![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন খেটে খাওয়া শ্রমিক। রবীন্দ্রনাথ আমার গুরু। উনার কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস, গান আমার দারুণ প্রিয়। আমি প্রথম আলো পত্রিকায় সাংবাদিকতা করছি। বেড়ানো আমার শখ, শখটা এখন ঘুমানোতে ডাইভার্ট হয়ে গেছে। খেলা দেখার নেশাটা ছাড়তে পারি নি এখনও......
ঘরে ঢুকতেই শ্বাশুড়ি মার প্রশ্ন, `বাবা, ইফতারি কি দেব?' বাদল না করতেই বউয়ের অগ্নিমূর্তি। ও, বাড়ির ইফতার কেন ভালো লাগবে? বলেই শ্বাশুড়ি মায়ের দিকে আরেকবার মুখ ঝামটি। তুমি কেন বেহায়ার মতো ওকে বলতে যাও।
কথাটা শুনে বেশ চটে গেল বাদল। বেশ কিছুদিন হলো মেয়ের বাড়ি বেড়াতে এসেছেন ভদ্রমহিলা। তার সামনে তাই কিছুই বলল না বাদল। প্রথম রোজার দিনই বউ বলেছিল, বাসায় এসে ইফতারি কোরো। অন্তত প্রথম রোজাটা। কিন্তু বাদল কথা শোনেনি। আসলে বাদলের কথা শোনার মতো উপায় নেই। চাইলেই ইফতারির আগে অফিস থেকে বের হতে পারে না। প্রাইভেট কোম্পানি। নামী কোম্পানি হলে যা হয়, নানান ফ্যাকড়া। এরপর বসকে বলে অফিস থেকে বের হতে হলেও ঘ্যান ঘ্যান করতে হয়। এ যুক্তি ওই যুক্তি দিতে হয়। কিন্ত এসব মোটেও ভালো লাগেনা বাদলের। তার ওপর অফিসের ইফতারির খরচের টাকাটা তার হাতেই থাকে। প্রতিবছর রোজা এলে থালা, বাটি, জগ, গ্লাস, চামচ কিনতে হয়। অফিসের চোর পিয়নের হাতে এত টাকার বাজার করতে দিতে মোটেও ইচ্ছা হয় না। এর সঙ্গে প্রথম রোজার জন্য একটু ভালোমানের ইফতারি কেনার ইচ্ছা থাকেক। এসবের সঙ্গে রাস্তার দুঃসহ যানজট তো আছেই। বাদলের মোটরবাইক আছে। তবুও যদি ইচ্ছা করে বিকেল চারটায় বের হতে, তবুও এক-দেড় ঘন্টায় কারওয়ান বাজার থেকে মিরপুর পৌঁছানো সম্ভব কিনা তা শুধু খোদাই মালুম। তাই বাদল ভাবে ইফতারিটা শান্তিমতো করে ফাঁকা রাস্তায় এক টান দেবে।
ঘরে ফিরেই বাদলকে দেখতে হয় ফুল ভলিউমে চলছে স্টার প্লাসের সিরিয়াল। এটা শেষ হলে জি বাংলা, এরপর স্টার জলসা..রাত বারোটা অবদি চলতেই থাকে কোনো না কোনো সিরিয়াল। মাঝে মাঝে বাদলের এতটাই বিরক্ত লাগে যে মনে হয়, এই সিরিয়ালের যন্ত্রণায় নির্বাসনে চলে যাই। বাড়িতে অবশ্য দুইটা টিভি। কিন্তু বাদলের ইচ্ছাও করে না ড্রয়িং রুমের ফ্লোরে গিয়ে অন্য কোনো চ্যানেল ঘোরায়। ইচ্ছা করে টিভিটা বন্ধ থাক। বউয়ের সঙ্গে দুটো সুখ দুঃখের প্যাচাল পাড়ি।
কিন্তু বউয়ের সঙ্গে তার কিছুতেই মেলেনা। এই যেমন সিরিয়াল দেখার কথা তুলতেই একটু আগে রিমোট তুলে দিয়েছে ইচ্ছামতো এক আছাড়। যত দোষ যেন ওই রিমোট ব্যাটার। ভাঙতে ভাঙতে আর স্কচ টেপ লাগাতে লাগাতে ব্যাটার চেহারার জিওগ্রাফিই পাল্টে গেছে।
