![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি একজন খেটে খাওয়া শ্রমিক। রবীন্দ্রনাথ আমার গুরু। উনার কবিতা, ছোটগল্প, উপন্যাস, গান আমার দারুণ প্রিয়। আমি প্রথম আলো পত্রিকায় সাংবাদিকতা করছি। বেড়ানো আমার শখ, শখটা এখন ঘুমানোতে ডাইভার্ট হয়ে গেছে। খেলা দেখার নেশাটা ছাড়তে পারি নি এখনও......
তুমি আমার বায়ান্ন তাস
শেষ দানেও আছি
তোমার নামে ধরেছি আমার
সর্বস্ব বাজি....
সম্ভাবনার এপিঠ-ওপিঠ শেষ মুদ্রায় রাজি
কার ঘরে যায় করতালি, পুড়ছে আলোর বাজি...
ভিয়েতনামের দোয়ান মিন তুয়ান বাপ্পা মজুমদারের এই গানটা কোনোদিন কী শুনেছেন? গানের সঙ্গেই যে মিলে যাচ্ছে তুয়ানের জীবন। তবু যদি প্রেমিকার জন্য কোনো বাজি ধরতেন, মনকে অন্তত প্রবোধ দিতে পারতেন।
রাজধানী হ্যানয়ের একটি বারে এক কোণায় চুপচাপ বসে ছিলেন দোয়ান। টেলিভিশনে দেখছিলেন কিভাবে টাইব্রেকারে কোস্টারিকার ফুটবলারদের পেনাল্টি শট ঠেকিয়ে দিচ্ছেন হল্যান্ডের বদলি গােলকিপার টিম ক্রাল। একটি করে শট ঠেকাচ্ছেন ক্রাল, আর মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ছেন তুয়ান। আন্ডারডগ কোস্টারিকার বিশ্বকাপ স্বপ্ন ধূসর হয়ে যাচ্ছে বলে শোকে পাথর হয়ে যাননি তুয়ান, ৩২ বছর বয়সী পাঁড় জুয়াড়ির যে ততক্ষণে সব শেষ! সামনে রাখা ১২ ডলারের টেবিলটাই শুধু পড়ে আছে, বাজিতে সব কিছু খুইয়েছেন তুয়ান, `আমি আমার বাড়ির সব কিছু বেচে দিয়েছি। টেলিভিশন, মোটরসাইকেল, ফ্রিজ। এবার আমি আমার বাড়িটাও হারিয়েছি।আমার এখন কিছুই নেই। সবকিছু হারিয়েছি।' তুয়ানের অবস্থা এতটাই নিঃস্ব, কপর্দকহীন যে এখন রাস্তার ফুটপাতে রাত কাটাতে হচ্ছে, ` বিশ্বকাপের শুরু থেকেই আমি প্রতিটি ম্যাচে বাজি ধরেছি। অভিশপ্ত এই জীবনে আমি সব হারিয়েছি। সন্ধ্যাবেলায় বাজিকর এসে আমার বাড়ি দখলে নিয়েছে। আমার মেয়েদের নিয়ে ওদের মা নানা বাড়ি চলে গেছে। আমার এখন হারানোর কিছুই নেই। আমি আজ ফুটপাতে ঘুমাব।'
তুয়ানের মতো এমন ঘটনা ভিয়েতনামে অহরহই ঘটছে। অথচ সেখানে জুয়া কঠোরভাবে অবৈধ। তবে সেখানে কার্ড, লটারি, অনলাইন পুকার, রাস্তায় মোরগ লড়াই এগুলো হরহামেশাই চলে। কিছু কিছু প্রদেশে অবশ্য জুয়াকে বৈধ করা হয়েছে তবে সেখানে শুধু কুকুর আর ঘৌড় দৌড়েই তা সীমাবদ্ধ। তবে বিশ্বকাপ এলেই যেন এদের মাথা খারাপ হয়ে যায়। বাজি ধরতে সবাই তখন ব্যস্ত হয়ে পড়ে। দশ থেকে হাজার ডলারের বাজি ধরতে অনেক ব্যবসায়ী পিছপা হয় না। হেরে গেলে সেই টাকা তুলতে কখনো হাতের ঘড়ি, স্মার্টফোন, মোটরসাইকেল, স্বর্ণালঙ্কার পর্যন্ত বাজি ধরে। এমনকি বাজিতে হেরে তিন জনের আত্মহত্যার খবর পাওয়া গেছে। হু শহরেই একজন কীটনাশক পান করে মারা যান, ইতালির কাছে ইংল্যান্ড ২-১ গােলে হেরে গেলে। এভাবে মৃত্যুর সঠিক সংখ্যাও অনেক সময় পাওয়া যায়না। অনেক সময় মাফিয়াদের হাতেও অনেকে মারা যায়। এই জুয়াড়ি চক্র বিদেশেও তাদের নেটওয়ার্ক ধরে রেখেছে অনলাইনে, যারা ইউরোপিয়ান লিগগুলো চলার সময় বাজি ধরে। এবার ১২ জুন বিশ্বকাপ শুরুর দিন থেকেই প্রায় ৩০৭ মিলিয়ন ডলার বাজি ধরেছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। বছরের পর বছর ধরেই এটা চলছে। আর পুলিশ যখনই অভিযান চালায় তার পর থেকেই তারা তাদের কৌশল বদলে ফেলে।
