![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
২০০৯ সালের ঘটনা। আমি নীলক্ষেত দিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন আমার সাথে সবসময় একটা ক্যামেরা থাকত। বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ম্যাগাজিন চালাতাম। তার একটি পরিচয়পত্রও ছিল। সেদিন ঐ পরিচয়পত্রটা কাজে লাগিয়েছিলাম। দেখি মধ্য বয়সী একটি লোককে সবাই ঘিরে ধরে চড় কিল ঘুষি দিচ্ছে। পাশ দিয়ে রিক্সায় যাচ্ছিল এমন দু’এক জনও নেমে মারতে শুরু করে। পাশেই দাঁড়িয়েছিল জনৈক অভিযোগকারী। চুপচাপ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বন্য উল্লাস দেখছিল সে। মহিলা আরেকটি ছেলেকে দেখিয়ে বলে, ঐ ওও ছিল। তাকেও মারতে শুরু করে জনতা। মোবাইলটা তখনও মহিলার হাতে শক্ত করে ধরা ছিল। এটা ছিল, মোবাইল পিছন থেকে টান মারার অভিযোগ। আমি তড়িৎ আইডি কার্ডটা গলায় ঝুলিয়ে, ক্যামেরাটা অন করে ভিডিও মুডে চাপ দিয়ে গলায় ঝুলিয়ে দিলাম, তারপর দুইহাত দিয়ে মানুষ ঠেলে সরিয়ে আক্রান্ত অভিযুক্তকে উদ্ধার করে আরেকজন পথচারীর সহায়তায় নীলক্ষেত থানা থেকে পুলিশ ডেকে পৌঁছে দিয়েছিলাম থানায়।
এটিও ২০০৯ সালের ঘটনা। মাঝে মাঝে সারারাত জেগে থেকে সকালে সিগারেট খুঁজতে বেরোতাম। তখন আমি জগন্নাথ হলের উত্তর ভবনে থাকি। মেডিকেলের সামনে গেলে সবসময় চা-টা পাওয়া যায়। জগন্নাথ হলের মূল গেটে যেতেই দেখি দুজন ছাত্র একটি ছেলেকে টানতে টানতে সন্তোষচন্দ্র (ভবনটি এখন পুকুরের উত্তর পাশে নতুনভাবে নিমিত হয়েছে) ভবনের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমি পিছন পিছন গেলাম। ওরা দুজন, সাথে যোগ দিল কেডস্ গেঞ্জি পরিহিত স্থুলকায় কয়েকজন (ওরা সকালে হাঁটতে বেরিয়েছিল)। ‘সাইকেল চুরি করতে আসছিলি’ বলে মারতে শুরু করে ওরা। আমি একটু দূরে দাঁড়িয়ে দেখছিলাম। ভাবছিলাম- কয়েকটি চড় কিল দিয়ে ছেড়ে দেবে হয়থ। এরপর ওর লাঠি খোঁজা শুরু করে। একজনে একটি চটার মত নিয়ে এসে মারতে শুরু করল, আরেকজনে নিয়ে আসল সাইকেলের রড তালা। এবার আমি এগিয়ে গিয়ে বাধা দিয়ে ছেলেটিকে উদ্ধার করে সাথে নিয়ে গেলাম। চিকিৎসা করাতে হয়েছিল।
এরপরের ঘটনা সাম্প্রতিক। শাহবাগ মোড়ে মোবাইল সিনতাইয়ের অভিযোগ একইভাবে ঘিরে ধরে মারছে সবাই, তাকেও উদ্ধার করেছিলাম। যাদুঘরের সামনে টেনে এনে পানি খাইয়ে বিদায় করেছিলাম। আমার অভিজ্ঞতা বলে, মাত্র একজন এগিয়ে গিয়েও গনপিটুনি থেকে কাউকে রক্ষা করা যায়। গত দশ বছরে ঢাকায় আমি অন্তত দশটি গণপিটুনির ঘটনার সাক্ষী হয়েছি। এর মধ্যে তিনজনকে প্রতক্ষ্যভাবে রক্ষা করতে পেরেছি। একজনকে রক্ষাকরেছিলাম পুলিশের সহযোগিতায়। বাকি ঘটনাগুলো বাসে যেতে যেতে দেখা।
আমি-ই যেহেতু এতগুলো ঘটনার সাক্ষী তাই বলা যায় এরকম ঘটনা অহরহ ঘটছে। পত্রিকায় আসে কিছু কিছু। মাঝে মাঝে ঘটনাগুলো সংগ্রহ করে রাখি, ভাবি কিছু করা যায় কিনা, কিন্তু কী করব? আমিও তো একজন আম জনতাই, কী করতে পারি আমি?
আজকে যেন কিছুতেই মনরে বুঝ দিতে পারছিনে। কী বিভৎস! কতটা পৈশাচিক আমরা! একটি শিশুকে বেঁধে রেখে পিটিয়ে মেরে ফেলা যায়? কেউ তা ভিডিও করতে পারে? চিৎকার শুনে কেউ এগিয়ে না এসে থাকতে পারে? আমার বিশ্বাস হয় না। আমি বিশ্বাস করতে চাই না। তাহলে কি পত্রিকায় ভুল খবর এসেছে?
এই একটিমাত্র তো নয়। নিচের ঘটনাগুলো? আরো আরো ঘটনাগুলো? কী বিভৎসা আমরা! কতটা বিভৎস আমাদের চারপাশের মানুষ!
২| ১৩ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:০৯
ঢাকাবাসী বলেছেন: পুথিবীতে সবচাইতে হীন নিকৃস্ট অসভ্য অশিক্ষিত পরশ্রীকাতর হিংস্র বর্বর মানুষ হলাম আমরা বাং...।
৩| ১৩ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:১৯
সুমন কর বলেছেন: কোন কোন সময় বলার মতো ভাষা থাকে না।
৪| ১৩ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১২:৫৭
সজিব্90 বলেছেন: পুথিবীতে সবচাইতে হীন নিকৃস্ট অসভ্য অশিক্ষিত পরশ্রীকাতর হিংস্র বর্বর মানুষ হলাম আমরা বাং...।
৫| ১৩ ই জুলাই, ২০১৫ সকাল ৯:২২
দিব্যেন্দু দ্বীপ বলেছেন: আদিম মানুষ এরকম ছিল না শুনেছি।
৬| ১৩ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:০০
মাঘের নীল আকাশ বলেছেন: @ঢাকাবাসীঃ সহমত!
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই জুলাই, ২০১৫ রাত ১০:৫৮
আবু আবদুর রহমান বলেছেন: আমাদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে । আইনকে নিজের হাতে তুলে নেয়া মস্তবড় পাপ । চোর মনে করে হয়তো ভালো মানুষকে আমরা মারতে পারি, সে জন্য আইনকে নিজের হাতে তুলে না নেয়া । যদি সে চোর বা অপরাধী হয় তার বিচার করা কি সাধারন পাবলিকের উচিৎ ?? তাহলে দেশের আইন আদালত কেন ? খুবই দুঃখের সাথে বলতে হয় ইনসাফ কায়েম করার জন্য মহান আল্লাহর আইনের বিকল্প কিছু নেই । কেয়ামতে মহান আল্লাহ সঠিক বিচার করবেন ।