নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি বলতে চাই

বিদ্রোহী কণ্ঠ

বিদ্রোহী কণ্ঠ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মারিয়ানা ট্রেঞ্চ পৃথিবীর এক রহস্যময় গভীরতম স্থান

২২ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:২১


মহান সৃষ্টিকর্তা এই পৃথিবীতে কত যে রহস্যময় বস্তু ও স্থান সৃষ্টি করেছেন তা আজও মানুষের কাছে অজানা। তবে যুগ যুগ ধরে মানুষ চেষ্টা করে আসছে এই অজানার রহস্যকে জয় করতে। সাগরের বুকে এমনই এক রহস্যময় স্থান মারিয়ানা ট্রেঞ্চ। জাপান সংলগ্ন প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত এই মারিয়ানা ট্রেঞ্চ আজ অবধি আবিষ্কার হওয়া পৃথিবীর সবচেয়ে গভীরতম স্থান। এটি আসলে একটি সমুদ্র খাদ, যা আকৃতিতে অনেকটা বৃত্তচাপের মতো দেখায় এবং এই খাদ ২ হাজার ৫৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকা জুড়ে অবস্থিত হলেও চওড়াতে মাত্র ৬৯ কিলোমিটার। আজ পর্যন্ত মানুষের প্রচেষ্টায় এখানে নতুন নতুন অবিস্কার হতেই চলেছে। তাইতো মারিয়ানা ট্রেঞ্চ রোমাঞ্চ প্রিয় মানুষের কাছে খুবই আর্কষণীয় একটি স্থান। প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিমে অবস্থিত দীপপুঞ্জের নাম অনুসারে এ স্থানটির নামকরন করা হয়।

মারিয়ানা ট্রেঞ্চের গঠন

প্রশান্ত মহাসাগরে যে অংশটিতে মারিয়ানা ট্রেঞ্চ অবস্থিত, তা ইজু-বনিন-মারিয়ানা সাবডাকশন সিস্টেমের একটি অংশ। সাবডাকশন সিস্টেম হচ্ছে এমন একটি পদ্ধতি যেখানে একটি টেকটনিক প্লেট অন্য একটি প্লেটের উপর দিয়ে অগ্রসর হয়। এই সাবডাকশন সিস্টেমটিও দুটি টেকটনিক প্লেট দ্বারা গঠিত। একটি হলো প্যাসিফিক প্লেট ও অন্যটি হলো মারিয়ানা প্লেট। প্যাসিফিক প্লেটের পশ্চিমের অংশটি পৃথিবীর প্রাচীনতম প্লেট গুলোর মধ্যে একটি। এটি প্রায় ১৮০ মিলিয়ন বছর আগে গঠিত হয়েছিল তাইতো এটি তুলনামূলক ভাবে অত্যাধিক ঘন ও শীতল। মারিয়ানা প্লেটটি আপেক্ষাকৃত কনিষ্ঠ এবং উষ্ণতর। প্লেট দুটি একে অপরের উপর দিয়ে বাৎসরিক ৩৯-৫১ মিলিমিটার বেগে একে অপরের দিকে ধাবমান। সাধারণত পৃথিবীর যে স্থানটিতে এরূপ দুটি প্লেটের সংযোগ হয় সে আঞ্চলে অসংখ্য পাহাড়, পর্বত ও খাদের সৃষ্টি করে তা ভূপৃষ্ঠ বা সমুদ্রের তলদেশ যেখানেই হোক না কেন। দীর্ঘ ১৮০ মিলিয়ন বছর ধরে দুটি প্লেটর সংঘর্ষের ফলশ্রুতিতে আজকের মারিয়ানা ট্রেঞ্চ গঠিত হয়েছে।

