নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Epshi007

ঈপ্সিতা চৌধুরী

I wanna know the wonders around me

ঈপ্সিতা চৌধুরী › বিস্তারিত পোস্টঃ

আত্মহত্যা করার মত অনেক ঘটনা জীবনে ঘটেছে--কিন্তু করিনি... আমি/ আমরা না এত ইমোশনাল ছিলাম না--- !!

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৩৫

> দিনাজপুর গার্লসে- ফোর/ ফাইভে থাকাকালীন একদিন ধর্ম পড়ে যাইনি, ধর্ম স্যারের প্রিয় ছাত্রী ছিলাম আমি, হায়েস্ট মার্ক সব সময় পেতাম, সেই স্যার সেদিন অন্য ছাত্রীদের সাথে আমাকেও নাকে খত দিয়েছিলো! স্পষ্ট মনে আছে, দোতলার স্কুল ঘরের এমাথা থেকে ওমাথা পর্যন্ত চক দিয়ে দাগ টেনে সেই দাগ আমাদের লাইন ধরে নাক দিয়ে মুছতে হয়েছিলো! ভাবুন তবে---
এই গার্লসেই স্কুল টাইমে ব্যাগ স্কুলে রেখে ষ্ট্যাম্প কিনতে গিয়েছিলাম, ফিরে আসার পথে বড়আপা দেখে ফেলেন, শুধু রাস্তায় ভিড় থাকার কারনে চিনে রাখতে পারেননি তাই টিসির হাত থেকে বেঁচে যাই আমি ও আমার এক বান্ধবী! বড়আপা এসেম্বলির সময় সে কথা ঘোষণা করেছিলেন!
> পাবনা গার্লসে- ক্লাস নাইনে থাকাকালীন একদিন স্কুল ব্যাগ সার্চ করা হয় ( এক মেয়ের চিঠির সূত্রে ) সেদিন আমার ব্যাগে তিন গোয়েন্দার বই পাওয়া যায়! অন্য ছাত্রীদের সাথে আমার অভিভাবককে স্কুলে ডাকা হয়! সেদিন ও অল্পের জন্য বেঁচে যাই টিসি পাওয়া থেকে, সেদিন ও বাংলা ম্যাডাম মামণীকে বলেছিলো- ও আমার প্রিয় ছাত্রী, এখন থেকে গল্পের বই যেন স্কুলে না আনে! বাসায় আমাকে ধুয়ে ফেলা হয়েছিলো... কই মরিনি তো!!
পাবনা এডওয়ার্ড এর এক ক্যামেস্ট্রি স্যারের কাছে পড়তে যেতাম! একদিন পরীক্ষায় নাম্বার কম পাই! সেই স্যার এক সময়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টুকু আংকেলের ছেলেদের ( আমাদের প্রতিবেশী ছিলো তারা) বাসাতে পড়াতে আসতো, সেই স্যার সেদিন তাদের পড়িয়ে আমার বাসায় নক করে, দরজায় দাঁড়িয়ে বাপি/ মামনীকে ডেকে আমার কথা বলে প্রচন্ড বকেন, স্যার চলে যাওয়ার পর বাসায় আর এক দফা আমাকে ধুয়ে ফেলা হয়-- কিন্তু কই পারিনি তো আত্মহত্যা করতে... ! পরের দিন প্রাইভেটে স্যার আমার মুখ কালো দেখে, কাছে ডেকে স্নেহ দিয়ে বলেন- তুই আমার প্রিয় ছাত্রী, ভালো করবে পড়বি বুঝলি---
এই শহরেও টিজের ঠ্যালায় জীবন অতিষ্ট হয়ে গিয়েছিলো--- তবুও তো আত্মহত্যা করিনি......... !
> পটুয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয় এন কলেজে পড়াকালীন - সেই শহরের ছেলেরা আমাকে টিজ করে আমার জীবনটাকে ছাড়খার করে দিয়েছিলো! নাক লম্বা তাই একদল আমার নাম দেয় “নিক্স”! খুব ছোট শহর পটুয়াখালী! এই শহরে এই নিক্স কথাটা ভাইরাসের মত ছড়ায় , ব্যাপার এমন হয় আমি যে রাস্তায় যাই না কেন আমাকে কেউ না কেউ ডাকবে- এই নিক্স! কলেজের দেয়ালে দেয়ালে আমার নামে বাজে কথা! মাঠের গাছে আমার কার্টুন এঁকে লটকে রাখা, আমাকে দেখে নিবে, উঠিয়ে নিবে কত কথা! আমার বাপি/ মামনীকে নিক্স এর বাবা মা, বান্ধবীদের নিক্স এর বান্ধবী বলত তারা! এই বিষয় নিয়ে আমার ক্লাসমেটদের সাথে বিভিন্ন গ্রুপের মারামারিও হয়, পুলিশী ব্যাপারও ঘটে! এতটাই অতিষ্ট করেছিলো যে আমার জায়গায় অন্য কেউ হলে পড়াশুনা ছেড়ে দিতো কিংবা আত্মহত্যা করতো-- কিন্তু আমি করিনি, অনার্স/ মাস্টার্স এ ফাস্ট ক্লাস হাতে নিয়ে বের হয়েছি! একসময় সেই ছেলেরা নিজেরাই নত হয়, আমাকে সম্মান করতে শিখে......... ( জীবনের সবচেয়ে খারাপ ঘটনার একটা এইটা)
>> তো এই ধৈর্যের শিক্ষা আমার পরিবার শুধু আমাকে দেয়নি, আমি নিজে অর্জন করেছি! পরিবার কতবার কত কথা বলেছে এসব বিষয়ে কিন্তু কিভাবে কিভাবে যেন নিজেকে সামলে নিয়েছি! এর থেকেও খারাপ কিছু আরো ঘটেছে, ঘটছে, জীবন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে- কিন্তু সাহস দেখিয়ে আত্মহত্যা করিনি বরং দুঃসাহস দেখিয়ে আত্মহত্যাকে ঝেটিয়েছি মন থেকে!! ভেবেছি, আমি মরলে- আমার পরিবারে আরও ৩টা লাশ পরবে---
>>> আর এখনকার ছেলে/মেয়েরা একটু কিছু হলেই “আত্মহত্যা” করছে! এখন আসি- ভিকারুন্নেসা প্রসঙ্গে- প্রথম দোষ মেয়েটার, সেই সাথে তার পরিবারের! কেন সে স্কুলে মোবাইল নিয়ে যাবে? আবার নকলের কথাও এসেছে! স্কুলে কিছু নিয়ম থাকে- যার কারনে টিসি দেয়া হয়! এই নিয়ম যদি উঠিয়ে দেয়া হয়, তবে বাচ্চারা শিখবে কি? বলতে পারেন? ২য় দোষী- স্কুল কতৃপক্ষ, তারা সার্চ করে কেন রুমে ঢুকায় নাই? এবং চাইলে তারা একবার সেই মেয়েকে সুযোগ দিতে পারতো, অন্য শাস্তি দিয়ে! এবং ছাত্র/ শিক্ষক - সত্যি বলতে কি- এখনকার ছেলে/মেয়েরা অন্যরকম! একজন শিক্ষক হিসেবে বিভিন্ন স্কুলে পড়াতে গিয়ে দেখেছি তা, এদের কন্ট্রোল করা অনেক টাফ! আর কিছু শিক্ষক, সত্যি-ই-- খুব খারাপ ব্যবহার করেন, মারেন ছাত্রদের--! সব মিলিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থাটা এখন আর আগের মত নেই!
কিন্তু “আত্মহত্যা” তো কোন সমস্যার সমাধান হতে পারে না... ! এভাবে কেউ চলে যাবে তা আমরা কেউ চাই না!!
একারনেই স্কুল/কলেজ/ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কাউন্সিলিং ক্লাস ছাত্র/ছাত্রীদের জন্য এবং শিক্ষকদের জন্য বিশেষ ক্লাস- “ ছাত্রদের প্রতি তাদের আচরণ কেমন হওয়া উচিৎ” নেয়া দরকার------!

