নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ম. হক

ম. হক › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবন থেকে নেয়া

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৪১

আমি তখন খুব ছোট। খুব একটা বুঝতে শিখিনি। বাবাকে দেখি পুরানো দলিল দস্তাবেজ ঘটাতে। আর কি সব কাগজপত্র নাড়তে। কয়েক মাস পরপর আদালতে যেতে। আমি তখন আদালত বুঝি না। তবে এটা বুঝি বাবা কয়েক মাস পরপর কোথাও গিয়ে হতাশ হয়ে ফিরে আসেন।

বাবার হতাশা দেখে খারাপ লাগে। বুঝতে চেষ্টা করি। বাবা বলে, তুমি ছোট। বুঝবেনা। কোন একদিন বড় হয়ে গেলাম। অনেক বড়। জানতে পারি আমাদের মাঠে ১/২ একর জমি নিয়ে সমস্যা। আমার জন্মের অনেক আগে বাবা আদালতে সরকারকে বিবাদী করে মামলা করেন। এ মামলায় হাজিরা দিতে যায়।

একটু পিছনে যাই। বাংলাদেশে ১৯১০ সালে ভূমি জরিপ হয়। এলাকা ভেদে সময়টা ভিন্ন ভিন্ন। জরিপের পর সিএস খতিয়ান হয়। জমিটি সিএস খতিয়ানভূক্ত হয়। কিন্তু ১৯৬০ সালে আবার একটি আংশিক ভূমি জরিপ হয়। এমআর খতিয়ান হয়। সে সময় আমাদের এলাকায় বন্যা হয়। ফলে ভূমি জরিপকারীরা সরেজমিনে না গিয়ে জরিপকার্য সম্পন্ন করে। সে সময় বাবা কর্মসূত্রে পশ্চিম পাকিস্তানে ছিলেন। আমাদের জমিটি এমআর খতিয়ানে খাসজমি হিসাবে অধিভূক্ত হয়।

এরশাদের সময় সরকার খাস জমি ভূমিহীনদের বন্দোবস্ত দেয়। মামলা চলা সত্ত্বেও আমাদের জমিটি ভূমিহীনকে বন্দোবস্ত দেয়া হয়। উপজেলা ও জেলা আদলতে বাবা হেরে গেছেন। কারণ একটা। বাবা ঘুষ দিতে রাজি ছিলেন না। ২২ বছর হল বাবা নেই। মামলাটা হাইকোর্টে আছে।

একে বলে আদালত। বাংলাদেশী আদালত। বেঈমানী করলে লোকে মীরজাফর বলে। তেমনি কোনকিছু ধীরগতির হলে লোকে আদালতি বলে। কবে যে এ দেশের মানুষের বিচার পাবার অধিকার হবে?

যাক। চলুন একটা গল্প শুনি। বাবা আদালতে আইনজীবী। দীর্ঘ ৪০ বছর একটা মামলায় লড়ছে। ইত্যবসরে ছেলে ব্যারিস্টারী পাস করে বাবার ল-ফার্মে যোগ দেয়। একদিন বাবার অনুপস্থিতিতে ছেলে ৪০ বছরের পুরানো মামলা লড়তে আদালতে যায়। মামলায় জিতে যায়।
ছেলেঃ বাবা, আমি মামলায় জিতেছি।

বাবাঃ কোন মামলায়?

ছেলেঃ কেন? তোমার ৪০ বছরের পুরানো মামলাটায়!

বাবাঃ হায়! হায়! কি করছিস? তোকে ব্যারিস্টারী পড়ানো ঠিক হয় নি?

ছেলেঃ কেন বাবা? কি হইছে?

বাবাঃ আরে বোকা! ঐ মামলাটা দিয়ে তোকে ব্যারিস্টারি পাস করালাম

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.