নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফিজিওথেরাপি বিষয়ক যেকোন পরামর্শের জন্য কল করতে পারেন - ০১৭৮৭১৫২৮৭২ কিংবা সরাসরি ভিশন ফিজিওথেরাপি সেন্টারে ( হাউজ ২৩, লেক ড্রাইভ রোড, সেক্টর ৭,উত্তরা, ঢাকা) আসতে পারেন ।

ডাঃ সাইফুল

ফিজিওথেরাপি প্র্যাক্টিশনার এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক ব্লগ লেখক ।

ডাঃ সাইফুল › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্ট্রোক - না জানলে না হয়

১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ১১:৪৫

সারাবিশ্বে মৃত্যু এবং প্রতিবন্ধিতার অন্যতম কারণ স্ট্রোক ৷ স্ট্রোক হওয়া মানেই একটা পরিবারের অসহনীয় দুর্ভোগ। কিন্তু আমরা চাইলে সেটা কমানো সম্ভব৷ এর জন্য দরকার স্ট্রোক সম্পর্কে সঠিকভাবে জানা এবং সবার মাঝে সচেতনতা তৈরি করা৷ তবে দুঃখের বিষয় স্ট্রোক সম্পর্কে চারদিকে শুধু কুসংস্কার আর ভুল বিশ্বাস৷ আজকে আমরাই সেইগুলোই জানব -

১। স্ট্রোক কি হার্টে হয় নাকি ব্রেইনে হয়?
অনেকে মনে করে হার্টে হলেও স্ট্রোক, ব্রেইনে হলেও স্ট্রোক। এটা সঠিক না, হার্টে রক্ত সরবরাহ বাধা গ্রস্ত হলে সেটা বলব হার্ট এটাক, ব্রেইনে রক্তসরবরাহ বিঘ্নিত হলে সেটাকে বলব ব্রেইন স্ট্রোক৷ অর্থাৎ স্ট্রোক হয় ব্রেইনে ।

২। স্ট্রোক জ্বিনের আছর বা আলগা কিছু!
গ্রাম অঞ্চলে এখনও এইসব কুসংস্কার প্রচলিত ৷ স্ট্রোক কোন অভিষাপ নয়, জ্বিন বা ভূতের আছরও নয়৷ এটা ব্রেইনের একটা রোগ৷ যাদের উচ্চরক্তচাপ, অতিরিক্ত ওজন, ডায়বেটিস থাকে এবং যারা শারিরীক প্ররিশ্রম করে না, তাদের স্ট্রোক হয়ে থাকে। অর্থাৎ কোন কারনে আমাদের ব্রেইনে রক্তনালী ব্লক হয়ে বা রক্তনালী ছিঁড়ে ব্রেইনের রক্ত সরবরাহ বিঘ্ন হয় এবং অক্সিজেনের অভাবে কিছু ব্রেইন টিস্যু মারা যায় সেটাই স্ট্রোক।

৩। স্ট্রোক খুব কম মানুষের হয়৷
এটাও একটা সম্পূর্ণ ভুল ধারনা৷ বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার মতে প্রতি ৬ জনে ১ জন স্ট্রোক। সারাবিশ্বে মৃত্যুর দ্বিতীয় বৃহৎ কারণ স্ট্রোক৷

৪। স্ট্রোকের চিকিৎসা নাই।
এটাও একটা সম্পূর্ণ ভুল ধারনা৷ স্ট্রোকের ইমার্জেন্সি চিকিৎসা প্রয়োজন৷ আপনি যদি FAST শব্দটি দ্বারা স্ট্রোক বুঝতে পারেন৷ তাহলে সাড়ে চার ঘন্টার মধ্যে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক একটা টিপিএ নামে ইনজেকশন দিবে, যেটা দিলে রক্তনালী ব্লক হয়ে থাকলে সেরে যাবে৷ এটা এফডিএ এপ্রোভ ড্রাগ৷ এটার মাধ্যমে ৩১% রোগী মৃত্যু বা প্রতিবন্ধিতার হাত থেকে রক্ষা পায়৷
স্ট্রোক সনাক্তকরণে FAST শব্দটি মনে রাখুন
F - Face dropped মুখ বেকে যায়,
A- Arm paralysis এক হাত পা প্যারালাইসিস হয়ে যায়,
S- Speech slurred কথা বলতে সমস্যা হয় ,
T- Time to call Ambulance.