মন্তব্য ২৯ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২৯) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৪০

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: ঘটনাটির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই ।

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:০২

ঈপ্সিতা চৌধুরী বলেছেন: অপরাধীর শাস্তি হোক -- কিন্তু আত্মহত্যা কি কোন সমস্যার সমাধান?

২| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:১৮

আমি ৎৎৎ বলেছেন: কথাগুলো ভাল লাগল অনেক, আসলে সবাই যদি আপনার মত চিন্তা করত তাহলে হয়ত দুর্ঘটনা ঘটত না।

ভাল থাকুন, সবসময়।


পোষ্টে + + +

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:০২

ঈপ্সিতা চৌধুরী বলেছেন: শুকরান ভাই! আমি নিজেও একজন শিক্ষক! ব্যক্তিগত উদ্যোগে আমি স্কুলে কাউন্সিলিং ক্লাস শুরু করছি! দোয়া করবেন!

৩| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:১৯

ভুয়া মফিজ বলেছেন: স্যরি টু সে, আপনি আত্মহত্যা করেন নাই বলে অন্য কেউ করবে না, এটা অত্যন্ত দুর্বল যুক্তি। সবাই মাত্র ১৫ বছর বয়সে আপনার মতো ম্যাচুরিটি দেখাতে পারবে, এটা আশা করেন কিভাবে? আমরা কথা বলছি এই বয়সের একজন সাধারন শিক্ষার্থীকে নিয়ে, অসাধারন কাউকে নিয়ে না।

আর স্কুলের কাজ হলো শিক্ষার সাথে সাথে এদেরকে ভালোবাসা আর যুক্তি দিয়ে বাকী জীবন চলার উপযোগী করে তোলা। ভিকারুন্নেছা তো বাংলাদেশ মিলিটারী একাডেমি না।

