নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

WELCOME to My WORLD.

MD Habibur Rahman

হাই, আমি হাবিব। আমি একজন ইঞ্জিনিয়ারিং এর ছাত্র। আপনাকে আমার ব্লগ এ স্বাগতম।

MD Habibur Rahman › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প: আল্লাহ্‌র ইচ্ছে।

১৭ ই জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:১৫

গল্প: আল্লাহর ইচ্ছে।

কয়েকজন ফ্রেন্ডস এর সাথে ইফাতার পার্টি করে বাড়ি ফিরছে সাঈদ। বাসে বসে ফেবু টাইমলাইন স্ক্রোল করেই যাচ্ছে। হঠাত তার পাশে এসে একটি মেয়ে দাড়ালো। সে বুঝতে পারলো মেয়েটা জানালার পাশের সিটে বসতে চায়। কোন কথা না বলে সে মেয়েটি কে ভিতরে যাওয়ার জন্য জায়গা করে দিলো। মেয়েটি বসেই ব্যাগ থেকে হেডফোনে বের করে নিলো। হেডফোন কানে লাগিয়েই জাস্টিন বেইভারের "লাভ মি" গানটি শুনতে লাগলো।

সাঈদ মনে মনে ভাবছে, কেমন মেয়ে রে বাবা। রমজান মাসেও গান শুনতে হবে কেন? যাই হোক আমার কি বলে, ফেবু টাইমলাইন এ মনোযোগ দিলো সাঈদ। নাহ রাস্তায় এতো জ্যাম। এই ইফতার এর পরও এতো জ্যাম থাকলে তো রাস্তায় বেরই হওয়া যাবে না।
কি আর করা। বসে বসে পাশের মেয়েটার সাথে কথা বলি। টাইম তো পাস করতে হবে। মেয়েটি পাশে বসে বসে মোবাইল টিপছে। কানে আবার হেডফোন। কিছু বললে তো শুনবেও না। মেয়েটি মেসেঞ্জার এ চ্যাট করছে। ভালো করে খেয়াল করে বুঝতে পারলো না, মেয়েটি চ্যাট করছে না। এটাকে চ্যাট বলে না। কাউকে শুধু এস.এম.এস করতেসে। কিন্তু সে রিপ্লাই দেওয়া দুরের কথা সীনও করছে না। প্রথম দিকের কয়েটা এস.এম.এস সীন করেও রিপ্লাই দেয় নি। এখন তো সীনই করছে না। মেয়েটি সেদিকে খেয়াল না করে, এস এম এস লিখেই যাচ্ছে। আগ্রহ বেড়ে গেলো সাঈদের। মেয়েটা কি লিখছে তা দেখা দরকার। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও লিখা গুলো বুঝতে পারছে না। হঠাত তার মনে পড়লো, বাস এ উঠার পর সে তার চশমা টা খুলে ব্যাগে রাখছিলো। ব্যাগ থেকে চশমা টা বের করে সে চোখে দিয়ে মেয়েটার স্ক্রিন এ তাকিয়েই প্রথম লিখা টা দেখলো:

- জান, এটা কিভাবে করতে পারলা তুমি? কি দোষ ছিলো আমার? কেন চলে গেলা?? জান?

এইটুকু দেখেই সাঈদ বুঝে গেলো, ঘটনা টা কি। তাই আর পরের ম্যাসেজ দেখার প্রয়োজন নাই। এই দিন গুলা সে পার করে এসেছে। সে জানে মেয়েটার পরের এসএমএস গুলো কি। নিশ্চয়ই মেয়েটা এখন ছেলেটাকে অনুরোধ করবে আবার ফিরে আসার জন্য। মেয়েটা ছেলেটাকে বুঝানোর চেষ্টা করবে, সে কতটা খারাপ ভাবে দিন কাটাচ্ছে। সে কতটা কষ্টে আছে। কিন্তু আফসোস ছেলেটা বুঝবে না। ছেলেটা কখনো জানতে পারবে না এই মেয়েটা তাকে কতটা মিস করেছে। ঠিক যেমন সুমি বুঝতে পারে নি। সুমি কে কতটাই না ভালোবাসতাম। কিন্তু সে কি করলো? চলে গেলো। একবার চিন্তা ও করে নাই, তাকে ছাড়া কেমন আছি। তাকে ছাড়া কেমন থাকবো। কিভাবে তার স্মৃতি ভুলে থাকবো। কতই না কষ্ট পেয়েছি। কতই না কান্না করেছি। কতো অনুরোধ করেছিলাম ফিরে আসো। তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না। কিন্তু কে শুনে কার কথা? আসলে তার মন টা অনেক বড় তো, একজনের ভালোবাসায় তার মন ভরে নি। তাই আরো ভালোবাসা পেতে আরেকজনের কাছে চলে গেছে। যাই হোক অনেক কষ্ট সুমি কে ভুলতে পেরেছি। এখন কষ্ট টা কমে গেছে। নাহ কষ্ট তো কমে না। আমার কষ্ট ও কমে নি। কিন্তু কষ্ট টা সহ্য করার ক্ষমতা বেড়ে গেছে। আজ ও নির্ঘুম রাত কাটাই সুমির কথা ভেবে। ঠিক আমি যখন তার কথা ভেবে চোখের জল ফেলি, ঠিক সে সময় হয়তো সে আরেকজন কে খুশি করার জন্য, মোবাইলের ওপরপ্রান্তে চেষ্টা চালাচ্ছে। কি অদ্ভুত ভালোবাসা। যাই হোক সুমির কথা চিন্তা করে লাভ নেই। সে ভালো আছে। কি দরকার তাকে ডিস্টার্ব করার?

