নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ভুয়া মফিজ

ভুয়া মফিজের সাথে ভুয়ামি না করাই ভালো...

ভুয়া মফিজ › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটা নিরব ঘাতকের পূর্ণ ব্যবচ্ছেদ!!!

২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:১২



প্রারম্ভিক কিছু কথাঃ

''ঘাতক'' শব্দটা শুনলেই আমার মস্তিস্কে যে ভাবনাটার উদয় হয় সেটা হলো, নাঙ্গা তলোয়ার হাতে কোন একটা অবয়ব তীব্রবেগে আমার দিকে ছুটে আসছে! একটা দুঃস্বপ্নের মতো!! অনেকের মনে সেটা একে ৪৭ অটোমেটিক কিংবা নিদেনপক্ষে একটা ফুললি লোডেড পিস্তল বা রিভলভার হলেও হতে পারে। তবে ঘাতক মানেই যে সব সময়ে মনুষ্যাকৃতির কোন একটা কাঠামো হবে, তেমনটা না। মানবদেহের প্রতিটা অসুখই এক একটা বিভিন্ন মাত্রার ঘাতক। কিন্তু আমার পোষ্টের শিরোনামের ''নিরব ঘাতক'' বিষয়টা কি? নিরব ঘাতক হলো এমন কিছু অসুখ যেটা আমাদেরকে বুঝতেই দেয় না যে, সে একটা অসুখ। আমরা এটাকে আমাদের স্বাভাবিক জীবন-যাপনের একটা অংশ মনে করি। কিন্তু যখন সে পূর্ণমাত্রায় বিকশিত হয়, তখন বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই তেমন কিছু করার থাকে না। উদাহরন হিসাবে মৃগীরোগ বা হিস্টেরিয়ার (আধুনিককালে যেটাকে কনভার্সান ডিজঅর্ডার বলে) কথা বলা যায়। ট্রমাটিক নিউরোসিস বা সংক্ষেপে ট্রমাও এই তালিকায় আসে। লিস্ট লম্বা করলে পার্কিনসন্স কিংবা আলজাইমাসও চলে আসে! নিরব ঘাতকের আরেকটা বৈশিষ্ট্য হলো, এগুলোর আর্লী সিম্পটমগুলোকে নিয়ে হয় আমরা হাসি-ঠাট্টা করি অথবা ভুল ইন্টারপ্রেট করি; মোদ্দাকথা, গুরুত্ব দেই না।

২০১৮ সালে যখন আম্মার আলজাইমাস ধরা পড়েছিল তখন এই অসুখের আদ্যোপান্ত জানার জন্য নেট ঘাটতে ঘাটতে নেটের ছাল-বাকলা তুলে ফেললাম। আমার আত্মীয়-স্বজন আর বন্ধু-বান্ধবের মধ্যে ডাক্তারের সংখ্যা প্রচুর। তাদের সাথে যে কোনও আলাপেই অবধারিতভাবে আলজাইমাস প্রসঙ্গ চলে আসতো। হঠাৎ একদিন ভাবলাম, এটা নিয়ে একটা পোষ্ট দেই। খানিকটা লিখলামও। তারপরে বিভিন্ন কারনে অন্য অনেক অসমাপ্ত লেখার মতো এটাও চাপা পড়ে গেল। কিছুদিন আগে ব্লগার মিরোরডডল একটা পোষ্ট দিয়েছিল ভুলোমনের বিড়ম্বনা শিরোনামে। সেটা পড়ে আবার আংশিক লেখা পোষ্টটার কথা মাথায় আসলো। তারপরে আবার প্রচন্ড ব্যস্ততার মধ্যে ভুলে গেলাম।

এরই মধ্যে ব্লগে ফিচার লেখার প্রতিযোগিতার ডাক আসলো। ভাবলাম, এটাই কোনরকমে কিছু একটা দাড়া করায়ে ঝেড়ে দেই। কারন সেই আপ্তবাক্য….…...প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহনই বড় কথা! কিন্তু ডেডলাইন ১৮ তারিখ দেখে হাল ছেড়ে দিলাম। আমার যা অবস্থা, তাতে এই সময়ের মধ্যে অন্ততঃ ফিচার লেখা সম্ভব না। তারপরে আবার দেখলাম, তারিখ বাড়ানো হয়েছে। বুঝতে পারলাম, ব্লগ টিম আসলে আমাকে না লেখিয়ে ছাড়বে না। :-B

যাক গে। নো মোর বক বক। আসল অংশে যাই বরং!!!


প্রথমেই একটা ভুল ধারনা দিয়ে শুরু করি। আমরা অনেকেই ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশকে একটা রোগ হিসাবে জানি, কিন্তু আদতে তা না।

ডিমেনশিয়া কোন রোগ না। বরং এটা মানুষের মনে রাখার, চিন্তা করার বা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা-বিরুদ্ধ একটা সাধারণ শব্দ যা আমাদের দৈনন্দিন কাজকর্মে সমস্যা সৃষ্টি করে। অপরদিকে আলজাইমাস একটা নির্দিষ্ট মস্তিষ্কের রোগ যা কিনা ডিমেনশিয়ার সবচেয়ে প্রচলিত ধরন। এটাকে ডিমেনশিয়ার সাধারন বৈশিষ্ট্যগুলো দিয়েই প্রাথমিকভাবে ব্যাখ্যা করা হয় এবং সময়ের সাথে সাথে এটার অবনতি ঘটতে থাকে। আলজাইমাস রোগটা আমাদের মস্তিস্কের যে অংশটা শেখার সাথে সম্পর্কযুক্ত, সেটার উপর চড়াও হয়। তাই প্রাথমিক লক্ষণগুলির মধ্যে প্রায়ই স্মৃতিশক্তি, চিন্তাভাবনা এবং যুক্তির দক্ষতার পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। রোগের বিকাশের সাথে সাথে লক্ষণগুলি আরও গুরুতর হয়ে ওঠে এবং এতে বিভ্রান্তি, আচরণের পরিবর্তন এবং অন্যান্য সমস্যাগুলোও যুক্ত হতে থাকে।

সুস্থ আর আলজাইমাসে রোগাক্রান্ত ব্রেইনের তুলনামূলক চিত্র


আলজাইমাস কেন হয়?