আশাকরি, বোঝাতে পেরেছি।

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:০৪

ঈপ্সিতা চৌধুরী বলেছেন: আমি কিন্তু এই আত্মহত্যা বা শিক্ষকের পক্ষে না - আবার আমার মতই সবাই ভাববে তাও বলছি না-- কিন্তু জীবনকে তারা এত তুচ্ছ ভাবছে কেন? ! এখন বলি- নাম্বার ওয়ান- ভিকাতে পড়ে কারা? উচ্চশিক্ষিত / উচ্চবিত্তরা ! আপনি যখন আপনার বাচ্চাকে স্কুলে পাঠাবেন, তখন সেই স্কুলের নিয়ম কানুন সম্পর্কে আপনার জানা থাকবে! বাচ্চাকে স্কুল পাঠিয়েই আপনার দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না ! আপনার নাইন পড়ুয়া বাচ্চা স্কুলে পরীক্ষা দিতে গিয়ে মোবাইল নিয়ে গিয়ে স্কুলে নিয়ম ভংগ করবে - এইটা কি আপনি মানতে বলছেন স্কুল কতৃপক্ষকে? এখন বাকি থাকলো- শিক্ষকের আচরণ- অবশ্যই তারা চাইলে পারতো- তাকে ক্ষমা করতে অন্য শাস্তি দিয়ে - এটা আমি আগেই বলেছি! আর নাইন পড়ুয়া মেয়ে মোবাইল হাতে নিয়ে স্কুলে যাওয়ার মত ম্যাচুরিটি পায় আর নিজের অপরাধ সম্পর্কে কিংবা আত্মহত্যা মহাপাপ এই সম্পর্কে জ্ঞান রাখতে পারে না- এটা ভাবা যায়?
দেখুন- নিজের বাচ্চাকে স্কুলে ছেড়ে দিয়ে নিশ্চিত হলেই হবে না- নিজ বাচ্চাকে কিছু শিক্ষা পরিবার থেকেও দিতে হবে-- নইলে এমন ঘটনাতে আর ও অনেক জীবন চলে যাবে--- ! আমি নিজেও একজন শিক্ষক! ব্যক্তিগত উদ্যোগে আমি স্কুলে কাউন্সিলিং ক্লাস শুরু করছি! দোয়া করবেন!

৪| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:২৬

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: ১৫ বছর বয়সে আপনি যেখানে আপনার উপর অর্পিত অভিযোগ নিয়েই হিমশিম খাচ্ছেন, সেখানে আপনার বাবা মাকে আপনার সামনে কতখানি অপমান করলে বা সবাই মিলে কতখানি মানসিক চাপ সৃষ্টি করলে, এইটা শিশু এই ধরনের ভয়াবহ ঘটনা ঘটাবার সাহস করতে পারে? এটা নিঃসন্দেহে হত্যাকান্ড। এরা শিক্ষক নয়। এরা শ্রেফ আলুপটলের ব্যবসায়ী।

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:০৫

ঈপ্সিতা চৌধুরী বলেছেন: দেখুন ভাইয়া- এই একটা বাচ্চা মেয়ের চলে যাওয়া আমাকেও কষ্ট দিচ্ছে- বাচ্চাদের সাইকোলজি বুঝে তাদের শিক্ষা দান করতে হয় তাদের পাশে থাকতে হয় কিন্তু সব সময় তো ছাড় দেয়া যায় না! টিসির কিছু নিয়ম আছে সেটা না মানলে সেই স্কুল নিয়েও কথা হবে! আপনার বাচ্চাকে স্কুলে দিয়েই কি আপনার দায়িত্ব শেষ? সেই স্কুলের নিয়ম কানুন কি আপনাকে জানতে হবে না? বাচ্চাকে কিছু শিক্ষা কি নিজে থেকে দিতে হবে না...?
আমি তো বলেছি- চাইলে তারা তার শাস্তি কমিয়ে অন্য শাস্তি দিতে পারতো কিন্তু এত ইমোশনাল হলে কি এই কঠিন পৃথিবীতে টিকে থাকতে পারবে আমাদের বাচ্চারা? যেখানে পথে পথে বিপদ-- ! নাইন পড়ুয়া একটা মেয়ে মোবাইল নিয়ে যাওয়ার মত ম্যাচুরিটি দেখায় কিন্তু নিজের ভুল বুঝতে পেরে নিজেকে সামলাতে পারলো না- রাগটা এখানেই! জীবনকে এরা এত তুচ্ছ ভাবছে কেন? এদের প্রতি শুধু শিক্ষকের না আমাদের সবার দায়িত্ব রয়েছে----

৫| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৩১

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: সবার মন মানসিকাত তো এক রকমের নয়।একটা কথা আপনি যে ভাবে গ্রহন করবেন অন্য জন সে ভাবে গ্রহন করতে পারবে এটা ভাবলে ভুল হবে।
শিক্ষকদের উচিত আগে ছাত্র-ছাত্রীদের বুঝিয়ে বলা।আজে-বাজে কথা বলা কখনই উচিত নয়।

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:০৫

ঈপ্সিতা চৌধুরী বলেছেন: অবশ্যই এক না ! কিন্তু এই কঠিন পৃথিবীতে টিকতে হলে নিজেকে সামলে চলতে জানতে হবে-- ! জীবনকে তারা এত তুচ্ছ ভাবছে কেন?