৫. স্ট্রোক হওয়া মানে সারাজীবনের জন্য প্যারালাইসিস হয়ে যায়।
এটাও এটা মিথ্যা ধারনা৷ সঠিক রিহ্যাবিলিটেশন ( ফিজিওথেরাপি, অনুপেশনাল থেরাপি, স্পিচ থেরাপি) সেবা গ্রহন করলে স্ট্রোক রোগী পুনরায় সুস্থ হয়ে আবার কর্মক্ষম হতে পারে৷

৬. স্ট্রোক শুধু বয়ষ্কদের হয়!
এটাও ভুল ধারণা৷ স্ট্রোক বয়ষ্কদের বেশি হয় এটা সত্য৷ তবে স্ট্রোক যেকোন বয়সে হতে পারে৷ এমনকি বাচ্চাদের স্ট্রোক হয়৷

৭. স্ট্রোক প্রতিরোধ করা যায় না।
এটা একটা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ধারনা৷ মেডিকেল জার্নালের ১২ বছরের গবেষনায় তারা দেখছে ৯০% স্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব৷ স্ট্রোকের চিকিৎসা অনেক কঠিন এবং ব্যয়সাধ্য বিষয়৷ স্ট্রোকের পরিপূর্ণ চিকিৎসার ব্যবস্থা আমাদের দেশে নেই৷ তাই স্ট্রোকের চিকিৎসাও এইখানে দুরূহ ব্যাপার৷ কারণ ট্রাফিক জ্যাম দূরুত্বের কারনে সাড়ে চার ঘন্টার মধ্যে হাসপাতালে রোগী আনা সম্ভব নয়৷ এছাড়া অনেকেই বুঝতে পারে না, তাদের রোগী স্ট্রোক করছে কিনা।
এমতাবস্থায় স্ট্রোক প্রতিরোধ ছাড়া এইদেশে স্ট্রোককে ঠেকানো অসাধ্য বিষয়৷
উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রন, নিয়মিত শারিরীক ব্যায়াম,ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রন, ওজন নিয়ন্ত্রন, সঠিক খাদ্যাভ্যাস যেমন তেল চর্বি এবং গরুর মাংস পরিহারের মাধ্যমে স্ট্রোক প্রতিরোধ সম্ভব৷

ধন্যবাদ
ডাঃ সাইফুল ইসলাম, পিটি
প্রতিষ্ঠাতা, বাংলাদেশ স্ট্রোক ফাউন্ডেশন।

শ্বে মৃত্যু এবং প্রতিবন্ধিতার অন্যতম কারণ স্ট্রোক ৷ স্ট্রোক হওয়া মানেই একটা পরিবারের অসহনীয় দুর্ভোগ। কিন্তু আমরা চাইলে সেটা কমানো সম্ভব৷ এর জন্য দরকার স্ট্রোক সম্পর্কে সঠিক জানা এবং সবার মাঝে সচেতনতা তৈরি করা৷ তবে দুঃখের বিষয় স্ট্রোক সম্পর্কে চারদিকে শুধু কুসংস্কার আর ভুল বিশ্বাস৷ আজকে আমরাই সেইগুলোই জানব -

