![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এই ব্লগের সকল মৌলিক লেখার স্বত্ত্ব লেখকের।এখান থেকে কোনো লেখা লেখকের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা, অনুলিপি করা গ্রহনযোগ্যনয়। তা সৃজনশীল কাজের পরিপন্থী। লেখা অন্য কোথাওপ্রকাশ, ছাপা করতে চাইলে লেখকের সম্মতি নিতে হবে। লেখকের ইমেল - [email protected]
কবি শহীদ কাদরী বলেছেন বাঙালী জাতি চরম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। চারদিকে আজ সেই একাত্তরের হায়েনাদের ফণা। তা প্রতিরোধ করতে হবে। এজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে হবে সৃজনের
প্রয়োজনে। নিউইয়র্কে 'একটি কবিতা সন্ধ্যা'র ত্রৈমাসিক আয়োজনে কবি শহীদ কাদরী
বলেন, কবিতা আমার প্রেম ও দ্রোহের খতিয়ান। কালের প্রবাহের সাথে তাল মিলিয়ে
আমাদেরকে শব্দশিল্পের বিন্যাস ঘটাতে হবে।
২ মার্চ ২০১৩ শনিবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জ্যামাইকায় একটি মিলনায়তনে ছিল এই
জমজমাট অনুষ্টান। নীরা কাদরীর সমন্বয়ে অনুষ্টিত আয়োজনের প্রথমেই ছিল আড্ডা ও
আলাপচারিতাপর্ব। কবি তমিজ উদদীন লোদীর পরিচালনায় কবি শহীদ কাদরীর সাথে আড্ডায় এই পর্বে অংশ নেন- কবি ফকির ইলিয়াস,কবি শামস আল মমীন,নাট্যজন মুজিব বিন হক ও লেখক ফারুক ফয়সল।
কবি শহীদ কাদরী বলেন, বিদগ্ধজনরা বলেন আদিকাল থেকে এই পৃথিবীতে একটি কবিতাই লেখা হচ্ছে। কিন্তু আমি বলি, সেই কবিতারও বাঁক বদলেছে। বিবেচক শব্দাবলী ব্যবহৃত হয়েছে। আর সেটাই কালিক আধুনিকতা। কবি বলেন, আমরা দেখেছি
মধ্যযুগীয় মানুষের বলয় থেকে বেরিয়ে এসে আধুনিক কবিরা নিজেদের পরিচালনা করেছেন আধুনিকতার আবহে। ধারণ করেছেন আধুনিক মন। যে মনের উপর বৈজ্ঞানিক সন্ধান ও অভিজ্ঞতার ছায়া পড়েছে।
শহীদ কাদরী বলেন, অতিসম্প্রতি নোবেল পুরষ্কারপ্রাপ্ত একজন বৈজ্ঞানিক বলেছেন-
পদার্থ বিজ্ঞানের ভাষাই ঈশ্বরের ভাষা।
এক প্রশ্নের জবাবে শহীদ কাদরী বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে আজ যারা
বাংলাদেশে ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করতে চাইছে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদেরও বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি কাজে লাগাবার সময় এসেছে। আমরা শব্দ,সঙ্গীত, শুদ্ধতায় এই শক্তিকে কাজে
লাগিয়ে অবশ্যই প্রজন্মকে এগিয়ে নিতে পারি।
কবি বলেন, একটি নাটকের একটি সংলাপই হতে পারে একটি শ্রেষ্ঠ কবিতা।নাটকে কাব্যময়তা বিশ্বে সার্বজনীন।
শহীদ কাদরী বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অনেক বড় বড় কবি নিহত হয়েছেন। কালোশক্তিরা যে সৃজনশীলতাকে কতটা ভায় পায়, তা আমরা ভুলে যাইনি। তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, পোস্ট মডার্নিজম বলতে ইউরোপে যা বুঝায়, আর বাংলাদেশে ও পশ্চিমবঙ্গে যা বুঝানো হয় - তা সম্পূর্ণ আলাদা। আমাদের রবীন্দ্রনাথ
বাংলা সাহিত্যের শ্রেষ্ঠ রোমান্টিক কবি।
আয়োজনের দ্বিতীয় পর্বে ছিল নির্বাচিত কবিদের কবিতা। এই পর্বের শুরুতেই কবি শহীদ কাদরী আবারও বাংলাদেশের গণজাগরণের সাথে সম্পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, আমরা আক্রান্ত হচ্ছি। দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে নগ্নভাবে আক্রমণ করা হয়েছে। এটা কোনো সভ্য দেশে গ্রহণযোগ্য হতে পারেনা। তাদের ঘরবাড়ী পুড়িয়ে
দেয়া হয়েছে। যেমনটি একাত্তরে করা হয়েছিল। শহীদ কাদরী প্রশ্ন করে বলেন, তবে
কী বাংলাদেশে আবারও একাত্তরের প্রেতাত্মা ভর করেছে ?
এই পর্বে কবি শিহাব শাহরিয়ার এর একগুচ্ছ কবিতা আবৃত্তি করেন- জেসমিন মোশতাক। তার সাথে সহশিল্পী অংশ নেন মিজানুর রহমান বিপ্লব।
কবি ইকবাল হাসানের কবিতা আবৃত্তি করেন - মিজানুর রহমান প্রধান ও সেমন্তী ওয়াহেদ।
কবি নির্মলেন্দু গুণের একগুচ্ছ নির্বাচিত কবিতা আবৃত্তি করেন- মিজানুর রহমান বিপ্লব ও ক্লারা রোজারিও।
অনুষ্টানের তৃতীয় পর্বে ছিল স্বরচিত কবিতা পাঠ। এই পর্বে অংশ নেন -কবি দলিলুর রহমান, জেসমিন আরা,কবি শামস আল মমীন ও কবি ফকির ইলিয়াস। ছড়া পাঠ করেন শাহ আলম দুলাল। কবি তমিজ উদদীন লোদীর কবিতা আবৃত্তি করেন গোপন সাহা।
তিনঘন্টা ব্যাপি স্থায়ী আয়োজনে অতিথিদেরকে চাপর্বে আপ্যায়িত করা হয়। আলোকচিত্রে ছিলেন এজাজ আলম। শব্দ নিয়ন্ত্রনে শাহেদ চৌধুরী। পরবর্তী অনুষ্টানটি হবে আসছে জুন'১৩ মাসে।
©somewhere in net ltd.