৬| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:৫৫

মা.হাসান বলেছেন: নকল করলে তা ধরা বা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসাবে টিসি দেয়া দোষের না, তবে দুর্ব্যবহার দোষের। প্রিন্সিপাল বা ভাইস প্রিন্সিপাল কার বান্ধবি জানি না, তবে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ প্রমান হলে দোষীদের শাস্তি হওয়া দরকার। লেখিকার বক্তব্যর সঙ্গে একমত, আত্মহত্যার দায় স্কুলের না। জীবনের সৌন্দর্য,বিশালতার শিক্ষা পরিবার থেকে হওয়া দরকার। অনেক অভিভাবক আছেন বাচ্চাদের সব সময় চাপে রাখেন, বাচ্চাদের সব সময় বলেন -you are good for nothing- অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে তুলনা করে বলেন অন্যরা কত ভাল, সে কিছুই না। এরকম বাচ্চা যে কোন তুচ্ছ কারনে আত্মহত্যা করতে পারে।

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:০৯

ঈপ্সিতা চৌধুরী বলেছেন: আমি এটাই বোঝাতে চাচ্ছিলাম-- স্কুলের কিছু নিয়ম আছে! বাচ্চাকে স্কুলে পাঠাবেন আর সেই স্কুলের নিয়ম মানবেন না- তা কি হয়? আমি তো বলেছি- চাইলে তারা সেই শাস্তি কমিয়ে অন্য শাস্তি দিতে পারতো! আর স্কুলে বাচ্চাকে পাঠিয়ে দিয়েই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না! পরিবার থেকে কিছু শিক্ষা দিতে হয়, নিজে কিছু শিক্ষা অর্জন করতে হয়!
সবচেয়ে বড় কথা সময়টা এখন খারাপ! তাই বাচ্চাদের কাউন্সিলিং করাও খুব দরকার! ধন্যবাদ ভাই!

৭| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:১৩

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: আমাদের শিক্ষকরা চাইল্ড সাইকোলজির বিষয়ে কতটুকু ধারনা রাখে বলুন তো? স্কুলের নিয়ম কানুন প্রয়োগ করার অনেক উপায় আছে। সেই নিয়ম নিয়ে কোন কথা নাই। নিয়ম তো মানুষের জন্যই নাকি? আপনি টিসি দেন, সমস্যা নাই। একটা বাচ্চাকে, তার বাবা মায়ের সামনে, বাবা মা সহ নিপিড়ন করে টিসি দিবে হবে এটা পৃথিবীর কোন সভ্য স্কুলের নিয়ম হতে পারে?

এইভাবে বাজে ব্যবহারের অধিকার কে দিয়েছে তাদেরকে? এর নাম শিক্ষকতা? আমাদের ছোটকালে আমাদের শিক্ষকরা আমাদেরকে মেরেছেন, ভালোবেসেছেন। প্রি টেস্টে এক সাবজেক্টে ফেল করেছিলাম, আমার ক্লাস টিচার আব্বা আম্মাকে সুন্দর করে বুঝিয়ে বলেছে, কি করতে হবে। আমি পরে টেস্টে তৃতীয় সর্বোচ্চ মার্ক পাই!

আমাকে আমার বাপ মায়ের সামনে অপমান করে, আমার বাপ মা কে অপমান করার নাম কি শিক্ষা আপু?

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:২৪

ঈপ্সিতা চৌধুরী বলেছেন: টিসি বাচ্চাকে তার বাবা মায়ের উপস্থিতিতেই দেয়া হয়! বাকি রইলো- আচরণ- আমি কিন্তু সেই শিক্ষক বা স্কুল কতৃপক্ষের আচরণের পক্ষে না ! একটা ব্যাপার কি জানেন ভাইয়া-? এই বাচ্চা মেয়েটার চলে যাওয়া আমাকেও কষ্ট দিচ্ছে কিন্তু রাগ এখানেই- কেন এভাবে চলে যাবে...? এইটুকু চাপ নিতে না পারলে তো এই দুনিয়ায় টিকে থাকা কঠিন! কারন এখানে পথে পথে বিপদ-- ! নিজেকে সামলাতে না জানলে এভাবে অনেক জীবন ঝরে যাবে--- আমি সেটাই ভাবছি-- আর তাই নিজের কথা বলেছি--! খেয়াল করেছেন- ঢাবি সহ কত আত্মহত্যার ঘটনা এই কয়দিনে এসেছে--!! কিন্তু এটা তো সমাধান নয়---------
ঠিক এই কারনে- ব্যক্তিগত উদ্যোগে- আমি স্কুলে কাউন্সিলিং ক্লাস শুরু করেছি! সামুতে এই নিয়ে পোস্ট ও দিয়েছি--- !
এই কাউন্সিলিং ক্লাস এর মত--- শিক্ষকদের জন্য বিশেষ ক্লাসের দরকার আছে তাও বলেছি--- আশা করছি বোঝাতে পেরেছি? বাচ্চার সাইকোলজি বুঝে ক্লাস বা শিক্ষা দেয় খুব কম শিক্ষক !! এ কারনেই বলেছি- এখনকার শিক্ষা ব্যবস্থা আগের মত নেই!

