নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Bangladesh my home

বীরেনদ্র

Nothing much to say about

বীরেনদ্র › বিস্তারিত পোস্টঃ

এপ্রিল ফুল।

০১ লা এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১১:৫১


আজ পহেলা এপ্রিল। পৃথিবীর অনেক দেশে এপ্রিল মাসের এক তারিখ “এপ্রিল ফুল ডে” হিসেবে পালিত হয় । এ দিন হাসি, ঠাট্টা, তামাসা, কৌতুক করার বা মিথ্যে গুজব ছড়িয়ে দিয়ে বোকা বানানোর রেওয়াজ আছে অনেক দেশেই। আমাদের দেশেও এপ্রিল ফুল পালিত হতে দেখেছি ছোট বেলা থেকেই।
কিন্তু এপ্রিল ফুলের ইতিহাস কি, কবে থেকে এপ্রিল ফুল পালিত হয়ে আসছে, কোন দেশে কবে প্রথম শুরু হয় ইত্যাদি নিয়ে সংশয় আছে।
অনেকে এপ্রিল ফুলের গোড়া খুজে পান রোমানদের হিলারিয়া উৎসবে যা পালিত হত ২৫শে মার্চে। মধ্যযুগের ইউরোপে “বোকাদের উৎসব” পালিত হত ২৮সে ডিসেম্বর যা আজও স্প্যানিশ ভাষাভাষী দেশগুলোতে পালিত হয়ে থাকে। এপ্রিল ফুল এর সর্বপ্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় ১৩৯২ সালে প্রকাশিত চসারের ক্যান্টারবেরী’র গল্পে।
এপ্রিল ফুলের উৎপত্তি নিয়ে বেশীর ভাগের মতামত হল যে এপ্রিল ফুল শুরু হয় ইউরোপে নতুন গ্রেগরীয়ান ক্যালেন্ডার প্রবর্তন থেকে। পুরনো জুলিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী মধ্যযুগে ইউরোপে নববর্ষ উদযাপন হত ২৫শে মার্চ। ফ্রান্সে নববর্ষ উদযাপন শুরু হত ২৫ শে মার্চ থেকে এবং শেষ হত ১লা এপ্রিল, ঐ দিন থেকেই শুরু হত নতুন বছর। ১৫৮২ খৃস্টাব্দে গ্রেগরীয়ান ক্যালেন্ডারের প্রবর্তনের ফলে নববর্ষ শুরু হয় ১ লা জানুয়ারী থেকে। সে সময় তথ্যের আদানপ্রদান সহজ না থাকায় অনেক এলাকাতে পুরোনো জুলিয়ান ক্যালেন্ডারই রয়ে যায় আবার অনেকে নতুন ক্যালেন্ডার অনুসরন করতে অস্বীকৃতি জানায়। ক্রমে ক্রমে নতুন ক্যালেন্ডার যায়গা করে নেয়। যারা পুরনো ক্যলান্ডার অনুসরন করতে থাকে তাদের কে পুরনো নবর্ষের দিন বা পহেলা এপ্রিলে বোকা বা Fool হিসেবে আখ্যায়িত করার রেওয়াজ গড়ে ওঠে।

ইংল্যান্ডে এপ্রিল ফুলের উৎপত্তি শুরু হয় নটিং হ্যামের ছোট শহর “গথাম” কে কেন্দ্র করে। ত্রয়োদশ শতাব্দীর ইংল্যান্ডে জনশ্রুতি ছিল যে রাজা যদি কোন রাস্তা দিয়ে হেটে যান তা রাস্ট্রের সম্পত্তিতে পরিনত হবে। রাজা যাতে তাদের শহরের মধ্য দিয়ে হেটে না যান সে লক্ষ্যে গথামের বাসিন্দারা গুজব ছড়িয়ে দেয় কিন্তু রাজা তাদের চালাকী ধরে ফেলেন। রাজা দুত মারফত গথামবাসীদের বোকামী জানতে পেরে তাজ্জব বনে যান। তাদের দু একটা বোকামী হল – ডুবিয়ে মারার জন্য মাছকে পানিতে ছেড়ে দেওয়া, ছাদহীন খাচায় পাখিকে আটকে রাখা্র চেস্টা ইত্যাদি। একান্ত বোকা সাব্যস্ত করে গথামবাসীদের শাস্তির অনুপযুক্ত ঘোষনা করেন। গথামবাসীদের বোকামী স্মরন করতেই শুরু হয় বোকাদের দিন হিসেবে ১লা এপ্রিল উদযাপন। যাদেরকে এই দিনে বোকা বানানো সম্ভব হয় তাদেরকে বলা হয় নুডল(Noodle) ।

দেশে দেশে ১লা এপ্রিল উদযাপনের পার্থক্য আছে। আমেরিকা কানাডাতে ১ লা এপ্রিলের দুপুর পর্যন্ত কৌতুক, মস্করা করার রেওয়াজ আছে। স্কটল্যান্ডে এপ্রিল ফুল পালন করা হয় ৪৮ ঘন্টা। বন্ধু বান্ধবদের হয়রান করা বা বোকা বানানো এপ্রিল ফুলের অংগ যাকে বলা হয় hunting the gawk”। ফ্রান্স এবং ইটালীতে ১লা এপ্রিলে বোকা বানাতে ছেলেমেয়েরা গোপনে অন্যের শার্টের পেছনে লটকে দেয় কাগজের তৈরী মাছ যাকে বলা হয় “পোয়াছো দ’আভ্রিল” ( Poisson D’avril) । এপ্রিল মাসে সহজে বেশী মাছ ধরা যায় অর্থাৎ মাছেরা তখন বোকা থাকে, সেখান থেকেই এই কাগজের মাছ লটকে দিয়ে বোকা বানানো প্রথার উৎপত্তি। পর্তুগালে নিয়ম হল ১লা এপ্রিলে বোকা বানানোর জন্য গায়ে ময়দা ছুড়ে দেওয়া। আমেরিকাতে বন্ধুবান্ধব বা অপরিচিতদেরকে নিয়েও মজা করা হয়ে থাকে। একটা সাধারন মজা করা হল কাউকে বলা “ মশাই আপনার জুতোর ফিতে খুলে গেছে”

অনেকে দাবী করেন খৃস্টানদের গ্রানাডা বিজয় থেকে এপ্রিল ফুল এর উৎপত্তি। খৃস্টান বাহিনী গ্রানাডা জয়ের সময় মুসলমানদের মসজিদকে নিরাপদ জায়গা ঘোষনা করতে বলে সেখানে আশ্রয় নিতে বলে তারপর আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। মুসলমানদের এভাবে বোকা বানানো থেকে এপ্রিল ফুল এর উৎপত্তি । এই বক্তব্যের সমর্থনে খুব বেশী যুক্তি আছে বলে মনে হয় না। কারন হল এপ্রিল ফুল” এর উল্ল্যেখ আছে গ্রানাডা যুদ্ধের ১০০ বছর আগে থেকে। এপ্রিল ফুল পালন করার রেওয়াজ ১৩৯২ সাল থেকে চলে আসলেও গ্রানাডা যুদ্ধ শেষ হয় ২’রা জানুয়ারী ১৪৯২ সালে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.