![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজের অজ্ঞতা নিজের কাছে যতই ধরা পড়ছে প্রচলিত বিশ্বাসের প্রতি ততই অবিশ্বাস জন্মাছে!
বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে নির্বাচন এবং সংস্কার। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের কথা বলা হলেও দেশের পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, তা এখনো স্পষ্ট নয়। এর মধ্যেই বিএনপির নেতা সালাউদ্দিন আহমেদের নির্বাচনী জোট নিয়ে মন্তব্য রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন, বিএনপি এবার জামায়াতের সাথে জোটে যাবে না। এই ঘোষণার পর কিছু 'ছদ্ম-জামায়াত' বিএনপি নেতা পদত্যাগ করেছেন, যা নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে: তারেক রহমান এবং শফিকুর রহমানের লন্ডন বৈঠকে তাহলে কী আলোচনা হয়েছিল ? জামায়াত এককভাবে নির্বাচন করবে নাকি অন্যান্য ইসলামিক দলের সাথে জোট করবে, তা তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত। তবে প্রশ্ন উঠেছে, নবগঠিত তরুণদের রাজনৈতিক দল এনসিপি কী করবে ?এই নতুন দলটি কি বিএনপির ছায়ায় সংসদে ঢুকবে, নাকি ইসলামপন্থীদের সাথে যাবে ?
এনসিপি মনে করে তারা গণভবন দখল করেছে এবং এবার সংসদ দখল করবে। কিন্তু তাদের হাতে গোনা ৭-৮ জন নেতা ছাড়া সাধারণ মানুষ খুব বেশি কাউকে চেনে না। পরিচিত নেতাদের নিজ নিজ এলাকার জনপ্রিয়তাও স্পষ্ট নয়। এই পরিস্থিতিতে এনসিপিকে অবশ্যই জোটে যেতে হবে। কিন্তু কোন জোটে যাবে? ইসলামিক রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে, নাকি ছোট ছোট দলগুলোর সাথে? বিএনপির সাথে তাদের জোটে যাওয়ার একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বিএনপি তাদের কিছু আসন ছেড়ে দিতে পারে, বিশেষ করে আসিফ মাহমুদকে আসন না ছাড় দিলে তার বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত হতে পারে। এসব বিষয় মাথায় রেখেই এনসিপিকে তাদের নির্বাচনী পরিকল্পনা সাজাতে হবে।
জামায়াত অভিযোগ করেছে যে বিএনপি 'চাঁদাবাজ' হয়ে গেছে এবং তারা বিএনপিকে প্রত্যাখ্যান করেছে যে তারাও জোট করবে না। কিন্তু এনসিপি কী করবে? যদি তারা ইসলামিক দলগুলোর জোটে যায়, তবে তা তাদের ভবিষ্যতের জন্য অশনিসংকেত হতে পারে। নিজেদের মধ্যপন্থী দাবি করলেও জনসাধারণের একটি বিশাল অংশ এনসিপিকে জামায়াতের 'বি টিম' হিসেবে দেখে (এবি পার্টিকে 'এ টিম' হিসেবে)। যদিও তাদের শুরুটা এমন ছিল না, বর্তমানে তাদের রাজনীতি একটি নির্দিষ্ট গন্ডির মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে।
বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল, যারা এখন রাজনীতির মাঠে সরব, এনসিপিকে শুরু থেকেই আওয়ামী লীগের বিকল্প বানানোর চেষ্টা করছে তারা , বিশেষত জুলাই অভ্যুত্থানকে "নতুন মুক্তিযুদ্ধ" বলে প্রচার চালানো । কিন্তু এনসিপি কি আসলে এন্টি-বিএনপি প্ল্যাটফর্ম নাকি এন্টি-আওয়ামী লীগ ফ্রন্ট ? এনসিপি আরেকটি কাজ খুব ভালো করতে পারে, তা হলো বিএনপির সমালোচনা। তারা বিএনপির একটি শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হিসাবে নিজেদের দেখাতে চায়, অনেকটা আওয়ামী লীগের মতো। তাই প্রতীক থেকে শুরু করে সব বিষয়ে তারা বিএনপির সাথে বিরোধ করে। বিএনপি সহ সবাই ভান ধরে যে এনসিপি সত্যিই 'অ্যান্টি-বিএনপি প্লাটফর্ম'।