৮| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:০৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
স্কুল শিশুরা শারীরিক শাস্তির পাশাপাশি মানসিক পীড়ণের শিকার হচ্ছে৷ ফলে দুঃখজনক অনেক ঘটনা ঘটছে৷ অভিভাবকরা প্রতিবাদ করলে তাদের সন্তানরা শাস্তির মুখে পড়ে৷ অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের নিয়ে রীতিমত টিসি আতঙ্কে আছেন৷ কথায় কথায় সন্তানকে টিসি দিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়৷'' এটা দুঃখজনক। অথচ শিক্ষা হওয়া উচিত আনন্দের মধ্য দিয়ে৷ যেখানে শিশুরা পড়াশুনা বা পরীক্ষাকে ভয় পাবেনা৷ এটাই শিক্ষার আধুনিক কৌশল৷ কিন্তু আমাদের এখানে এর উল্টো ব্যবস্থা চলছে৷ শিক্ষার্থীদের নানাভাবে শারীরিক ও মানসিক চাপে রাখা হয়৷ আর এর ফলে অনেক দুঃখজনক ঘটনা ঘটে। একই চাপ বা হেনস্তার মুখে সবাই আত্মহত্যা করে না৷ কেউ কেউ করে৷ তাহলে শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থা এবং গঠন বোঝা জরুরি৷
তাই শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যা ঠেকাতে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন।
শিক্ষার্থীদের ওপর মানসিক বা শারীরিক চাপ হয় এমন কোনো আচরণ কোনো শিক্ষক করতে পারবেন না৷ প্রত্যেক শিক্ষার্থীর মানসিক অবস্থা আলাদাভাবে জানা জরুরি৷ তাই প্রয়োজন স্কুলের শিক্ষকদের এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া৷ তারা যাতে বিষয়টি বুঝতে পারেন৷ তারা যেন জানেন, শিক্ষার্থীদের প্রতি কেমন আচরণ করতে হবে, কোন শিক্ষার্থী কোন ধরণের আচরণ নিতে পারবে৷ এছাড়া শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে কোনো নেতিবাচক প্রবণতা থাকলে তাদের সেই অনুযায়ী চিকিৎসকের কাছে পাঠাতে হবে৷

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৫

ঈপ্সিতা চৌধুরী বলেছেন: আমরা একটা অন্যায়ের বিচার চাইতে গিয়ে কিন্তু আর একটা অন্যায় কে প্রশ্রয় দিচ্ছি ভাইয়া! শিক্ষকদের ব্যাপারটা সত্যি যেটা আপনি বলেছেন কিন্তু অন্যায় করলে ( যেটা করলে টিসি দেয়া যায়) শাস্তির কিছু ব্যবস্থা স্কুলে রাখতেই হবে নইলে তো বাচ্চারা আরও বখে যাবে! সবচেয়ে বড় কথা- বাচ্চাদের মানসিক বিকাশে শুধু স্কুল শিক্ষক নয় পরিবারকেও ভূমিকা রাখতে হবে! নইলে তো এমন ছোটখাটো ঘটনায় দিন দিন এভাবে কিছু ফুলের কলি ঝরে যাবে--- !

৯| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:৫৪

ভুয়া মফিজ বলেছেন: একটা ১৫ বছরের বাচ্চা খুব বেশী অগ্র-পশ্চাৎ বিবেচনা করে না। এদের মধ্যে ইমোশান কাজ করে বেশী। এই সাধারন সাইকোলজিটুকু রাজধানীর একটা নামী-দামী স্কুলের সর্বোচ্চ পদের অধিকারী শিক্ষক বুঝবে না? এটা গ্রাম বা মফস্বলের কোন স্কুল হলে আমি এই কথাগুলো বলতাম না। এখন সার্বিকভাবে দেশ, সমাজ, পরিবারকে আমরা দোষারোপ করতেই পারি, কিন্তু এখানে দায়ী যারা তাদের সরাসরি অপকর্মের জন্যই তো এই ঘটনা ঘটলো। এদের কাছ থেকে তো এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরন আশা করা যায় না। ভূল আল্লাহ ও ক্ষমা করেন, সেখানে পা ধরে মাফ চাওয়ার পড়েও ক্ষমা করা গেল না? এমনই অপরাধ করলো মেয়েটা?

আসলে শিক্ষায় সারা বিশ্বে অন্যতম রোল মডেলের একটা দেশে থাকি। এদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে খুব কাছ থেকে দেখছি। তাই এতো কথা বলা। রাজধানী ঢাকার একটা অন্যতম নামী স্কুলের শিক্ষকদের তো একটা মিনিমাম স্ট্যান্ডার্ড থাকা উচিত। এদেরকে মানুষ গড়ার নাকি হত্যার কারিগর বলা যায় সেটা চিন্তা করার সময় এসেছে এবার।

আপনার গঠনমূলক অালোচনা ভালো লাগলো। আপনার গৃহীত মহৎ উদ্যোগের সাফল্য কামনা করছি।

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৪৬

ঈপ্সিতা চৌধুরী বলেছেন: আমি তো বলেছি ভাই- আমি শিক্ষকের আচরণের পক্ষে না ! কিন্তু সব দ্বায় সেই শিক্ষক বা স্কুল কতৃপক্ষের উপর ও যায় না! যদি যায় তাহলে কিন্তু এক অর্থে আমরা স্কুলে মোবাইল নিয়ে যাওয়া বা নকল করাকে সাপোর্ট করছি তাই হয়ে যাবে! তবে যাই ঘটুক, এমন ঘটনা আমরা চাই না! বাচ্চাদের মানসিক বিকাশে শিক্ষক + পরিবারকেও এগিয়ে আসতে হবে! এ কারনেই চেয়েছি স্কুল/কলেজে কাউন্সিলিং ক্লাস হোক + শিক্ষকদের জন্য বিশেষ ক্লাস- তাদের আচরণ কেমন হবে শিক্ষার্থীর প্রতি এই নিয়ে!

