

২০| ২৭ শে জুলাই, ২০২১ দুপুর ২:২৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: ছাত্ররাজনীতির অধ:পতনের গল্প!
একটা স্বপ্নের অপ-মৃত্যুর গল্প!
মেধার অপমৃত্যুর গল্প!

শুরু থেকে ভালই টেনে নিয়েছে - শেষটায় হোচট খেলাম।
ফিনিশিংটা যেন আরো কিছূ চাইছিল! আরেকটু কি জানি লাগতো টাইপ!
লেখক সমালোচনা নিয়ে কাভা ভায়ার সাথে সহমত।
ফিনিশিংয়ে কাভা ভাইয়ের মেটাফোরিক এন্ডিং ভাবনা ভাল লেগেছে..
আবার বাথরুম থেকে ফিরে বাবার চেহারা দেখে ভাঙ্গা হাতলটা খুলে আসার চেহারাতেও থেমে যাওয়া যেতো!

দারুন গল্প। ভুম ভায়ার গল্প অনুপ্রাণ জোগাল আরো লেখার।

২৭ শে জুলাই, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:০১

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আমাদের দেশটা স্বাধীন হওয়ার পর পরই জাতীয় রাজনীতির ছাত্রশাখা বন্ধ করার জন্য আইন পাশ করা উচিত ছিল। ছাত্র রাজনীতি থাকা উচিত ছিল উন্নত বিশ্বের মডেলে। রাজনৈতিক নেতাদের সীমাহীন ক্ষমতার লোভের কাছে লাখো মেধাবী তরুনের জীবন কোন মুল্যই পায় নাই।

গল্পে ফিনিশিং নিয়ে আমি সব সময়েই স্ট্রাগল করি, করেছি.....আমার এখন পর্যন্ত সামু'তে পোষ্ট করা সব কয়টা গল্পে।

আবার বাথরুম থেকে ফিরে বাবার চেহারা দেখে ভাঙ্গা হাতলটা খুলে আসার চেহারাতেও থেমে যাওয়া যেতো! অবশ্যই যেতো। তবে, পরের প্যারাটার উদ্দেশ্য ছিল বাবা-ছেলেকে কঠিন সত্যের মুখোমুখি করানো এবং প্রতিক্রিয়া দেখানো। আর শেষের প্যারাটাতে একটা সামাজিক বার্তা দেয়ার মাধ্যমে কনক্লুশান টানার চেষ্টা।

এই ছিল গল্পে আমার ভাবনা। আপনার ভাবনাও জানলাম। জানানোর জন্য অনেক ধন্যবাদ। এই ধরনের মন্তব্য লেখককে তার লেখা নিয়ে দ্বিতীয়বার ভাবতে বাধ্য করে। এভাবেই মন খুলে মন্তব্য করবেন। আমি সব সময়েই গঠনমূলক এবং যুক্তিপূর্ণ আলোচনায় বিশ্বাসী। আশা করি, ভবিষ্যতেও আপনার কাছ থেকে এই ধরনের মন্তব্য পাবো।

লেখক সমালোচনা নিয়ে কাভা ভায়ার সাথে সহমত। আমিও!! :)

২১| ২৭ শে জুলাই, ২০২১ রাত ১১:৪৭

করুণাধারা বলেছেন: মনখারাপ করে দেয়া গল্প, কিন্তু এটা তো সত্যিই এদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসা দরিদ্র এবং মেধাবীদের জীবনের গল্প!

আবরার কে যারা পিটিয়ে মেরেছিল, তাদের অধিকাংশই দরিদ্র পরিবার থেকে আসা। কারো বাবা কৃষিজীবী, কারো বাবা ভ্যানচালক, কারো বাবা বাস চালক। এই ধরণের ছেলেদের অর্থ আর ক্ষমতার লোভ দেখিয়ে দলে টানার যায় সহজেই, তেমন ফারুককে টেনেছিল। সমাপ্তি ভালো লেগেছে, বালিশের নিচে সিক্স শুটার!

আচ্ছা, আপনি জানলেন কী করে যে এরা বালিশের নীচে অস্ত্র রাখে? আমি জানতাম না, আজকেই জানলাম শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র না, নামী কলেজের অধ্যক্ষ পর্যন্ত বালিশের নিচে পিস্তল রেখে ঘুমান। সত্যি দেশ তরতরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে...

"Viqarunnisa principal ফোনালাপ" এই ভিডিও ইতিমধ্যে না দেখে থাকলে এখনই দেখে ফেলুন ইউটিউবে...