জামায়াত এবং বিএনপির মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হলেও তা একেবারে শেষ হয়ে যাবে না। কিন্তু এনসিপিকে মানুষ আরেকটি 'অ্যান্টি-আওয়ামী লীগ প্লাটফর্ম' হিসেবেই দেখছে। এসব নাটক চলছিল, কিন্তু হঠাৎ সালাউদ্দিন আহমেদ কেন এনসিপিকে জোটে টানতে চাইছেন ? বিএনপির তো এবার জোটের প্রয়োজন নেই, তবুও কেন এই আহ্বান? নাকি তাদের দিয়ে এই আহ্বান জানানো হচ্ছে ? এনসিপির এই মুহূর্তে একটি বড় রাজনৈতিক দলের ছায়াতলে থাকা উচিত। বিএনপির কাছে তারা পূর্ণ আশ্রয় পাবে, কারণ বিএনপি একটি বড় রাজনৈতিক দল ।
অন্যদিকে, জামায়াতের জোটে গেলে এনসিপি তাদের মধ্যপন্থী ভাবমূর্তির সংকটে পড়বে। ডানপন্থীদের সাথে তাদের অতিরিক্ত ঘনিষ্ঠতা নিয়ে মানুষের মনে এমনিতেই সংশয় রয়েছে। নারীদের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। তাদের একজন পরিচিত নেতা একজন নেত্রীকে যৌন হয়রানি করার পরও এনসিপি তেমন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি, যা নিয়ে মানুষের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। এর মধ্যে যদি তারা ইসলামপন্থীদের সাথে জোট করে, তবে তাদের নিয়ে মানুষের সন্দেহ আরও বাড়বে। তাছাড়া, ইসলামিক রাজনীতি করা দলগুলো নিজেরাই ক্ষমতায় যেতে পারে না। এনসিপিকে তারা কীভাবে সংসদ ভবনে নিয়ে যাবে ?
দেশে আওয়ামী লীগ ছাড়া বিএনপির বিরুদ্ধে 'বিরোধী দলের বাম্পার ফলন' হয়েছে, তা দেখানোর চেষ্টা করছে সবাই। কারণ একটাই - আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেই। কিন্তু তাদের ভোটাররা তো আছে । অনেকেই ভাবছেন, "আওয়ামী লীগ না থাকলে তাদের ভোটাররা কোথায় যাবে ?" বিএনপি-এনসিপি জোট যদি আওয়ামী লীগের ভোটারদের টানতে না পারে, তাহলে ইন্টেরিম সরকারের "সেরা ভোট" পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে পারে।
এনসিপিকে এখন ইমেজ বনাম পাওয়ার এর মধ্যে বেছে নিতে হবে। বিএনপির সাথে জোটই তাদের জন্য কম ঝুঁকির পথ । এভাবে তারা প্রথম সুযোগেই সংসদ ভবনে প্রবেশ করতে পারবে। অন্যথায় তাদের আশা ভঙ্গ হতে পারে। আবার জামায়াত কোনোদিন আওয়ামী লীগের জায়গা দখল করতে পারবে না। মানুষের মধ্যে এই বিশ্বাস কখনোই আসবে না যে জামায়াত 'অ্যান্টি-বিএনপি' হবে। তারা হয়তো জাপার মতো আরেকটি পোষা বিরোধী দল হতে পারে। এনসিপি এখন কী করবে, সেটাই দেখার বিষয়।
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই জুলাই, ২০২৫ ভোর ৬:৪৪
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
বিএনপি হঠাৎ করেই মনে হয় কঠিন সংকটে পরেছে।
রাজনীতির মারপ্যাচ বুঝতে ব্যর্থ হতে চলেছেন বিএনিপির বড় বড় নেতারা।
এই চান্সে জামাত এগিয়ে আছে।