১০| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৯

মেইই বলেছেন: একজন শিক্ষক হিসেবে আপনার যুক্তিগুলোর কারণ বোঝা যাচ্ছে।

আমার তিন মেয়ের ছোটটিকে কেজিতে ভর্তি করেছিলাম। অসুস্থ থাকায় দুদিন স্কুলে যেতে পারেনি। পরদিন স্কুলে যাবার পর তাকে টিচার পড়া ধরেন যেটা আগের দিন দেওয়া হয়েছিল। অনুপস্থিত থাকায় সে জানতোনা। উত্তর দিতে না পাড়ায় টিচার তাকে "গরু" "সারাদিন খেলা কর?" ইত্যাদি বাক্য ব্যবহার করে বকা দেয়। পরদিন থেকে মেয়েটাকে আর স্কুলে পাঠানো যায়নি।

প্রশ্ন হলো - টিচার রা এধরণের ব্যবহার করতে পারেন কিনা?
অ.ট. আমার নানী / মা / ৫ খালা / ভাই সবাই টিচার। ওনাদেরকে কখনো এমন ব্যবহার করতে দেখিনি।

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৩

ঈপ্সিতা চৌধুরী বলেছেন: আমি কিন্তু সেই শিক্ষকের আচরণের পক্ষে না! এবং এমন ঘটনা যে স্কুলে ঘটে ( যা আপনি বলেছেন) তা সত্যি! আমার রাগ হচ্ছে- জীবনযুদ্ধে এমন অনেক সমস্যা আসবে কিন্তু তার সমাধান আত্মহত্যা হতে পারে না! অথচ দেখেন- আমাদের সময়ে- শাস্তির কথা আমি বলেছি, আর ও অনেকে আছে- যারা শিক্ষকের কাছে প্রচুর মার খেয়েছে কিন্তু তখন এমন ঘটনা ঘটতো না! আমরা কেউ চাই না- এমন কিছু ঘটুক, এভাবে এক একটা বাচ্চা ঝরে যাক, কিন্তু সমাধান এর কথা কি কেউ ভাবছি সেই ভাবে?
কিছু শিক্ষকের আচরণ সত্যি লজ্জিত করে কিন্তু ছাত্র/ ছাত্রীদের ভুলকে প্রশ্রয় দেয়াও ঠিক না!!

১১| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৩২

মাহের ইসলাম বলেছেন: আপনার কথা শুনে দুঃখিত হওয়া ছাড়া অন্য কোন প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারছি না।
আপনি যেভাবে সামলেছেন - আপনার প্রতি শ্রদ্ধা রইল।
আত্নহত্যা করার পিছনে যে কারণই থাকুক না কেন - এমন কাজ কোন মতেই সমর্থনযোগ্য হতে পারে না।

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৩

ঈপ্সিতা চৌধুরী বলেছেন: এক্সাক্টলি তাই! পৃথিবীটা বড্ড কঠিন জায়গা এখানে টিকে থাকতে হলে, লড়াই করতে হবে! এত অপমান গায়ে মাখলে তো কেউ আমাদের বাচ্চাদের বাঁচতে দিবে না-- !!

১২| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৮:৩৩

অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন:



আমার জীবনে এমন অনেক ঘটনা আছে যা আমাকে আত্মহত্যার কাছে নিয়ে গিয়েছে । কিন্তু করিনি । ঘুরে দাড়িয়েছি । তবে সবার সহ্য ক্ষমতা এক হবে সেটাও না ।

আবার স্কুল যেটা করেছে সেটা বাড়াবাড়ি । তাই সময় এসেছে এসব নিয়ে ভাবার ।

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৩৬

ঈপ্সিতা চৌধুরী বলেছেন: আমি সার্বিক দিক দেখিয়ে এটাই বোঝাতে চেয়েছি- এমন অনেক কিছু আমাদের জীবনে আসবে, ঘটবে কিন্তু তার কারনে জীবনযুদ্ধে হেরে গিয়ে এভাবে চলে যাওয়া তো ঠিক নয়! সময় এসেছে পরিবার থেকে সচেতন হয়ে, নিজ বাচ্চাকে সাহসী করে তোলা, জীবনযুদ্ধে যাতে তারা হেরে না যায় তার শিক্ষা দেয়া! বাকি রইলো- স্কুল! তাদের আচরণের পক্ষে আমি না! কিন্তু স্কুলের রুলস মেনে চলুক সবাই এটা চাই!!

