নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সুখী মানুষ।

বনী জয়সোয়াল পান্ডে

সুখী মানুষ।

বনী জয়সোয়াল পান্ডে › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজকের নবীন, আগামী দিনের প্রবীণ..!!

০১ লা অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৮:১৫



মানবজন্মে শৈশব ও বার্ধক্য দুটোই সাদৃশ্যপূর্ণ এবং অন্যের ওপর নির্ভরশীলতার সময়। যদিও শৈশবের নির্ভরশীলতা, পরিবার ও আশেপাশের মানুষের কাছে স্নেহময় এক অধ্যায় হলেও, বার্ধক্যের নির্ভরশীলতা অনেকক্ষেত্রেই বিরক্তিকর ও দায়গ্রস্থ বিষয়।

মানবজীবনের শেষ অধ্যায় হিসেবে পরিচিত বার্ধক্য। জীবনের প্রায় সকল সমস্যা থেকে উৎরে যাওয়া মানুষগুলো অবশেষে নিত্যনৈমিত্তিক কাজেই হেরে বসেন প্রবীণ বয়সে। তখন, পুরো পরিবারকে আগলে রাখা মানুষটা হারিয়ে ফেলেননিজেকেই আগলে রাখার শারীরিক ক্ষমতাও। যাকে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নামে সম্বোধন করা হয়। উন্নত বিশ্বে যাদেরকে ‘সিনিয়র সিটিজেন’ বলা হয়, তাকেই আমাদের দেশের শিক্ষিত শহুরে মানুষ বলেন ‘প্রবীণ’ , আবার তারাই আমাদের গ্রামে-গঞ্জে ‘বুড়ো-বুড়ি’ নামে পরিচিতি পান।

বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার কবিতায় বলেছেন,

কেবলই কি প্রবীণ তুমি, নবীন নও কি তাও।
দিনে দিনে ছি ছি কেবল বুড়ো হয়েই যাও।
আশি বছর বয়স হবে ওই যে পিপুলগাছ,
এ আশ্বিনের রোদ্দুরে ওর দেখলে বিপুল নাচ?
পাতায় পাতায় আবোল- তাবোল, শাখায় দোলাদুলি,
পান্হ হাওয়ায় সঙ্গে ও চায় করতে কোলাকুলি।
ওগো প্রবীণ, চলো এবার সকল কাজের শেষে
নবীন হাসি মুখে নিয়ে চরম খেলার বেশে।


১৯৯০ সালে জাতিসংঘ প্রতিবছর ১লা অক্টোবরকে আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়।‘বয়স বৈষম্য দূর করুন’ এ প্রতিপাদ্যে পালিত হচ্ছে এবারের আন্তর্জাতিক প্রবীণ দিবস।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো বা বিবিএসের তথ্য মতে বাংলাদেশীদের গড় আয়ু বাড়ছে। এক বছরের ব্যবধানে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে দুই মাস। ২০১৪ সালে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু ছিল ৭০ বছর ৭ মাস। এক বছর পর অর্থাৎ ২০১৫ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৭০ বছর ৯ মাস। তবে, বাংলাদেশে পুরুষদের তুলনায় নারীদের গড় আয়ু বেশি। ২০১৫ সালে পুরুষদের গড় আয়ু ছিল ৬৯ বছর ৪ মাস। পক্ষান্তরে একই সময়ে মহিলাদের গড় আয়ু ছিল ৭২ বছর।

এক বছর আগে অর্থাৎ ২০১৪ সালে পুরুষ ও মহিলাদের গড় আয়ু ছিল যথাক্রমে ৬৯ বছর ১ মাস ও ৭১ বছর ৬ মাস।
অর্থাৎ এক বছরে পুরুষদের গড় আয়ু বেড়েছে ৩ মাস এবং মহিলাদের ৪ মাস।

গড় আয়ু বাড়ার ফলে স্বাভাবিকভাবেই প্রবীণদের বেঁচে থাকার হারও বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি প্রবীণদের সংখ্যা বৃদ্ধিতে বেড়েছে সমস্যাও। সময়ের সাথে সাথে শিল্পায়ন, নগরায়ন, চাকুরীগত ও অন্যান্য পরিবর্তিত পেক্ষাপটে বাঙালির ঐতিহ্যমণ্ডিত যৌথ পারিবারের ফাটল আর পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় তাদের দেখভালের জন্য একটি বড় সমস্যা। একান্নবর্তী পরিবারে যে প্রবীণদের অবস্থান ছিল অত্যন্ত সম্মানজনক; পশ্চিমা সমাজ ব্যবস্থার প্রভাবে এবং আর্থ সামাজিক অবস্থার পরিবর্তনের ফলে বর্তমানে সমাজ-সংসারে প্রবীণরা অনেক ক্ষেত্রেই বোঝা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন। তাই হতভাগ্য কোন কোন প্রবীণ ভিক্ষাবৃত্তি বা অন্যের করুণার পাত্র হয়ে বাকিজীবন অতিবাহিত করছেন। আর কেউ কেউ তো জীবনের শেষ সম্বলটুকু দিয়ে সন্তান লালন-পালন করেছেন, শরীর অচল হওয়ায় অবশেষে মাথা গোজার ঠাই মিলেছে বৃদ্ধাশ্রমে।


খাতা-কলমে সমাজ-সংসারে তাদের অধিকার সুরক্ষিত। তবে অধিকারের প্রশ্নে নয় বরং তাদের জীবনের শেষভাগ সফল, সার্থক ও স্বাচ্ছন্দময় করা আমাদেরই দ্বায়িত্ব।

সন্তানের মঙ্গল কামনায় ঝরেছে বাবা-মার শেষ রক্তবিন্দু। তাই প্রশ্নাতীতভাবে তাদের বার্ধক্যের দায়িত্ব গ্রহণ;তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমাদের মনে রাখা উচিৎ আজকের নবীন, আগামী দিনের প্রবীণ। আর কামনা পৃথিবী থেকে মূছে যাক সব বৃদ্ধাশ্রমের ঠিকানা; চলিত কথার বুড়ো-বুড়ি যেন ঠাই পায় নিজ নীড়ে, নিজ গৃহে, সমাদরে।

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৮:২১

সৈয়দ আবুল ফারাহ্‌ বলেছেন: বিশ্ব প্রবীন দিবসে এমন লেখা খুবই প্রয়োজনীয়।

২৩ শে অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৪:২৩

বনী জয়সোয়াল পান্ডে বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে

২| ০১ লা অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৮:৩৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


নিজের কথা ভাবার সময় হয়েছে আমার

২৩ শে অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৪:২৫

বনী জয়সোয়াল পান্ডে বলেছেন: সবার কথাই ভাবতে হবে আমাদের ।

৩| ০২ রা অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১:১০

রক্তিম দিগন্ত বলেছেন:
আজকের নবীন, আগামী দিনের প্রবীণ - এই বাক্যটা আজকের নবীনরা ভালভাবে মানতে পালে আজকের প্রবীণরা দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থা থেকে মুক্তি পেত।

২৩ শে অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৪:২৫

বনী জয়সোয়াল পান্ডে বলেছেন: আসলেই তাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.