নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি হব সকাল বেলার পাখি

দিব্যেন্দু দ্বীপ

সংশয়ে সংকল্প সদা টলে

দিব্যেন্দু দ্বীপ › বিস্তারিত পোস্টঃ

তারা সুশীল অভিধা পেলেও মতলববাজ নিশ্চয়ই।

২২ শে অক্টোবর, ২০১৫ দুপুর ২:৪২

দেশের বিখ্যাত পত্রিকাগুলোতে যে সকল বিদগ্ধ লেখকগণ সমালোচনা বা অভিমতধর্মী লেখা লিখে থাকেন এক সময় আমি তাদের লেখার একজন একনিষ্ঠ পাঠক ছিলাম।
একজন সাধারণ পাঠক হিসেবে তাদের অভিমতের পক্ষে-বিপক্ষে আমারও কিছু মতামত তৈরি হয়েছে। আমি মনে করি মতামত দেওয়া উচিৎ সোজা কথায়। স্ট্রেইট কিছু না বলে শুধু “কুল রাখি না শ্যাম রাখি” করা কোনো লেখকের বৈশিষ্ট হতে পারে না। সন্দেহ রেখে বলা যেতে পারে, কনফিউশন থাকতে পারে, তাই বলে ধর্ষক এবং ধ ির্ষতার মাঝখানে নিরপেক্ষ কোনো লাইন টানার কোনো সুযোগ নেই। পেঁচিয়ে-ঘুচিয়ে লিখলে তা প্রথম আলো বা এ জাতীয় কোনো পত্রিকায় ছাপার উপযোগী হয়, কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয় না। ওভাবে বললে আসলে সত্য-মিথ্যা, ভাল বা মন্দ কিছুই বলা হয় না। ওতে শুধু নিজের প্রচারই হয়। আত্মপ্রচার করা দোষের কিছু নয়, তবে মানুষ হিসেবে দায়বদ্ধতার জায়গাগুলো সুস্পষ্ট না করা অবশ্যই দোষের।

“ধরি মাছ না ছুই পানি” ধরণের লেখা দিয়ে দেশ ও জনগণের উপকার করা যায় না। ওইসব লেখা দিয়ে কোন পরিবর্তন সাধিত হয় না। কোন পক্ষ না নিয়ে কিছু লিখলে তাতে শেষ পর্যন্ত শুধু নিজের পক্ষই নেওয়া হয়। এটা-ওটা দুটোই খারাপ। তার মানে কি নিজেরটাই শুধু ভাল?

তুলনামূলকভাবে যে কোনো এক পক্ষ তো নিতেই হবে। হয় যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পক্ষে অথবা বিপক্ষে, হয় ধর্মভিত্তিক রাজনীতির পক্ষে অথবা বিপক্ষে। মাঝখানে ভণ্ডামি ছাড়া আর কি আছে? কি থাকতে পারে?

কিন্তু এরা পক্ষ নেন না, বিশেষ করে আমাদের সুশিল সমাজ সহজে কোন পক্ষ নিতে চায় না। “প্রগতিশীলতার পক্ষে থেকে আত্মতৃপ্তিও চাই, আবার আদিমতার বিপক্ষে না গিয়ে রোজগারও বাড়াতে চাই, যেহেতু ধন-সম্পদ সব ওদের দখলে” -এই গ্যাড়াকলে পড়ে আমাদের সুশিল সমাজ প্রকৃতপক্ষে সুশিল হয়ে উঠতে পারছে না। এটা স্পষ্ট যে, দেশের জনগণ সুশীল সমাজকে প্রত্যাখ্যান করেছে ঠিক যতটা প্রত্যাখান করেছে রাজনীতিকদের।

সুশীল সমাজ যখন আওয়ামীলীগ এবং বিএনপির মধ্যে কোন পার্থক্য খুঁজে পায় না, এবং তৃতীয় কোনো পক্ষ হিসেবেও আবির্ভুত হয় না, বা ইতিবাচকভাবে সে চেষ্ট করে না, শুধু সমালোচনার মধ্যেই তাদের কাজ সীমাবদ্ধ থেকে যায়, তখনই জনগণ আস্থা হারায়। কে ভালো সেটি ভিন্ন আলোচনা, কিন্তু সামনে দুটি অপশন থাকলে আপনাকে তো একটি বেছে নিতেই হবে। অন্তত যতক্ষণ না তৃতীয় ভালো অপশনটি তৈরি না হচ্ছে এবং আপনি তৈরি করার চেষ্টা না করছেন।

সবাইতো একই সমাজ ব্যবস্থার মানুষ, তাই বিএনপি এবং আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মী এবং সমর্থকদের মধ্যে নীতিগত (ব্যক্তির) এবং আচরণগত বিশেষ কোন পার্থক্য থাকবে না, এটাই স্বাভাবিক। তবে এই দুই দলের মধ্যে দলীয় আদর্শগত পার্থক্য অবশ্যই স্বীকার করতে হবে। দলীয় নীতি-আদর্শ দ্বারা দলের নেতা-কর্মীরা পরিচালিত হতে বাধ্য হন, হয়ত অনেকে তা বিশ্বাস করে না এবং ব্যক্তিগত জীবনে চর্চা করে না, তারপরেও কিন্তু তারা দলীয় নীতি-আদর্শ মোতাবেক চলে অন্তত পদ হারানোর ভয়ে। বলতে বলতে এক সময় তারা বিশ্বাস করতে শুরু করে, তারা বিশ্বাস না করলেও তাদের সন্তানেরা বিশ্বাস করে, বিষয়গুলো, আচরণগুলো তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়। এভাবেই পরিবর্তন সাধিত হয়।

দলীয় মেনিফেস্টো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। রাজনীতিতে দলীয় আদর্শের কাছে ব্যক্তি মানুষের সংকীর্ণতা বা যেকোন ধরনের পশ্চাদপদতা ঢাকা পড়ে যায়। প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে এ যাবৎকাল আওয়ামীলীগ সেই কাজটি হয়ত পুরোপুরি সার্থকতার সাথে করতে সক্ষম হয়নি, তবে তুলনা করলে এদিক থেকে তারা বিএনপি’র চেয়ে হাজার গুণে এগিয়ে রয়েছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশকে এগিয়ে নিয়েছিলেন কমপক্ষে একশো বছর। নেতার পথ ধরেনই জনগণ অগ্রসর হয়, তাই নেতাকে হতে হয় অগ্রগামী। বঙ্গবন্ধু তেমনই একজন নেতা ছিলেন। তাকে স্বপরিবারে হত্যা করে, জনেগণের মনভাব বুঝে, জনগণের পশ্চাদপদতা পুঁজি করে, জনগণকে পিছে পিছে চালিয়ে ওরা দেশটাকে নিয়ে গিয়েছিল ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় না আসলে এ দেশের অবস্থা আফগানিস্তানের মত না হলেও আপাতত পাকিস্তানের আদল পেত।

দুর্নীতি দরিদ্র দেশে থাকবেই। যে দলই ক্ষমতায় আসুক দুর্নীতি এখনই বন্ধ হয়ে যাবে না। কিন্তু কেমন নীতি এবং আদর্শ দ্বারা দেশ পরিচালিত হচ্ছে, তা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই বিষয়টি যারা বুঝেও না বোঝার ভান করে, তারা সুশীল অভিধা পেলেও মতলববাজ নিশ্চয়ই।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.