নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি বলতে চাই

বিদ্রোহী কণ্ঠ

বিদ্রোহী কণ্ঠ › বিস্তারিত পোস্টঃ

২০৩০ সালের মধ্যেই হারিয়ে যাবে টাইটানিক

০৯ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১২:১১


টাইটানিককে বলা হতো স্বপ্নের জাহাজ। কেনইবা বলা হবে না, জীবনধারনের সকল উপাদানই যে ছিল এই দানবাকৃতির এই ভাসমান পৃথিবীতে। ২৬৪.০৬ মিটার লম্বা টাইটানিক তৎকালীন সময়ের সবচেয়ে বৃহদাকৃতির জাহাজ ছিল। ১৯১২ সালের ১০ই এপ্রিল যখন জাহাজটি যখন তার প্রথম যাত্রা শুরু করে তখন সারা বিশ্ব জুড়ে হইচই পড়ে গিয়েছিল কারন ইতিপূর্বে এতবড় জাহাজ আর নিমার্ণ হয়নি এবং সাগরেও ভাসেনি। জাহাজটির নিমার্ণ প্রতিষ্টান হোয়াইট স্টার লাইন বলেছিল এই জাহাজ কোন দিনও ডুববে না। কিন্তু অহংকারীকে যে সৃষ্টিকর্তা কখনই পছন্দ করেন না হয়ত একারনেই যাত্রা শুরুর মাত্র পাঁচ দিনের মাথায় ১৫ই এপ্রিল একটি বরফ খন্ডের সাথে সংঘর্ষের মাত্র ২ ঘন্টার মধ্যেই ১৫০০ জন যাএী নিয়ে আটলান্টিক মহাসাগরের বুকে সলিল সমাধি হয় টাইটানিকের।

লাইফ বোটের সল্পতার কারনে এবং অসম্ভব শীতল পানিতে পড়ে অল্প কিছু মানুষ ছাড়া ডুবে মারা গিয়েছিলেন বেশিরভাগ মানুষই। টাইটানিক ডুবে যাওয়ার পর যে জাহাজটি সেখানে প্রথম পৌঁছেছিল তাদের তথ্য অনুযায়ী সে রাতে সমুদ্রের তাপমাত্রা ছিল -২.২ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। টাইটানিকের ডুবে যাওয়ার এই ঘটনাটি ইতিহাসে মারাত্মক সমুদ্র বিপর্যয়গুলির মধ্যে একটি হিসেবে বিবেচিত। আর তাইতো শত বছরের অধিক সময়ের পরেও টাইটানিকের প্রতি মানুষের কৌতূহলের মাত্রা কমেনি তিল পরিমাণও।

টাইটানিক ডুবে যাওয়ার দীর্ঘ ৭৩ বছর পরও জাহাজটির ধ্বংসাবশেষ সমুদ্রের তলদেশে কোথায় পড়ে আছে তার কোনো হদিশই পাওয়া গিয়েছিলো না। কারন জাহাজের সর্বশেষ অবস্থান সর্ম্পকে যে রেকর্ড পাওয়া গিয়েছিল তার সাথে এর সত্যিকার অবস্থানের কোনো মিলই ছিলোনা। বিভিন্ন ভুল জায়গায় অনেক অভিযান পরিচালিত হলেও খুঁজে পাওয়া যায়নি টাইটানিককে।

অবশেষে ১৯৮৫ সালে আমেরিকান ও ফরাসিদের এক যৌথ আভিযানে নিউ ফকল্যান্ডের ৩২৯ মাইল দক্ষিন-পূর্বে টাইটানিক জাহাজের ধংশাবশেষটি আবিস্কার করা সম্ভব হয়। সমুদ্রপৃষ্ট হতে প্রায় ১২০০০ ফিট গভীরতায় জাহাজের ধ্বংসাবশেষটি দুটি খন্ডে বিভক্ত হয়ে পরস্পর থেকে দুই হাজার ফিট দূরে অন্ধকার সমুদ্রের তলদেশে পড়ে থাকতে দেখতে পান অনুসন্ধানকারীরা।

টাইটানিক জাহাজ তৈরীর শুরু থেকে আজঅব্দি জাহাজটি অনেক বিজ্ঞানীদের গবেষণার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে আছে। কিছুদিন আগে কানাডায় অবস্থিত ডালহৌসি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক টাইটানিক জাহাজের বর্তমান চিত্র নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। প্রতিবেদনটিতে বলা হয় ২০৩০ সালের মধ্যেই হারিয়ে যাবে টাইটানিক জাহাজের শেষ ধ্বংসাবশেষটুকুও।

কিন্তু কেন? প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, কিছুদিন আগে জাহাজটির কিছু অংশ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সময় গবেষকরা এমন এক নতুন ধরনের ব্যাকটেরিয়ার অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন যা জাহাজটিকে প্রতিনিয়ত কুরে কুরে খাচ্ছে। বর্তমানে ব্যাকটেরিয়াটি জাহাজের পুরো অংশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। সেজন্য গবেষকরা মনে করেন যে, ২০৩০ সালের মধ্যেই জাহাজের যে দুটি অংশ সমুদ্রতলে পড়ে আছে তা শুধুমাত্র জলের একটি দাগ হয়ে পড়ে থাকবে।