এই ব্যাপারে চিকিৎসা বিজ্ঞান এখনও সুনির্দিষ্ট কারনগুলো বের করার জন্য হাতড়ে বেড়াচ্ছে। এই রোগে মস্তিষ্কের কোষে এবং তার চারপাশে কিছু প্রোটিনের অস্বাভাবিক বিল্ড আপ লক্ষ্য করা যায়। এই প্রোটিনগুলোর একটা হলো, অ্যামাইলয়েড, যা মস্তিষ্কের কোষগুলোর চারপাশে প্লাক হিসাবে জমা হয়। টাউ নামের আরেকটা প্রোটিন মস্তিষ্কের কোষে জট তৈরি করে। যদিও ঠিক কী কারণে এই প্রক্রিয়াটি শুরু হয় তা জানা যায়নি, তবে বিজ্ঞানীরা এখন জানেন যে লক্ষণগুলি গোচরে আসার অনেক বছর আগে থেকেই এটা শুরু হয়। এর ফলে কি হয়? মস্তিষ্কের কোষগুলি প্রভাবিত হওয়ার সাথে সাথে মস্তিষ্কের কোষগুলির মধ্যে বার্তা বা সংকেত পাঠানোর সাথে জড়িত রাসায়নিক বার্তাবাহকগুলো (নিউরোট্রান্সমিটার নামে পরিচিত) হ্রাস পায়। একটি নিউরোট্রান্সমিটার, অ্যাসিটাইলকোলিন এর মাত্রা বিশেষ করে আলজাইমাস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মস্তিষ্কে কম থাকে। এতো গেল বৈজ্ঞানিক কচকচানি। মূল কথা হলো, এর ফলে সময়ের সাথে সাথে মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশ সঙ্কুচিত হয়, একটা বিশেষ অঞ্চলের কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়। সাধারণভাবে প্রভাবিত প্রথমদিককার কোষগুলো স্মৃতির জন্য দায়ী। আরও পরে এটা অস্বাভাবিক আকারে মস্তিষ্কের বিভিন্ন অঞ্চলকে প্রভাবিত করতে শুরু করে। এখানে উল্লেখ্য, প্রাথমিক লক্ষণগুলিতে স্মৃতির পরিবর্তে দৃষ্টি বা ভাষার সমস্যাও হতে পারে।

ছবিতে সংক্ষিপ্তাকারে দেখেন


কোন কোন কারনগুলো আলজাইমাস রোগের ট্রিগার হিসাবে কাজ করে?

আমার মতে, সাধারন মানুষের জন্য রোগটা কেন হয় জানার চাইতে কি কি কারনে হয় জানাটা বেশী জরুরী। চলেন, তবে জানি সেই ট্রিগারগুলো সম্পর্কে। প্রথমেই আসে বয়স, যেটা এই রোগে একটা বড় ফ্যাক্টর। ৬৫ বছর হওয়ার পর প্রতি ৫ বছরে এই রোগে আক্রান্তের ঝুকি দ্বিগুন হতে থাকে। তবে আমাদের যাদের বয়স এখনও ৬৫ ছোয় নাই, তাদের খুব বেশী খুশী হওয়ার কোন কারন নাই। বলা হয়ে থাকে, এই রোগের লক্ষণ দেখা দেয়া প্রতি বিশ জনের একজনের বয়স ৬৫ এর নিচে!!

পারিবারিক ইতিহাস আরেকটা কারন হিসাবে এসেছে।

যাদের ''ডাউন সিনড্রোম'' আছে, অর্থাৎ একটা অতিরিক্ত ক্রোমোজম নিয়ে যারা জন্মায়। মনে রাখতে হবে অতিরিক্ত কিছু মানেই সব সময়ে ভালো কোন বিষয় না।

সিভিয়ার হেড ইনজুরীর ইতিহাস আছে, এমন মনুষ্যসকল।

গবেষণায় দেখা গিয়েছে, হৃদরোগের সাথে সম্পর্কযুক্ত লাইফ স্টাইল দ্বারা পরিচালিত মানুষ যেমন, বিড়িখোড়, হস্তি-মানব কিংবা মানবী, ঘন ঘন মূত্র বিসর্জনকারী (বহুমূত্র), উচ্চ রক্তচাপ আছে যাদের (উদাহরন, আমাদের ব্লগ টিম) এবং উচ্চ কোলেস্টেরল সম্পন্ন মানব সন্তান। এগুলো ছাড়াও কিছু সর্বশেষ গবেষণার ফলাফল বলছে, হিয়ারিং লস, চিকিৎসা না করে পুষে রাখা বিষন্নতা, একাকীত্ব এবং বসে কাজ করা (অর্থাৎ যারা সারাদিন নড়াচড়া কম করে) ব্যক্তিবর্গও ভালো ঝুকির মধ্যে আছে।

কিভাবে বুঝবেন, আপনার আলজাইমাস রোগ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে?

এটা নিয়ে বলার আগে এর সাইন এবং সিম্পটম নিয়ে একটু বলি। এই রোগের লক্ষণগুলি বহু বছর ধরে আস্তে ধীরে গড়ে উঠে এবং দিন যতো গড়ায় ততোই সিভিয়ার হতে থাকে; আর ততোই এটা আমাদের মস্তিস্কের বিভিন্ন কার্যকলাপে নাক গলানো শুরু করে। এই প্রক্রিয়াটা অত্যন্ত ধীর এবং সময়সাপেক্ষ বলেই এটাকে ''নীরব ঘাতক'' আখ্যা দেয়া হয়েছে। প্রাথমিক অবস্থায় লক্ষনীয় ব্যাপারগুলো……... যেমন মনে করেন, ক্ষণিক আগে কি কথাবার্তা বলেছেন তা মনে করতে পারছেন না কিংবা খেই হারিয়ে ফেলছেন; কথাবার্তার মধ্যে কারো নাম, জায়গার নাম বা ঘটনা তৎক্ষনাৎ মনে করতে পারছেন না। কিছু কোথাও রেখে মনে করতে না পেরে সারা বাড়ি তোলপাড় করছেন; নতুন কিছু করতে বা চটজলদি কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না.......দোদুল্যমান অবস্থায় আছেন; বোঝার ক্ষমতা হ্রাস পাওয়ায় প্রশ্ন বেশী করছেন ইত্যাদি।

