নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Dua ahmed

Dua ahmed › বিস্তারিত পোস্টঃ

চার আনা পয়সা

১৭ ই মার্চ, ২০২৩ রাত ১:২৩

জীবনে কি টাকা পয়সার প্রয়োজন খুব বেশি? আমার জীবনে তো বেশি ই । সংসারে টাকা খরচ হয় পাই পাই হিসাবে । বাসা ভাড়া আনুষঙ্গিক খরচ বাজার সব করার পর হাতে কিছু থাকেই না । তার মধ্যে আমি অসুস্থ । কত খরচ প্রতি মাসে যায় আমার পিছনে । তাতে আমি লজ্জিত বোধ করি । আর সে খুব বিরক্ত বোধ করে । তার মতে এত অসুস্থ কেউ কিভাবে থাকে । তার যেনো আমার অসুস্থতা সহ্যই হয় না । আমার অসুস্থতা আমাকে একাই ফেস করতে হয় । অনেক সময় খারাপ লাগলেও মিথ্যা বলি যে ভালো আছি কোনো ব্যাথা নাই কষ্ট নাই কিছু না । শুধু ওকে বিরক্ত আর করতে চাই না । আমি যে ছোট বেলা থেকেই খুব দূর্বল । আমার পার্টনার ই আমাকে বোঝে না । এর চেয়ে বড় দুঃখ আর কি হতে পারে??
ও হ্যা, টাকা... আমার জীবনে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ । হঠাৎ একদিন রাস্তায় যাওয়ার সময় পাশের এর শোরুম এ একটা ড্রেস খুব পছন্দ হয়েছিল । পরের দিন খুব আগ্রহ করে তাকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলাম জামা টা কেনার জন্য । আমি ট্রায়াল রুমে ট্রায়াল দিতে দিতেই ওর জামার দাম জানা হয়ে গেছে । ঠিক করে ফেলেছে আমাকে বলবে ভালো লাগেনি জামা টা । আর আমিও ট্রায়াল দেয়ার সময় ট্যাগ থেকে প্রাইস টা দেখে বুঝে গেছিলাম এটা আমি নিতে পারবো না । তাই বের হয়েই বললাম পরার পর অত ভালো লাগছে না আর কোয়ালিটির তুলনায় দাম অনেক বেশি । নিব না । চলো । বাসায় ফেরার সারা রাস্তা আমার চোখ অশ্রু ভরা ছিল । কিন্তু খুব সাবধানে এক ফোঁটাও ঝরতে দেই নাই ।
বিভিন্ন জায়গায় খাবার রেস্টুরেন্টের রিভিউ দেখে যেতে ইচ্ছা করে ওকে বলিও । ও বাছাই করে সবচেয়ে কমদামী টা । আর বিরক্তি ভরা চেহারায় আমাকে নিয়ে যায় তাও ৫/৬ বছরে একবার হা হা হা ।
বিয়ের পর থেকেই কত জায়গায় ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছা । কত বলেছি রমনা যাই, বাণিজ্য মেলায় যাই, মাওয়া যাই,সোনারগাঁও যাই,রমনা যাই, হস্তশিল্প জাদুঘরে যাই, নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁও জাদুঘরে যাই, গোলাপ গ্রামে যাই,শাপলা বিলে যাই আরোও কত কি.... কেনো জানি যায় না ।
অনেক দিন পর বন্ধু দের নিয়ে যায় মাওয়া,সুনামগঞ্জ,কুয়াকাটা আর কোথায় কোথায় যাবে কে জানে ।
আমার সাথে কেনো যায় না?? আমি তো একা যেতে পারতাম যদি সেফ হতো । এ দেশে কোথায় একা একটা মেয়ে ঘুরতে পারে?? বোনেরা সবাই নিজ সংসারে ব্যাস্ত,তারা তাদের মত বেড়ায়, বন্ধুরাও যে যার সংসারে ছেলেপুলে নিয়ে ব্যাস্ত কিন্তু তারাও নিজের ছোট পরিবার স্বামী সন্তান নিয়ে বেড়াতে যায় । প্রায় প্রতি মাসেই ।
আমি যে একা পড়ে গেছি । কেউ নেই আমাকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার মতো । আমার যে খুব নতুন নতুন জায়গায় ঘুরতে যেতে ইচ্ছা করে । কত নতুন খাবার ট্রাই করতে ইচ্ছা করে । আমি কি করবো??
আমার এই অবহেলা আর সহ্য হয় না । অসুস্থ অবস্থায় অবহেলা গুলা আরোও খারাপ লাগে যেটা হয়তো কাওকে বলে বুঝাতে পারবো না ।
আমার বসা নিষেধ । চিনি ভাত খাওয়া নিষেধ । কতদিন মনে হয় যেনো ভরপেট খাই না । বসি না ঠিক মত অনেক দিন । থেরাপীর শেষের ৪ দিন পায়ে আর কোমরে ব্যাথা এত বেড়ে গেছে যে না পারি বেশিক্ষণ হাঁটতে না পারি শুয়ে থাকতে । তাও একটু হাটি একটু শুই । তাও সোফায় শুই যেনো অবেলায় ঘুম না আসে । বিছানায় শুই না । যারাই আমার sickness এর কথা শুনেছে সবাই বলেছে সম্পূর্ণ বেড রেস্ট দরকার । সেখানে ঘরের টুকটাক কাজ রান্না বান্না এগুলো করতে হয় আর এর মাঝেই টুকটাক অনিয়ম হয়ে যায় । দাড়িয়ে রান্নায় অনেক কষ্ট হয় । একটু শুই আবার উঠে রান্না ঘরে দৌড় দেই । উফফ কি কষ্ট হচ্ছে নিয়ম গুলো মেনে চলতে, একজন housewife কী পারে সম্পূর্ণ বেড রেস্ট এ থাকতে?? ঝুঁকতে পারবো না একদম...কিন্তু এত কাজে কখন ঝুঁকে পড়ি কে জানে । পারি না তো । কি করবো?
মাঝে মাঝে মন চায় খুব দূরে কোথাও চলে যেতে ।
একা....একদম একা....
যেখানে কেউ থাকবে না আমাকে সর্বক্ষণ আমার দোষ ধরিয়ে দিতে, যেখানে কেউ থাকবে না আমার উপর বিরক্ত, যেখানে কেউ দিবেনা বার বার আমার ক্ষত বিক্ষত মনে আরোও আঘাত । কিন্তু ঐযে শুরুতেই বললাম টাকা....কোথায় যাবো যেখানে পকেটে নেই চার আনা পয়সা হা হা হা ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.