২৮ শে জুলাই, ২০২১ সকাল ১১:০৮

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আচ্ছা, আপনি জানলেন কী করে যে এরা বালিশের নীচে অস্ত্র রাখে? সবই ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা......….আমার মজা আবার সিরিয়াসলি নিয়েন না। :) যাদেরকে সবসময়ে প্রতিপক্ষের আক্রমনের ভয়ে তটস্থ থাকতে হয়, তারা রাতে বালিশের নীচেই অস্ত্রপাতি রাখে, কারন ঘুমের সময়টাতেই মানুষ সবচেয়ে অসহায় অবস্থায় থাকে। সাধারন জ্ঞান!!! কিন্তু একজন অধ্যক্ষাকে কেন বালিশের তলায় পিস্তল রাখতে হবে, সেটা আমার জ্ঞানের বাইরে।

আপনার রেফার করা ভিডিও দেখে আমি পুরাই স্পীকার হয়ে গেলাম আপা। আমি এখন নিঃসন্দেহ যে, আমাদের দেশের শিক্ষার ভবিষ্যত খুবই উজ্জল। আমার আসলে বলার কিছু নাই। আমাদের ব্লগের দুইজন জনপ্রিয় ব্লগার এই ব্যাপারে ভালো ব্যাখ্যা দিতে পারবেন। অবশ্য অধ্যক্ষা ইতোমধ্যেই বলেছেন যে, ওটা এডিট করা। =p~

দেশের অস্বচ্ছল মেধাবীরা বিপথগামী হয়, আর স্বচ্ছল মেধাবীরা বিদেশগামী হয়। এর ফাকেই যেই গুটিকয় মেধাবী দেশে রয়ে যায় তাদের জন্যই দেশটা এখনও টিকে আছে। নাহলে কবে পুরা দেশটাকেই বিক্রি করে দিয়ে নেতা-আমলারা গুষ্ঠিশুদ্ধ আমেরিকা-কানাডা-ইওরোপ চলে আসতো!!! X(

গল্পের মন্তব্যে আপনার উপস্থিতিতে অনুপ্রাণিত হলাম। :)

০৩ রা আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১২:৫৯

ভুয়া মফিজ বলেছেন: বহুদিন ধরে আপনার কোন পোষ্ট পাচ্ছি না আপা। মন-টন ঠিক করে জলদি একটা পোষ্ট দেন। সময় বহিয়া যাইতেছে!!! B-)

২২| ৩১ শে জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:২২

কল্পদ্রুম বলেছেন: এখন পর্যন্ত আপনার লেখা যে কয়টা গল্প আমি পড়েছি, তার ভিতরে ভাষা ও রচনার ধরণে এইটা সবচেয়ে সিরিয়াস লেখা বলে মনে হয়েছে। সমালোচনা বলতে, শেষ প্যাসেজ দুইটা না লিখলেও হতো।

০২ রা আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১:২৩

ভুয়া মফিজ বলেছেন: হ্যা, ঠিক ধরেছেন। এটা লেখার সময়ে বেশ সিরিয়াস ছিলাম। শেষের প্যারাদু'টাকে কনক্লুশান বলা যায়......এ'ধরনের পরিস্থিতি কি ধরনের করুণ হাল করতে পারে একজন মেধাবী আর তার পরিবারকে, তার একটা ইঙ্গিত। তবে এখন মনে হচ্ছে আরো সংক্ষেপে একটু অন্যভাবে লিখলে ভালো হতো।

যাই হোক, খানিকটা চিন্তার খোরাক দিলেন। থ্যাঙ্কিউ!! :)

২৩| ০৩ রা আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১:৫০

জুন বলেছেন: ভুয়া আপনি আমার পোস্টে এত ছোট মন্তব্য করছেন আমি চর্মচোখে দেইখাও চিন্তাই করতে পারতেছি না :-* আপ্নে সেই যে রাগ করছিলেন তা কি এখনো কইরা আছেন :-* :-*

০৩ রা আগস্ট, ২০২১ দুপুর ২:৫৪

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আপনে যেই রাগের কথা কইছেন, সেইটা পুরানো বিষয়। তয় তখনকার পরিস্থিতিতে আমার জায়গায় নিজেরে বসায় চিন্তা করেন, মনে হয় সব পরিস্কার হইবো। ;)

আর আমি না হয় ছুড হিসাবে রাগই করছি, বড়বোন হিসাবে আপনে কি উদাহরন সৃষ্টি করলেন? এই পুষ্টে আপনের মন্তব্য আপনেই আরেকবার দ্যাখেন!!! আমি কিছুই কমু না। :-B

২৪| ০৩ রা আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১:৫২

অপু তানভীর বলেছেন: গল্পের মূল্যায়নের জন্য আমাদের ব্লগে আছে না এক পন্ডিত । সাহিত্য না পড়ে, কোন বই না পড়ে, কোন ব্যাপারে কোন স্পষ্ট ধারণা না নিয়েই সে কিভাবে সব বিষয়ে পন্ডিতি করে, তা তো জানাই আছে । সেই পন্ডিতের কাছ থেকেই পাওয়া যাবে সর্ব কালের সেরা মূল্যায়ন । :D

যে কোন গল্পের ব্যাপারে আমি সব চেয়ে বেশি যেটা পছন্দ করি সেটা হচ্ছে গল্পে বাহুল্যতা পরিহার করি । অনেকে আছে অপ্রয়োজনে অনেক অদরকারি কথা লিখে রাখে । আমার পছন্দ প্লট কাহিনীতে যত দ্রত পৌছানো। সেই হিসাবে গল্প পড়ে আরাম পেয়েছি । এই টুকুই বলা চলে । আর প্লট যেহেতু প্রেডিক্টেবল তাই সেই হিসাবে মানান সই গল্প ।