ধীরে ধীরে মাধ্যমিক অবস্থায় যখন আসবেন, তখন দেখবেন........খুব পরিচিত কারো নাম বা তার পরিবারের অন্যান্য ঘনিষ্ঠদের নাম মনে করতে পারছেন না; ডিলিউশান বা বিভ্রম হচ্ছে; বা পরিবারের কেয়ারিং সদস্যদেরকেই সন্দেহ করে বসছেন! বক্তৃতা বা ভাষার সমস্যা (অ্যাফেসিয়া), ঘুমে সমস্যা, ঘন ঘন মেজাজের পরিবর্তন (মুড স্যুইং), হতাশা এবং ক্রমবর্ধমান উদ্বিগ্নতা দেখা দিতে পারে। হ্যালুসিনেশন হতে পারে; আবার বর্তমানের চেয়ে অতীত ঘটনা বেশী স্মরণ করা আর সেসব নিয়ে কথা বলা বেড়ে যেতে পারে। সবার যে সবগুলো দেখা দিবে, বিষয়টা এমন না। তবে এসবই খেয়াল করার মতো ব্যাপার।

আর সর্বশেষ পর্যায়ে এসে মাধ্যমিক পর্যায়ের সিম্পটমগুলো আরও সিভিয়ার হয়ে যাবে। কখনও কখনও আলজাইমাস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা ভায়োলেন্ট হয়ে উঠে। আশেপাশের সবাইকে সন্দেহের চোখে দেখা শুরু করে। এ'ছাড়াও খাবার গিলতে অসুবিধা হওয়ার ফলে খাওয়ার আগ্রহ কমে যাওয়া, ওজন হ্রাস পাওয়া, নড়াচড়াতে অসুবিধা হওয়া, পেশাব-পায়খানা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা, বাকশক্তি হ্রাস পাওয়া কিংবা একেবারেই বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সাধারন ঘটনা। আক্রান্ত ব্যক্তির হয়তো খাওয়া, পোষাক বদলানো, ওয়াশরুমে যাওয়া ইত্যাদি ব্যক্তিগত কাজে সাহায্যের দরকার হতে পারে এবং এক পর্যায়ে কোনরকমের সাহায্য ছাড়া করতেই পারে না।

সমস্যা হলো, কোন নির্দিষ্ট পরীক্ষার মাধ্যমে আলজাইমাস রোগের উপস্থিতি নির্ণয় করা এখনও সম্ভব না। সাধারন ডাক্তাররা (জিপি) বিভিন্ন রকমের টেস্ট করে সন্দেহ হলে এই রোগের বিষেশজ্ঞের কাছে রেফার করে থাকেন। সেখানেও বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার পরে নিশ্চিত হওয়া যায়। যেমন, একটা টেস্ট হলো ''মেন্টাল এবিলিটি টেস্ট'' বা ''কগনিটিভ এসেসমেন্ট'' যার মাধ্যমে রোগীর স্মৃতি, চিন্তার প্যাটার্ন ইত্যাদি পরীক্ষা করে দেখা হয়। এ'ছাড়া সিটি স্ক্যান, এমআরআই স্ক্যানও করা হয়। এই রোগের উপস্থিতি নিশ্চিত হতে অনেক সময়ে মাসের পর মাসও লেগে যেতে পারে।

এই রোগের অত্যাধিক সাইন এবং সিম্পটমের কারনে অনেকেই এই ভেবে হাল ছেড়ে দিতে পারেন যে, এটা নিয়ন্ত্রণ করা যেহেতু আয়ত্বের বাইরে, তাই এটা নিয়ে চিন্তা করার দরকার নাই। তারা বরং পরের লেখাটুকু মনোযোগ দিয়ে পড়েন। কিভাবে এটাকে ঠেকানো যায়।.............. বাকীটা আল্লাহ ভরসা!!!

প্রিভেনটিভ মেডিসিনে একটা বহুল প্রচলিত কথা আছে, ''প্রিভেনশান ইজ বেটার দ্যান কিউর।'' কোন একটা রোগের শরীরে বাসা বাধার আগেই তাকে ঠেকিয়ে দেয়া সবচাইতে বুদ্ধিমানের কাজ। বিষয়টা অনেকটা এইরকম যে, চোর বাসায় ঢুকলে কি করবো না ভেবে চোর যাতে করে কোনভাবেই ঢুকতে না পারে, সেই ব্যবস্থা করা। তাছাড়া, যেহেতু এই রোগটার বর্তমানে কোন প্রতিকার নাই, শুধুমাত্র এমন কিছু ওষুধ পাওয়া যায় যা সাময়িকভাবে উপসর্গ কমাতে পারে, তাই এটাকে ঠেকানোই সবচাইতে ভালো স্ট্র্যাটেজি!!

কিভাবে ঠেকাবেন?

খুব সোজা। ওজন কমান। শারীরিক আর সামাজিকভাবে সক্রিয় থাকেন। টেনশানমুক্ত জীবন-যাপন করেন। যেই জিনিস আপনার নিয়ন্ত্রণে নাই, সেটা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা কম করেন। ব্লগে প্রচুর পড়েন আর লিখেন। কপি-পেষ্ট করবেন না। ওতে কিন্তু কোন উপকার নাই। মৌলিক লেখা অথবা ফিচার লিখেন, তাতে করে আপনাকে প্রচুর পড়তে হবে। আর যতো পারেন দাবা খেলেন। এটা আপনার মস্তিস্কের জন্য খুবই উপকারী। এই বিষয়ে প্রচুর গবেষণা হয়েছে। এই সংক্রান্ত একটা ছবি দিলাম।


দাবা এমন একটা খেলা যেটাতে স্বল্প-মেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতির ব্যবহার, গণনা এবং ভিজ্যুয়াল স্পেশাল (visual–spatial) সক্ষমতা আর সমালোচনামূলক চিন্তা…….এর সবই পাওয়া যায়। এটা সহজে শেখাও যায়। আর এটাতো স্বীকৃত যে, শিক্ষা এবং স্মৃতির সাথে জড়িত ইন্টেলেকচ্যুয়াল কার্যকলাপগুলো এই রোগের বিকাশের বিরুদ্ধে সবচেয়ে ভালো সুরক্ষা দিয়ে থাকে। একজন গবেষকের বক্তব্য হুবহু তুলে দিলাম, Effortful mental activity [such as chess] produces and strengthens synaptic connections and stimulates neurogenesis process. Thus, it promotes plastic changes in the brain that slow down the symptoms of dementia. এখন সিদ্ধান্ত আপনার।

আর খাবার? প্রচুর শাক-সব্জী আর ফলমূল খাবেন। ডিম, মাছ (সামুদ্রিক মাছ বেশী ভালো), বাদাম, হোল গ্রেইন, মুরগীর মাংস খাদ্য তালিকায় রাখবেন। চর্বিযুক্ত খাবার আর রেডমিট যতোটা কম পারেন খাবেন। একেবারেই না খেলে সবচেয়ে ভালো (যেমন আমি!)। ও হ্যা, মিষ্টিও কম খাবেন। চিনি একদম বাদ। দেখবেন জীবনটা কতো সহজ হয়ে গিয়েছে!!

