নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চরন বিল

চরন বিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমি বাবুচ্চি মানুষ

২০ শে জুন, ২০১৫ রাত ৯:২৭

পদ্মার তেতলা বিশাল ফেরী। সকাল থেকে স্বেচ্ছা উপোশ দিয়ে চোখে আন্ধার দেখতেছি। দোতলার ক্যান্টিনে যেয়ে ডাল ভাতের সাথে প্রমান সাইজের একখান ইলিশ নিয়ে বসে গেলাম। ইলিশের টুকরা মুখে দিয়ে খানাপিনা ছেড়ে উঠে গেলাম। ওয়েটার অবাক হয়ে দ্যাখে।
জাতীয় মাছের এ ক্যামন বেইজ্জতি? ? এরা হাত দিয়ে না পা দিয়ে রাধে?? হাজত কারাগারের খাবারও এর থেকে ভাল। ক্ষুধার্ত মানুষের সাথে বেইমানি। চউখ দিয়ে প্রায় পানি চলে আসল।
ওয়েটার কে টাকা দিলাম। সে জিগায়:: বস, খাইলেন না তো কিছু!!
আমি বললাম... আমি বাবুচ্চি মানুষ। সব সময় খাই না। খাবারের টেস দেখি। আপনাদের খাবারের টেস দ্যাখলাম।।
চোখ জোড়া বিড়ালের চোখের থেকেও উজ্জ্বল হয়ে গেল তার। কিসের গর্বে তা বুঝলাম না। দুড়ুম করে বলে ফেলল:: দ্যাখোদিনি কান্ড। আমি শুরুতেই আন্দাজ করছিলাম। তা কোন যায়গার বাবুচ্চি??
বললাম... কারাগারের। হাজতের বাবুচ্চি আমি।
বলল... তাই তো!! আমি সন্দেহ করছিলাম। আমার ফেরেন্ড ছিল হাজতে। বাইর হয়ে কয় খাবার ফাস ক্লাস।।
এ পাগলা অনেকটা ইন্ডিয়ান ডাক্তারদের মত। আপনাকে বাড়ির কথা জিজ্ঞেস করলে আপনি যদি ডাক্তারকে বলে বসেন... দাদা, এন্টার্কটিকায়।
সেও বলবে... ওহ রে!! দাদা, খুব ভাল যায়গা, খুব ভাল। আমার জ্যাটাত বউদির বড়দির মেঝবোনের ছোট ছেলে বিয়ে করেছে ওখানে।
পাগলার কান্ডজ্ঞানে বিরক্তিতে নিজের মুখ বিকৃত হয়ে গেল। এ কোন মুসিবত?? এ পাগল শুরুতে সন্দেহ করে আমার সব কথাই বিশ্বাস করল। এসব পাগলদের এই এক সমস্যা। আমি যে রাগ করে বানিয়ে অনেক কিছু বলে ফেলেছি সে বুঝলই না।
এই রেস্টুরেন্টগুলো চালায় এক একটা খোদার খাশি। খাবারে যে লবন নামে একটা জড়বস্তু দিতে হয় সেটাও ভুলে গেছে। পদ্মার কাঁদা ঘোলা জ্বল গরম করেই ভাবে রান্না শেষ। এরা জানে ; দক্ষিন বংগ থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার রুগী ঢাকায় আসে চিকিতসা নিতে। পেটে আলসার আছে রুগীর সংখ্যা কম না। এরা ক্ষুধা সহ্য করতে পারে না। ক্ষুধার জ্বালায় এ অখাদ্য কুখাদ্য খাবেই। তাই এগুলো 'by chance' খাবার হোটেল। পরিস্থিতির স্বীকার না হলে কোন আদম সন্তান এখানে থুথুও ফেলবে না।
কারাগারের খাবারের গল্প শুনেছি হাজত ফেরত এক বন্ধুর কাছে। সবজির আড়তের ফেলে দেওয়া পঁচা সবজি গুলো গাড়ি ভরে নিয়ে যায়। আমার বন্ধুর কাটাকুটির দায়িত্ব পড়ত। সে বলল পঁচা গন্ধে কুটার সময় আমি একদিন বমি করে দিয়েছি। বাকিটুকু বলার আর রুচি পাচ্ছি না।
সম্মানিত জেলার আর এই রেস্টুরেন্ট মালিক দুটোই খোদার খাশি। আল্লাহর কাছে দোয়া করি মৃত্যুর পরে এদের তুমি এমন করে দিও যেন অনন্তকাল পঁচা গলা খাবার খাইতে হয়।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.