![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
৮০র দশকের শেষের দিকের কথা। “মাছের রাজা ইলিশ, আর বাত্তির রাজা ফিলিপস”; সাদা-কালো টেলিভিশন যুগের জনপ্রিয় বিজ্ঞাপনের ট্যাগ লাইন। তখন আমি অনেক ছোট; তবুও ইলিশের গুরুত্ব উপলব্ধি করেছি ঠিকই। এরপর বইয়ের পাতায় ইলিশের গুনগান।
বরাবরই মাছটির চরম ভক্ত আমি। দিন পার হতে থাকলো। ৪-৫ বছর আগেও বাবার মুখে সে সময়ের ইলিশের গল্প শুনতাম। খুব আহ্লাদিত হয়ে বলতেন, ‘তোমরা যা খাও তা তো সব জাটকা, ইলিশ খেতাম আমরা...’ আরো কতো কি।
বছর ২০১৬। বাবার মুখে আবার ঝলকানি। খুশিও আমার মন। বাজার ভর্তি বড় বড় ইলিশে। গেল বছরগুলোতে মাছের রাজা শুধুই উচ্চবিত্ত্বের রান্না ঘরেই ঘুরফির করতেন; এবার সেখান থেকে বের হয়ে আওতা বাড়িয়ে বিচরণ এখন সব স্তরের চুলাতেই।
কেনই বা হবে না; ইলিশের যোগান যেমন বেড়েছে; কমেছে দামও। আমি এমনও শুনেছি, ৭৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ শ’দুয়েক টাকাতেই মিলেছে তাও আবার রাজধানিতেই। তখন ভেবেছি, দামের যে পতন হয়েছে তাতে এখানে এমন হলে, মাছ আহরণ স্থলে জেলে জাতীর কি হাল হলো ?
কথা বলেছি খুচরা বিক্রেতাদের সাথে; জানতে চেয়েছি এত্তমাছ ছিল কোথায়? বাজারের অবস্থাই বা কি? পান চিবানো দাঁত বের করে হোসেন আলীর সরল উত্তর ‘সারাবছর জাটকা না ধরাতেই মাছের চালান বেড়েছে, সরকারের এই দিকে এভাবেই নজর রাখা উচিৎ’। আর বাজার নিয়ে বলেন, ‘বিক্রি বেশী হলে, কম লাভে বেঁচলেও লাভ ভালই হয়’। মহাখুশী সে।
অন্যবার পাড়ার গলিতে বড়জোর ২-৩ হালি মাঝারি সাইজের ইলিশ নিয়ে ফেরি করতেন বিক্রেতারা। এবার দেখলাম অন্যচিত্র, বড় একটা ভ্যান বোঝাই সাদা কার্টুনে। তাতে বেছানো স্বেতশুভ্র বরফ, তারই ভেতর থেকে উঁকি দিয়ে আছে বিভিন্ন সাইজের অসংখ্য ইলিশ। দামাদামি-তেও এসেছে পরিবর্তণ। ‘পানির দামে ইলিশ’ বললেও বাজারের তুলনায় একটু চড়া।
সুপারশপ। কম দামে ইলিশ প্রাপ্তির এসময়েও হাজারের নিচে কথাই নেই এখানে। অবশ্য কারণ একটা আছে, সাইজ। দেখেই বোঝা যায়, বেছে বেছে সাজানো এগুলো। তাই দামটা বেশী। কিনছেন না কেউ এমনটা নায়, যারা গত বছরগুলোর সাথে তুলনা করছেন তারা তো কম মনে করেই দেদারসে কিনছেন।
স্বাদে গন্ধে অতুলনীয় আমাদের জাতীয় মাছ ইলিশ। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক হিসাব মতে, দেশের মোট মৎস্য উৎপাদনে ইলিশ মাছের অবদান প্রায় ১১% । জিডিপিতে ইলিশ মাছের অবদান প্রায় ২% । বাংলাদেশ বর্তমানে মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে বিশ্বে ৪র্থ স্থান অধিকারী দেশ। বিশ্বের মোট ইলিশ উৎপাদনের শতকরা ৫০-৬০ ভাগই বাংলাদেশে উৎপাদিত হয়, অবশিষ্ট ২০-২৫% মিয়ানমারে, ১৫-২০% ভারতে এবং ৫-১০% অন্যান্য দেশে। ইলিশ আমাদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি জাতীয় সম্পদ এবং ঐতিহ্যের অংশ। জাটকা নির্বিচারে ধরা হলে ইলিশের উৎপাদন কমে যায়। তাই ইলিশ উৎপাদন কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় রাখতে জাটকা সংরক্ষণ করা অপরিহার্য।
২৩ শে অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৪:২৯
বনী জয়সোয়াল পান্ডে বলেছেন: এক বছর সময়টা অনেক লম্বা হয়ে যায়, যদিও এটা একেবারেই আমার ভাবনা। সরকার ও বিশেষজ্ঞদের নিষেধাজ্ঞা সঠিক ভাবে মানতে পারলেই হবে।
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:২০
রানার ব্লগ বলেছেন: শুধু ইলিশ না অন্যান্য মাছের রাজত্বও ফিরে আসবে যদি মাত্র এক বছর আমাদের জেলেরা মাছ ধরা বন্ধ রাখে আর সরকার এই ১ বছর জেলেদের রেশন ভিত্তিক কার্যক্রম চালু করেন, দেখবেন ইনশাল্লাহ বাংলার মানুষ আবার সেই মাছে ভাতে বাঙ্গালী হয়ে যাবে।