মারিয়ানা ট্রেঞ্চের গভীরতম স্থান

মারিয়ানা ট্রেঞ্চের ঠিক দক্ষিন পাশে অবস্থিত সবচেয়ে গভীরতম স্থানটিকে বলা হয় চ্যালেঞ্জার ডিপ। চ্যালেঞ্জার ডিপের নামকরন করা হয় জলযান এইচএমএস চ্যালেঞ্জার এর নাম থেকে। এই জলযানের সাহয্যেই এর নাবিকরা সর্বপ্রথম মারিয়ানা ট্রেঞ্চের গভীরতম এই স্থানটি অবিষ্কার করেন। এর গভীরতা ১১,০৩৪ মি: বা প্রায় ৩৬২০১ ফিট। মজার ব্যাপার হল, পুরো মাউন্ট এভারেষ্টকে অনায়েসে এ স্থানে ডুবিয়ে দেওয়া যাবে এবং তার পরেও উপরে অনেকটা অংশ বাকি থেকে যাবে। বিজ্ঞানীদের ধারনা চ্যালেঞ্জার ডিপের কিছু জায়গা হয়তো এর থেকেও গভীর হতে পারে। আর তাইতো তাদের অনুসন্ধান আজও থেমে নেই।
গভীরতা অনেক বেশি হওয়ার কারনে এ স্থানে পানির ঘনত্বও অনেক বেশি, স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় পাঁচ শতাংশ বেশি। ঘনত্ব বেশি হওয়ার কারনে পানির চাপ স্বাভাবিক বায়ুমণ্ডলের চাপের থেকে প্রায় ১০৯৯ গুন বেশি। প্রতি বর্গ ইঞ্চিতে প্রায় ৮ টন যা আপনার শরীরের উপর ৫০ টি ফাইটার প্লেন চাপিয়ে দিলে আপনি যে চাপ অনুভব করবেন তার সমান। তাইতো যদি এখানে যেতে চান তাহলে আপনাকে ব্যবহার করতে হবে খুবই উন্নত ধরনের সারমেরিন যা এই চাপকে সহন করতে পারে। অত্যাধিক গভীরতার কারনে পানির তাপমাত্রাও অনেক কম এখানে, মাত্র ১-৮ ডিগ্রী। সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০০০ মিটার গভীরে যাওয়ার পরেই আপনাকে সৃর্যকে বিদায় দিতে হবে কেননা এ গভীরতার পর সৃর্যের আলো আর প্রবেশ করতে পারে না। অন্ধকার এই নি:শব্দ পরিবেশ আপনাকে নিয়ে যাবে ভিন্ন এক রহস্যময় জগতে।

চ্যালেঞ্জার ডিপ জয়ের কাহিনী

সর্বপ্রথম ১৮৭২ সালে চ্যালেঞ্জার ডিপের গভীরতা পরিমাপ করার জন্য একটি অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় চ্যালেঞ্জার ডিপের গভীরতা পরিমাপ করা হয় ৮১৮৪ মিটার বা ২৬৮৫০ ফুট। তারপর ১৯৫১ সালে চ্যালেঞ্জার ডিপের একটি নির্ভরযোগ্য গভীরতা পরিমাপ করতে সক্ষম হন জর্জ স্টিফেন রিশি। তিনি ছিলেন এইচএমএস চ্যালেঞ্জার নামক একটি ব্রিটিশ রয়্যাল জাহাজের ক্যাপ্টেন। তিনিই প্রথম এ অভিযানে শব্দের প্রতিধ্বনির সাহায্যে চ্যালেঞ্জার ডিপের গভীরতা পরিমাপ করে দেখেন যে এর গভীরতা ১০৯০০ মিটার বা ৩৫৭৬১ ফুট। পরবতীকালে এক জাপানি চ্যালেঞ্জার ডিপের গভীরতা পরিমাপ করেন ১০৯২৪ মিটার বা ৩৫৮৪০ ফুট। সর্বশেষ ২০০৫ সালে ন্যাশনাল জিওগ্রাফির এক প্রতিবেদনে চ্যালেঞ্জার ডিপের গভীরতা ১১০৩৪ মিটার বা ৩৬২০১ ফুট প্রকাশ করা হয় যা এখন পর্যন্ত চ্যালেঞ্জার ডিপের পরিমাপকৃত সর্বনিম্ন গভীরতা।
মজার ব্যাপার হলো মাউন্ট এভারেষ্টকে জয় করতে মানুষকে যতটা না বেগ পেতে হয়েছিল তার থেকে বেশি বেগ পেতে হয়েছিল চ্যালেঞ্জার ডিপকে জয় করার জন্য। পানির অত্যাধিক চাপের কারনে এ স্থানে যাওয়াটা যেমন বিপদজনক তেমনি বিশেষ সাবমেরিনে ছাড়া পৌচ্ছানো সম্ভব না বলে অধিক ব্যায়বহুল। মার্কিন নৌবাহিনীর দুই প্রকৌশলী ১৯৬০ সালে প্রথম চ্যালেঞ্জার ডিপে অবতরণ করেন। তারা ১০৯১৫ মিটার পর্যন্ত যেতে সক্ষম হন এবং এ স্থানে প্রায় ২০ মিনিট অবস্থান করেন।
সর্বশেষ ২০১২ সালে টাইটানিক খ্যাত পরিচালক জেমস ক্যামেরন এ স্থানে আরও একবার দুঃসাহসিক অভিযান পরিচালনা করেন। তিনি যে সাবমেরিনটি ব্যবহার করেন তার নাম ছিল ডিপ সি চ্যালেঞ্জার। চ্যালেঞ্জার ডিপের তলদেশে পৌঁছানোর জন্য এর দুই ঘন্টা সময় লাগে। তিনি প্রায় চার ঘন্টা সময় এখানে অতিবাহিত করেন। পরে বিবিসি কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এটি এ গ্রহের সবচেয়ে দূরবর্তী ও বিচ্ছিন্ন একটি স্থান। আমার কাছে সত্যিই মনে হয়েছে আমি যেন এক ভিন্ন জগতে গিয়েছিলাম এবং পুনরায় আপনাদের মাঝে ফিরে আসতে পেরেছি।”