১৯৯৫ সালে একদল বিজ্ঞানী সর্বপ্রথম এই ব্যাকটেরিয়াটি আবিস্কার করেন। কিন্তু তখন এটিকে নিয়ে বিষদ কোনো গবেষণা না করার কারনে এর ভয়াবহতা সস্পর্কে তেমন কোন তথ্য জানতে পারেননি তাঁরা। কিন্তু বর্তমান কালে ওই ব্যাকটেরিয়ার ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে এর ভয়াবহতা সস্পর্কে সকল তথ্যই বের হয়ে আসে। হালোমোনাস টাইটানিকা নামের এই ব্যাকটেরিয়ার প্রিয় খাবার লোহা।

এই ব্যাকটেরিয়াটি পৃথিবীর সবচেয়ে প্রতিকূল পরিবেশেও জীবন ধারণ করে বেঁচে থাকতে পারে। লবনাক্ত পানিতে লবণের ঘনত্ব যেখানে সবচেয়ে বেশি সেখানেও বেঁচে থাকতে ও বংশ বিস্তার করতে তার কোনো সমস্যা হয়না। যদিও সমুদ্রের বারো হাজার ফিট গভীরতায় শুয়ে থাকা টাইটানিকে সংরক্ষণ করা অলীক কল্পনা; তবুও যুগ যুগ ধরে জাহাজটির প্রতি ভালোবাসা থেকে মানুষ আজও চেষ্টা করে যাচ্ছে টাইটানিককে সংরক্ষের পথ আবিষ্কার করতে। যদি তা সম্ভব না হয় তবে কিছুদিনের মধ্যেই টাইটানিকের শেষ চিহ্নটুকুও হারিয়ে যাবে এবং বাকি সময়টি হয়ত মানুষের মনের এক কোনায় ভালবাসায় সিক্ত হয়ে থাকবে টাইটানিক।
সূত্র: রেয়ার বাংলা

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১:২৪

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: আপনার তথ্য নির্ভর আবেগময় টাইটানিক প্রসঙ্গ মনে আলোড়ন তুলে, সত্যি টাইটানিক বিশ্বব্যাপি আলোড়িত কাহিনীর একটি । ধন্যবাদ ।

১৩ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১০:৪৫

বিদ্রোহী কণ্ঠ বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ০৯ ই জুলাই, ২০১৮ ভোর ৬:৫৪

সিগন্যাস বলেছেন: হারিয়ে যাক এই জাহাজ।ডুবন্ত জাহাজ দিয়ে কি আর হবে?নতুন টাইটানিক নাকি আসছে

৩| ০৯ ই জুলাই, ২০১৮ সকাল ৯:৫৪

রাজীব নুর বলেছেন: দেশের উত্তর অঞ্চলের মানুষ পানি বন্ধী। তারা না খেয়ে আছে, তাদের ঘুমানোর জায়গা নাই। তাদের বাড়ি ঘর ডুবে গেছে।
সেদিকে নজর দিন। তাদের জন্য কিছু করুন।

১৩ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১০:৪৬

বিদ্রোহী কণ্ঠ বলেছেন: ধন্যবাদ

৪| ০৯ ই জুলাই, ২০১৮ সকাল ১১:০৬

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ডুবে যাওয়া টাইটানিক জাহাজের খণ্ড দুটি কী সমুদ্রের তলদেশ থেকে উদ্ধার করা সম্ভব? তাহলে মিউজিয়াম বা আর্কাইভে ওগুলোকে সংরক্ষণ করা যেত।

১৩ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১০:৪৭

বিদ্রোহী কণ্ঠ বলেছেন: জি না। সম্ভব না। ধন্যবাদ

৫| ০৯ ই জুলাই, ২০১৮ দুপুর ২:৫২

আরাফআহনাফ বলেছেন: অনেক সুন্দর ও তথ্যবহুল একটি পোস্টের জন্য ধন্যবাদ জানবেন।
টাইটানিক নিয়ে একসময় প্রচুর আগ্রহ ছিলো ছোটবেলায় - এখনও কমতি নেই - তাই টাইটানিক নিয়ে লেখা পেলেই পড়ে ফেলি এক নি:শ্বাসে।

৪ নং মন্তব্যে "ডুবে যাওয়া টাইটানিক জাহাজের খণ্ড দুটি কী সমুদ্রের তলদেশ থেকে উদ্ধার করা সম্ভব? তাহলে মিউজিয়াম বা আর্কাইভে ওগুলোকে সংরক্ষণ করা যেত।" উত্তরে বলছি - জনাব হেনা ভাই - এটা তোলা অনেক অনেক ব্যয়সাধ্য ব্যাপার, কোথাও একবার পড়েছিলাম "টাইটানিক বানাতে যে খরচ পড়েছে তার শতগুন খরচ পড়বে এটা তুলে আনতে" , আর প্রযুক্তির চরম উৎকর্ষের এ যুগেও তাই সে পথে কেউ যায়নি।

ভালো থাকুন সবাই।

১৩ ই জুলাই, ২০১৮ রাত ১০:৪৮

বিদ্রোহী কণ্ঠ বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.