![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
Apprentice Lawyer At Chittagong judge court বাস্তবতায় বিশ্বাসী,আমি মুসলিম হয়ে গর্বিত।
গী দ্য মোপাসাঁ (Guy De Maupassant) ফরাসী সাহিত্যে এক দ্রুব তারা। ড. অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় এর মতে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ৪ জন ছোটগল্পকার এর মধ্যে মোপাসাঁ অন্যতম। অনেক ছোট জায়গা থেকে অনেক বড় জায়গায় উন্নীত হয়েছিলেন। নিজের যোগ্যতা বলে পেয়েছিলেন যশ, খ্যাতি। যশ খ্যাতির সাথে হুট করে আসে অনেক টাকা। এই টাকার কুপ্রভাবেই শুরু হয় নক্ষত্র পতন। অনেক নারী সংসর্গের কারণে আক্রান্ত হন সিফিলিসে। আত্মহত্যার চেষ্টাও করেন একাধিকবার। এ অবস্থায় মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে যেতে হয় মেন্টাল এসাইলামেও। সেখান থেকে ফিরে পূর্বোক্ত রোগের কারণে মাত্র ৪৩ বছর বয়সে পৃথিবী থেকে বিদায় নেন ছোট গল্পের এই উজ্জ্বল নক্ষত্র।
সম্প্রতি তার লেখা মাত্র এক পৃষ্ঠার একটি ছোট গল্প পড়লাম। নাম, "এ ডেড উইম্যানস সিক্রেট"। গল্পটি এরকম :
এক বিধবা নারী তার দুই সন্তান (একটি ছেলে এবং একটি মেয়ে) কে একা কষ্ট করে মানুষ করেছেন। ছেলেকে বানিয়েছেম জেলা প্রশাসক, আর মেয়েকে নান (গির্জার কুমারী সেবিকা)। মায়ের প্রতি সন্তানদের অগাধ শ্রদ্ধা। বিধবা একদিন মারা যায়। কষ্টে মুষড়ে পড়ে সন্তানদ্বয়। তারা সিদ্ধান্ত নেন তারা দুইজনে মিলে সারা রাত মায়ের লাশের পাশে বসে মা কে দেখবে। তো সিদ্ধান্ত মোতাবেক তারা লাশের পাশে রাত কাটাতে থাকে। হঠাৎ বোন তার ভাইকে বলে যে ড্রয়ার থেকে তার মায়ের চিঠিগুলো নিয়ে আসতে, যাতে সেগুলো পড়ে বংশের অতীত কাহিনীগুলো তারা জানতে পারে। চিঠি এনে পড়া শুরু করলে তারা দেখতে পায় যে চিঠিগুলো লিখেছিল তার মায়ের প্রেমিক, যার সম্পর্কে তারা দুইজন ওয়াকিবহাল ছিল না। মুহূর্তেই তাদের মৃতা মায়ের প্রতি ঘৃণায় তাদের মন বিষিয়ে ওঠে। ভোরের আলো ফুটতেই তারা ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যায়, একটি বারের জন্যও মায়ের মুখের দিকে না তাকিয়ে।
গল্প পড়ে মনে হতে পারে নিজ মায়ের প্রতি মোপাসাঁর ঘৃণা ছিল। কিন্তু বিষয়টা উলটো। মোপাসাঁ বাবাকে ঘৃণা করতেন প্রচন্ড, মাকে ভালবাসতেন। তার এই গল্পের সারকথা হচ্ছে কিভাবে অসম্ভব ভালবাসা এক মুহূর্তে ঘৃণায় রূপান্তরিত হতে পারে!
মোপাসাঁ ছেড়ে এখন আসি আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটে। গ্রাম বাংলায় একটা প্রবাদ আছে, "এক বালতি দুধে একফোঁটা চনা পড়লেই পুরা বালতির দুধ নষ্ট"। এর মানে হচ্ছে, আপনি অনেক ভাল কাজ করলেন, কিন্তু হঠাৎ এমন একটি খারাপ কাজ করলেন প্যারামিটারে যার গ্রাভিটি অনেক উপরে সেক্ষত্রে আপনার কৃত ঐ ভাল কাজ সমূহ মুহূর্তে শেষ হয়ে যায়। যত বেশি ভালবাসা, সেটা উলটে গেলে তত বেশি ঘৃণা।
সেজন্য সবকিছুতেই চেক এন্ড ব্যালান্স থাকা উচিত। মানুষের মন জয় করতে খুব বেশি কিছু করতে হয়না। বেশি করতে গেলে এক্সপেকটেশন লেভেল বেড়ে যায়। সাথে পতনের সম্ভাবনাও বেশি থাকে। আবার ভাইস ভার্সা, আপনাকে যে গুরুত্ব দিচ্ছে, সম্মান দিচ্ছে সেটা রক্ষা করার দায়িত্বও আপনার। সে হোক আপনার বেটার হাফ, বন্ধু, আত্মীয় অথবা কলিগ। আমাদের মনে রাখা উচিত সম্মান দেয়া এবং সম্মান ধরে রাখা সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটা মিউচুয়াল ডিউটি। এক্ষেত্রেও ব্যালান্স করতে পারলে কোনদিন পস্তাতে হয় না। অর্থ্যাৎ "দুধ ভরা বালতি" যদি আপনি কাউকে দেন, সেক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে তাতে যেন "এক ফোটা চনা" না পরে। আর যদি তা না দেন, তবে চনা পরার প্রশ্নই আসে না। সিম্পল!
©somewhere in net ltd.