১। স্ট্রোক কি হার্টে হয় নাকি ব্রেইনে হয়?
অনেকে মনে করে হার্টে হলেও স্ট্রোক, ব্রেইনে হলেও স্ট্রোক। এটা সঠিক না, হার্টে রক্ত সরবরাহ বাধা গ্রস্ত হলে সেটা বলব হার্ট এটাক, ব্রেইনে রক্তসরবরাহ বিঘ্নিত হলে সেটাকে বলব ব্রেইন স্ট্রোক৷ অর্থাৎ স্ট্রোক হয় ব্রেইনে ।

২। স্ট্রোক জ্বিনের আছর বা আলগা কিছু!
গ্রাম অঞ্চলে এখনও এইসব কুসংস্কার প্রচলিত ৷ স্ট্রোক কোন অভিষাপ নয়, জ্বিন বা ভূতের আছরও নয়৷ এটা ব্রেইনের একটা রোগ৷ যাদের উচ্চরক্তচাপ, অতিরিক্ত ওজন, ডায়বেটিস থাকে এবং যারা শারিরীক প্ররিশ্রম করে না, তাদের স্ট্রোক হয়ে থাকে। অর্থাৎ কোন কারনে আমাদের ব্রেইনে রক্তনালী ব্লক হয়ে বা রক্তনালী ছিঁড়ে ব্রেইনের রক্ত সরবরাহ বিঘ্ন হয় এবং অক্সিজেনের অভাবে কিছু ব্রেইন টিস্যু মারা যায় সেটাই স্ট্রোক।

৩। স্ট্রোক খুব কম মানুষের হয়৷
এটাও একটা সম্পূর্ণ ভুল ধারনা৷ বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার মতে প্রতি ৬ জনে ১ জন স্ট্রোক। সারাবিশ্বে মৃত্যুর দ্বিতীয় বৃহৎ কারণ স্ট্রোক৷

৪। স্ট্রোকের চিকিৎসা নাই।
এটাও একটা সম্পূর্ণ ভুল ধারনা৷ স্ট্রোকের ইমার্জেন্সি চিকিৎসা প্রয়োজন৷ আপনি যদি FAST শব্দটি দ্বারা স্ট্রোক বুঝতে পারেন৷ তাহলে সাড়ে চার ঘন্টার মধ্যে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক একটা টিপিএ নামে ইনজেকশন দিবে, যেটা দিলে রক্তনালী ব্লক হয়ে থাকলে সেরে যাবে৷ এটা এফডিএ এপ্রোভ ড্রাগ৷ এটার মাধ্যমে ৩১% রোগী মৃত্যু বা প্রতিবন্ধিতার হাত থেকে রক্ষা পায়৷
স্ট্রোক সনাক্তকরণে FAST শব্দটি মনে রাখুন
F - Face dropped মুখ বেকে যায়,
A- Arm paralysis এক হাত পা প্যারালাইসিস হয়ে যায়,
S- Speech slurred কথা বলতে সমস্যা হয় ,
T- Time to call Ambulance.

৫. স্ট্রোক হওয়া মানে সারাজীবনের জন্য প্যারালাইসিস হয়ে যায়।
এটাও এটা মিথ্যা ধারনা৷ সঠিক রিহ্যাবিলিটেশন ( ফিজিওথেরাপি, অনুপেশনাল থেরাপি, স্পিচ থেরাপি) সেবা গ্রহন করলে স্ট্রোক রোগী পুনরায় সুস্থ হয়ে আবার কর্মক্ষম হতে পারে৷

৬. স্ট্রোক শুধু বয়ষ্কদের হয়!
এটাও ভুল ধারণা৷ স্ট্রোক বয়ষ্কদের বেশি হয় এটা সত্য৷ তবে স্ট্রোক যেকোন বয়সে হতে পারে৷ এমনকি বাচ্চাদের স্ট্রোক হয়৷