প্রাণী জগতের অস্তিত্ব

মহান সৃষ্টিকর্তা যে কত মহান তা মারিয়ানা ট্রেঞ্চের মতো এই বিপদসংকুল স্থানে প্রানীর অস্তিত্ব দেখলে হয়তো সবাই তাঁর শুকরিয়া আদায় করবে।

শব্দ সল্পতার কারণে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি ব্লগে দেয়া সম্ভব হচ্ছেনা। সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়তে: Rare বাংলা

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:৩১

যুক্তি না নিলে যুক্তি দাও বলেছেন: শিক্ষা মুলক পোস্ট, ভালো লাগলো

২৩ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১২:৩৯

বিদ্রোহী কণ্ঠ বলেছেন: ধন্যবাদ।

২| ২২ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:৩৫

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: আগেই পড়েছিলাম। সম্ভবত মাসুদ রানা সিরিজে এ নিয়ে একটি বইও আছে।

২৩ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১২:৪০

বিদ্রোহী কণ্ঠ বলেছেন: আমি মাসুদ রানার প্রায় সব বইই পড়েছি কিন্তু মনে করতে পারছিনা এমন কোনো বই ছিল কিনা। যদি বইয়ের নামটি আপনার মনে পড়ে দয়াকরে জানাবেন। আবার পড়তে মনে হয় খারাপ লাগবেনা। ধন্যবাদ

৩| ২২ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১০:৫০

আবু তালেব শেখ বলেছেন: জেমস ক্যামেরুন এই বিষয়ে কোন মুভি তৈরি করেনি?

২৩ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১২:৪০

বিদ্রোহী কণ্ঠ বলেছেন: জী না। ক্যামেরুন সাহেব এখন পর্যন্ত এই বিষয় নিয়ে কোনো মুভি তৈরী করেননি। ধন্যবাদ

৪| ২২ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১১:১৩

মো: নিজাম উদ্দিন মন্ডল বলেছেন: এটা নিয়ে ইউটিউবে বেশ কিছু ডকুমেন্টারি আছে। দেখলে আনেক কিছু জানা যাবে।

পোস্টটির জন্য ধন্যবাদ।

২৩ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১২:৪০

বিদ্রোহী কণ্ঠ বলেছেন: আসলেই তাই। আর্টিকেলটি লিখার জন্য ইউটিউব থেকেও অনেক রিসার্চ করা হয়েছে। ধন্যবাদ

৫| ২২ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১১:৪১

রসায়ন বলেছেন: তথ্যবহুল পোস্টের জন্য থ্যাঙ্কু

২৩ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ১২:৪০

বিদ্রোহী কণ্ঠ বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.