একজন কোচ একবার ম্যাচ চলাকালীন সময়ে মোবাইল চালু রেখেছিলেন সে দেশে। ধারণা করা হয়েছিল ম্যাচ পাতানোর সঙ্গে জড়িত ছিলেন তিনি। প্রায় এক ডজন খেলোয়াড় গ্রেফতার হয়েছিল, নিষিদ্ধ করা হয়েছিল কোচকে।
ভিয়েতনামে জুয়া খুবই স্পর্শকাতর একটা বিষয়। সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এটা ঢুকে গেছে। সেদেশের কমিউনিস্ট সরকারও কিছু করতে পারছে না। মুদি দোকানদার থেকে শুরু করে খুচরা বিক্রেতা, রিকন্ডিশন মোটরসাইকেল ব্যবসায়ী... সবাই দ্রুত টাকা উপার্জন করতে এই অবৈধ পথটাই বেছে নেয়।
এই বাজির পথ থেকে ফেরাতে এদের একটাই সমাধান-জীবন থেকে শিক্ষা নেওয়া। বাজিতে হেরে বেশ ভালো শিক্ষাই হয়েছে হাইপং প্রদেশের ২৫ বছর বয়সী ডুংয়ের (ছদ্মনাম)। বাজির পেছনে ছুটতে গিয়ে বাবা-মায়ের বাড়িটা পর্যন্ত বেচে দিয়েছেন। আক্ষেপ করে বলছিলেন, `যতোই বাজি ধরেছি ততোই হেরেছি। আমি সব জায়গায় বাজি ধরতাম। ' নিজের আসল পরিচয়টা দিতেই চাইলেন না ডুং। শুধুই হতাশার সুরে বলছিলেন, `আমি যা হারিয়েছি তা মনে হয় সারা জীবনেও তুলতে পারব না। এখানে শুধু বুকিরাই জেতে, আর যারা বাজি ধরে তারাই হারে।'
২| ১১ ই জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১২
অবাধ্য সৈনিক বলেছেন: দুক্ক কইরেন না , আমি আইয়া পরচি
৩| ১১ ই জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৭
বদিউজ্জামান মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ। অভাগার দিকে তাকাইলেন। আসলে স্টোরিটা আজ সকালে আমাদের পত্রিকায় করতে চেয়েছিলাম। চান্স পাইনি। মেজাজ খারাপ ছিল। বসে বসে নিউজটা একটু মোডিফাই করে এইখানেই মেরে দিলুম। তবে স্টোরিটা কিন্তু ভালোই ছিল..
৪| ১১ ই জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:২৪
কেএসরথি বলেছেন: ব্রাজিল ৭-১ গোলে জার্মানীর কাছে হারবে - এই বাজী ধরেছিলেন এক ভ্দ্রলোক। তিনি মাত্র ২০ পাউন্ড (~ ২০০০ টাকা) বাজী ধরেন অনেকটা ফাজলামি করে।
খেলা শেষে উনি একাউন্ট চেক করে দেখেন জমা পড়েছে ৪৬,০০০ পাউন্ডের বেশী (~ ৪৬ লক্ষ টাকা)।
যাই হোক আমরা জীবনের প্রতিটি মূহুর্তেই জুয়া খেলছি। সেসব মেনে নেয়া যায়।
কিন্তু এমন কিছু মেনে নেয়া যায় না যা, নিজের বা অপরের জন্য ক্ষতি বয়ে আনে।
৫| ১২ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:৪৭
বদিউজ্জামান মিলন বলেছেন: ধন্যবাদ কেএসরথি ভাই। ভালো মন্তব্য করেছেন।
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০২
বদিউজ্জামান মিলন বলেছেন: খুবই শিক্ষণীয় পোস্ট। মাগার কোনো লাইক পাইলাম না...