৭. স্ট্রোক প্রতিরোধ করা যায় না।
এটা একটা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ধারনা৷ মেডিকেল জার্নালের ১২ বছরের গবেষনায় তারা দেখছে ৯০% স্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব৷ স্ট্রোকের চিকিৎসা অনেক কঠিন এবং ব্যয়সাধ্য বিষয়৷ স্ট্রোকের পরিপূর্ণ চিকিৎসার ব্যবস্থা আমাদের দেশে নেই৷ তাই স্ট্রোকের চিকিৎসাও এইখানে দুরূহ ব্যাপার৷ কারণ ট্রাফিক জ্যাম দূরুত্বের কারনে সাড়ে চার ঘন্টার মধ্যে হাসপাতালে রোগী আনা সম্ভব নয়৷ এছাড়া অনেকেই বুঝতে পারে না, তাদের রোগী স্ট্রোক করছে কিনা।
এমতাবস্থায় স্ট্রোক প্রতিরোধ ছাড়া এইদেশে স্ট্রোককে ঠেকানো অসাধ্য বিষয়৷
উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রন, নিয়মিত শারিরীক ব্যায়াম,ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রন, ওজন নিয়ন্ত্রন, সঠিক খাদ্যাভ্যাস যেমন তেল চর্বি এবং গরুর মাংস পরিহারের মাধ্যমে স্ট্রোক প্রতিরোধ সম্ভব৷

ধন্যবাদ
ডাঃ সাইফুল ইসলাম, পিটি
প্রতিষ্ঠাতা, বাংলাদেশ স্ট্রোক ফাউন্ডেশন।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১২:২৮

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: জানিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ জানবেন।

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৫৫

ডাঃ সাইফুল বলেছেন: মাহমুদুর রহমান ভাই, আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ । ভাল থাকবেন ।

২| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ২:০৫

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: ডাঃ ধন্যবাদ আপনাকে উপকারী তথ্য সমৃদ্য পোস্টগুলো দিয়ে সবার উপকার করার জন্য। আল্লাহ আপনাকে উত্তম যাযা দান করুন।
অন্য একটি প্রশঙ্গ জানতে চেয়েছিলাম আপনার কাছে। আমার এক আত্নীয় এক এক্সিডেন্টে তার এসিএল , পিসিএল লিগামেন্ট ইন্জুরী হয় এখন তাকে ডা্ক্তার অপারেশনের সাজেশন দিয়েছেন। আমি জানতে চেয়েছিলাম এই বিষয়ে অভিজ্ঞ কে আছেন ঢাকাতে। যদি প্রতিমন্তব্যে জানাতেন উপকৃতি হইতাম।

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:০২

ডাঃ সাইফুল বলেছেন: সুজন ভাই, দুঃখিত এবং লজ্জিত অনেক দিন পর আপনার মেসেজটা দেখলাম । আমি অনেকদিন দেশের বাহিরে ছিলাম পড়াশুনার উদ্দৈশ্যে । তাই ব্লগে আসা হয় নাই । অপারেশন ছাড়া অবশ্যই লিগামেন্ট ইনজুরি ভাল করা যায়, যদি আংশিক ইনজুরি হয় । প্রয়োজন হলে অবশ্যই কল দিবেন ০১৭৮৭১৫২৮৭২

৩| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৯ বিকাল ৩:০৯

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো পোষ্ট।
এই রোগটা কে আমি ভীষন ভয় পাই। এবং আমার মনে হয় আমি স্ট্রোক করে মারা যাবো।

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:০৩

ডাঃ সাইফুল বলেছেন: ভয় করার মত একটা রোগ । তবে নিয়মিত ব্যায়াম করলে এবং চর্বি জাতীয় খাবার খেলে এই সমস্যা হবে না ।

৪| ১৫ ই জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:৩৩

ইসিয়াক বলেছেন: উপকারী তথ্য সমৃদ্ধ পোষ্ট।ধন্যবাদ

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ৮:০৫

ডাঃ সাইফুল বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাইজান । ভাল থাকবেন । হেলথ বিষয়ে যেকোন পরামর্শ পেতে ০১৭৮৭১৫২৮৭২ । কল দিবেন ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.