০৩ রা আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৩:০৫

ভুয়া মফিজ বলেছেন: পন্ডিতের কথা আর কি বলবো। সে হা করার আগেই আমি জানি, সেখান দিয়ে কি বের হবে। একটা কথা প্রচলিত আছে না........ওয়ান পিস মেড, কারিগর ডেড!!! অর্থাৎ এইরকমের আজব পিস আর দ্বিতীয়টা তৈরী হওয়ার চান্স নাই!!! =p~

বাহুল্যতার আন্ডারস্ট্যান্ডিং একেকজনের কাছে একেক রকমের। আমি আপনার কথার জেনারালাইজড ভার্সানটাই নিলাম। ছোটগল্পে আসলে বাহুল্যতা পরিহারের কোন বিকল্প নাই। ফুড ফর থটের জন্য বড় একটা ধন্যবাদ। :)

২৫| ০৩ রা আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৩:০৭

জুন বলেছেন: আমি যখন এই পুস্টে মন্তব্য করছি তখন আমার মন খারাপ ছিল :(

০৯ ই আগস্ট, ২০২১ দুপুর ১:১৮

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আপনের কথা শুইনা মনে দুঃখ পাইছি। আশাকরি, এখন আপনের মন ভালো হইছে। B-)

২৬| ০৩ রা আগস্ট, ২০২১ বিকাল ৩:৫৭

আমি তুমি আমরা বলেছেন: গল্পটা ভাল লেগেছে। তবে লেখাটা পড়তে গিয়ে মনে হয়েছে আশি কিংবা নব্বইয়ের দশকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গল্প পড়ছি, বর্তমান সময়ের নয়। কারণ হলগুলোতে এখন একটাই দল, সুতরাং সভাপতি আর সাধারণ সম্পাদক ভিন্ন দলের হওয়ার সুযোগ নেই। আর কাটা রাইফেল এখন ব্যবহার হয় কিনা জানি না, আমরা ছাত্র থাকাকালীন লাঠ, রড আর কিরিচের কথাই বেশি শুনতাম।

ভেবেছিলাম ফারুক হয়ত প্রতিপক্ষের হাতে খুন হবে বা রাজনৈতিক কোন প্যাচে পড়ে জেলে যাবে। গল্পের শেষটা আমার ভাবনার সাথে মেলেনি, সেজন্য আপনি একটা ধন্যবাদ পাবেন।

ভাল থাকুন। শুভকামনা।

০৯ ই আগস্ট, ২০২১ দুপুর ২:১৯

ভুয়া মফিজ বলেছেন: গল্পটা অবশ্যই বর্তমান সময়ের না। ইন ফ্যাক্ট, আমি যখন সেখানকার ছাত্র ছিলাম, তখনকার পটভূমিতে লেখা।

আমরা ছাত্র থাকাকালীন লাঠ, রড আর কিরিচের কথাই বেশি শুনতাম। বলেন কি? আপনি কি পাকিস্তান আমলের ছাত্র? তখন শুনেছি পাচ-পাত্তুর এসব নিয়ে ঘুরতো। স্বাধীনের পরেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার শুরু হয়, কারন তখন এসব খুবই সহজলভ্য ছিল। পরে তো এটা ট্রেন্ডই হয়ে যায়!!

গল্পটা আপনার ভালো লেগেছে জেনে শান্তি পেলাম। :)

২৭| ০৩ রা আগস্ট, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:১৬

মোঃমোস্তাফিজুর রহমান তমাল বলেছেন: বাস্তব গল্প।অরাজকতাপূর্ণ ছাত্ররাজনীতির বয়ান। গল্পের সবচেয়ে দুর্বল অংশ শেষের প্যারা। শেষের প্যারায় আপনি যা বলেছেন সেটা আপনি পুরো গল্পেই বলেছেন। ফলে গল্পের পুনরাবৃত্তির সাথে সাথে সেটি গল্পের সারাংশও বলে দিয়েছে। ফলে এটা আর গল্প থাকে নি। একটা সংবাদ প্রতিবেদনের মতো হয়েছে,যেখানে ঘটনা বর্ণনার সাথে সাথে ঘটনা সম্পর্কে প্রতিবেদকের মতামতও থাকে।
গল্প পড়ে ভালো লেগেছে।

০৯ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ১০:১৪

ভুয়া মফিজ বলেছেন: গল্পের সবচেয়ে দুর্বল অংশ শেষের প্যারা। এই ব্যাপারে আপনার ব্যাখ্যা পছন্দ হয়েছে।

এই গল্পে আমার সবচেয়ে বড় পাওয়া বেশ কিছু মুল্যবান মতামত। আশা করছি ভবিষ্যতে এগুলোকে কাজে লাগাতে পারবো। লেখালেখিতে আমি এখনও অনেক দুর্বল। আপনাদের টিপস গুলো কাজে লাগবে নিঃসন্দেহে। অনেক ধন্যবাদ। :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.