শেষকথাঃ এই রোগের ভয়াবহতা খুব কাছ থেকে দেখার অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে। স্মৃতি শক্তি সম্পূর্ণ বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া, সম্পূর্ণভাবে অন্যের উপর নির্ভরশীল এবং দুনিয়া ও পারিপার্শ্বিকতা সম্পর্কে একেবারেই চেতনাহীন একজন মানুষের বেচে থাকার কি আকুতি কিংবা সেটা আদৌ ছিল কিনা জানা আমার পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠে নাই। তবে প্রিয়জনেরা সেটার খুব একটা তোয়াক্কাও করে না কখনও। যমে-মানুষে এই যে টানাটানি, তাকে রোগে ক্লান্ত-বিদ্ধস্ত একজন মানুষ কিভাবে নেয়, সেটাও আমার জানা নাই। শুধু এইটুকু জানি যে, প্রচন্ড কষ্টে ধুকতে থাকা প্রিয়জনের যন্ত্রণা, কাতরতা চোখে দেখার মতো না। আবার কষ্টে ভুগে ভুগে প্রিয়জনের চির বিদায়ও মেনে নেয়ার মতো কোন বিষয় না। এই যে ডিলেমা, এটার থেকে মুক্তির একমাত্র উপায়, এই রোগ হওয়ার আগেই সাবধান হওয়া।

আপনারা এই রোগ থেকে দুরে থাকার চেষ্টা করেন আর প্রিয়জনদেরকেও দুরে রাখার চেষ্টা করেন। দোয়া করি, আপনাদের কারো যেন এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে না হয়। প্রিয়জনের এমন কষ্ট দেখলে বুক ভেঙ্গে যায়, বিশেষ করে সেই সময়ে, যখন চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া খুব বেশী কিছু করার থাকে না।

সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তা আমাদের সহায় হোন।

রেফারেন্স সমূহঃ
Ref. 1
Ref.2
Ref.3
Ref.4
Ref.5
Ref.6
Ref.7

আমার এই ফিচার পোষ্টটা জানা-অজানা (বিবিধ) ক্যাটাগরীর জন্য।

শিরোনামের ছবির রেফারেন্স।

মন্তব্য ৩৪ টি রেটিং +১৮/-০

মন্তব্য (৩৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:২৭

জুল ভার্ন বলেছেন: আলঝেইমা নিয়ে চমতকার লিখেছেন! আমার একজন নিকট আত্মীয় এই রোগের রোগী। তিনি ঢাকার বাইরের একটা জেলা শহরের বাসিন্দা। চিকিতসার সুবিধার্থে তিনি দীর্ঘদিন আমার বাসায় থেকে ঢাকায় চিকিতসা নিয়েছেন। কিন্তু সুস্থ্যতার কোনো লক্ষণ দেখিনা। আলঝেইমার রোগ মস্তিষ্কের একধরনের অস্বাভাবিকতা, যাতে সাধারণত স্মৃতিভ্রংশ হয়, রোগীর কগনিটিভ কার্যকারিতা বা পরিপার্শ্ব সম্পর্কে চেতনার ক্ষয় হতে থাকে। ৬০/ ৬৫ বছরের পরে এ রোগ হওয়ার প্রবণতা বেশি। ডাক্তারদের মতে এই রোগের তেমন কোনো প্রতিকার নেই। রোগের দীর্ঘসূত্রিতার সঙ্গে সঙ্গে রোগীর শারীরিক অবস্থারও অবনতি হতে থাকে, খাওয়াসহ অন্যান্য দৈনন্দিন কাজ নিজে করতে না পারার কারণে রোগী একেবারেই পরনির্ভরশীল হয়ে পড়েন।

২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:২৪

ভুয়া মফিজ বলেছেন: সিভিয়ার পর্যায়ে চলে গেলে এই রোগ আসলে এখন পর্যন্ত নিরাময়যোগ্য না। প্রাথমিক পর্যায়ে থাকলে লাইফ স্টাইলে পরিবর্তন এনে রিকোভারী হলেও হতে পারে। আপনার বলা পয়েন্টগুলো আমার পোষ্টের সাথে মিলিয়ে দেখলাম, কোন কিছু বাদ পড়লো কিনা। না........সবই কাভার করা হয়েছে। :)

আমাদের সবাইকে এই রোগের ভয়াবহতা সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে। আপনার নিকটাত্মীয়ের জন্য শুভকামনা রইলো। আল্লাহ চাইলে উনি ভালো হয়েও যেতে পারে।

২| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:৩৪

সোনাগাজী বলেছেন:




আপনি পোষ্ট দিলে উহাতে বলেন, আপনি ব্যস্ত; কমেন্ট করলে বলে,ন ব্যস্ত; ঋষি সুনাক কি সারাদিন আড্ডা দিয়ে বেড়ায় যে, সবটা আপনার উপর?

২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:২৪

ভুয়া মফিজ বলেছেন: ঋষি সুনাক হইলো ডামি। আসল কাম তো আমারেই করতে হয়। ;)

অপ্রাসঙ্গিক মন্তব্য করছেন, তারপরেও উত্তর দিলাম। মন্তব্যে বুদ্ধি-শুদ্ধির ছাপ থাকা দরকার।

৩| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৪৪

সোনাগাজী বলেছেন:



এসব ব্যাপারে আমি এর থেকে অনেক বেশী জ্ঞানীদের লেখা পড়েছি; ফলে, আমার জন্য ইহাতে নতুন কিছু নেই! আপনি 'ব্যস্ত' শব্দটা কেন ব্যবহার করেন, উহা বুঝার চেষ্টা করছি।

২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৫৭

ভুয়া মফিজ বলেছেন: এসব ব্যাপারে আমি এর থেকে অনেক বেশী জ্ঞানীদের লেখা পড়েছি কন কি? উহাদের গেয়ান কি আপনের চাইতে বেশী? এইটা আমারে বিশ্বাস করতে কন? নো ওয়ে!!! :P

এইসব নিয়া আপনে লেখলে উহারা তো বটেই, আমরাও গেয়ানী হইতে পারতাম।

আপনি 'ব্যস্ত' শব্দটা কেন ব্যবহার করেন, উহা বুঝার চেষ্টা করছি। উহা বুইঝা আপনের কাম নাই। আপনে বরং ফাইনান্স, টেকনোলজি, অর্থনীতি, রাজনীতি বুঝার চেষ্টা করেন।