এতক্ষনেও পাশে বসা মেয়েটার চেহারা দেখে নি সাঈদ। কিন্তু খুব ইচ্ছে করছে মেয়েটা কে দেখতে। বাসের সোডিয়াম বাতির আলো আর মেয়েটার মোবাইল এর আলোতে মেয়েটাকে অপূর্ব লাগছে। এক বারে বেশিক্ষণ তাকানো যাবে না। নানা বাহানায় সাঈদ মেয়েটার দিকে বার বার তাকাচ্ছে। যতটুকু মনে হচ্ছে, মেয়েটার গায়ের রঙ কালো। কিন্তু চেহারার মধ্যে যেই একটা মায়া আছে, তা অনেক সাদা চামড়ার মেয়ের মধ্যেও নেই। নাহ একটু কথা বলে দেখি।

-এক্সকিউজ মি, আপনার সাথে একটু কথা বলতে চাই।
- জ্বী আমাকে বলছেন?
- হ্যা আপনাকেই।
- জ্বী বলুন।
- প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আমি আপনার কয়েটা টেক্সট দেখেছি। সেই ব্যাপারে আপনাকে কিছু কথা বলতে চাই।
-সরি। ওটা নিয়ে আমি কোন ধরনের কথা আপনার সাথে বলতে চাই না।
-প্লিজ। প্লিজ। প্লিজ। অনুরোধ করছি। প্লিজ।
-আচ্ছা বলুন।
- আমি বুঝতে পেরেছি আপনার ভালোবাসার মানুষ আপনাকে ছেড়ে চলে গেছে। তাই আপনি খুব কষ্টে আছেন। কিন্তু একটি বার চিন্তা করে দেখুন। সে আপনাকে কতোটা ভালোবাসে। আদৌ কি সে আপনাকে ভালোবাসে? সে যদি আপনাকে ভালোবাসতো তাহলে এভাবে চলে যেতে পারতো? সে তো কখনোই আপনার ছিলো না। যদি সে আপনার হতো, তাহলে কি কখনো চলে যেত? আচ্ছা সে কি আপনার জন্য এতটাই কষ্ট পাচ্ছে? সেও কি আপনার জন্য কান্না করছে? আপনি কাকে ফিরিয়ে আনতে চাচ্ছেন? যে ইতিপূর্বে আপনার প্রতি তার সব মায়া মমতা ভালোবাসার ত্যাগ করেছে। তাকে? আপনি তার জন্য কান্না না করে, নিজের জীবনকে গুছিয়ে নিন। সে তার মত ভালো আছে। আপনি ও আপনার মতো ভালো থাকার চেষ্টা করুন। আচ্ছা সে কেন চলে গেছে বলেন তো?
- আমি দেখতে কালো। আমাকে নিয়ে সে ঘুরতে যেতে লজ্জা পায়। তাই.....(কান্নায় ভেঙে পড়লো মেয়েটি)
- আসলে কি জানেন? আপনি যাকে ভালোবেসেছেন সে আপনার ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্যই না। যে মানুষকে তার চেহারা দেখে বিচার করে। তাকে মূল্যায়ন করে আমি "zero" এর বেশি দিতে পারলাম না। সে "Zero", আপনি তাকে "50" এর গুরুত্ব দিয়েছেন। তাই সে "100" এর মতো দাম দেখাচ্ছে। আপনি আল্লাহ্‌র কাছে দোয়া করেন। আল্লাহ আপনাকে বাঁচালো।

-......(মেয়েটি চুপ)

-সরি।।। আরো অনেক কিছু বলার ছিলো আপনাকে। কিন্তু আমার এখানে নামতে হবে। ভালো থাকার চেষ্টা করবেন। বাই।।।

কয়েকদিন পর....

সাঈদ তার বাবা মার সাথে মেয়ে দেখতে এসেছে। বসে আছে তারা। তার সামনে বসে আছে সেদিনের সেই মেয়েটি। যার সাথে তার বাসে দেখা হয়েছিলো। এই সে সাদিয়া। সাঈদ ঠিক করে নিয়েছে। এটাই হয়তো আল্লাহ্‌র ইচ্ছে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.