বউয়ের সঙ্গে মিলবে কি করে? মাঝে মাঝে আফসোস করে বাদল, ক্যান যে জীবনে প্রেম করে বিয়ে করল না। প্রেম অবশ্য একটা করেছিল সে। এলাকার এক বন্ধুর বোন তাকে ভালোবেসেছিল। কিন্তু সম্পর্কের ট্যাবুটা এমনই ছিল যে ওই বন্ধুর মাকে সে দাদী ডাকতো। ফুফুর সঙ্গে অসম প্রেমটাকে জলাঞ্জলী দিয়ে মায়ের জোর করে বিয়ে দেওয়া মেয়েটাকেই মেনে নিয়েছে। এমনই এক মেয়ে বাদলের জীবনসঙ্গীনি যে না শোনে রবীন্দ্রনাথ, না দেখে খেলাধুলা। না আগ্রহ আছে বিশ্ব রাজনীতির বারাক ওবামা বা ইরাক-লিবিয়া নিয়ে। না আগ্রহ আছে বোদলেয়ার, গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কোস অথবা হুমায়ুন আহমেদ (মেয়েটা কিন্তু শিক্ষিত এবং ভদ্র ঘরের)। বাদলের হয়েছে মহা যন্ত্রনা। অফিস থেকে ফিরে তাই পত্রিকায় মুখ গুজলে বা ব্লগ, ফেসবুক, ইন্টারনেট নিয়ে বসলেই বউ বলে, `তুমি থাকো তোমার দুনিয়া নিয়ে।'
আরে আমার দুনিয়া নিয়ে না থেকে কিই বা করব? তোমার দুনিয়ায় আদেৌ কি কিছু আছে? সংসার, বেতন, সন্তান উৎপাদন আর হিন্দি বাংলা সিরিয়াল....এর বাইরে কি আদৌ তোমার কোনো দুনিয়া আছে?
রাগে গজগজ করতে করতে বাইরে বেরোনোর সময় বাদল দেখে, বউ ইনিয়ে বিনিয়ে মোবাইলে কার কাছে যেন নালিশ করছে আর কাঁদছে।
বয়েই গেছে বাদলের, ওই কান্নায় গলে যেতে।
২| ০১ লা জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:২৯
বদিউজ্জামান মিলন বলেছেন: Thanks ELI BD vie..
৩| ০১ লা জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:৪১
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: হয়ত শিক্ষিত তবুও সিরিয়ালে সস্তা বিনোদনে আসক্ত।
আরে আমার দুনিয়া নিয়ে না থেকে কিই বা করব? তোমার দুনিয়ায় আদেৌ কি কিছু আছে? সংসার, বেতন, সন্তান উৎপাদন আর হিন্দি বাংলা সিরিয়াল....এর বাইরে কি আদৌ তোমার কোনো দুনিয়া আছে?
এরকম জীবনসঙ্গীর সাথে তাল মেলানোটা কষ্টের কিন্তু অস্বীকার করা তো যায় না আমাদের সমাজ পরিবার এর বাইরে মেয়েদের মানসিকতাটা গড়ে তুলতে পারে না বা চায় না।
ফলে স্বামী স্ত্রীর মাঝের পার্থক্য নামের আগে যত বিদ্যার বহর থাকুক কিছুতেই দূর হয় না।
৪| ০১ লা জুলাই, ২০১৪ রাত ১০:১১
বদিউজ্জামান মিলন বলেছেন: তনিমা আপনার কথাটা কাকে উদ্দেশ্য করে? ঠিক বুঝলাম না। একটু পরিষ্কার করবেন প্লিজ.. এখানে দোষটা বা সমস্যাটা কার বলুন না।
©somewhere in net ltd.
১|
০১ লা জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:২৬
ইলি বিডি বলেছেন: নির্মম বাস্তবতা, তবুও চলছি আমরা তাইনা.................. ভাল লেখা, ধন্নিয়া।