৪| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:১৮

গেঁয়ো ভূত বলেছেন: আঝেইমার নিয়ে চমৎকার একটা ফিচার পড়া হলো, এজন্য আপনার অসংখ্য অবশ্য অবশ্যই প্রাপ্য।
মাঝে মাঝে আমার মনে হয় রোগটা আমারও থেকে থাকতে পারে। প্রায় ২৫ বছর আগে থেকেই বিষয়টা খেয়াল করেছি যে অনেক সময় আমার পরিচিত কারো সাথে দেখা হলো অথচ তার নাম মনে করতে পারছি না, তখন কেমন লাগে বলেন? তবে সচরাচর এমনটা ঘটে না, ঘটনাগুলো খুবই রেয়ার বলা যায়। আগে ম্যারিজ ডে এবং বউ এর জন্মদিন ভুলে যেতাম এখন ভুলি না। =p~ =p~

২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:৪৬

ভুয়া মফিজ বলেছেন: এজন্য আপনার অসংখ্য অবশ্য অবশ্যই প্রাপ্য। ''ধন্যবাদ'' শব্দটা বাদ পড়ে গিয়েছে। আমি অবশ্য নিজ গুনে বুঝে নিয়েছি। কাজেই নো টেনশান!! :P

মাঝে মাঝে আমার মনে হয় রোগটা আমারও থেকে থাকতে পারে। আসলে এটাই হলো সমস্যা। এই রোগের সিম্পটমগুলো কম-বেশী আমাদের সবার মধ্যেই আছে। তাই, তফাৎটা বুঝতে হলে বেশ মনোযোগী হতে হবে। আপনার ব্যাপার আপনিই সবচেয়ে ভালো বুঝবেন। এই রোগের ক্ষেত্রে এমনকি ডাক্তাররাও ঠিকমতো বুঝতে পারে না।

মূল বিষয় হলো, সমস্যাগুলোর রিকারেন্স কতোটা ঘন ঘন হচ্ছে, আর কোন মাত্রায় হচ্ছে, সেটা মনিটর করা।

আগে ম্যারিজ ডে এবং বউ এর জন্মদিন ভুলে যেতাম এখন ভুলি না। এই দু'টা দিন আমি সবসময়েই ভুলে যাই কৌশলগত কারনে। বিস্তারিত বলার কিছু নাই.......বুঝতেই পারছেন!!! :-B

৫| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:৩৯

মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: চমতকার ও দরকারী লেখার জন্য রইলো ধন্যবাদ ও শুভেচছা।

স্বল্পমেয়াদী স্মৃতিশক্তি হ্রাস বা আলঝাইমাস কিংবা স্মৃতিভ্রংশ একটা সময়ে (আমি যতটুকু জানি ৪০ এর পরেই ধীরে ধীরে মানুষের স্মৃতি কমতে থাকে) কিছু মানুষের মাঝে প্রকট হয়ে ধরা দেয় । এর ফলে মানুষের প্রাত্যহিক জীবনে নানান জটিলতা তৈরী সহ স্বাভাবিক জীবন এলোমেলো হয়ে যাওয়ার সমুহ সম্ভাবনা। এদিকে ইদানিং আমারও অনেক দরকারী কথা-কাজ ভূলে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যাচছে ।

দেখি ভাইজান , আপনি প্রদত্ত পরামর্শ মেনে তা থেকে বেরিয়ে আসতে পারি কিনা।

২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:৪৯

ভুয়া মফিজ বলেছেন: সব সমস্যারই সমাধান আছে। খালি সাবধানে থাকাটা জরুরী। আমি অবশ্য টাকা খরচের বিষয়গুলো সামনে আসলে চোখে অন্ধকার দেখি। অনেক কিছুই মনে করতে পারি না। সবই বয়সের দোষ!! আমার কোন দোষ নাই!!! =p~

পরামর্শ পালন করেন। সব মুশকিল আসান হয়ে যাবে ইন শা আল্লাহ। :)

৬| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:১৯

নেওয়াজ আলি বলেছেন: ভুয়া ভাই কেমন আছেন। আস্তে আস্তে পড়বো লেখাটা।

২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৩৯

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আলহামদুলিল্লাহ........এখন পর্যন্ত ভালো।

লেখাটা বেশী আস্তে পইড়েন না, তাইলে শেষে আসতে আসতে শুরুতে কি পড়ছিলেন ভুইলা যাইতে পারেন!!! :P

৭| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:২১

করুণাধারা বলেছেন: কিছু ভুল আছে:

১) এটা আপনি ফিচার প্রতিযোগিতার জন্য দিয়েছেন, কিন্তু শিরোনামে ফিচার কথাটা লিখেন নাই। সবাইকে তো দেখলাম ফিচার কথাটা উল্লেখ করে দিতে।

২) ফিচারের ক্যাটাগরি ভাগ করে দিয়ে কর্তৃপক্ষ বলেছেন লিখিত ফিচারটি কোন ক্যাটাগরির সেটা উল্লেখ করে দিতে। আপনার ব্যস্ততা মনে হয় আপনাকে এটা লেখার মত অবসর দেয় নাই!!

৩) ফিচারের মাঝখানে নিজের ব্যক্তিগত কথা, 'যেমন সময়সীমা বাড়ানোয় অংশগ্রহণ করে ফেল্লাম', ইত্যকার কথা অনাবশ্যক মনে হয়েছে।

তবে ফিচার চমৎকার হয়েছে। এমন ফিচার যেন পুরষ্কার প্রাপ্তি থেকে বাদ না পড়ে তাই এত কথা বলা।

অনেক কিছু জানা হলো ফিচারখানা পড়ে। আমার মনে হয় আলজেইমারের কারণ প্রধানত বংশগত। দাবার চেয়ে আমার সাপলুডু পছন্দ, তাই দাবা বাদ। মাথা ঘামানোর জন্য আমার পছন্দ সুডোকু, ইদানীং ওয়ার্ডল। সমস্যা হচ্ছে ওয়ার্ডল শেষে ভুলে যাই কি কি শব্দ ছিল...