১৩| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ৯:৫৪

অর্ক বলেছেন: আপনার লেখাটি পড়লাম। আপনার সাথে আমার একটি লেখা শেয়ার করি,

"এই তো আনুমানিক মাসখানেক আগের একটি ঘটনা। রাত আটটা বেজে থাকবে। ঢাকার কোথাও সরু একটি গলি পেরচ্ছিলাম। এ সময় দেখলাম, একটা সাইকেল বাঁ দিকে হঠাৎ তীব্র গতিতে সড়কের মোর ঘুরে আমার দিকে আসতে লাগলো। সাইকেল আরোহী এগারো বারো বছরের শিশু। বেশ খানিকটা দূরেই ছিল, তারপরও অস্বাভাবিক দ্রুত গতি দেখে আমি আতঙ্কিত হয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়লাম। চেয়েছিলাম, ও ওর মতো পাশ দিয়ে সাইকেল চালিয়ে নিয়ে যাক। দেখলাম, ও আরে আরে করতে করতে বেসামাল হয়ে সবেগে সাইকেলটা আমার ঠিক উরুতে লাগিয়ে দিলো। আমি উপস্থিত মুহূর্তে কিঞ্চিত প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম, এরকম কিছু একটা হতে পারে, এ জন্য পা যথাসম্ভব দৃঢ় করে রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলাম। আর যা ভেবেছিলাম ঠিক তাই হলো। ওর অসাবধানী বেপরোয়া সাইকেল চালানোর কারণে সরাসরি দুর্ঘটনার স্বীকার হলাম। ব্যায়াম করা শক্তিশালী পা হবার দরুণ খুব বড় কোনও বিপদ হয়নি যদিও, তারপরও সমস্ত পা ব্যথা করতে লাগলো। সামনে কাচুমাচু মলিন পাণ্ডুর মুখে দাঁড়ানো এগারো বারো বর্ষীয় শিশু সাইকেল আরোহী। আমি ওকে বললাম, ‘পুরো রাস্তার দুদিকে সম্পূর্ণ খালি আর আমি একা একটা মানুষ এখানে দাঁড়ানো। সাইকেলটা কি না লাগিয়ে নিয়ে যেতে পারতে না? আর তোমার সাইকেলে কি ব্রেকও নাই নাকি? যথেষ্ট সময় পেয়েছিলে ব্রেক করার।’ ও সম্পূর্ণরূপে নির্বিকার। ভীত শীতল মুখে হা করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। দেখলাম, পাশের দুয়েকজন লোক হইহই করে ছেলেটিকে ভর্ৎসনা করতে লাগলো। পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠতে পারে ভেবে, আমি ওকে বললাম, ‘যাও। সাবধানে দেখে শুনে সাইকেল চালাও। মোরে টোরে একটু স্লো চালিয়ো।’ ও সাইকেলে উঠতে লাগলো। এ পর্যন্ত কিন্তু ছেলেটি একবারের জন্যেও আমাকে সরি টরিও বলেনি। আবার বললাম, ‘সাবধানে চালিয়ো। ঢাকা শহর, সবখানে মানুষ।’ এবার দেখলাম ও উল্টো আমার ওপরই বিরক্তিসহকারে ‘উহ্' শব্দ করলো। তারপর সা সা করে আগের থেকেও আরও দ্রুত বেগে সাইকেল চালিয়ে মুহূর্তেই অনেকটা দূরে চলে গেল। আমি কিঞ্চিত আহত পা’য়ে খুরিয়ে খুরিয়ে নিজের মতো সড়কে হাটতে লাগলাম। এ সময় পাশের একজন পথচারী বললো, ‘থাবরাইলেন না কেন?’
‘না না একদম বাচ্চা মানুষ। কী করবো!’ বললাম আমি।
‘ধুর মিয়া, কীয়ের পোলাপাইন মিয়া। জানেন ওইগুলার মইধ্যে শয়তানি দিয়া ভরা। বাইরাইয়া সোজা করন লাগতো।’ রাজ্যের বিরক্তি ও উষ্মা নিয়ে আবার বললো ভদ্রলোক। আমি আর কথা বাড়ালাম না, নীরবে হাঁটতে লাগলাম।
"
আমি আমার আপনজন ছাড়া বাইরের কোনও শিশুর সঙ্গে সামান্য একটু দুর্ব্যবহার করবার কথা চিন্তাও করতে পারি না।