প্রতিযোগিতায় শুভেচ্ছা।

২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৪০

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আপনি তো আমার বাড়ির রাস্তা ভুলেই গিয়েছেন। তারপরেও এই পোষ্টে আপনার পদধূলি পেয়ে ধন্য হলাম। :)

আপনার বলা পয়েন্টগুলোকে আমার ''ভুল'' বলা যাবে না। আপনার উপদেশ বলতে পারেন। পয়েন্ট বাই পয়েন্ট কিঞ্চিৎ ব্যাখ্যা করি।

১। শিরোনামে ফিচার লিখতেই হবে, এমন কোন কথা নাই। ''প্রারম্ভিক কিছু কথা''তে বলা আছে। এটাকে ''পটভূমি''ও বলা যায়। আর জানেন তো, আমি ভুয়া। সবার থেকে আলাদা!!! :-B
২। এই বিষয়টা আসলেই খেয়াল করি নাই। সত্যি বলতে, ঋষি সুনাকের কাজকাম সুপারভাইজ করতে হয়। অন্যদিকে নজর দেয়ার সময় খুব একটা পাই না।
৩। এটার সাথে খানিকটা একমত। তবে এটা অংশগ্রহনের একটা ইন্ডিকেশান; সেই হিসাবে দেয়া।

আসলে যোগ্যতার অভাবে পুরস্কার টুরস্কার আমি খুব একটা পাই না। সেই লক্ষ্যে লেখিও নাই। জাস্ট অংশগ্রহন করলাম আর কি!! তবে আপনার উপদেশগুলো আমলে নিয়ে দেখি কি করা যায়!! সমস্যা হলো, আমার নিজের লেখা আমার এতো বেশী পছন্দ যে, পরিবর্তন করতে খুব একটা মন চায় না। =p~

বংশগত না, আপাততঃ বয়সটাকেই প্রধান কারন মনে করা হয়। তবে, বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত না। গবেষণা চলমান। কে বলতে পারে, হয়তো আপনার ধারনাটাই সঠিক হয়ে যেতে পারে। সাতারকে যেমন একটা টোটাল এক্সারসাইজ হিসাবে দেখা হয়, তেমনি দাবাকেও আলজাইমাস প্রতিরোধে একটা কম্বাইন্ড প্যাকেজ হিসাবে দেখা হয়। সময় করে রেফারেন্স ৪, ৫ পড়লে এই বিষয়ে অনেক কিছু জানতে পারবেন।

আপনার বাকী খেলাগুলোও ঠিক আছে। চালিয়ে যান। আসল কথা হলো, ব্রেইনকে খাটানোর মতো কিছু করা। ব্লগেও নিয়মিত হয়ে দেখতে পারেন। সেটাও একটা কাজের কাজ হবে।

শুভেচ্ছার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ আপা। :)

৮| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:১১

মিরোরডডল বলেছেন:




যেমন মনে করেন, ক্ষণিক আগে কি কথাবার্তা বলেছেন তা মনে করতে পারছেন না কিংবা খেই হারিয়ে ফেলছেন; কথাবার্তার মধ্যে কারো নাম, জায়গার নাম বা ঘটনা তৎক্ষনাৎ মনে করতে পারছেন না।

এরকম প্রায়ই হয় ।
এতোবছর একসাথে কাজ করি কিন্তু একদিন বসের সাথে কথা বলার সময় কিছুতেই তার নাম মনে করতে পারছিলাম না,
কি বিব্রতকর অবস্থা :|

আমার ডক্টরকে বলেছিলাম যদি কোন টেস্ট থাকে দিতে যেটাতে সিম্পটম বোঝা যাবে ।
ডক্টর একটা বকা দিয়ে বলেছে, it’s too early to think about it.


২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৪১

ভুয়া মফিজ বলেছেন: এই রোগের অনেক সিম্পটমই আমার সাথেও মিলে। আজকাল খেয়াল করার কারনে বিষয়গুলো অনেক বেশী নোটিশ করি। আল্লাহ ভরসা। যেদিন ব্লগে কোন পোষ্ট দিয়ে সেটার কথা ভুলে যাবো, সেদিন বুঝবো.........ঘটনা (মানে, ব্রেইন আর কি!!!) আসলেই প্যাচ খাইছে!!! =p~

এই পশ্চিমা ডাক্তারগুলো অনেক সময়ে পেশেন্টদের এভারেজ কমপ্লেইনকে গুরুত্ব দেয় না। আমি সেইজন্য অনেক সময়ে নেট দেখে বানিয়ে বানিয়ে অনেক সমস্যার কথা বলি। তখন দেখি এরা গুরুত্ব দেয়। বিভিন্ন রকমের টেস্ট ফেস্ট করে। আমার মনে হয়, এসব ক্ষেত্রে মিথা বলা জায়েজ আছে। :-B

ডক্টর একটা বকা দিয়ে বলেছে, it’s too early to think about it কোন রকমের পরীক্ষা ছাড়াই ওই ব্যাক্কলটা জানে কিভাবে কার ব্রেইনের মধ্যে কি হচ্ছে? too early বলে কোন কথা নাই। Anytime anything can happen.

৯| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৩০

শায়মা বলেছেন: আমি সহজে কোনো কিছুই ভুলি না......

সব কথা মনে রাখার চেষ্টা করতে করতে আমি আমার ২ বছর বয়সের কথাও মনে করে ফেলতে পারবো!:)

আমি ঝগড়া লাগলে সব মনে করে করে তার চৌদ্দগুষ্ঠি উদ্ধার করে দিতে পারি। :)

আমি কিছু লিখতে গেলে আমার জীবনে যা কিছু দেখা সব মনে করে ফেলতে পারি।


আমার কি আলঝেইমার হবে! :(


জানিনা তবে এই রোগ কি রকম কষ্টের তা আমারও জানা আছে ভাইয়া।


অনেক সুন্দর একটা ফিচার লিখেছো।

২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৪৬

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আমি সহজে কোনো কিছুই ভুলি না......
সব কথা মনে রাখার চেষ্টা করতে করতে আমি আমার ২ বছর বয়সের কথাও মনে করে ফেলতে পারবো!:)
আমি ঝগড়া লাগলে সব মনে করে করে তার চৌদ্দগুষ্ঠি উদ্ধার করে দিতে পারি।


সাধারনভাবে মেয়েদের এই গুনটা আছে। তোমার ভাবীকে তো দেখি; আমার সব কাজ-কারবার দিন তারিখ সহ তার মুখস্থ্। ঝগড়া লাগলে চতুর্মূখী আক্রমনে আমি দিশাহারা হয়ে যাই। X(

আমার কি আলঝেইমার হবে! আপাততঃ তো কোন সম্ভাবনা দেখছি না। সন্দেহ হলে অবশ্যই জানাবো। :P

১০| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৫৫

মিরোরডডল বলেছেন:




ডক্টর একটা বকা দিয়ে বলেছে, it’s too early to think about it কোন রকমের পরীক্ষা ছাড়াই ওই ব্যাক্কলটা জানে কিভাবে কার ব্রেইনের মধ্যে কি হচ্ছে? too early বলে কোন কথা নাই। Anytime anything can happen.

I agree, anytime anything can happen.
আমার ডক্টর একটু পাগলা টাইপ ।
কিন্তু চিকিৎসা ভালোই করে ।
তারকাছে গেলে প্রথম দশ মিনিট শুধুই মজার কথা বলবে ।
হো হো করে হাসবো , অর্ধেক প্যারা তখনই ভালো হয়ে যায় ।
ডক্টরকে নিয়ে একদিন লিখবো, ভীষণ মজার মানুষ :)

আসলে আলঝেইমারের পেশেন্ট আমিও খুব ক্লোজলি দেখেছি ।
সত্যি অনেক কষ্টদায়ক !


২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ৯:০৫

ভুয়া মফিজ বলেছেন: পেশেন্টকে মানসিক শান্তি দেয়ার জন্য ডাক্তারদের এই ধরনের কথা বলা ঠিক আছে, তবে এই ধরনের কমপ্লেইনকে ইগনোর করা কোন ভালো কথা না। আমার ডাক্তার এই ধরনের কথা বলে, কিন্তু সেই সাথে আমার অভিযোগগুলোকে গুরুত্বও দেই। অবশ্য আমি অনেক মিথ্যা কথাও বলি, কোন সন্দেহ নাই!!! :P

এই রোগটার সবচেয়ে খারাপ দিক হলো, বছরের পর বছর ধরে সাফার করা। আর যেখানে ভালো হওয়ার সুযোগ একেবারেই সীমিত, সেখানে এই সাফারিংটা খুবই কষ্ট দেয়। আমাদের সবার সাবধান হওয়া উচিত। আমার এই পোষ্টটা পড়ে একজনও যদি সচেতন হয়, তাহলেই আমার লেখার জন্য দেয়া সময় আর কষ্টটা সার্থক হবে।

১১| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৫৯

মনিরা সুলতানা বলেছেন: সিরিয়াসলি অনেক কিছুই জানলাম।
ভালো পোষ্ট।

২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ৯:০৭

ভুয়া মফিজ বলেছেন: ধইন্যবাদ আপনের চেহারা মোবারক দেখানোর জন্য। আরো ধইন্যবাদ, প্রশংসা করার জন্য। :)

১২| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:০৯

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: মগজ আর স্নায়ু সংক্রান্ত রোগগুলির ক্ষেত্রে বিজ্ঞানকে মনে হয় আরও অনেক দূর যেতে হবে। খুব ভালো চিকিৎসা মনে হয় নাই। সিজোফ্রেনিয়া বা এই জাতীয় মানসিক রোগেরও তেমন ভালো কোন চিকিৎসা নাই। শুধু অসুখের তীব্রতাকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা হয়। তবে অনেক ক্ষেত্রে এই জাতীয় রোগ আগে সনাক্ত হলে ভালো হবার সম্ভবনা থাকে মনে হয়।

কঠিন বিষণ্ণতা রোগের চিকিৎসা হিসাবে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। কিছুটা ফলও নাকি পাওয়া যায়।

২৫ শে নভেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৩৯

ভুয়া মফিজ বলেছেন: ব্রেইনের কাজ-কারবার এখনও চিকিৎসা বিজ্ঞান অনেকটাই জানে না। এই জন্য আরো বহুদূর যেতে হবে, বহু গবেষণা করতে হবে। বিজ্ঞানের এই লিমিটেশান নিয়া একটা পোষ্ট দিতে পারেন আপনের বিজ্ঞানকে পোক করা পোষ্টের ক্যাটাগরীতে। ;)

ব্রেইন সংক্রান্ত বেশীরভাগ অসুখই পুরাপুরি নিরাময়যোগ্য না। কিছু ওষুধ শুধুমাত্র খানিকটা রিলিফ দিতে পারে।

কঠিন বিষণ্ণতা রোগের চিকিৎসা হিসাবে বৈদ্যুতিক শক দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। খালি বিষন্নতা না, আমাদের ব্লগের অনেকের চিকিৎসাতেও বৈদ্যুতিক শক থেরাপী ব্যবহার করা উচিত!! :P

১৩| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:৫৫

অপু তানভীর বলেছেন: আমাদের দেশে এটাকে কোন রোগ হিসাবে ধরা হয় কিনা আমার সন্দেহ । বয়স কালে সবাই সব কিছু ভুলে যায় এটা স্বাভাবিক হিসাবেই ধরে নেওয়া হয় ।

এই রোগ নিয়ে আমাদের মাঝে সচেতনাও কম ।

পোস্টের শেষে বিভাগ যুক্ত করে দেন ।

২৫ শে নভেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৪০

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আমাদের দেশের অনেকেরই অনেক রোগ সম্পর্কে ধারনা নাই। প্রকৃত শিক্ষাহীনতা এর একটা বড় কারন। সরকার থেকেও সচেতনতা তৈরীতে যথাযথ কাজ করা হয় না। অবশ্য দেশে থাকা মানুষের সমস্যা বলে লাভ কি? আম্রিকার মতো দেশে থেকেও অনেকে এসব সম্পর্কে অজ্ঞ। আসলে বেকুবরা দেশেও বেকুব, আম্রিকাতেও বেকুব! =p~

পোস্টের শেষে বিভাগ যুক্ত করে দেন । দিলাম। করুণাধারা আপাও অনেকগুলো সাজেশান দিয়েছেন। তবে, এটার বডিতে আর হাত দেয়ার টাইম নাই। আসলে আমি এটাতে খুব একটা সময় দিতে পারি নাই। অনেকটা ক্যাজুয়ালী লিখা। তার অর্ধেকটাই আবার বেশ আগের। সব মিলায়ে হযবরল অবস্থা। :)

১৪| ২৫ শে নভেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:০৮

আহমেদ জী এস বলেছেন: ভুয়া মফিজ,




দক্ষ সার্জনের মতোই আলঝেইমারের ব্যবচ্ছেদ করেছেন। সবকিছুর "অপারেশনাল নোট" এমন বোধগম্য করে লিখেছেন যে, কারো বুঝতে কষ্ট হবার কথা নয়। ব্লগাররা এতে উপকৃত হ্ওয়ার সাথে সাথে সাবধান্ও হবেন, সন্দেহ নেই।