আপনার লেখাটি পড়তে পড়তে আমার শরীরের রোম দাঁড়িয়ে গেল। ভাবছিলাম, এটা কী আদৌ কোনও মনুষ্য সমাজ! অতো কোমলমতি একটি শিশুকে এভাবে নাকে খত দেয়ার মতো বীভৎস দৃশ্যটা কল্পনা করলাম। মনে পড়লো, 'মহেষ’ নাটকে গফুর চরিত্রে অভিনেতা মামুনুর রশীদের এক পর্যায়ে জমিদারের সামনে নাকে খত দেয়ার দৃশ্য। চোখ ভিজে এসেছিল সে দৃশ্য দেখে। ছোটবেলা থেকে আপনার ওপর ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো আসলে আপনার সুস্থ স্বাভাবিক বিকাশ ঘটাতে বিঘ্ন ঘটিয়েছে। যে কারণে আপনি বারবার পনেরো বছরের এক অভিশপ্ত সমাজের নষ্ট মানুষদের মানসিক উৎপীড়নে বিপর্যস্ত এক শিক্ষার্থী কিশোরীকে ‘পৃথিবী এক কঠিন জায়গা, পৃথিবী এক কঠিন জায়গা’ বলে সান্ত্বনা দিয়ে সমস্যাগুলোকে উপেক্ষা করে পাশ কাটাতে চাচ্ছেন। সহপাঠী বন্ধু বান্ধবের ব্যাপারটা উপেক্ষা করা যেতেই পারে। কিন্তু আপনার সঙ্গে সেই তথাকথিত শিক্ষক ও অভিভাবকগণ (ধুয়ে দেয়া ধুয়ে দেয়া বারবার বলেছেন) তা কোনওক্রমেই একটি সভ্য সুস্থ সমাজে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। ইউরোপের অনেক রাষ্ট্রে শিক্ষিতের হার শতভাগ। সেখানে ছাত্রছাত্রীদের সামান্য ধমক দিলেও শিক্ষককে শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়। এক কথায় বলবো ওরকম বর্বর শাস্তি না দিয়ে বুঝিয়ে বললেই ওর থেকে ঢের ভালো। আপনি এমন সব ঘটনার মধ্য দিয়ে গেছেন, এর মধ্যে আপনার সুস্থ স্বাভাবিক বিকাশ ঘটেনি। ঠিক আছে, পড়াশুনা করেছেন, পরীক্ষা দিয়েছেন, পাশ করেছেন। এটা আমাদের জীবন ধারা। কিন্তু এসব ঘটনা আপনার মধ্যে অত্যন্ত বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। যার কারণে আপনি বেমালুম ছাত্রী ও অভিভাবকদের ওপর দোষ চাপিয়ে দিচ্ছেন। ওই বিশেষ স্কুলের শিক্ষক ও কর্তৃপক্ষ যা করেছে, তা হলো তারা আত্মহত্যার জন্যে প্ররোচিত করেছে মেয়েটিকে। মেয়েটি টিসি দেয়ার মতো কোনও অপরাধই করেনি। মোবাইলে নকল করছে শনাক্ত হবার পর পরীক্ষকের উচিৎ ছিল, মৃদু ভর্ৎসনা করে মোবাইল অফ করে নিজের কাছে রেখে দেয়া। ব্যাস হয়ে গেলো। তারপরেও যদি সে এরকম অসাধুতা করে, তখন তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া যেতো। ছাত্রীকে আলাদা ডেকে বলা যেতে পারতো, নকল করছো কেন? তুমি কি ঠিক মতো বাসায় পড়াশুনা করনি? আর এরকম করবে না। ও পরবর্তীতে শিক্ষক বৃন্দ তার ব্যাপারে বিশেষ যত্নবান হতে পারতো। ছাত্রীর অভিভাবকদের ডেকেও বলা যেতে পারতো যে, আপনারা ওর পড়াশোনার ব্যাপারে যত্নবান হন। লক্ষ্য রাখুন যেন ঠিকমতো পড়াশুনা করে। টিভি কম্পিউটার স্মার্টফোনে আসক্তি আছে কিনা দেখুন ইত্যাদি। সে সব সুস্থ সুন্দর প্রকৃয়ার ধারেকাছে না গিয়ে তারা নির্দয় মানসিক উৎপীড়নের মাধ্যমে প্রকারন্তে মেয়েটিকে আসলে গলা টিপে হত্যা করেছে। এটা একটা সফেদ হত্যাকাণ্ড। রাষ্ট্রের উচিৎ সংশ্লিষ্টদের শাস্তি দেয়া।

দুঃখিত। অনেক কথা বলে ফেললাম। আমি আপনি আমাদের নিয়েই এই অগ্রসরমাণ মানবসভ্যতা। আমরা সবাই এর অংশ। আমরা এখনও এ পর্যায়ে আছি যে, আপনার মতো কাওকে একজন পনেরো বছরের কিশোরী ছাত্রীকে বলতে হয় ‘এই মানুষের পৃথিবী তোমার জন্যে অনেক কঠিন একটি জায়গা। জঙ্গলে যাও। জঙ্গল নিরাপদ।’

ধন্যবাদ ও শুভকামনা।

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৩৭

ঈপ্সিতা চৌধুরী বলেছেন: ভুল বুঝেছেন ভাই!! আমার ভেতরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া নয় বরং এটা স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবেই ধরে নিয়েছিলাম এবং নিজের ভুল বুঝতে পেরেছিলাম ( স্কুল/কলেজের ক্ষেত্রে- টিজ না) ! তাই শিক্ষকদের সেই আচরণে আমি উদ্ভট কিছু করিনি! আমার মানসিক বিকাশ আমি মনে করি যথেষ্ট ভালো হয়েছে কারন আমি অন্তত নিজে থেকে কিছু শিক্ষা গ্রহণ করতে পেরেছি! আর বাবা- মা’র ধুয়ে দেয়া- সেটার দরকার ছিলো, নইলে পড়াশোনা বা আদারস শিক্ষা পেতাম কি করে? আসলে- আমি সার্বিক দিক দেখিয়ে এটাই বোঝাতে চেয়েছি- এমন অনেক কিছু আমাদের জীবনে আসবে, ঘটবে কিন্তু তারকারনে জীবনযুদ্ধে হেরে গিয়ে এভাবে চলে যাওয়া তো ঠিক নয়! সময় এসেছে পরিবার থেকে সচেতন হয়ে, নিজ বাচ্চাকে সাহসী করে তোলা, জীবনযুদ্ধে যাতে তারা হেরে না যায় তার শিক্ষা দেয়া! বাকি রইলো- স্কুল! তাদের আচরণের পক্ষে আমি না! কিন্তু স্কুলের রুলস মেনে চলুক সবাই এটা চাই!! এবং আমি সেই স্কুলের শিক্ষকদের আচরণের পক্ষে না! আমি নিজেও কিন্তু একজন শিক্ষক!

১৪| ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৫০

রাজীব নুর বলেছেন: আপনার পোষ্ট এবং মন্তব্য গুলো খুব মন দিয়ে পড়লাম।

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৩৭

ঈপ্সিতা চৌধুরী বলেছেন: বাহ্‌ খুব পড়ুয়া তো আপনি!!

১৫| ০৬ ই মে, ২০২২ দুপুর ২:৫৭

বিজন রয় বলেছেন: ফিরে আসুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.