২৯ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:৫৯

ভুয়া মফিজ বলেছেন: এই পোষ্ট পড়ে একজনও যদি সাবধান হয়, তাহলেই আমার সার্থকতা।

আপনেরে নিয়া খানিকটা টেনশানে আছিলাম ভাইজান। ডাক্তার মানুষ, কি না কি ভুল ধরেন। মন্তব্যে শান্তি পাইলাম। ধন্যবাদ। :)

১৫| ২৮ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ৯:২৪

আরোগ্য বলেছেন: মাধ্যমিক পর্যায়ের সিম্পটমগুলো নানুর সাথে মিলে যদিও তার বয়স ৯৫+ হবে। তাই আমরা এটাকে বার্ধক্যজনিত সমস্যা হিসেবে ধরে নেই। আর সর্বশেষ পর্যায়ের সিম্পটমগুলো অনেক সময় আম্মুর সাথে মিলে। আম্মুর অবস্থা অবশ্য ঋতু বদলের মত। প্রকৃতি যেমন ভিন্ন ঋতুতে ভিন্ন রূপ ধারণ করে, আম্মুও তেমনি। মাঝে মাঝে out of control. ডাক্তার বলেছে সিভিয়ার লেভেলের সিজোফ্রেনিক, no remedy. তারপরও আলহামদুলিল্লাহ যতটুকু ভালো আছেন, পুরোটাই আল্লাহর অনুগ্রহ।

ইদানীং ব্লগে তেমন আহি না। তাই পোস্টে আইতে লেট অইছে। আজকা আপনের পোস্ট পইড়া মন্তব্য রাখবার আইছি।আর এই ফাকে আরো কিছু পোস্টে মন্তব্য রাখলাম। আপনে যিমুন বিলাতের রাজদরবার শামলান আমিও বঙ্গবাসীর খেদমতে বিজি থাকি আর নিজের মগজ বিকাশিত করবার চেষ্টা চালাই। আমগো ওয়াই ফাই আজকা ডিসটাব মারতাছে ইমুজি দিবার পারতাছিনা।

৩০ শে নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:২৪

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আপনের নানুরে আল্লাহ কমপক্ষে শতায়ু করুন, এই দোয়াই করি। আপনের আম্মুর জন্যও দোয়া রইলো। ডাক্তাররা যখন হাত গুটায়ে নেয়, তখন আল্লাহ মাঝে মাঝে উনার ক্যারিশমা দেখান। আল্লাহ চাইলে উনি পুরা সুস্থ্ই হয়ে উঠতে পারেন। বাকীটা আল্লাহ ভরসা।

ইদানীং ব্লগে আমিও কম আহি। ব্যস্ততা........বুজবারই পারতাছেন। হের লাইগা আপনেরে বেশী কিছু কইবারও পারি না। তয়, আমার পুষ্টে মনে কইরা আইছেন, কি কয়া যে কৃতজ্ঞতা জানামু, বুজবার পারতাছি না। আপনের বঙ্গবাসীরে দেওন খেদমত মহান আল্লাহ কবুল করুন। ইমুজি না দিলেও যা বুজনের বুইজ্জা হালাইছি। আপনের মগজ দিনে দিনে আরো বিকশিত হউক! দোয়া থাকলো!! =p~

১৬| ৩০ শে নভেম্বর, ২০২২ ভোর ৬:৪৫

সোহানী বলেছেন: খুব প্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে লিখেছেন। বয়স বাড়ছে তাই এ ধরনের রোগ নিয়ে সচেতনটা জরুরী। এডভান্স সর্তকতা........

০১ লা ডিসেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৪৩

ভুয়া মফিজ বলেছেন: সচেতনতা তো অবশ্যই জরুরী। নিজের জন্য এবং পরিবার-পরিচিতজনদের যারা ঝুকির মধ্যে আছে, তাদের জন্য। বয়সের সাথে এটার একটা কো-রিলেশান থাকলেও কম বয়সীদের মধ্যেও এই রোগের সূত্রপাত হতে পারে। সজাগ থাকতে হবে সে'জন্যেই।

আপনেরে বহুদিন পরে দেখলাম। ফিচার লিখছেন নি কোন? আরে.........জিগাই ক্যান? দেহি আপনের বাড়িত গিয়া!! :)

১৭| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২২ ভোর ৫:৩০

জোবাইর বলেছেন: আলঝেইমার্স, ডিমেনশিয়া এবং পারকিনসন রোগ নিয়ে অনেকের ভুল ধারণা আছে, আবার অনেকে একটির সাথে আরেকটকে গুলিয়ে ফেলে। আপনার ফিচার পড়ে আলঝেইমার্স ও ডিমেনশিয়া সম্পর্কে ধারণা আরো পরিষ্কার হলো। কঠিন শব্দ, গুরুগম্ভীর ভাব ও প্রাবন্ধিক ভাষার পরিবর্তে আপনার নিজস্ব স্টাইলের ব্লগীয় ভাষা ও ব্যক্তিগত কথায় লেখা ফিচার চমৎকার হয়েছে। শত ব্যস্ততার মাঝেও ফিচার লেখার জন্য ধন্যবাদ।

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:৫৭

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আসলে ব্লগকে অনেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো মনে করতে চায়। ভাবে, এইখানে সব আলোচনা গুরু-গম্ভীর হওয়া উচিত। আমি ব্লগে আসি খানিকটা আনন্দ করার জন্য। সেইসাথে কিছু যদি জানতে পারি, সেটা হলো বোনাস। তার ছাপই আমার লেখায় পাওয়া যায়। ব্যক্তি জীবনেও আমি গুরু-গম্ভীর আলোচনা যথা-সম্ভব এড়িয়ে চলি। কয়দিন পরে এমনিতেই এই দুনিয়োতে থাকবো না। এতো সিরিয়াস ভাবসাব দেখায়ে কি কোন কিছু উদ্ধার হবে?

যাই হোক, ডিমেনশিয়া যে কোন রোগ না, সেটা পোষ্টেই বলেছি; আর চেষ্টা করেছি বিষয়টাকে যতোটা হাল্কা চালে দেখানো যায়, দেখাতে!!! :)

আপনার ব্লগ-বাসায় গিয়ে একটা সিরিয়াস ফিচার দেখলাম। অপুর পোষ্টেও নাম দেখেছিলাম। এটা মনোযোগ দিয়ে পড়বো........আমার একটা আগ্রহের বিষয় নিয়ে লিখেছেন। সেই জন্য অগ্রীম ধন্যবাদ জানবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.